নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্রীড়া : ৪০ মিনিটের একটা হালকা রসের প্যাকেজ নাটক

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:০২

বাংলা মটরের উলটো দিকে এক চিপাগলিতে ছোট্ট লন্ড্রির দোকানটি সুমনের। এসএসসি পাশের পর গ্রাম থেকে সে শহরে চলে আসে। কবি নজরুল কলেজে ভর্তি হয়েছিল। কলেজ চলতো, কিন্তু পেট চলতো না। ছোটোখাটো দু-একটা টিউশনি ধরার চেষ্টা করেছিল। ওর মেজাজ যতখানি গরম, পড়ানোর মতো মেধা ও দক্ষতা ঠিক ততখানিই কম। তিন-চার দিনের বেশি কোনো টিউশনি টেকে নি। হয় শিশুরা পড়তে বসে নি ভয়ে, অথবা অভিভাবক কাষ্ঠমুখে বলে দিয়েছেন আর না যাওয়ার জন্য।
পাশের গ্রামের চানমিয়ার ছিল এই লন্ড্রির দোকান। দোকানের এক কোনায় শোবার মতো যে ছোট্ট জায়গাটুকু, সুমন একদিন চানমিয়ার সাথে সেখানে ঢুকে পড়লো।
চানমিয়া লাভের মুখ দেখছিল না। সুমনের মাথায় সামান্য বুদ্ধি ছিল। দুজনে যোগ দিল লন্ড্রিতে।
লন্ড্রির দোকানটা কিছুদিন আগে পর্যন্ত চানমিয়ার ছিল। মাসখানেক আগে সে এই ব্যবসা সুমনের হাতে ছেড়ে মিডল ইস্টে চলে গেছে। এখন তার বেতন অনেক বেশি।
সুমনের দিন ঘুরেছে। দোকানে একটা ল্যান্ডফোন হয়েছে। হাতে একটা মোবাইল। অনেকে মনে করে এই লন্ড্রি থেকেই তার এতসব আয় উপার্জন। কিন্তু গূঢ় একটা রহস্য আছে। সেটা সে কাউকে বলে না। সুমনকে গা খাটিয়ে কিছু করতে হয় না, তিন-চারজন কর্মচারী আছে। সে শুধু কষ্ট করে ম্যানেজারের চেয়ারে বসে ফোন করে, ফোন রিসিভ করে আর টাকার হিসেব রাখে। পাশের হোটেলে তিনবেলা খায়। সপ্তাহ শেষে বিল পরিশোধ করে।

সকাল থেকেই সুমনের মনটা খুব চনমনে ছিল। আজ দেখা হবে। ওরা তিন বান্ধবী আসবে। নিপা, মিনু আর আঁখি। নিপার কণ্ঠস্বর যেমন কোকিলের সুরের মতো মাধুরীমাখা, ওর চেহারাটাও তেমনি চোখধাঁধানো না হয়ে যায় না। সুমন অবশ্য বহুবার জিজ্ঞাসা করেছে ঠাট্টার ছলে, তুমি খুবই রূপবতী, তাই না? নিপা সরাসরি কোনো জবাব না দিয়ে হাসির টেউ তুলে বলেছে, যাহ্‌, আমি রূপবতী হতে যাবো কোন দুঃখে? আমি খুব কালো।
কিন্তু নিপার এ কথা কখনো সুমনের বিশ্বাস হয় নি। তার বদ্ধমূল ধারণা নিপা অবশ্যই হাজারে একটা। এরূপ ধারণার পেছনে তার অবশ্য শক্ত যুক্তি আছে। নিপা বলেছে- সে ধনাঢ্য ব্যাসায়ীর একমাত্র মেয়ে। তার মা নাকি অসম্ভব সুন্দরী। বাবাও অত্যন্ত সুদর্শন। তা তো হতেই হবে। দেখুন, ধনীর ঘরে কখনো কালো সন্তানের জন্ম হয় না। কারণ, তল্লাটের সুন্দরী মেয়েটাই ধনীর ঘরে বউ হয়ে ঢোকে। সুন্দরীর গর্ভে সুন্দর শিশুর জন্ম হয়। এভাবেই বংশ পরম্পরায় সুদর্শন ও রূপসীরা ধনবানদের ঘরে জন্মলাভ করে আসছে। এর উলটোটা এবার দেখি, একজন চাষা বা দিনমজুরের ছেলে বিয়ে করবে গরিবের মেয়ে; মেয়ের গায়ের রং যথারীতি কালো, তা পূরণ হবে শ্বশুরের যৌতুকে। এই কালো মেয়েদের থেকে যা ‘উৎপাদিত’ হয় তার রং খুব একটা বদলায় না। অবশ্য যেসব গরিবের ঘরে ‘রূপবতী’ মেয়েদের জন্ম হয়, তাদের হলো বড়ো কপাল- কারণ এ মেয়েগুলো ধনীদের ঘরে যাবে, আর যৌতুকের বদলে মেয়ের বাবা উলটো ‘পন’ লাভ করবে।

