![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন পুরুষের একাধিক স্ত্রী রাখার প্রচলন ইসলামের আগে প্রায় সকল ধর্মে বৈধ মনে করা হত। আরব, ভারতবর্ষ, ইরান, মিসর, গ্রীস, ব্যাবিলন ও অষ্ট্রিয়া প্রভৃতি দেশের প্রতিটি সম্প্রদায়ে বহু বিবাহের প্রথা চালু ছিল। এর স্বাভাবিক প্রয়োজনীয়তা আজও কেউ অস্বীকার করতে পারছে না। সাম্প্রতিককালে ইউরোপ তাদের পূর্বসূরীদের বিপরীতে বহু বিবাহকে অবৈধ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। অবশেষে প্রকৃতির বিধানই বিজয়ী হয়েছে। আর এখন এর প্রসার ঘটানোর চেষ্টা চলছে।
মিঃ ডেভিন পোর্ট একজন প্রখ্যাত খ্রিস্টান পাদ্রী। তিনি বহু বিবাহের স্বপক্ষে ‘ইনজীল’ গ্রন্থের বেশ অনেকগুলো আয়াত উল্লেখ করার পর লিখেছেন, “এ আয়াতগুলো থেকে যে বক্তব্য মিলে তা হচ্ছে, বহু বিবাহ শুধু যে পছন্দের তা নয়, বরং খোদা তা’আলা তাতে বিশেষ বরকতও দিয়েছেন।”
অবশ্য এখানে একটি দেখার বিষয় রয়েছে যে, ইসলামের পূর্বে বহু বিবাহের নির্ধারিত কোন সীমা ছিল না। এক এক ব্যক্তির অধীনে হাজার হাজার স্ত্রী ছিল। খৃস্টান পাদ্রীরা সব সময় বহু বিবাহে অভ্যস্ত ছিল ষোড়শ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত জার্মানে এর ব্যাপক প্রচলন ছিল। কনষ্টান্টিনোপলের সম্রাট ও যুবরাজরা অনেক স্ত্রী রাখত। এভাবে বৈদিক শিক্ষায় বহু বিবাহের অনুমতি ছিল এবং ঐ বিধানে একই সাথে ১০-১৩ ও ২৭ জন স্ত্রী রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
মোট কথা এভাবে ইসলামের পূর্বে বহু বিবাহের প্রচলন ছিল। যতটুকু ধর্ম ও দেশের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, কোন মাযহাব এবং কোন নিয়মই এ ব্যাপারে কোন সীমা নির্ধারণ করেনি। না ইহুদী, খৃষ্টান, হিন্দু, আর্য এবং পারশীক প্রভৃতি। ইসলামের প্রথম দিকেও এ প্রথা পূর্বের মত চালু ছিল। কোন কোন সাহাবাদের অধীনে চারের অধিক স্ত্রীও ছিল। হযরত খাদিজার ইন্তেকালের পরে বিশেষ বিশেষ দ্বীনি প্রয়োজনে একে একে দশজন স্ত্রী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিবাহ বন্ধনে একত্র হয়েছিল।
যখন দেখা গেল যে, বহু বিবাহের ফলে মহিলাদের অধিকার ক্ষুন্ন হচ্ছে। মানুষ প্রথমে লোভ-লালসার বশীভূত হয়ে অনেক বিবাহ করে নিত। পরবর্তীতে স্ত্রীদের হক বা অধিকার যথাযথভাবে আদায় করতে পারত না। কুরআনে আযীয চিরন্তন বিধায়ক, যা পৃথিবী হতে যুল্ম-অত্যাচার, অবিচার, মিটিয়ে ফেলার জন্যেই চিরস্থায়ী আইনরূপে নাযিল হয়েছে। স্বভাবজাত প্রয়োজনের প্রতি লক্ষ্য রেখে বহু বিবাহকে একেবারে হারাম করেনি। বরং তাতে যে অনিষ্ট ও অপকারিতা ছিল, একটি নতুন সংস্কারের মাধ্যমে তার সংশোধন করে দিয়েছে। আহকামুল হাকেমীন আল্লাহ তাআলার ফরমান নাযিল হয়-
ﭽ ﮊ ﮋ ﮌ ﮍ ﮎ ﮏ ﮐ ﮑ ﮒﮓ ﮔ ﮕ ﮖ ﮗ ﮢ ﭼ النساء: ٣
অর্থ ঃ তবে সেসব মেয়েদের মধ্য হতে যাদেরকে ভাললাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায়সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না তবে একটাই।
