![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আধুনিক জীবনে যানবাহনের বিকল্প নেই। ঘর থেকে বেরুলেই কমবেশি সবাইকে চড়তে হয় কোনো না কোনো যানে। অথচ আমাদের জীবনের এই জরুরি অনুষঙ্গটি পথেঘাটে প্রায়ই আমাদের উটকো যন্ত্রণা আর আশংকা তৈরি করে।
এই তো পুলিশে ধরল, লাইসেন্স নিয়ে ঝামেলা লাগল নতুবা দুম করে পেছন থেকে আপনার গাড়িকে ধাক্কা দিল আরেকটি গাড়ি। এসবের সাথে দুর্ঘটনার ভয় তো থাকেই। একটু সচেতনতা আর যুগোপযোগী মোটরযান আইনের যথার্থ বাস্তবায়নে বেঁচে যেতে পারে অনেক মূল্যবান প্রাণ।
সড়কে গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ, গাড়ির চালক ও মালিকের দায়বদ্ধতা সৃষ্টি করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে মোটরযান আইনের বিভিন্ন বিধান থাকলেও বাস্তবে এর কোনো প্রয়োগ নেই। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে গাড়ির চালকদের বেশির ভাগেরই তেমন কোনো ধারণা থাকে না। ফলে আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম মোটরযান আইন করা হয় ১৯৩৯ সালে। এরপর সময়ের প্রয়োজনেই এই আইনের আরো একটি অধ্যাদেশ ১৯৮৩ সালে পাস করা হয়, কাজেই সেটাও যে এখন আদিযুগের; তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সে যা হোক, কাগুজে আইনের সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে আলাপ থাক বরং বাংলাদেশের কিছু গুরুত্বপুর্ণ মোটরযান আইন জেনে রাখুন। রাস্তাঘাটে উপকারে আসতে পারে।
★আইনে চালকের যোগ্যতা-
মোটরযান আইনের বিধান অনুসারে ২০ বছরের নিচে কোনো ব্যক্তি পেশাদার চালকের আসনে বসতে পারবে না।
★অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চালানো একটি দণ্ডনীয় অপরাধ।
আইনের ১৩৮ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি লাইসেন্স ছাড়া কোনো মোটরযান অথবা যাত্রীবাহী মোটরযান চালালে বা অন্যকে চালনা করতে দিলে সর্বোচ্চ ৪ মাসের কারাদণ্ড অথবা ৫০০ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। চালকের পাশাপাশি সহকারী চালকের জন্যও লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক।
আইন অনুসারে এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়াই অভিযুক্ত চালককে গ্রেপ্তার করতে পারেন।
★গাড়ির শ্রমিক গাড়িতে চালকের পাশাপাশি এক বা একাধিক শ্রমিক থাকে। যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া আদায়কারীকে আমরা কন্ডাক্টর বলি। গাড়ির কন্ডাক্টর হতে হলে ১৮ বছর এবং কন্ডাক্টরের লাইসেন্স থাকতে হবে। পঙ্গু বা রোগাক্রান্ত কেউ কন্ডাক্টর হিসেবে গাড়িতে কাজ করতে পারবে না।
★নিবন্ধন বাধ্যতামূলক-
মোটরযান আইন অনুযায়ী মোটরযান নিবন্ধন করা অবশ্যই প্রয়োজন। নিবন্ধিত না হয়ে থাকলে এবং নিবন্ধন চিহ্ন যথাযথভাবে গাড়িতে লাগানো না থাকলে ওই মোটরযানে যাত্রী বা মাল পরিবহন বা অপর কোনো স্থানে চালানো যাবে না। এ ক্ষেত্রে নিবন্ধন ছাড়া গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে।
★নির্ধারিত গতি রাস্তার পাশে গাড়ির গতিসীমা সংক্রান্ত নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও অনেক চালক তা মানেন না এবং নিজেদের খেয়াল খুশিমতো গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন।
মোটরযান আইনের ১৪২ নং ধারা অনুসারে, এভাবে দ্রুতগতিতে কোনো মোটরযান চালালে অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রথমবার অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১ মাস কারাদণ্ড কিংবা সর্বাধিক ৩০০ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
শুধু তাই নয়, পরে অনুরূপ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদণ্ড কিংবা সর্বাধিক ৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অনধিক ১ মাস মেয়াদের জন্য লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে।
★রাস্তার বিপজ্জনক অবস্থায় যেমন- ঢালু জায়গায় গাড়ি না থামাতে ড্রাইভারদের ওপর দায়িত্ব আরোপ করা হয়েছে। গাড়ির চালক বা কন্ডাক্টর চলন্ত গাড়িতে কিংবা বাম্পার বা ছাদে কিংবা ভেতর ব্যতীত অন্য কোনো স্থানে কোনো ব্যক্তিকে আরোহণ করতে দিতে পারবেন না এবং অনুমোদিত সংখ্যার চেয়ে বেশি যাত্রী নিতে পারবেন না।
এই আইনভঙ্গে প্রথমবারের জন্য সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় এবং পরবর্তী সময়ে একই অপরাধের জন্য সর্বাধিক ৬ মাস কারাদণ্ড অথবা সর্বাধিক ৫ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।
★বাম দিকে চলবে গাড়ি -
আইন অনুযায়ী গাড়ির চালক যতখানি সম্ভব রাস্তার বামদিকে নির্ধারিত লেনে গাড়ি চালাবেন এবং বিপরীত দিক থেকে আসা সব যানবাহনকে ডান দিক দিয়ে যেতে দেবেন।
