নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য তথ্য জানতে ও জানাতে চাই

মোঃ ফরিদুল ইসলাম

জন্ম- ১৯৮৭ খ্রিঃ চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলাধীন ২নং বাকিলা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের লোধপাড়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। পিতার নাম মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মাতার নাম ফাতেমা বেগম।

মোঃ ফরিদুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাবা মা অমূল্য রত্ন

২৭ শে আগস্ট, ২০২৫ রাত ১০:২৮

বাবা মা অমূল্য রত্ন
বাবা মা কি সুন্দর মধুর ডাক। এই ডাকের তাৎপর্য অনেক। এটা ভাষায় বলে প্রকাশ করা যাবে না।জীবনের প্রথম বাবা বা মা ডাক শোনা সত্যিই সৌভাগ্যের ব্যাপার। একজন মা কত কষ্ট করে মা ডাক শোনার জন্য। নিয়মিত খেতে পারে না, ভালভাবে চলাচল করতে পারে না, পায়ে পানি জমে যায়, কত বর্মি করে, অসুস্থ হয়ে বিছানায় পরে থাকে, পেটের ব্যাথা উঠলে কত কান্নাকাটি করে, বিজ্ঞান বলে একটা বাচ্চা প্রসব করতে একজন মায়ের যে ব্যাথা উঠে সেই ব্যাথা নাকি বেশ কিছু হাড় একসাথে ভাঙ্গলেও পাওয়া যায় না। কত মা কষ্ট সহ্য করতে না পেরে এমনও বলে আমি বুঝি আর বাঁচবো না। কত জনের কাছে মাফ চায়। এত কষ্টের পর তারপরে সেই মা তার বাচ্চাকে দেখে গর্ভকালীন সময়ের সব কষ্ট নিমিষেই ভুলে যায়। আর যখন মা ডাক শুনে কলিজা জুড়ে যায়। একজন বাবার কত স্বপ্ন থাকে বাবা ডাক শোনার। একজন পুরুষ বিয়ের পর যখন সুসংবাদ জানতে পায় সে বাবা হতে যাচ্ছে তার মুখে সুখের হাসি ফুটে উঠে। একটা গান একবার শুনেছিলাম স্বামী তার বউকে বলছে (বউ কথা কও, কবে হবে ছেলের বাপ, বলবে আমায় কোলে করে নাও)। একজন বাবার ছেলে বা মেয়ের বাবা ডাক শোনার জন্য মন আকুল ব্যাকুল করে। একজন বাবা তার ভুমিষ্ট শিশুকে দেখতে পেয়ে কি খুশি হয়। সে খুশিতে কি করবে আর কি করবে না তা ভেবে পায় না। কেউ আবার মিষ্টি বিতরন করে আত্নীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবীর মাঝে। কেউ খুশি হয়ে ফুল কিনে হাসপাতালে যায় শিশুকে দেখতে। কেউ আবার ফেসবুকে ছবি দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দেয়। বন্ধুরা দেখে কত খুশি হয়। কত লাইক দেয়, কমেন্টস করে। শিশুর জন্য আর্শীবাদ করে। শুধু বাবা মা কি শিশু দেখে খুশি হয়। দাদা দাদি, নানা নানিও অনেক খুশি হয়। কেউ ডাকে দাদু ভাই, কেউ ডাকে নানু ভাই, কেউ ডাকে বুনু, কেউ ডাকে আপু। নানী ও দাদী অনেক সময় সই বলেও ডাকে। শিশুকে, কে না ভালবাসে? কথায় বলে (যে শিশু ও ফুলকে ভালবাসে না সে মানুষকে খুন করতে পারে)। শিশুরা নিষ্পাপ। ছোট শিশুদের দেখতে কি সুন্দর লাগে? তাদের চোখ কি সুন্দর টলটল করে। হাত পা কি সুন্দর করে নড়াচড়া করে। চোখ ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। আগে দেখতাম মেয়েরা ছোট ছোট কাঁথা সেলাই করতো ছোট বাচ্চাদের জন্য। দাদী নানীরাও কাঁথা সেলাই করত নাতি বা নাতনীর জন্য। বাবা শিশুর জন্য আগে থেকে দোলনা কিনে আনে। দোলনা ঘরে সুন্দর করে ঝুলিয়ে রাখে। দোলনার উপরে একটা রঙিন