যেসব সাহাবার ঘরে চারের অধিক স্ত্রী ছিল তাঁরা চারজন রেখে বাকীদের তালাক দিয়ে দেন। হাদীসে আছে যে, হযরত গায়লান (রা.) যখন ইসলাম গ্রহণ করেন, তখন তাঁর দশজন স্ত্রী ছিল। নবী করীম তাকে আদেশ করলেন যে, তোমার স্ত্রীদের মধ্য থেকে চারজন রেখে বাকীদের তালাক দিয়ে দাও। এভাবে নওফল ইবনে মুআবিয়া (রা.) ইসলাম গ্রহণের সময় পাঁচ স্ত্রীর স্বামী ছিলেন। নবীজী একজনকে তালাক দিয়ে দেওয়ার আদেশ করলেন। আদেশ মোতাবেক একজনকে তিনি তালাক দিয়ে দেন।
উপরোক্ত সাধারণ বিধান মতে হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রীও চারের অধিক না হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু এটাও লক্ষ্যণীয় যে, উম্মাহাতুল মুমিনীন (রা.) অপরাপর নারীগণের সমতুল্য নন। স্বয়ং কুরআনে করীমের ভাষ্যঃ ﭽ ﭡ ﭢ ﭣ ﭤ ﭥﭦ ﭵ ﭼ الأحزاب: ٣٢
অর্থ ‘হে নবী পতœীগণ! তোমরা অন্য যে কোন নারীর ন্যায় নও, তারা হলেন গোটা উম্মতের জননী। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরে তাঁরা অন্য কোন পুরুষের বিবাহ বন্ধনে আসতে পারেন না। এখন যদি সাধারণ কানুনের অধীনে চারজনকে রেখে অবশিষ্টগণকে তালাক দিয়ে পৃথক করে দেয়া হয়, তাহলে তাঁদের উপর নিতান্তই জুলুম হত। গোটা জীবনের জন্যে তারা নিরুপায় হয়ে যেতেন এবং দয়ার নবীর কিছু দিনের এ সাহচর্য তাঁদের জন্যে আযাবে পরিণত হত। কারণ এক দিকে ফখরে দো আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সান্নিধ্যে ছুটতো এবং অপর দিকে তাঁদের জন্যে অন্য কোন স্বামী গ্রহণ করে স্বীয় চিন্তা থেকে মুক্ত হওয়ার অনুমতিও থাকতো না।
উপরোক্ত কারণে নবী পতœীগণ সাধারণ বিধানের আওতায় শামিল হওয়া কোনভাবেই সমীচীন ছিল না। বিশেষ করে ঐ সকল বিবিগণ যাদের স্বামী জিহাদে শহীদ হওয়ার কারণে তাঁদের অসহায়ত্ব ও দরিদ্রতা ঘোচাবার জন্যে বিবাহ হয়েছিল, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের মন খুশীর ইচ্ছায় তাদেরকে বিবাহ করেছিলেন। এখন যদি তাদেরকে তালাক দেন, তাহলে তাদের কি অবস্থা হবে? এটা কেমন মন খুশী হতো যে, এখন তারা সারা জীবনের তরে বিবাহ বঞ্চিত হতেন! এ কারণেই আল্লাহ তা’আলার নির্দেশক্রমে শুধুমাত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্যেই চারের অধিক স্ত্রী রাখার অনুমতি ছিল। এছাড়াও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পারিবারিক জীবনের অবস্থা, যা উম্মতের জন্যে ইহ-পরকালের সর্ব ক্ষেত্রে অনুকরণীয় জীবন বিধান, তা কেবল নবী পতœীদের মাধ্যমেই আমাদের পর্যন্ত পৌঁছা সম্ভব ছিল। আর এটা এমনই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, এর জন্যে মাত্র নয় জন পতœীও অতি নগন্য।
উপরোক্ত অবস্থার প্রতি লক্ষ্য করে কি কেউ মন্তব্য করতে পারবে যে, (নাউযুবিল্লাহ) কোন প্রবৃত্তির উপর ভিত্তি করে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ বিশেষত্ব দেয়া হয়েছিল?
