নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানব মঙ্গল আমার একান্ত কাম্য

মহাজাগতিক চিন্তা

একদা সনেট কবি ছিলাম, ফরিদ আহমদ চৌধুরী ছিলাম, এখন সব হারিয়ে মহাচিন্তায় মহাজাগতিক চিন্তা হয়েছি। ভালবাসা চাই ব্লগারদের, দোয়া চাই মডুর।

মহাজাগতিক চিন্তা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঈশ্বরের স্বামী বা স্ত্রী ও সন্তান থাকার দাবী অযৌক্তিক ও অবাস্তব দাবী

২০ শে জুন, ২০২১ দুপুর ১২:১৬



ঈশ্বর মানে বড়। অসীম > সসীম। সুতরাং ঈশ্বর অসীম। স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে দৈহিক সম্পর্ক থাকে। ঈশ্বর কর্তৃক যে প্রকৃতি উপস্থাপিত তাতে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় সমগোত্রে ও বিপরীত লিঙ্গে। যেমন, পশু-পাখিদের সমগোত্রে ও বিপরীত লিঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক বিদ্যমান। কাক-কোকিল, পুংলিঙ্গ+পুংলিঙ্গ, স্ত্রীলিঙ্গ+স্ত্রীলিঙ্গ কোন দৈহিক সম্পর্ক নেই। কাক+কাক, পুংলিঙ্গ+স্ত্রীলিঙ্গ দৈহিক সম্পর্ক বিদ্যমান। সুতরাং ঈশ্বর অসীম বিধায় তাঁর স্বামী বা স্ত্রী তাঁর সমগোত্রীয় অসীম হবেন।ঈশ্বরের স্বামী বা স্ত্রী তাঁর অসমগোত্রীয় কোন সসীম হবে না।কিন্তু অসীম একাধীক হয় না। কারণ অসীমকে একাধীক করতে এর সীমা দিতে হয়। আর সীমা দিলে অসীম আর অসীম থাকে না, বরং সসীম হয়ে যায়। সুতরাং অসীমের সংখ্যা এক। সুতরাং অসীমের স্বামী বা স্ত্রী হতে দ্বিতীয় কোন অসীম নেই। সুতরাং অসীমের স্বামী বা স্ত্রী থাকা অবাস্তব বা কাল্পণিক বিষয়। সুতরাং যে সব ধর্মে ঈশ্বরের স্বামী বা স্ত্রী সাব্যস্ত আছে সে সব ধর্ম অবাস্তব বা কাল্পণিক ধর্ম। সে সব ধর্ম সত্য ধর্ম নয়।
স্বামী বা স্ত্রী হতে নারী বা পুরুষ হতে হয়। নারী বা পুরুষ হতে এ সংক্রান্ত যৌনাঙ্গ থাকতে হয়। যৌনাঙ্গ থাকার জন্য দেহ থাকতে হয়। দেহ থাকতে আকার থাকতে হয়।অথচ ঈশ্বর নিরাকার। কারণ ঈশ্বর অসীম। অসীমের আকার থাকে না। কারণ আকারের সীমা থাকে। অসীমের সীমা দিলে অসীম আর অসীম থাকে না, বরং সসীম হয়ে যায়। সুতরাং অসীম হিসাবে ঈশ্বরের সীমা নেই, আকার নেই, দেহ নেই, যৌনাঙ্গ নেই, স্বামী বা স্ত্রী নেই।
সূরাঃ ১৯ মারিয়াম, ১৬ নং ও ১৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৬।বর্ণনা কর এ কিতাবে উল্লেখিত মারইয়ামের কথা, যখন সে তার পরিবার হতে পৃথক হয়ে নিরালায় পূর্ব দিকে এক স্থানে আশ্রয় নিল।
১৭। অতঃপর তাদের থেকে সে পর্দা করলো। অতঃপর তার নিকট আমরা আমাদের রূহকে পাঠালাম, সে তার নিকট পূর্ণ মানব আকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করলো।
