নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনন্ত প্রতীক্ষা

অগোছালো এই আমি

জি.এম. সাদমান

খালি খাই আর খাই।খাওয়ার পরে ঘুমাই।ঘুম থেকে উঠে আবার খাই।তারপর আবার ঘুমাই।এইভাবেই নিজের ওজনটাকে প্রায় শতকের কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছি।এখন শতকে পৌঁছানোর চেষ্টায় আছি।

জি.এম. সাদমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবশেষে বৃষ্টি

০৩ রা জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৫৫

সকাল সকাল মেজাজটা খারাপ হয়ে আছে।একেত সকাল আটটায় অফিসে যেতে আমার একদমই ভাললাগেনা তারপর মায়ের প্রতিদিন এক আব্দার।ছেলের বউ,নাতি নাতনি দেখতে চায়।কে জানে আমার মায়ের প্রতিদিন আমাকে দেখলেই এই কথা মনে পরে কিনা।আর এ নাতিপুতি দেখবা ভাল কথা।তমার ছেলের ই যে বিয়ে করতে হবে টার জন্য এমন তো কোন কথা নাই।বাইরে গেলেই তো কত নাতিপুতি আছে।সব ঝামেলা আমার ঘারেই চাপাতে হবে।আমি এখন ভেবেই পাইনা যে মানুষ ক্যান বিয়ে করে।





আমার মায়ের খেপার ও কারন আছে।গত দুই বছর ধরেই আমি টাকে আশা দিয়ে এশেছি যে প্রোমোশনের পরেই বিয়ে করব।কিন্তু প্রমোশন হয়ে গেল প্রায় ছয় মাশ।এর মাঝেও আমার মাঝে কোন পরিবরতন দেখা যায় নি।এই জন্যেই তিনি খেপে আছেন আমার উপর।অফিসে যাওয়ার সময় যথারীতি আম্মার ডাক।



-শোন আজ তোর জন্য পাত্রি দেখতে যাব।তুই কিন্তু অফিস থেকে তারাতারি আসবি।

-আচ্ছা ঠিক আছে আস্লাম।কিন্তু পাত্রি দেখতে আমারেই লাগবে ক্যান? তোমরা গেলেও তো পার।

-তুই এইগুলার কি বুঝবি? জিবনটা তো এমনেই শেষ করে দেয়ার ধান্দা করতেছিস।সময়মত একটা প্রেম করতে পারলে তো আজ আমাকে এত্ত চিন্তা করতে হয়না।

-আমি ওইসময় প্রেম করলে তো আবার তোমরাই বলতে যে ছেলে নষ্ট হয়ে গেছে।

-তাই বলে তুমি যে এইভাবে বুড়া হয়ে যাবা তা তো আর কেও বলে নাই।

শোন তাড়াতাড়ি আসবি।পাশের বাশার রিনা ভাবির ভাগ্নিকে দেখতে যাব।মেয়ে নাকি দেখতে অনেক সুন্দর।দুই ভাই আর বাবা মা নিয়ে সংসার।

-আচ্ছা মা এইবার আমাকে ;দয়া করে যেতে দাও।







রাস্তার এই ভয়াবহ জ্যাম কাটিয়ে ২০ মিনিটের পথ প্রায় দেড় ঘন্তা পর পৌছালাম।প্রতিদিনের মত আজকেও অফিসে যেতে ১৫ মিনিট লেট।অফিসে যাওয়ের পরও বিয়ের দুশ্চিন্তা আমার পিছু ছাড়ল না।আমার ভাবনায় বিয়ে মানে তখনও শপ্পিং,বাচ্চা আর বউয়ের জন্ত্রনা।এভাবে ভাবতে ভাবতে পিওনের ডাকে ঘর কাটল।



-স্যার সুহানা ম্যাডাম ফাইল রেখে গেছেন।

-ওকে তুমি যাও আমি দেখছি।



ফাইল খুলেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।এই মেয়েটাকে নিয়ে আর পারা গেল না।এক্টা কাজ যদি এনাকে দিয়ে ঠিকভাবে করা যায়।এত্তবার বুঝাবার পরেও যদি কেও ভুল করে তাইলে কার না মেজাজ খারাপ না হয়ে থাকে?

পিওনকে দিয়ে সুহানাকে রুমে ডাকাতেই উনি রুমে আসলেন।

-আচ্ছা আপনাকে দিয়ে তো কিছুই হবেনা।

-ক্যান স্যার?

