![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত কয়েকদিন ধরেই রাজাকারদের ফাঁসির দাবীতে মানুষের শাহবাগে ঢল নেমেছে । সব বয়সের সব রকমের মানুষ সেখানে এক হয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবী করছে । কেউ যখন যুদ্ধাপরাধ বিচারের স্বচ্ছতা ও বিচারকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার জন্যে আন্দোলন করে আমার সত্যি মনটা ভরে উঠে খুশিতে । কেননা যারা নিজের দেশের মানুষদের, নিজেরই ভাইদের ঠাণ্ডা মাথায় মেরে ফেলে, নিজেরই বোনকে ধর্ষণ করে, তাদের আর যাই হোক মানুষ বলা যায় না । কিন্তু সমস্যা হচ্ছে কেউ যখন বলে এই আন্দোলনের ফাইনাল গোল হচ্ছে ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ করা তখন সেই আন্দোলনের লক্ষ্য আর যুদ্ধাপরাধের বিচার থাকেনা, সেটা হয়ে যায় অন্য কিছু । সেই অন্যকিছু নিয়েই কথা বলতে চাই ।
প্রথমেই আসি যারা এমনটা দাবী করে গলার রগ ফুলিয়ে ফেলেছেন তাদের কথায় । শুরুতেই বলি আমার মাথায় একটা জিনিস আসে না যে, কিভাবে গণতন্ত্রের কথা বলে সেই সাথে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ব্যাপারটা নিষিদ্ধ করার কথা বলা যায় ? যাই হোক আপনারা যা Claim করছেন সেই জিনিসটা আগে মনে হয় আপনাদের কাছে পরিষ্কার করা দরকার ।
Anke Schuster (Faculty of Philosophy University of Groningen) এর একটা Article থেকে বলিঃ
Religious political parties are indeed political parties, in so far as they fulfil the legal conditions for political parties, take part in elections, compete for votes, send representatives to parliament and participate in political processes, institutions, and discourses in their capacity as parties. In contrast to interest groups and informal associations, they do not only strive to put their interests forward, but to be part of the formalised structures of political power. Even if they are in most countries too small to stand a chance of governing, they have 8as fractions of parliament privileged access to information and benefit from material as well as less tangible prerogatives. Religious political parties are thus not structurally distinct from nonreligious political parties, and are inhabitants of the same grey area between the state and civil society.
সোজা বাংলায় যে সব ধর্মীয় দল পার্লামেন্টের নির্বাচনে অংশ নেয় তারা ধর্মভিত্তিক রাজনীতির মাধ্যমেই তা করে থাকে । দুনিয়াতে বহুত ধর্মভিত্তিক দল আছে প্রায় সব দেশেই । ইসলাম বাদই দিলাম আপনাদের জন্য । আপনাদের কি ধারণা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বলতে কি শুধু ইসলাম বোঝায় ? জামাত শিবির ? না কিন্তু । ধর্মভিত্তিক রাজনীতি পৃথিবীর প্রায় সব গুলো গণতান্ত্রিক দেশেই আছে । আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না ? কিছু উদাহরন দেই ?
ধর্মঃ খ্রিস্ট ধর্ম
জার্মানিঃ
১ Bavarian People's Party
২ Centre Party (Germany)
৩ Christian Social People's Service
যুক্তরাজ্যঃ
Belfast Protestant Association Christian Democratic Party (UK)
Christian Party (UK)
Christian Peoples Alliance The Common Good (political party)
Democratic Unionist Party
Kirk Party
Liverpool Protestant Party
Protestant Unionist Party Ulster Protestant League (1931)
আরো আছে,
► Christian democratic parties in Argentina
► Christian Democratic Party (Norway)
► Confessional parties in the Netherlands
► Christian democratic parties in Germany
► Christian democratic parties in Italy
ধর্মঃ বৌদ্ধ
Buddhist Liberal Democratic Party
Cambodian National Sustaining Party
Jathika Hela Urumaya
Komeitō
New Komeito
Norodom Ranariddh Party
Palang Dharma Party
Sangkum
Sangkum Jatiniyum Front Party
Sinhalaye Mahasammatha Bhoomiputra Pakshaya
Sri Lanka Freedom Party
Union of Cambodian Democrats
ধর্মঃ হিন্দু
Akhand Hindustan Morcha
Akhil Bharatiya Gorkha League
Akhil Bharatiya Hindu Mahasabha
Akhil Bharatiya Ram Rajya Parishad
HINDRAF
Hindu Makkal Katchi
Hindu Prajatantrik Party
ইসলাম ধর্মের কি কি দল আছে তা নিয়ে বললাম ই না । শুরুতেই তো বাদ দিয়ে দিয়েছি । এবার আমাকে বলেন তো, কেন এই দলগুলো নিষিদ্ধ না ? কারন কী জানেন ? কারন গণতান্ত্রিক দেশ বলতে এটাই বোঝায় যে আপনি যেই হোন না কেন যে কোন নাগরিক ও তার দল নির্বাচনে অংশ নেয়ার অধিকার রাখে । নাকি আপনি বলতে চান যে সব্বার এই অধিকারের দরকার নাই ? আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে তো অনেক সচেতন আপনি !