* নিরাকার ঈশ্বর আকারে আত্মপ্রকাশ করেন, তখন তাঁকে দেখা যায়। রূহ যখন আকার ধারণ করেননি তখন হযরত মরিয়ম (আ.) তাঁকে দেখেননি। রূহকে যেন হযরত মরিয়ম (আ.) দেখতে পান সেজন্য রূহ তাঁর নিকট পূর্ণ মানব আকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। আমাদের কাঁধের ফেরেশতা আমরা দেখি না নিরাকার বলে। তাঁরাও আমাদের নিকট পূর্ণ মানব আকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করলে আমরা তাঁদেরকে দেখতে পেতাম।আমাদের রূহও নিরাকার। সেজন্য মৃত্যুর সময় সবার চোখের সামনে দিয়ে মানুষের রূহ দেহ ছেড়ে বেরিয়ে যায় কিন্তু কেউ তা’ বেরিয়ে যায়। এ নিরাকার রূহের কারণে আমাদের মানুষ পরিচয়। এটা বেরিয়ে গেলে আমাদেরকে লাশ বলা হয়। রূহের জগতে আমাদের আকার ছিল না। কবর জগতে খুব কম লোকের আকার থাকে, বরং মৃত্যুর পর প্রায় সবার আকার বিনষ্ট হয়। তখন আল্লাহর জিম্মায় সবার রূহ সংরক্ষিত থাকে। তখন তারা নিরাকার অবস্থায় থাকে। আল্লাহ এবং অন্য নিরাকারের তফাৎ আল্লাহ অসীম নিরাকার, কিন্তু অন্য সব প্রাণীর প্রাণ সসীম নিরাকার। নিরাকার সসীম ও অসীম উভয় হতে পারে। কিন্তু আকার অসীম হতে পারে না। সেজন্য যারা বলে আল্লাহ আকার তারা আল্লাহর অসীমত্ব অস্বীকারকারী কাফির। আকার অসীম না হতে পারলেও অসীম আকার হতে পারে। তখন অসীম আকার+নিরাকার অবস্থায় বিদ্যমান থেকে অসীম থাকে। পানি একই সময়ে পর্বতে বরফ এবং পৃথিবীর সর্বত্র জলীয়বাস্প হিসাবে বিদ্যমান থেকে একসঙ্গে আকারে ও নিরাকারে বিদ্যমাণ থাকে। কিন্তু পানি অসীম নয়। সেজন্য পানি আল্লাহর সার্দশ্য নয়। পানি সসীম আকার+সসীম নিরাকার=সসীম। আল্লাহ সসীম আকার+অসীম নিরাকার=অসীম। সমীকরণে আল্লাহর একটি মান অসীম থাকায় তিনি অসীম। সমীকরণে পানির কোন মান অসীম না থাকায় পানি অসীম নয়।
যারা বলে আল্লাহ নিরাকার নয় তারা বলে আল্লাহ অসীম নয়। কারণ কোন আকার অসীম হতে পারে না। তারা আল্লাহু আকবার কথাটি অস্বীকার করে। কারণ আল্লাহু আকবার মানে আল্লাহ বড়।অসীম > সসীম বিধায় আল্লাহ শুধুমাত্র আকার নন, বরং কোন কোন সময় তিনি আকার+নিরাকার=অসীম। আর কোন কোন সময় তিনি শুধু অসীম নিরাকার হিসাবে অসীম। তারমাণে আল্লাহর নিরাকার অবস্থা সর্বদা বিদ্যমাণ। কিন্তু আল্লাহর আকার যখন তিনি আকার ধারণ করেন তখন বিদ্যমাণ। যখন তিনি আকার ধারণ করেন না, তখন তাঁর আকার বিদ্যমান থাকে না। আল্লাহ সর্বদা আকারে বিদ্যমাণ থাকতে বাধ্য নন। আল্লাহ আরশে বসেছেন বিধায় কেউ কেউ বলে তাঁর আকার আছে, তিনি নিরাকার নন। কিন্তু তিনি সবসময় আরশে বসেই থাকেন এ কথা তাকে কে বলল? আর বসা অবস্থায় তাঁর সবটা আরশে আটকা পড়েছে এটাই বা তাকে কে বলল? কেউ চেয়ারে বসলে তার সবটা কি চেয়ারেই থাকে চেয়ারের বাইরে কি তার কিছুই থাকে না? আল্লাহর নূর তো তাঁর সত্তাগত। নূর তো অনেক দূর ছড়িয়ে যায়। আমরা চাঁদের পুরোটা দেখি, চাঁদের আলোর পুরোটা দেখি কি? মানুষ আল্লাহকে চাঁদের মত দেখবে মানে তারা তাঁর পুরটা দেখবে না। কারণ তাঁর নূরের সবটা দেখা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। হয়ত আল্লাহ যে আকৃতি ধারণ করবেন, তার পুরোটা মানুষ দেখবে। কিন্তু তাঁর থেকে যে নূর ছড়াবে মানুষ তার পুরোটা দেখবে না।তারমানে আল্লাহ যখন মানুষের সাথে দেখা দিবেন তখনও তাঁর অসীমত্ব খর্ব হবে না। সুতরাং তিনি অসীম অবস্থায় চির বিদ্যমাণ। আল্লাহর স্ত্রী ও সন্তান তাঁর পরিবারের সদস্য বিধায় তারাও অসীম হওয়ার কথা। কারণ কারণ পরিবারের সদস্যগণ সমগোত্রীয় হয়। কিন্তু অসীম একাধীক হওয়া সম্ভব নয় বিধায় আল্লাহর স্ত্রী ও সন্তান থাকা সম্ভব নয়। সুতরাং যারা আল্লাহর স্ত্রী ও সন্তান থাকার কথা বলে তারা মিথ্যাবাদী এবং যারা আল্লাহ নিরাকার নন বলে তারাও মিথ্যাবাদী।এসব মিথ্যাবাদীদের জন্য চিরস্থায়ী জাহান্নাম প্রস্তত রয়েছে।
