নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সে এক বিরাট ইতিহাস.....

ফজলুভাই

আমি বাংলার ফজলু ভাই... আমি ভাই চিকিৎসার অতীত.।

ফজলুভাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিনি ছোট গল্প ২

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০২

রবীন্দ্রনাথের কবিতাটি শেষ করে ক্লাসে তার বর্ণনা দিতে লাগলেন রফিকুল ইসলাম বেশ সুন্দর করে।
"উনার মত মহান কবি নিজেকে যেখানে তুচ্ছ মনে করেছেন, নিজে মানুষের সাথে মিশতে পারেননি বলে উল্লেখ করেছেন। সেখানে আমরা কে? আমাদের মানুষের সাথে মিশতে হবে অনেক অনেক বেশি। ছোট-বড় বলে কেউ নেই। একজন দারোয়ান এবং একজন অফিসার এর সাথে সমান ব্যাবহার করতে হবে, সকল ধর্মের মানুষকে সম্মান করতে হবে.................."

বাংলা শিক্ষক হিসেবে বেশ নামডাক ও আছে রফিকুল ইসলামের। সকলে তাকে সম্মানের চোখে দেখে। এলাকায় কোন বিচার আচার বসলে তার কাছে সকলে মতামত গ্রহন করেন। কারো সাথে দেখা হলে দুই-চারটা জ্ঞানের আলাপ করে দেন, নিজেকে তিনিও সেলিব্রিটি লেভেলে রাখেন। কিন্তু এলাকার উঠতি তরুন রা কিছুটা নাখোশ তার উপর, বেশ কয়েকবার তরুনদের নানা উদ্যোগ এ সাপোর্ট দিয়েও শেষ মুহূর্তে সরে গিয়ে তাদের সমস্যায় ফেলে দেয়ার ঘটনা বেশ ঘটেছে। এরকম টুকটাক সরে যাওয়ার ঘটনা রফিক সাহেবের কিছু আছেই সবার সাথে, এ বাদে রফিক সাহেব সকলের কাছে সম্মানি মানুষ।

আজকের ক্লাস টা শেষ করে রফিক সাহেব বিশেষ একটা তৃপ্তি অনুভব করলেন। ক্লাস শেষ করে ডিপার্টমেন্ট পর্যন্ত হেটে যেতে যেতে নিজের অজান্তেই বেশ কয়েকবার বুক ভরে শ্বাস নিলেন তিনি। ডিপার্টমেন্ট এ গিয়ে দেখলেন কেউ নেই, ঈদের আগে শেষ ক্লাস, তাই সকলেই চলে গিয়েছে আগে আগে, তার থাকতে হবে কারন প্রিন্সিপাল স্যার বিশেষ তলব করেছেন কলেজ এর সব ক্লাস শেষে।
ডিপার্টমেন্ট এ ঢুকে নিজের চেয়ারে শান্তিতে গা এলিয়ে দিলেন তিনি। সেইসময় দরজায় টোকা পরলো।
"কে?"
"আমি স্যার। সমীরন।"

সমীরন কলেজের সুইপার। বাথরুম পরিষ্কার করে। কিন্তু চরিত্র বেশ ভাল বলে সকলে তাকে পছন্দ করে। রফিক সাহেব তাকে ভেতরে ঢোকার অনুমতি দিলেন।
"কি ব্যাপার সমীরন?"
"স্যার, ঈদের সময় তো হয়েই গেল। স্যার আপনি তো আপনার প্রতিবেশি সকলকে বেশ উপহার দিচ্ছেন, আমার মা বেশ অসুস্থ। যদি আপনার ফিতরা যা হয় তা থেকে যদি কিছু দিতেন তাহলে ঔষধ কিনতে পারতাম কিছু।"
বলেই স্যারের পায়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পরলো সমীরন।

"ছাড় ব্যাটা মালাউনের বাচ্চা। আমার অত দামের প্যান্ট টা দিলি তো নোংরা করে! মাত্র বাথরুম সাফ করে এসেছিস! এহহে করলি কি এটা?"
"আর আমি মালাউন কে কেন ফেতরা দিতে যাব? তোর ধর্ম কে সাহায্য করলে আল্লাহ আমার উপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন।"

এমন সময় দরজার কাছ থেকে আওয়াজ আসলো, "স্যার আসতে পারি?"
রফিকুল সাহেব দেখলেন দরজায় দাঁড়ানো তার ৩জন ছাত্র, তাদের আসতে বলেছিলেন অ্যাসাইনমেন্ট সাইন করিয়ে নিতে! তাহলে তারা কি সব দেখে ফেললো? তারা দেখলো যে তিনি সমীরনকে লাথি মেরে সরিয়ে দিচ্ছেন? তাহলে আজকে যে তাদের ক্লাসে শেখানো হল সকলকে সমান চোখে দেখতে? তারা কি সকলকে বলে দেবে আজকের কথা?


.........স্ত্রীর ডাকে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল রফিকুল সাহেবের। উঠে দেখলেন ৭টা বাজে, এখনি কলেজের জন্য রেডি হতে হবে! তাহলে পুরোটা স্বপ্ন ছিল?
যাক, বাচা গেল এবারের মত! ইজ্জত টা বেচে গেল। কিন্তু এখন থেকে মুখে যে কথা বলা ঐ কাজ করে দেখাতে হবে। মনে মনে এই পন করে নিলেন রফিক সাহেব।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪৩

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: বেচারা রফিক সাহেব!

ভাল লেখেছেন।

২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সুন্দর অনু গল্প| রফিক সাহেবেরা এখন সর্বত্র| রফিক সাহেবে স্বপ্নের মতই সত্য এখন ব্যাপারগুলি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.