এখানে একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় যে, যে সময় গোটা আরব ও অনারব তাঁর বিরোধিতায় দাঁড়িয়ে ছিল, হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল। নানা ধরনের দোষ-ত্রুটির অপবাদ দিয়েছে তাঁকে, পাগল ও মিথ্যুক আখ্যা দিয়েছে। মোটকথা, নবুওয়্যাতের সূর্যের গায়ে ধুলা-বালি নিক্ষেপের জন্যে সারা জীবন প্রচেষ্টা চালিয়ে নিজেরাই বরং অপমানিত হয়েছিল। কিন্তু এত কিছু করা সত্ত্বেও কি কোন বিষয়ে অপবাদ আরোপ করেছে? না, কিছুতেই নয়। অথচ কোন সৎ ব্যক্তির দুর্নাম করার জন্যে এর চাইতে অধিক বড় কোন হাতিয়ার হতে পারে না। এতে যদি সামান্য আঙ্গুল বসানোর সুযোগ থাকতো, তাহলে আরবের কাফেররা যারা তাঁর ঘরের ছোট-খাট সকল বিষয়েই অবগত ছিল, তাকে আরো বাড়িয়ে দোষ হিসাবে গণ্য করত। কিন্তু তারা এতটুকু নির্বোধ ছিল না যে, দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট সত্যকে অস্বীকার করে নিজেদের কথার গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। কেননা খোদাভীতির মূর্তপ্রতীক, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পূণ্যময় গোটা জীবন ছিল মানুষের দৃষ্টির সামনে। তাতে তারা অবলোকন করেছে যে, তাঁর যৌবনকালের সিংহভাগ অতিবাহিত হয়েছে নিছক একাকিত্ব ও নির্জনতার মাঝে। অতপর যখন পঁচিশ বছর বয়সে উপনীত হয়েছেন, তখন খাদীজা (রা.) এর পক্ষ হতে বিয়ের প্রস্তাব পান, যিনি বিধবা ও সন্তান সম্পন্না হওয়ার সাথে সাথে তখন চল্লিশ বছর বয়সে উপনীত হয়ে বার্ধক্য জীবন যাপন করছিলেন। তিনি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পূর্বেও দু‘জন স্বামীর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন এবং দুই পুত্র ও তিন মেয়ের জননী ছিলেন। এতদসত্তেও নবীর দরবারে তাঁর আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়নি এবং জীবনের বেশীর ভাগ সময় ঐ একটি বিবাহের উপরই অতিবাহিত করেছেন। আর তাও এভাবে যে, স্ত্রীকে ছেড়ে হেরা পর্বতের নির্জন-গুহায় মাসের পর মাস শুধু প্রভুর ইবাদত-বন্দেগীতে নিমগ্ন থাকতেন এজন্যে কাফেররা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিরুদ্ধে চারিত্রিক আপত্তি তোলেনি।
উল্লেখ্য জীবেনর বেশীর ভাগ সময় এই বিবাহে কাটিয়েছেন বিধায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যত সন্তান জন্মলাভ করেছিল তা সবই হযরত খাদীজার (রা.) গর্ভে হয়েছে।