সূরাঃ ৬ আনয়াম ১০১ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন-
১০১।বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ, আন্না ইয়াকুনু লাহু অলাদুন ওয়ালামতাকুল্লাহু সাহিবাতুন, ওয়া খালাকা কুল্লা সাইয়িন, ওয়াহুয়া বিকুল্লি সাইয়িন আলিম
- আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর দৃষ্টান্ত বিহীন নতুন স্রষ্টা, তাঁর সন্তান হবে কিরূপে? তাঁর তো কোন স্ত্রী নেই। তিনিই তো সমস্তকিছু সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেক বস্তু সম্বন্ধে তিনিই সবিশেষ অবগত।
* ঈশ্বরের স্বামী বা স্ত্রী নেই, তো তাঁর সন্তান হবে কেমন করে? সুতরাং ঈশ্বরের সন্তান থাকা অবাস্তব বা কাল্পণিক বিষয়।সুতরাং যে সব ধর্মে ঈশ্বরের সন্তান সাব্যস্ত আছে সে সব ধর্ম অবাস্তব বা কাল্পণিক ধর্ম। সে সব ধর্ম সত্য ধর্ম নয়। আর যারা ঈশ্বরকে নিরাকার নয় বলে তারাও সত্য ধর্মের সদস্য নয়।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।
* উম্মতের সর্ববৃহৎ দল আল্লাহ নিরাকার বলে। সুতরাং যারা আল্লাহ নিরাকার নন বলে, তারা উম্মতের মধ্যে গণ্য হবে না। মোনাফিক হিসাবে তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামী সাব্যস্ত হবে। কারণ তারা ‘আল্লাহু আকবার-আল্লাহ বড়’ কথাটির কুফুরী করে।কারণ যা শুধূই আকার বা নিরাকার নয় তা’ কোন কালেই অসীম নয়। আর সসীম > অসসীম নয় বিধায় তারাও নিজেদেরকে মুসলিম দাবী করলেও মূলত তারা মুসলিম নয়, বরং মোনাফিক।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৪:০৮

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আপনার পোস্ট কী প্রথম পাতায় আসে না

২৩ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৪:০৪

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: না, আমার পোষ্ট প্রথম পাতায় আসে না।

২| ২৪ শে জুন, ২০২১ সকাল ১১:৪২

হাবিব বলেছেন: বেশি বেশি পোস্ট করুন। আশা করি দ্রুতই আপনার লেখা প্রথম পাতায় আসবে।

২৬ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৩:২৭

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: দ্রুত প্রথম পাতায় যাওয়া আমার ক্ষেত্রে খুব একটা হয় না।

৩| ২৭ শে জুন, ২০২১ দুপুর ১২:০৬

নজসু বলেছেন:



আস সালামু আলাইকুম। আশা করি ভালো আছেন।
বরাবরের মতো সমৃদ্ধ লেখা।

২৭ শে জুন, ২০২১ দুপুর ১২:০৯

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ জনাব সুজন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.