![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রিয় শিবলী স্যার, জহরলাল স্যার, শহীদ স্যার,
ছোটবেলা থেকে পাটিগনিত দেখে ভাবতাম গনিত বোধহয় শুধুই কথার ছন্দ । ঐকিক নিয়মের অঙ্ক গুলা দেখে বিতৃষ্ণায় মন ভরে যেতো । যেই অঙ্ক ২ লাইনে করা যায় তা পেঁচিয়ে পুরো পাতা জুড়ে করার কোন অর্থ খুঁজে পেতাম না । মনে মনে যুক্তি দিয়েই যেগুলোর সমাধান করে ফেলা যায় সেগুলোকে কথার মার প্যাঁচে বিশাল করে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে লিখাকেই মনে হত পাটি গনিত ।ভাষা মুখস্থ করতে পারতাম না তাই সব সময় পরীক্ষা দিতে গিয়ে জেদ করে ২ লাইনে করে দিয়ে আসতাম আর সে অনুযায়ী যথার্থ মার্ক্স (40%)পেতাম ।অঙ্ক মুখস্থ করাকে ছোটবেলা থেকেই ঘৃণা করে এসেছি ।সে সময়ের কথা খুব মনে পড়ছে । সমাজ / বাংলা ইত্যাদির নোট দেখে যখন বিচার দিতাম মায়ের কাছে তখন আম্মু বলতেন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব থাকবে না ।যতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠবো না ততদিন পর্যন্ত পরীক্ষার জন্য গনিত পড়বোনা ঠিক করেছিলাম । । গনিতকে (যা ক্লাসে পড়ানো হত)জীবন থেকে দুরেই সরিয়ে দিয়েছিলাম । আপনারাই আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন । আপনারা প্রমান করেছিলেন গনিত কত মজার হতে পারে ।আপনাদের কল্যাণে পরীক্ষা দিতে গিয়ে মন আর বিতৃষ্ণায় ভরে থাকতো না । মনে হত না যে অন্য কেউ মুখস্থ করে ফুল মার্ক্স পাবে আর আমি পাবো ৬০% ভাষাকে ছুঁড়ে ফেলে যুক্তি কে পরীক্ষার খাতায় উপস্থাপন করার শিক্ষা পেয়েছি আপনাদের কাছেই । আপনারা যে আদর্শ নিয়ে পড়াতেন সেই আদর্শ নিয়েই গনিতকে নতুন করে দেখতে শিখেছি । পরীক্ষায় পড়ার সাব্জেক্ট হিসেবে গনিতকে আজীবন ব্যাঙ্গ আর ঘৃণা করে আসতাম । আপনারাই দেখিয়েছিলেন পরীক্ষার সাবজেক্ট হিসেবেও গনিত গণিতই ; কোন মুখস্থ করা বাংলা/সমাজ নোট নয় ।
স্যার ,আপনাদের দোয়ায় আর আল্লাহর ইচ্ছায় বুয়েটে ভর্তি হয়েছি , প্রায় বছরখানেক হল ।
বুয়েটে উঠে আপনাদের খুব খুব খুউব মনে পড়ছে স্যার
আপনারা বড়ই কস্ট পেতেন যদি বুয়েটের গনিত বিভাগে একবার এসে উঁকি দিতেন
প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষরা , যারা তাদের মেধা দিয়ে বুয়েটে স্থান করে নিয়েছে , তারা কিভাবে গনিত চর্চা করছে দেখলে বোধকরি আপনাদের চোখের পানি বন্ধ করতে পারতেন না ।
আপনারা যদি দেখতেন কিভাবে আপনাদের আদর্শে গনিতকে ভালোবেসে একজন পরীক্ষায় ফুল আনসার করেও A- পায় তাহলে আর হয়তো ছাত্রদের নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন না ।আপনারা যদি জানতেন মুখস্থ করার অভ্যাস না থাকায় কিভাবে আপনাদের ছাত্ররা ক্রমাগত এখানে এসে অঙ্ক মুখস্থ করতে না পেরে কিংবা বুঝে অঙ্ক করার সুযোগ না পেয়ে অসহায় হয়ে রাগে- দুঃখে-হতাশায় পড়াশুনাই ছেড়ে দিচ্ছে কিংবা চোখের পানি ফেলতে ফেলতে মুখস্থ করতে বাধ্য হচ্ছে নিজের চোখে দেখলে হয়তো নিজেকে সাম্লাতে পারতেন না । আর তাই হয়তো কোনদিনই এই চিঠি আপনাদের হাতে পৌঁছাবো না ।
আপনারা ভালো থাকুন স্যার ।আল্লাহ আপনাদের উপর রহমত বর্ষণ করুন । গনিতকে পরীক্ষার সাবজেক্ট হিসেবে ভালোবাসা হয়তো আর কোনদিনই সম্ভব হবে না কিন্তু আপনাদের সেই সময়ের স্মৃতিই আমার মনে আজীবন থেকে যাবে । ।
ইতি
আপনাদের এক আদর্শ বিচ্যুত ছাত্র
২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:০২
ঘটলা বলেছেন: একদম মনের কথা বলেছেন। বুয়েটে গণিতের ক্লাস করার সময় বারবার জহরলাল স্যারের কথা মনে পড়ত এবং আফসোস করতাম।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:১৫
মুরাদপােভল বলেছেন: আপনার টিচার দের স্যালুট জানাই। টিচার নিয়ে আমার একটি লেখা আছে। সময় পেলে পড়ে দেখবেন