হযরত খাদীজা (রা.) এর ওফাতের পর নবীজীর বয়স যখন পঞ্চাশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল, ঠিক তখন একের পর এক বাকী বিবাহগুলো সম্পন্ন করেন। বিশেষ বিশেষ শরয়ী প্রয়োজনে একে একে দশটি বিবাহ করেন। আয়েশা (রা.) ব্যতীত যাদের সকলেই ছিলেন বিধবা। কারো কারো সন্তানও ছিল।
এ সকল অবস্থাদৃষ্টে কিছুতেই এ অনুমান করা যায় না যে, কোন সুস্থ বিবেকসম্পন্ন ব্যক্তি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে তাঁর বহু বিবাহকে জৈবিক বাসনার প্রমাণ বলে মন্তব্য করতে পারে। যদি কোন দিনকানা বাঁদুর নবুওয়াত রবির জ্যোতি ও মহত্ত্বকে দেখতে সক্ষম না হয় এবং তাঁর চরিত্র মাধুরী, আমল, খোদাভীতি, পবিত্রতা, পার্থিব মোহ বিমুখতা, সাধনা এবং পুতঃপবিত্র জীবনের পূর্বাপর যাবতীয় হাল অবস্থা হতে চোখ এড়িয়ে নেয়, তারপরও স্বয়ং এ বহু বিবাহ সংক্রান্ত ঘটনাবলীই তাকে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে বাধ্য করবে যে, নিঃসন্দেহে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এসব বিবাহ জৈবিক চাহিদা কিংবা ভোগ বিলাসমূলক ছিলো না। যদি এর কোনটিই হতো, তাহলে সারাটি জীবন একজন বৃদ্ধার সাথে অতিবাহিত করে পঞ্চাশ বছরের পরবর্তী জীবনকে এ কাজের জন্যে নির্ধারণ করবেন, কোন মানব বিবেক এটাকে মেনে নিতে পারে না। বিশেষতঃ আরবের কাফের ও কুরাইশ নেতৃবৃন্দ তাঁর একটি মাত্র ইঙ্গিতেই তাদের নির্বাচিত সুন্দর ও রূপসী রমণীদেরকে তাঁর পদতলে উৎসর্গ করার জন্যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইতিহাস ও সীরাতের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থাবলী এর স্বাক্ষী, তারপরও তিনি তা গ্রহণ করেননি।
অধিকন্তু মুসলমানদের সংখ্যাও এ সময়ের পরিসরে লাখের কোঠায় পৌঁছেছিল। যাদের প্রতিটি নারী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াকে সঙ্গত কারণেই ইহ ও পরকালের পরম সৌভাগ্য মনে করতো। এসব কিছু থাকা সত্ত্বেও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিবাহ বন্ধনে তাঁর পঞ্চাশ বছর বয়স পর্যন্ত কেবল খাদীজাই ছিলেন, বিবাহের সময় যার বয়স ছিল চল্লিশ বছর।
হযরত খাদীজা (রা.) এর মৃত্যুর পরও যেসব নারীদেরকে পতœী রূপে নির্বাচন করেছিলেন। একজন ছাড়া বাকী সকলের মধ্যে কেউ বা বিধবা আবার কেউ বা ছিলেন সন্তান সম্পন্না, এদতসত্বেও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে নিয়েই জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন। উম্মতের অসংখ্য কুমারী কন্যা তখনো তাঁর নির্বাচনের আওতায় পড়েনি।
