![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তারাবীর নামাযের পরে আজ মনটাই খারাপ হয়ে গেলো
ছোটবেলায় জাকির হোসেন রোডে আমাদের ব্লকে একটা বাড়ি ছিলো যার মালিক ছিলেন বিহারী। ওই বিহারী বাড়িতে বিশাল একটা তেতুল গাছ ছিলো, ডালপালা তার বাউন্ডারী দেয়াল টপকে এসে রাস্তাকে ছায়া দিতো ।ভোরে যখন স্কুলে যেতাম আর বিকেলে যখন মাঠে, পাকা তেতুল দেখে ছিড়তে ইচ্ছে হোতো । টক খাওয়ার অভ্যাস ছিলো না কোনো কালেই, কিন্তু গাছে পাকা ফল দেখলে এমনিতেই ঢিল মারতে ইচ্ছে করে ।কিন্তু কখনই ঢিল ছুড়তাম না । কারন বাবা মার স্পষ্ট কথা ছিলো, যা তোমার নয় তা নেয়ার চেষ্টা করা অন্যায়। বাবা বর্ননা করতেন তার পরিবারের লোভীদের কি কি শাস্তি মৃত্যুর পরে ঈশ্বর দিবে আর মৃত্যুর আগে তিনি দিবেন । দুটোই সমান ভয়ানক ছিলো শৈশবে , তাই আর কখনই তেতুল গাছের দিকে ঢিল টিল ছুড়তাম না ।
এটার নাম সামাজিকতার শিহ্মা , যার সুচনা সবসময় পরিবার থেকে । প্রাতিস্ঠানিক শিহ্মার সাথে এটা ডেভেলপ করতেও পারে, নাও করতে পারে ।
আরেকটু বড় হয়ে খেয়াল করলাম বিহারী বাড়িতে অসাধারন সুন্দরী তিন কন্যার বসবাস । দুপুরে তিন বোন দোতালায় বসে গল্প করতো, বাসার সামনে দিয়ে অতিব ধীর গতিতে হেটে যাওয়া ছোট্ট আমার দিকে একবার তাকালেই সেই দিনটা ধন্য । কিন্তু এর বেশী কখনই কিছু করা হয়নি, সেই যে বাবার তেতুল সঙ্ক্রান্ত হুমকি...
অন্যের গাছের তেতুল দেখে আমার মুখে জল আসে এটা আমার সমস্যা , আমার এনিম্যাল ট্যাম্পটেশানকে আমারই নিয়ন্ত্রন করতে হবে । সেজন্য গাছ কেটে ফেলার চেষ্টা করবো এটা কেমন কথা ?
নামাযের পরে আজ অনেককেই দেখলাম আহমেদ শফী সাহেবের তেতুল কথন নিয়ে আলোচনা করতে । এধরনের আলোচনায় কখনো মন্তব্য করি না, শুধু শুনি ।
শফী সাহেব চিটাগাংয়ের এক অজপাড়াগায়ে ওয়াজে বলেছেন গার্মেন্টসের মেয়েরা জেনা করে করে টাকা আয় করে, মেয়েদের ক্লাস ফোরের বেশী পড়ানো উচিত না, মেয়েদের দেখলে ছেলেদের বিবাহ করতে ইচ্ছা হয় তাই মেয়েদের ঘরের বাইরে না যেতে দেয়াই উচিত । আমি স্পষ্ট শুনেছি, ওয়াজে এই কথা গুলোই ছিলো ।
উনি বৃদ্ধ মানুষ , জায়গাটা ছিলোও একটা গন্ডগ্রাম তাই এইকথা গুলো বলা অপরাধ হয়নি, কিন্তু তিনি ভয়ানক ভুল কথা বলেছেন । বিপরীত লিঙ্গের প্রতি লোভ সৃষ্টি হলে সেই লোভ দমন করতে না পারাটা পশুত্বের লহ্মন , আশরাফুল মাখলুকাতের লহ্মন নয় । গার্মেন্টসের মেয়েগুলোর অনেকের বিয়েই হয় এই কারনে যে তারা আয় করছে, ছোট চাকরী করার স্বামীর একার উপার্জনে কি আর শ্বশুর শ্বাশুরী সহ সংসার চলে দ্রব্যমুল্যের এই আকাশযাত্রার সময়ে? ঢালাও ভাবে সব মেয়েদের পোষাকের ব্যাপারে কথা তোলার আগে চিন্তা করা উচিত বাংলাদেশের কয়জন মেয়ে আপত্তিকর পোষাক পরে? আর পোষাকই যদি মুল ইস্যু হতো তাহলে গত মাসে পাচঁ বছর বয়েসী মেয়েটা পাশবিক নির্যাতনের শিকার হলো কেন্?
অনেক শিহ্মিত মানুষকে দেখলাম শফী সাহেবের সমর্থনে অদ্ভুত সব যুক্তি উপস্থাপনে । মনটাই খারাপ হয়ে গেলো ।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৬:৩২
খেয়া ঘাট বলেছেন: শফী সাহেব চিটাগাংয়ের এক অজপাড়াগায়ে ওয়াজে বলেছেন গার্মেন্টসের মেয়েরা জেনা করে করে টাকা আয় করে, মেয়েদের ক্লাস ফোরের বেশী পড়ানো উচিত না, মেয়েদের দেখলে ছেলেদের বিবাহ করতে ইচ্ছা হয় তাই মেয়েদের ঘরের বাইরে না যেতে দেয়াই উচিত । আমি স্পষ্ট শুনেছি, ওয়াজে এই কথা গুলোই ছিলো - আমি নিজেও শুনেছি।
এর পর বলা হলো - এগুলো উনার নিজের না। এটাও একটা মিথ্যা।
অনেক শিহ্মিত মানুষকে দেখলাম শফী সাহেবের সমর্থনে অদ্ভুত সব যুক্তি উপস্থাপনে । মনটাই খারাপ হয়ে গেলো - আমারও আপনার মতো অবস্থা।