নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছেড়া-কুটি ব্লগ

আমি একা নই, পুরো পৃথিবী আছে আমার পিছনে

রহস্যময় ফয়সাল

মনুষ্যত্বের মরনসাক্ষী হতে বেচে আছি

রহস্যময় ফয়সাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বকাপ ফাইনালের সেরা পারফরমেন্স গুলো!

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৩৯

সেই চ্যাম্পিয়ন, যে পারফর্ম করে বড় মঞ্চে, আর তাদের জন্য বিশ্বকাপ ফাইনালের চেয়ে বড় জায়গা আর হয় না


সেই চ্যাম্পিয়নদের মধ্যেই কিছু মানুষ বিশ্বকাপে এমন কিছু করে গেছেন, যা তাদের নামকে স্পষ্ট অক্ষরে খোদাই করেছে ক্রিকেট ইতিহাসে। এখন পর্যন্ত হয়ে যাওয়া ১০ বিশ্বকাপ ফাইনালের সেই ১০ জনের কীর্তি তুলে ধরবো আজ, যারা বিশ্বকাপ ফাইনালে বিপক্ষ দলের সাথে গড়ে দিয়েছিলেন নিজেদের ব্যাবধান।




১৯৭৫-ক্লাইভ লয়েড (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) : সেটা ছিলো প্রথম বিশ্বকাপ, অপেক্ষাকৃত নতুন কনসেপ্ট ৬০ ওভারের ওডিআই ম্যাচ খেলা হয়েছিলো সেই বিশ্বকাপে।

হট ফেভারিট ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর অস্ট্রেলিয়া ফাইনালে মুখোমুখি। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে গ্যারি গিলমারের বোলিং তোপে ৫০ রানে ৩ উইকেট নেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের । ৫ নম্বরে নামা লয়েড খেলেছিলেন ১০ চার, ২ ছয়ে ৮৫ বলে ১০২ রানের এক বিস্ফোরক ইনিংস! ২৯৩ এর লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৮ রান পিছিয়ে শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। প্রথম বিশ্বকাপ জিতে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা, নিজ দেশে তো বটেই, ক্রিকেট বিশ্বেই হিরো বনে যান এই ব্যাটসম্যান ।


১৯৭৯-ভিভ রিচার্ডস ( ওয়েস্ট ইন্ডিজ) : দ্বিতীয় বিশ্বকাপ, এবং আবারো এক ক্যারিবিয়ান। বিশ্বকাপ ফাইনালে এবার মুখোমুখি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ইংল্যান্ড।

টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৯৯ রানে নেই ৪ উইকেট। কলিস কিং এর সাথে জুটি বাধেন ভিভ রিচার্ডস। ভিভ করেন ১৫৭ বলে ১৩৮, সাথে থাকা কলিস কিং করেন ৮৬ রান। তার ইনিংসটা এর চেয়েও গুরুত্ববহ ছিলো এজন্য যে কিং আউট হওয়ার পরে একাই টেনে নিয়ে গেছেন, যেখানে পরবর্তী ৫ ব্যাটসম্যান মিলে তুলেছেন মাত্রই ৫ রান!

জোয়েল গার্নারের বোলিং তোপে ১১ রানে ৮ উইকেট হারানো ইংল্যান্ড শেষ পর্যন্ত হেরেছিলো বড় ব্যাবধানেই।


১৯৮৩-মাহিন্দর অমরনাথ ( ইন্ডিয়া) : তৃতীয় বিশ্বকাপ জেতার জন্য ফেভারিট ওয়েস্ট ইন্ডিজ মুখোমুখি ইন্ডিয়া। কোয়ালিটি ক্যারিবিয়ান বোলারদের তোপে ইন্ডিয়া অলআউট হয় আপাত দৃষ্টিতে অপর্যাপ্ত ১৮৩ রানে, পরবর্তীতে দুর্দান্ত ক্যাপ্টেন্সিতে ম্যাচটা জিতে চায় ইন্ডিয়া।

অমরনাথ করেন ৮০ বলে ২৬ রানের এংকর ইনিংস, শ্রীকান্তর ব্যাট থেকে আসে ৩৬।

৭ ওভারে ১২ রানে ৩ উইকেট নেন অমরনাথ, মাইটি ওয়েস্টইন্ডিজকে হারিয়ে ইন্ডিয়া জেতে বিশ্বকাপ! ম্যান অফ দ্যা ফাইনাল, "ওয়ান্ডারফুল অমরনাথ"!