সংক্ষিপ্ত এ পুস্তিকায় বিস্তারিত লেখার অবকাশ নেই, অন্যথায় দেখিয়ে দেয়া যেতো যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বহু বিবাহ কি পরিমাণ ইসলামী ও শরয়ী প্রয়োজনের ভিত্তিতে সংঘটিত হয়েছিল। যদি এমনটি না হতো, তাহলে যে সমস্ত মাস’আলা কেবল মহিলাদের মাধ্যমেই জানা সম্ভব, তা সব অজানা ও গোপন থেকে যেতো। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বহু বিবাহকে জৈবিক লালসা হিসাবে সাব্যস্ত করা অত্যন্ত ধৃষ্টতা ও নির্লজ্জতার পরিচায়ক। বাতিল প্রীতি যদি কারো বিবেক বুদ্ধি ও অনুভূতিকে অন্ধ করে দেয়, তার পরও কোন কাফেরও এমনটি বলতে পারে না।
২| ২০ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৪৩
ফাহীম সিদ্দীকী বলেছেন: সম্ভবত আপনি না পড়ে মন্তব্য করছেন প্লিজ পড়ে নিন
৩| ২০ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:০৭
একাকী বাংলাদেশি বলেছেন: বিশেষতঃ আরবের কাফের ও কুরাইশ নেতৃবৃন্দ তাঁর একটি মাত্র ইঙ্গিতেই তাদের নির্বাচিত সুন্দর ও রূপসী রমণীদেরকে তাঁর পদতলে উৎসর্গ করার জন্যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইতিহাস ও সীরাতের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থাবলী এর স্বাক্ষী, তারপরও তিনি তা গ্রহণ করেননি
যারা উনার বহু বিবাহ'কে (নাউযুবিল্লাহ) শুধুমাত্র জৈবিকতার আখ্যা দেয় তাদের জন্য উপরিউক্ত লাইনটির যথেষ্ট পরিমান দালিলিক প্রমান'ই তাদের ঐ খোড়াঁ যুক্তি খন্ডন করতে যথেষ্টিু। এবং এইটা খুবই প্রয়োজনীয়। নাহলে প্রগতিশীল'রা এই এক কাহিনী লইয়াই ফালাফালি করে। তারা এইটা বলেনা যে কেন উনি এরকম একজন ক্ষমতাশালী মানুষ হওয়ার পরেও আধাপেট খেয়ে দিন কাটাতো
৪| ২০ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:১৫
যোগী বলেছেন:
ভাই আবার পড়লাম কিন্তু কোথাও পেলাম না ঐ তালাক প্রাপ্ত ছয়জন বয়স্ক নারীর ভাগ্যে কি জুটেছিল?
হয়তো অন্য কারো সাথে পরে বিয়ে হয়ে থাকতে পারে, যদি তারা তাদের পছন্দমত উপযুক্ত পুরুষ পেয়ে থাকেন, তারপরে সেই সময় এমনিতেই পুরুষের সংখ্যা কম ছিল।
৫| ২০ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:২১
রাজীব দে সরকার বলেছেন: বৈদিক শিক্ষায় বহু বিবাহের অনুমতি ছিল এবং ঐ বিধানে একই সাথে ১০-১৩ ও ২৭ জন স্ত্রী রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল
যদি রেফারেন্স টা একটু দিতেন
৬| ২৩ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:১১
ফাহীম সিদ্দীকী বলেছেন: রামের পিতা রাজা 'দশরথ'-এর একাধিক স্ত্রী ছিল। একইভাবে 'ভগবান শ্রী কৃষ্ণের'ও কয়েকজন স্ত্রী ছিল।
৭| ২৩ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:১৫