অনেকে আবার মশা মারতে কামান দাগার মত সব উড়িয়ে দিতে চায় । আরে না বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি মানেই ইসলামী ভন্ডামী । যে ধর্মই হোক এইসব থাকারই দরকার নাই । এমন যে কোন দল আসলেই দেশ নষ্ট হয়ে যাবে । হিন্দুরাষ্ট্রে নরবলি-সতিদাহ সহ নারী ও অছ্যুৎদের ওপরে এবং খ্রীষ্টান রাষ্ট্রে ডাইনি-পোড়ানো, দার্শনিক বিজ্ঞানীদের অত্যাচার-হত্যা ছাড়াও ইনকুইজিশন অর্থাৎ ভিন্নমতের ওপরে ভয়াবহ গণহত্যা ও অত্যাচার হয়েছে । সেজন্যই জনতা ভৈরব গর্জনে ধর্মীয় রাষ্ট্র উচ্ছেদ করে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রব্যবস্থা বানিয়েছিল । কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে মুসলিম-খেলাফতও বিশ-বাইশটি ‘‘আমিরুল মু’মেনীন’’ বংশের গৃহযুদ্ধ, বিদ্রোহ, পাল্টা বিদ্রোহ, গুপ্তহত্যা, সুফি ও দার্শনিক বিজ্ঞানীদের ওপরে অত্যাচার-হত্যা সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের রক্তে রক্তাক্ত...bla bla bla তাই ধর্ম বাদ ! একি !
হাসবো নাকি কাঁদবো বুঝে উঠতে পারি না । আচ্ছা আপনি কোন গায়েবী আওয়াজ শুনে এই সিদ্ধান্ত নিলেন যে এমন কোন দল কোনদিনই আসবে না যে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করে দেশ ও মানুষের উপকার করবে ? আমাকে একটা কথা বলেন, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি কি কোন একনায়কতন্ত্র ? নাকি ধর্মভিত্তিক রাজনীতিতে দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেয় ? ধরা যাক এক নতুন ধর্ম আসলো । নাম ছাগু ধর্ম । আর তার সাথে কিছু দল তৈরি হোল । ধরা যাক তারা নির্বাচন করলো । কোন দল খারাপ হলে মানুষ গ্রহণ না করলে তা কিভাবে ক্ষমতায় যাবে ? সেটা তো এমনিতেই ঝরে যাবে ! সে জন্য আপনি রাস্তাই বন্ধ করে দিতে চান ? উপরে অনেকগুলো দলের পরিচয় আছে যার অনেকগুলো ক্ষমতাসীন । কই আমি তো দেশগুলো কে ডুবে যেতে দেখছি না ?
বাস্তবে আসি । আমাদের দেশে যেই দুই দল গণতান্ত্রিক দেশ শাসন করে তারা গত ৪০ বছরে সহিংসতা দূর করতে পারে নাই ।হতাশায় মগ্ন হয়ে তাহলেতো সব দলকেই বাদ দিতে হয় । "নাহ এদের দিয়ে কিসসু হবে না ।" এমন তো শুনি না ? কেন এখন আশায় বুক বেঁধে থাকেন সুন্দর একটি দল হবে... দেশ আগাবে... ? এই আশায় যদি বুক বাঁধতেই পারেন তাহলে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিয়ে এত আশাহত হবার হেতু কী ? দয়া করে ব্যাখ্যা করবেন কি ?