কাগজের ফুল ঝুলিয়ে রাখে। সেই ফুল শিশু তাকিয়ে দেখে আর হাসে। মা সুন্দর করে কাজল দিয়ে দেয় চোখে। কাজলের একটা টিপও কপালে দিয়ে দেয়। গায়ে সুন্দর করে সরিষার তেল মেখে দেয়। সুন্দর জামা কাপড় পরিধান করিয়ে দেয়। একবার দেয় মা দোলনা দোলা আবার দেয় বাবা দুলনা দোলা। বেবি একটু তাদের দিকে তাকালে কত খুশি হয়। আর বেবি যদি হাসে তারাও জোরে জোরে হাসে। তারা বাবা বা মা বলেও শিশুকে ডাকে। আগে নানা বাড়িতে প্রায় শিশুই জন্মগ্রহণ করতো। নিউ বর্ন শিশুকে ছেলেপক্ষের লোকেরা মিষ্টি, পান সুপারি, মাছ বিশেষ করে ইলিশ ও শোল মাছ নিয়ে দেখতে যেত। শিশুর জন্য একটা গরু বা ছাগল আকিকা দেয়। শিশুর বয়স সাত দিন হলে একটা অনুষ্ঠান করা হয়। যেটাকে গ্রাম্য ভাষায় ছদিয়া (কামান) বলা হয়। নতুন বাবুর জন্য কত রকম পোশাক নিয়ে লোকেরা হাজির হয়। কেউ আবার সোনার আংটি বা মালা দেয়। বেবির বয়স এক থেকে দেড় মাস হলে ছেলের বাড়ি নিয়ে আসা হয়। কেউ আনে ঘোড়া বা গরুর গাড়িতে, কেউ আবার আনে পালকিতে। বেবিকে নিয়ে আসার দিন মেয়ের বাড়িতে একটা অনুষ্ঠান করা হয়। ছেলের বাড়ি থেকে বেশ কিছু লোক যেয়ে মেয়ের বাড়ি থেকে শিশুকে নিয়ে আসে। মেয়ের বাড়ি থেকে নতুন বেবির জন্য একটা হারিকেন দিয়ে দেয়। সারারাত টিপটিপ করে হারিকেন জ্বালা রাখা হয়। নতুন বেবিকে ছেলের বাড়িতে নিয়ে গেলে অনেক লোক দেখতে আসে। তারা নতুন বেবিকে দেখে কত খুশি হয়। কেউ বলে একেবারে বাপের মত হয়েছে, কেউ বলে মায়ের মত হয়েছে। কতজন কত কথা বলে। কেউ বলে বড় হয়ে গোষ্ঠির মুখ উজ্জ্বল করবে। কেউ ডাকে সোনা, কেউ ডাকে ময়না, কেউ ডাকে গেদা, কেউ ডাকে বাবু, দাদি বা নানি ডাকে মিনসি বা গোলাম। নানা নানি মাঝে মাঝে নতুন বেবিকে দেখতে আসে। তারা বেবির জন্য নতুন পোশাক কিনে নিয়ে আসে। তারা বেবিকে কোলে নিয়ে কত হাসি তামাশা করে। নানি মাঝে মাঝে কত শোলক কয়। আমার নানু ভাই বা বুনু গোসল করবে রোদ বের হবে এখনি। নাচন নাচন নাচনি, নাচন মাথায় চিরুনি। চাঁদ মামার গান গায়। গোসল করানোর সময় কান্না করলে বলে কেঁদো না। ঠান্ডা চলে গেছে। গোসল শেষ। কত কিছু যে কয়। কি যে মজা হয়। তাদের অস্পষ্ট ডাকে সবাই খুশি হয়। বাবা না ডেকে ডাকে বাদা, মা না ডেকে মাগা। কত কিছু শিশু বলে। নানাকে ডাকে নাগু, দাদাকে ডাকে দাগু, ভাইকে বাদা, কাকা ডাকে কাদা ইত্যাদি। আহা! পৃথিবীতে অনেকের আবার বাবা মা ডাক শোনার সৌভাগ্য হয় না। তারা কত কাঁদে সৃষ্টিকর্তার কাছে। মাতৃত্ব বা পিতৃত্ব হওয়া একটা বাবা বা মায়ের গর্ব। মায়ের কোলেই শিশু শোভা পায়। বাবার কাঁধে শিশুকে দেখতে মানায়। শিশু সৃষ্টিকর্তার রহমত। একজন বাবা অফিস থেকে বাসায় এসে যখন শিশু বাবা ডেকে কোলে উঠে তার সব ক্লান্তি কোথায় যায় যে চলে। মা শিশু সুস্থ থাকলে কি খুশি যে হয়। শিশু অসুস্থ হয়ে যদি খাওয়া-দাওয়া না করে মা যে কত কাঁদে। শিশু সুস্থ হয়ে মা বলে ডাক দিলে তার আনন্দ যায় বেড়ে। সৃষ্টিকর্তা মা বাবা ও শিশু কে সুস্থ রাখুক এবং যারা মা বাবা ডাক শোনার আশা করছে তাদের মনের আশা পূরন করুক। আমিন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.