-আবার প্রস্ন করেন ক্যানো?এই নিন ফাইল।এক্ষুনি ঠিক করে দেখাবেন।

এই কথা বলার পরেই তার কান্না শুরু হয়ে গেল। চোখের পানিতে ভেষে যাওয়ার উপক্রম।

-দেখেন এই ছিচ কাদুনে মানুষ আমি একদমই সহ্য করতে পারিনা।দয়া করে ডেস্কে গিয়ে ফাইল্টা ঠিক করে আনেন প্লিজ।

উনি চোখ মুছতে মুছতে চলে গেলেন।



দেখতে দেখতে অফিস থেকে বাসায় যাওয়ারও সময় ঘনিয়ে এল। যথারীতি বাসায় ফিরে আসলাম।বাশায় এসে দেখি সবাই সেজে গুজে রেদী।আমাকে দেখা মাত্রই আম্মার হাকদাক শুরু হয়ে গেল।

-আচ্ছা তর কি কখনও আক্কেল হবেনা?আজ না তোকে তাড়াতাড়ি আস্তে বল্লাম।নে জলদি রেডি হয়ে নে।



আমার বোন আর খালাত বোন দেখলাম বিশাল ফুরতিতে আছে। ওদের দেখে মনে হচ্ছিল আজকেই যেন আমার বিয়ে।

যাহোক ১৫ মিনিটের মধ্যেই আমরা বের হয়ে গেলাম।সেরাতে পাত্রিকে দেখে আমার একটু লজ্জা লজ্জা লাগছিল।আমাকে আর তাকে গোপন কামরায় পাঠিয়ে গল্প করতে দেয়া হল।আমি গোপন কোনও গল্প না করে আমার একটু নেগেটিভ পাবলিসিটি করে আস্লাম।আমি তাকে একটা জিনিস বুঝাতে চেষ্টা করলাম যে আমাকে বিয়ে করলে তার জিবনে বিপদ আছে।



সেরাতে বাসায় এসে রেস্ট নিয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।রাতে ঘুম ভালই হল কারন পরদিন ছিল শুক্রবার।কিন্তু পরদিন সকালে আবার সেই আম্মার ডাকে ঘুম ভাঙল।

-তুই যে এত্ত চালাক তা তো জানতাম না

-ক্যান আমি আবার কি করলাম?আর শুক্রবারে আমাকে এত সকালে না ডাকলেও তো পারতে।

-তুমি কালকে ওই বাসায় যেয়ে কি কি করছ সব ওরা আমাকে আজকে ফোন দিয়ে জানিয়েছে

আমি কোনও কথা বললাম না।চুপ হয়ে গেলাম।আম্মা আমাকে ঝারি দিয়ে বললেন আজকে তুই বাসা থেকে বের হয়ে যাবি আর বিয়ে না করে বাসায় ফিরবিনা।

আমার মাঝেও একটু রাগের উদয় হল।বাসা থেকে তরিঘরি করে বের হয়ে গেলাম।বাশা থেকে বের হয়েই হাটা শুরু করলাম।বাস স্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি।আজ বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিব।বাসায় যাব না।এরই মাঝে পেছন থেকে কে যেন আমাকে ডাকল।



-এই যে শুনছেন?

আমি তাকিয়ে দেখলাম সুহানা।

-কি ব্যাপার?আপ্নি এখানে?কি করছেন?

-আমি আসছিলাম একটু কাজে আমার বোনের বাসায়।এখন ফিরছি।

আজকে যেন সুহানাকে বেশি সুন্দর লাগছে।তাছারা অফিসে ওকে কখনও ওভাবে দেখাও হয়ে ওঠেনি।কেমন যেন এক ধরনের প্রেম প্রেম জেগে উঠছে।

-আপনি কি ব্যাস্ত?আমাকে একটু সময় দিতে পারবেন?

-কেন বলুন তো?

-চলুন হাঁটতে হাঁটতে বল।

-আচ্ছা চলুন।

-দেখুন সেদিনের ব্যাপারটার জন্ন্যে আমি সত্যি দুক্ষিত।আপ্নাকে অহেতুক ঝারি দিয়ে ফেলেছি।

-আরে এটা কিছুই না।আমার সমস্যা আছে।আমি অল্পতেই কেদে ফেলি।

আমি মনে মনে এরই মাঝে বেশ সাহস সঞ্চয় করে ফেলেছি।আমি ভাবছিলাম এই মেয়েটাকে বিয়ে করে ফেললেও মন্দ হয় না।যা হবার হবে।আজকে একটা চেষ্টা নিতেই হবে। এটাই উপযুক্ত সময় বলার।

আমি বললাম দেখুন আপনাকে একটা কথা বলব।

-হা বলুন

-আমি যদি আপনার ওই হাতটা ধরে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে চাই আপনি কি সুযোগ দিবেন আমাকে?

হঠাৎ আমার এই টাইপের কথা শুনে ও অবাক হয়ে গেল।কোনো কথা না বলে চুপ হয়ে গেল।

-কি হল কথা বলছ না কেন?

ও মনে হল বেশ লজ্জা পাচ্ছে। একটু সময় নিল ও।তারপর ও বলল আমি তো ছিচ কাদুনে।আপ্নি তো আমাকে একটুও পছন্দ করেন না।

-আরে বাদ দাও না অসব।আমি তো সরি বললাম।

-না আগে বল আমাকে কখনও আর ঝারি দিবা না।

-আচ্ছা কথা দিলাম।



আমি ওর হাত ধরলাম শক্ত করে।তারপর বললাম তোমাকে সারাজীবন কাদাতে চাই দাওনা একটু সুযোগ।

ও আর কোনও কথা বলল না। দাড়িয়ে থেকে শুধু আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাক্ল।আকাশে মেঘ ছিল। হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হল।আমি আর ও হাতে হাত রেখে ভিজলাম।সেই সাথে সারা শহর ও ভিজল।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:২৭

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
এত্তো সোজা ?? :|

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.