আমাদের পার্শ্ববর্তী পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারত । যেখানে বার বার হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা লাগে । সেখানেও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ নয় । ভারতের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি একটি হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল । বিজেপি ছাড়াও ভারতে জাতীয় ও প্রাদেশিক বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল রয়েছে । এমনকি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে বহু ইসলামী রাজনৈতিক দল ও রয়েছে । তারা গণতান্ত্রিক ভাবে অগ্রসর হতে পারলে আমরা কি দোষ করলাম যে, কোনদিনইইই কাউকেইই ভবিষ্যতে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করার সুযোগ দিবো না ? রাস্তাই বন্ধ করে দিতে হবে ? ধর্ম কে সামনে রেখে রাজনীতি করার অধিকার চিরতরে খর্ব করে দিতে হবে ? "না ! যাই হোক তাই হোক ! আমাদের ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ করতেই হবে । আর উপায় নাই ।" আগে জানতাম, গোঁড়ামি ধার্মিকরা করে এখন দেখছি কলিযুগে সবই সম্ভব !
আমাকে বলেন যে, যেখানে হাতে গোনা কয়েকটি দেশ ছাড়া পৃথিবীর কোন দেশেই ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ নয়, ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়ার বেশীরভাগ উন্নত দেশেই ধর্মীয় রাজনীতি চালু রয়েছে । এমনকি ইউরোপের অন্যতম উন্নত দেশ জার্মানির ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান শরিক Christian Democratic Union হল খৃস্টান ধর্মীয় আদর্শ লালনকারী একটি দল, বর্তমান পৃথিবীর উদারনৈতিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত সুইজারল্যান্ডেও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ নয়, এমনকি বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকারের অন্যতম শরীক হল রক্ষণশীল ক্যাথলিক রাজনৈতিক দল Christian Democratic People’s Party of Switzerland (দলটি হল সুইজারল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল) সেখানে আমাদের দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কারণটা কী ? আমাদের মধ্যে কি ধর্মীয় দাঙ্গা এতই বেশী ? নাকি ধর্ম জিনিসটা এতই বিপদজনক যে কাউকেই এটা নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়ানোর অধিকার দেয়া যাবেই না ? নাকি আমাদের অবস্থা সোভিয়েত ইউনিয়নের মত ? আমাদের মত একটা দেশে যেখানে কমবেশি সবাই ধার্মিক (মুসলিম বা হিন্দু) এমন জায়গায় ধর্মকে সামনে রেখে রাজনীতি করার সুযোগ চিরতরে বন্ধ করে দিয়ে আসলে কোন ঐশ্বর্য আমরা লাভ করতে যাচ্ছি ? বোধগম্য হচ্ছে না ।দয়া আমাকে বলবেন কি যে এর আসল উদ্দেশ্য টা কী ?
অনেক তো হোল, এবার একটা গল্প বলি । এক কাকের গল্প । এক গাছে এক কাক ছিলো । তার কিছু ডিম ছিলো । সে অনেক কষ্ট করে তার ডিমে তা দিতো । ঝড় বৃষ্টি শীত সব সময় খেয়ে না খেয়ে সে পড়েই থাকতো ডিমের উপর । হোল কি একদিন এক কোকিল এসে কাকের বাসায় একটা ডিম পেড়ে গেলো । কাকের তো বোঝার কথা না একটু সময়ের জন্য দূরে ছিল । যা হবার তাই । যথাসময়ে কোকিলের ডিম থেকে বাচ্চা বের হোল । আর কাকের সব ডিমগুলো সে নিচে ফেলে দিলো । কাকের আর্তনাদ কোকিল বা তার বাচ্চার কানে গেলো না । তাদের কাজ হয়ে গিয়েছে ।
আমার গল্প ফুরালো ।
নটে গাছটি মুড়ালো ।
২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:২৩
*কুনোব্যাঙ* বলেছেন: হুমমম...
৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:০০
কাব্য পিপাসু বলেছেন: khub valo laglo pore...tnx
৪| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:৪৯
মোঃ ওমর শরীফ বলেছেন: ++++
৫| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৮
খুব সাধারন একজন বলেছেন: ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ করা হোক বা না হোক,
১. জামাত যেন কোনদিনই রাজনীতি করতে না পারে।
২. জামাতের নেতা ও কর্মীদের লিস্ট ওদের কাছেই আছে, সেইসব লোক যেন করতে না পারে, সেটা আইন করে বন্ধ করতেই হবে।
কারণ জামাতিরা কতবড় পারভার্ট এটা এই ব্লগে ব্লগিঙ করে এমন প্রতিবন্ধীও জানে।
ওরা রাজনীতি করার সুযোগ নিজ দলে বা অন্য দলে পেলে আর কথা নাই।
একেবারে শেষ।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:১৫
আধারের কবি বলেছেন: প্রথম প্লাস