১৯৮৭-ডেভিড বুন ( অস্ট্রেলিয়া) : সেমিফাইনালে ইন্ডিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে ইংল্যান্ড। ফাইনালে ৭০০০০ ইন্ডিয়ানের সাপোর্ট ছিলো অস্ট্রেলিয়ার প্রতি। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়া তোলে ৫ উইকেটে ২৫৩। ফর্মে থাকা বুন করেন ৭৫ রান।

শেষতক ইংল্যান্ড হারে মাত্র সাত রানে!


১৯৯২-ওয়াসিম আকরাম ( পাকিস্তান) : '৮৭ এর ফাইনালের আক্ষেও ঘোচাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালে মাঠে নামে ইংল্যান্ড। গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানকে ৭৪ রানে একবার অল-আউট করায় ফুরফুরে মেজাজে খেলতে নামে ইংল্যান্ড।

এবারও পাকিস্তান একইভাবে শুরু করেছিলো, ২৪ রানেই নেই ২ ওপেনার! মিডল অর্ডারে ইমরান, মিয়াদাদ, ইনজামামের যথাক্রমে ৭২,৫৮,৪২ এর পর ৩৩ রান করে ইনিংসের শেষ করেন ওয়াসিম আকরাম।

ইয়ান বোথামকে ডাকে আউট করার কিছুক্ষন পরই পরপর ২ বলে নেন আরো ২ উইকেট! ৪৯-৩ এ বোলিং কোটা শেষ করা ওয়াসিম জিতে নেন ম্যান অফ দ্যা ম্যাচও।


১৯৯৬-অরভিন্দ ডি সিলভা ( শ্রীলংকা) :: টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া পন্টিং, মার্ক টেলরের ইনিংসগুলোর মাধ্যমে তোলে ৭ উইকেটে ২৪১; ৪২ রানে ৩ ঊইকেট নেন অধিনায়ক অরভিন্দ ডি সিলভা।

১৯৮৭ এর চ্যাম্পিয়নরা জেতার পথেই ছিলো, কম রানেই হারায় দুই ওপেনারকে হারানো শ্রীলংকাকে আবারো টেনে তোলেন অধিনায়ক অরভিন্দ। নটআউট ১০৭ করে দলকে জিতিয়ে ফেরেন নন্দিত এই ব্যাটসম্যান । শ্রীলংকাকে এনে দেন পরম আরাধ্য প্রথম বিশ্বকাপ।



১৯৯৯-শেন ওয়ার্ন (অস্ট্রেলিয়া) :: আরো একটি বিশ্বকাপ ফাইনাল, এবং আরো একবার অস্ট্রেলিয়া। নড়বড়ে ভাবে বিশ্বকাপ শুরু করা অস্ট্রেলির প্রতিপক্ষ হট ফেভারিট পাকিস্তান।

সেমিফাইনালে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচ জিতিয়ে আত্মবিশ্বাসী শেন ওয়ার্ন । ফাইনালে তার টার্ন আর গুগলীর কোন জবাবই খুজে পায়নি পাকিস্তান। ১৩২ রানে শেষ হওয়া পাকিস্তানকে মাত্র ২১ ওভারেই জয় তুলে নেয়।

ম্যাচসেরা হওয়া ওয়ার্ন নেন ৩৩ রানে ৪ উইকেট।



২০০৩-রিকি পন্টিং ( অস্ট্রেলিয়া) :: টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের পথে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি ইন্ডিয়া। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে আসা অস্ট্রেলিয়া দুর্দান্ত শুরু পায় গিলির ৪৮ বলে ৫৭তে, এরপর মাঠে নামেন রিকি। আক্ষরিক অর্থে ঐ দিন যার ব্যাটিংয়ের সামনে অসহায় হয়ে পরে ইন্ডিয়া। ১২১ বলে ১৪০ করে অপরাজিত থাকেন তিনি, তার সবচেয়ে স্মরনীয় একটি ইনিংস। কিংবা হয়তো ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে স্মরনীয় ইনিংস, অনেকের মতেই!