★চালক যদি কোনো মিছিল কিংবা একদল সৈন্য বা ওই রাস্তায় কর্মরত পুলিশের সম্মুখীন হন কিংবা রাস্তা মেরামতে নিয়োজিত শ্রমিকদের পাশ দিয়ে যান তাহলে গাড়ির গতি ঘণ্টায় ১৫ মাইলের বেশি করা যাবে না। চালক এমনভাবে গাড়ি চালাবেন, যাতে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। দুটি গাড়ি অতিক্রম করার সময় পরস্পরের গায়ে যেন না লাগে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
★স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল এলাকা দিয়ে গাড়ি যাওয়ার সময় চালককে সব দিকে নজর রাখতে হবে এবং নির্দিষ্ট গতিসীমার চেয়ে বেশি গতিসীমায় গাড়ি চালানো যাবে না।
★এছাড়া যেসব মোটরযান সর্বসাধারণের ব্যবহার্য স্থানে চালানো যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে-
১. নিবন্ধনপত্রে মালামাল বা যাত্রী বোঝাইবিহীন অবস্থায় যে ওজন নির্ধারিত হয়েছে তার চেয়ে অধিক ওজনসম্পন্ন গাড়ি।
২. নিবন্ধনপত্র অনুযায়ী যে ওজন নির্ধারিত হয়েছে তার চেয়ে অধিক ওজনসম্পন্ন গাড়ি।
৩. নিবন্ধনপত্রে এক্সেলের যে সর্বোচ্চ ওজন নির্ধারিত হয়েছে তার চেয়ে অধিক এক্সেল ওজনসম্পন্ন গাড়ি।
★যত্রতত্র গাড়ি থামানো যেখানে সেখানে গাড়ি থামানো যাবে না বা যাত্রী ওঠানামা করানো যাবে না। নির্দিষ্ট এলাকা ছাড়া গাড়ি দাঁড় করালে জরিমানা এবং নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া অন্য স্থান থেকে যাত্রী উঠালে জরিমানা দিতে হবে।
★নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে ৫০ টাকা এবং সময়সীমা প্রদর্শন না করে গাড়ি চালালে ৩০ টাকা জরিমানা দিতে হবে।
★চালককে বাধ্যতামূলক ট্রাফিক সংকেত মেনে চলতে হবে। ট্রাফিক পুলিশ চাইলে গাড়ির কাগজপত্র দেখাতে চালক বাধ্য থাকবেন।
★রাস্তায় পথচারী পারাপারের জন্য নির্ধারিত সীমানার ওপর দিয়ে পথচারী পারাপারের সময় চালককে নির্দিষ্ট লাইন বরাবর অবশ্যই গাড়ি থামাতে হবে।
★মদ্যপ অবস্থায় বা মদ পান করে গাড়ি চালানো যাবে না।
মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালালে প্রথমবার অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৩ মাসের কারাদণ্ড কিংবা সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং দ্বিতীয় ও পরবর্তী সময়ে অনুরূপ অপরাধ করলে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড কিংবা ১ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
উভয়ক্ষেত্রেই চালকের লাইসেন্স স্থগিত করা হবে।
★আরো কিছু বিধিনিষেধ ও সাজা-
গাড়ির নিবন্ধন, ফিটনেস অথবা রুট পারমিট ছাড়া গাড়ি ব্যবহার করলে প্রথমবার অপরাধের জন্য ৩ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা ২ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন মালিক বা চালক। পরবর্তী সময়ে অনুরূপ অপরাধ করলে সর্বাধিক ৬ মাসের কারাদণ্ড অথবা সর্বাধিক ৫ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডই হতে পারে।
★যেখানে ওভারটেকিং নিষিদ্ধ সেখানে ওভারটেক করলে চালককে ১০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৮
মার্কো পোলো বলেছেন:
ঠিক বলেছেন। আমাদের ট্রাফিক বিভাগ কঠোর ও দুর্নীতিমুক্ত না হলে আইনের মতো আইন থেকে যাবে, কাজের কাজ কিছুই হবে না। লেগুনার বেশিরভাগ কন্ডাক্টরদের দেখি অল্পবয়স্ক। এক্ষেত্রে দেখভালের দায়িত্ব প্রশাসনের। প্রশাসন ইচ্ছা করলে বন্ধ করতে পারে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩১
বিলিয়ার রহমান বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৯
মার্কো পোলো বলেছেন:
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
৩| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১২
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: কিছুটা জানা হলো
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৬
মার্কো পোলো বলেছেন:
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
৪| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৪:৪৪
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
এই দরকারি এই আইনগুলো আসলে ঠিক মানে কয়জন??
০৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:০১
মার্কো পোলো বলেছেন:
এটিই তো আমাদের সমস্যা। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশের আইন কম যুগোপযোগী নয়, কিন্তু অন্য দেশের তুলনায় আইন মেনে চলার প্রবণতা খুবই কম। হাজার রকমের আইন থাকুক, তবুও আমাদের জন্য তেমন লাভ হবে না, যদি আইন না মানা হয়।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩১
করুণাধারা বলেছেন: খুব দরকারি বিষয়ে লিখেছেন। এইসব আইনের কিছুই জানা ছিল না। চালকেরা দূরে থাক আমার ধারণা পুলিশও এইসব আইন জানে না। গতিসীমা না মানার জন্য পুলিশ ধরেনা, পুলিশ ধরে কেবল টাকা খাবার জন্য। সেদিন দেখলাম পুলিশের সামনে দিয়ে একটা ১৪/১৫ বছরের ছেলে লেগুনা চালাচ্ছে, তার ডান হাতটা লুলা। দেখে মনে হল লেগুনার কন্ডাকটর মিরপুর রোডে চালনা শিখছে। লেগুনার কন্ডাকটরদের কারও বয়স দেখে ১৩ বছরের বেশি মনে হয় ন্স। এক্ষেত্রে আইন কি বলে?