ফাহীম সিদ্দীকী বলেছেন: প্রাচীন ভারতের বিবাহ প্রথা
►বিবাহ প্রথা: ধর্মসূত্র গ্রন্থাদি ও কৌটিল্যের ‘অর্থশাস্ত্র’ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে এবং মৌর্য যুগে বিবাহের ধরণ ও প্রথা সম্মন্ধে জানা যায় । শাস্ত্রীয় বিধিনিষেধ এবং মেগাস্থিনিসের ভাষ্য সত্ত্বেও অসবর্ণ বিবাহ প্রচলিত ছিল । বিবাহ এক জাতির মধ্যে বৈধ হলেও গোত্র ভিন্ন হত । কুল, বংশ বা রক্তের সম্পর্ক থাকলে সেই বিবাহ নিষিদ্ধ ছিল । তবে একই গোত্রে বিবাহ পুরোপুরি অপ্রচলিত ছিল না । শাক্যদের মধ্যে ভাই-বোন বিবাহও সিদ্ধ ছিল । ‘বৌধায়ন’ ধর্মসূত্রে পিসতুতো-মামাতো ভাই-বোনের বিবাহের কথা জানা যায় । অর্থশাস্ত্রে আট ধরনের বিবাহের কথা বলা হয়েছে । এর মধ্যে আর্য, ব্রহ্ম, দৈব ও প্রাজাপত্য আগে থেকেই প্রচলিত ছিল ।
♦ ব্রাহ্ম বিবাহ: বর্তমান কালে যেমন পাত্রীকে নতুন কাপড় ও গহনায় সাজিয়ে চরিত্রবান এবং শিক্ষিত পাত্রের সঙ্গে বিবাহ দেওয়া হয়, তখনকার দিনেও এই প্রথা প্রচলিত ছিল । এই ধরণের বিবাহ প্রথাকে ব্রাহ্ম বিবাহ বলা হয় ।
♦ দৈববিবাহ : সালংকারা কন্যাকে যজ্ঞের অনুষ্ঠানের সময় পুরোহিতকে সমর্পণ করা হত ।
♦ আর্য বিবাহ : তখনকার দিনে পাত্রপক্ষের কাছ থেকে পণ নেওয়ার প্রথা প্রচলিত ছিল । যখন পাত্রের কাছ থেকে একটি গরু ও একটি বলদ অথবা দুজোড়া বলদ গ্রহণ করে কন্যাদান করা হত, তখন সেই বিবাহকে বলা হত আর্য বিবাহ ।
♦ প্রাজাপত্য বিবাহ: “তোমরা দুজনে গার্হস্থ্য ধর্ম পালন করো” - পাত্রপাত্রীকে শুভ কামনা জানিয়ে এই বিবাহ ।
♦ অন্যান্য বিবাহ: এই চারটি প্রচলিত বিবাহ ছাড়া আরও চারটি বিবাহ পরে স্বীকৃতি পেয়েছিল । সেগুলি হল- আসুর (অর্থাৎ পণপ্রথার মাধ্যমে বিবাহ), গান্ধর্ব (পাত্রপাত্রীর পারস্পারিক ভালোবাসার মাধ্যমে বিবাহ বন্ধন), রাক্ষস (বলপূর্বক বিবাহ) ও পৈশাচ (নিদ্রিতা, পানাসক্তা বা বিকৃতমস্তিষ্কা নারীকে নিয়ে নির্জনে গমন) । এই সব বিবাহ অবশ্যই সুনজরে দেখা হত না । নিয়ারকাসের বর্ণনা থেকে জানা যায়, এই সময় স্বয়ম্বর প্রথা প্রচলিত ছিল । দৌড়, কুস্তি ও মুষ্টিযুদ্ধ প্রতিযোগিতায় যিনি বিজয়ী হতেন, তাঁর সঙ্গে কন্যার বিবাহ দেওয়া হত ।
♦ অসবর্ণ বিবাহ: কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে অসবর্ণ বিবাহের কথা আছে এবং এর ফলে যে সব সংকর বা মিশ্র জাতির উদ্ভব হয়েছিল, তা উল্লিখিত হয়েছে, যেমন- অন্বষ্ঠ (পিতা ব্রাহ্মণ, মাতা বৈশ্য), নিষাদ বা পরশর (পিতা ব্রাহ্মণ, মাতা শূদ্র), উগ্র (পিতা ক্ষত্রিয় মাতা শূদ্র), চন্ডাল (পিতা শূদ্র, মাতা ব্রাহ্মণ), সূত (পিতা ক্ষত্রিয়, মাতা ব্রাহ্মণ) ইত্যাদি । চন্ডালসহ সমস্ত মিশ্র জাতিকে শূদ্রের পর্যায়ভুক্ত বলে মনে করা হত ।