৩৫৯-২ পেরোতে যাওয়ার শুরুতেই প্রথম ওভারেই নেই শচীন, পুরো ম্যাচে বলতে গেলে কখনোই আর দাড়াতে পারেনি ইন্ডিয়া, কখনোই মনে হয়নি তারা হয়তো ম্যাচটি জিতবে! ২৩৪ এ অলআউট হয় ইন্ডিয়া। অস্ট্রেলিয়া পায় বিশ্বকাপ ফাইনালে ১২৫ রানের জয়।


২০০৭-এডাম গিলক্রিস্ট (অস্ট্রেলিয়া) :: পুরোটা বিশ্বকাপে আধিপত্য ধরে রেখে ফাইনাল খেলতে নামে অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলংকার বিপক্ষে।

আর দশটা বৃষ্টিমুখর ক্যারিবিয়ান দিন ছিলো না সেটা, সে রাতে যে একজন বসে আছেন ইতিহাস নতুন করে লিখতে! হ্যা, ওপেনিংয়ে নামা গিলি ৩৮ ওভারে কমিয়ে আনা ম্যাচের শুরুটা করেছিলেন তার মতই। আগ্রাসী, প্রতিপক্ষকে দুমড়ে দেওয়া শুরু। আগের দুই বিশ্বকাপ ফাইনালের ফিফটি জ্বালা এবার মেটালেন ৭২ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে! সেখানেও থামেননি, ১০৪ বলে ১৪৯ করেছেন।
অস্ট্রেলিয়া শেষতক তোলে ৪ উইকেটে ২৮১।

আরো বৃষ্টির কারনে শ্রীলংকার টার্গেট কমে দাড়ায় ৩৬ ওভারে ২৬৯। ২য় উইকেট জুটিতে বরাবরের মতই সাঙ্গাকারা-জয়াবর্ধনের বড় জুটি। তারপর শুধু শ্রীলংকার তাসের ঘরের মত ভেঙে যাওয়া!

কেনিংটন ওভালের সেই ম্যাচটা ছিলো অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশে, কিন্তু অন্ধকারটাকে অন্ধকার লাগেনি আলো ঝকমকে এক ইনিংসের জন্য। এতই সুন্দর ছিলো দেখতে, সেইনিংসটি! পুরো একটা আর্টিকেল এ তার বর্ননা সম্ভব নয়!



২০১১-মাহেন্দ্র সিং ধোনী ( ইন্ডিয়া) :: ২৮ বছরের ওয়ার্ল্ডকাপ পুনরুদ্ধারের জন্য যতটা নয়, তারচেয়ে বেশী ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ডকাপ চাইছিলো এক গ্রেটের জন্য, এক মহানায়কের জন্য, "শচীন টেন্ডুলকার"।

ঘরের মাঠে ফাইনালে প্রতিপক্ষ টসে জিতে ব্যাট নেওয়া শ্রীলংকা তোলে ৬ উইকেটে ২৭৪, আগের বিশ্বকাপ ফাইনালের ফিফটিয়ান জয়াবর্ধন এবার পান সেঞ্চুরির দেখা।

চেস করতে নেমে ইন্ডিয়ার শুরুটা ভালো ছিলো না মোটেই, ভিরুর ডাকের পর শচীনও দ্রুত ফেরেন প্যাভিলিয়নে । ফলশ্রুতিতে ইন্ডিয়া ২৫/৩! ভিরাট কোহলি আয়ট হওয়ার সময়েও ইনিংসটা ততটা ভালো দেখাচ্ছিলো না, ১১৩/৪।

ধোনীর শুরুটা মোটেই ধোনীসুলভ ছিলো না, ক্রিজে নামার প্রথম দশ ওভারে কোন বাউন্ডারি নেই! ঠিকই ঘুরে দাড়ালেন যখন প্রয়োজন ২৪ বলে ২৭ রান। কিছুক্ষন পরেই স্কোরবোর্ডে দেখালো ১২ বলে প্রয়োজন ৫! আর তারপর সেই ছয়, ক্যাপ্টেনের ছয়ে বিশ্বকাপ জয়। ৯১ রানে অপরাজিত থাকা এই ইনিংস তাকে অন্তত ভারতীয়দের কাছে নিয়ে গেছে শচীনের কাতারে!
আহা, বিশ্বকাপ জয়!



এই ছিলো আজকের সেই ইনিংসগুলো , আগামীতে আবার ফিরবো আরো কিছু রেকর্ডস নিয়ে!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫০

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: ভাল পোস্ট।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪৫

রহস্যময় ফয়সাল বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য, ভালো থাকবেন। :)

২| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৪

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:

দারুণ পোস্ট।+++

বার বার পড়লেও মজাই লাগে আবার পড়তে। :)

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩৪

রহস্যময় ফয়সাল বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ , প্রথমত পড়ার জন্য। :) এবং দ্বিতীয়ত প্লাসের জন্য :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.