►বিবাহ বিচ্ছেদ : অর্থশাস্ত্রে বিবাহ বিচ্ছেদের কথা উল্লিখিত হয়েছে । স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনের অমিল হলে এবং উভয় পক্ষ রাজি হলে বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে যেত । স্বামী দুশ্চরিত্র, চিরপ্রবাসী, রাজদ্রোহী বা ক্লীব হলে স্ত্রী তাকে পরিত্যাগ করতে পারত । স্ত্রী যদি পুত্র-সন্তানের জন্ম দিতে অক্ষম হত, তাহলে আট বছর অপেক্ষা করবার পর স্বামী তাকে ত্যাগ করতে পারত । এসব ক্ষেত্রে স্ত্রী ভরণপোষণ দাবি করতে পারত ।
►বিধবা বিবাহ: সাধারণ ভাবে বিধবা বিবাহের প্রচলন ছিল না । স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী তার শ্বশুরের অনুমতিতে বা বিনা অনুমতিতে, দ্বিতীয়বার বিবাহ করতে পারত । সতীদাহের ঘটনা কম হলেও ঘটত ।
►বহু বিবাহ: মৌর্য যুগে পুরুষদের মধ্যে বহুবিবাহ প্রচলিত ছিল । অর্থশাস্ত্রে বহু বিবাহের উৎসাহ দেওয়া হয়নি এবং সেক্ষেত্রে প্রথম স্ত্রীকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের কথাও বলা হয়েছে । মহিলাদের মধ্যেও বহুবিবাহ একেবারে অজ্ঞাত ছিল না, যদিও সম্ভ্রান্ত পরিবারের মহিলাদের পক্ষে তা এক প্রকার অসাধ্য ছিল ।
৮| ২৯ শে জুন, ২০১৩ রাত ২:৪৭
রাজীব দে সরকার বলেছেন: প্রিয় লেখক,
আপনার কাছে তো 'হিন্দু বিবাহ' এর কপি-পেস্ট চাই নাই
চশমা লাগিয়ে দেখুন আমার কমেন্ট টা
আপনি বলেছেন,
বৈদিক শিক্ষায় বহু বিবাহের অনুমতি ছিল এবং ঐ বিধানে একই সাথে ১০-১৩ ও ২৭ জন স্ত্রী রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল
আমি বেদের রেফারেন্সটা চেয়েছি
দিতে পারলে দেন, নাহলে পোস্ট রিপোর্ট করা হবে
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১:১১
যোগী বলেছেন:
এখানে অনেক প্রশ্নই করতে ইচ্ছা হচ্ছে, কিন্তু প্রশ্ন করলেই অনেকে আমাকে মুর্তাদ ঘোষনা করতে পারে। তাই ভয়ের কারনে প্রশ্ন করলাম না।
কিউরিওসিটি থেকে শুধু একটা জিনিশ জানতে চাচ্ছি, ভূল হলে মাফ করে দিবেন প্লিজ-
হাদীসে আছে যে, হযরত গায়লান (রা.) যখন ইসলাম গ্রহণ করেন, তখন তাঁর দশজন স্ত্রী ছিল। নবী করীম তাকে আদেশ করলেন যে, তোমার স্ত্রীদের মধ্য থেকে চারজন রেখে বাকীদের তালাক দিয়ে দাও।
তালাক প্রাপ্ত সেই ছয়জন বয়স্ক নারীর কোন খবর জানেন, তারা কেমন ছিলেন?
সাধারনত মানুষ যদি কোন নতুন আইন তৈরী করে তাহলে বলা থাকে যে এই আইন কাদের জন্য বা কোন সময় থেকে প্রযোজ্য হবে।