একটা মজার ঘটনার মাধ্যমে নিপার সাথে মোবাইলে সুমনের যোগাযোগ ঘটেছিল। নিজেকে সে ঢাকা ভার্সিটির থার্ড ইয়ারের ছাত্র হিসাবে পরিচয় দেয়। শুরুর দিকে মাসে একবার-দুবার করে তাদের কথা হতো, এরপর ফ্রিকোয়েন্সি বাড়তে থাকে। দুজনের মধ্যে হৃদ্যতা হয়, হয়তো প্রেমও। পরিচয়ের এক বছরের মাথায় সামনাসামনি দেখা করতে রাজি হয়েছে নিপা।

সুমন প্রথমে ভেবেছিল সে একাই তিনটি মেয়েকে সামাল দেবে। কিন্তু এক কান দু কান করতে করতে এ খবর অচিরেই বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে পড়বে, তাদেরকে না জানিয়ে এহেন অভিসারে বের হলে তার আর রক্ষা থাকবে না।
রোশন আর শিপনকেও খবর দেয়া হলো। সন্ধ্যা সাতটায় যাত্রাবাড়ির চাংপাই চাইনিজ রেস্তরাঁয় ডেটিং।
পুরোনো জুতাজোড়া ভালো করে কালি করালো সুমন। বিবেকে বাঁধছিল, ধরা পড়ার ভয়ও ছিল, তারপরও একটা অনৈতিক কাজ করলো। লন্ড্রি থেকে কয়েকটা চকচকে জিনস বের করে ট্রাই করলো। গোটা তিনেক ট্রায়াল দেয়ার পর একটা চমৎকার ভাবে ফিট হয়ে গেলো। গায়ের পিয়ারি কার্ডিন গেঞ্জিটা সে গুলিস্তানের সেকেন্ড হ্যান্ড মার্কেট থেকে কিনেছিল। ওটা সে সব সময় পরে না, পরে বিশেষ বিশেষ ফাংশনে। ওটা ওকে খুব মানায়, পরার পর যে-কেউ বলবে গেঞ্জিটার দাম সাড়ে তিন হাজার টাকার কম নয়।
পারফিউমের প্রয়োজন। শিপনের প্রায় খালি হয়ে যাওয়া পারফিউমের বোতলটা সে জোর করে নিয়ে এসেছিল। শিপন অবশ্য বিশেষ মানা করে নি, কারণ সে জানতো ওকে না দিলে ওটা ও চুরি করে নিয়ে আসবে।

কথামতো ওরা তিনজন সাড়ে সাতটার আগেই চাংপাইয়ে গিয়ে সিঁড়ির গোড়ায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকলো। নিপা একটা নীল রঙের শাড়ি পরবে। ওর গলায় একটা সোনার চেইন থাকবে। মিনু মেরুন রঙের সেলুয়ার কামিজ পরবে। ওর চুলগুলো ববকাট। আঁখির পরনে আঁটসাঁট জিনস থাকবে, অব হোয়াইট, গায়ে থাকবে কালো টি-শার্ট, বুকের মাঝখানে মাইকেল জ্যাকসনের ছবি, বহু পুরোনো স্টাইল হলেও এটা ওর খুব প্রিয়।
কিন্তু মেয়েরা আসছে না। ঝলমলে পোশাকে অনেক রূপসী অবশ্য এলো-গেলো, তবে একা নয়, তারা তরতর করে সিঁড়ি বেয়ে উঠে ভেতরে চলে যায়, আবার বেরিয়ে আসে।
তিন বন্ধু পিপাসার্ত হতে থাকে। এতক্ষণ মেয়েগুলোর রূপলাবণ্য নিয়ে নানাবিধ হাসিঠাট্টা ও মুখরোচক গবেষণা করলেও তা ধীরে ধীরে মিলিয়ে যেতে থাকে।
নিপা প্রতারণা করে নি তো? এমনও হতে পারে সে ঝালিয়ে দেখছে। তিন বান্ধবীর তিনরকম পোশাকের কথা বললেও ওরা হয়তো অন্য পোশাকে এসেছে। মেয়েরা এসব ব্যাপারে খুব চতুর হয়ে থাকে। হতে পারে, ওরা এখানে এসে তিন যুবককে দেখে নিরাশ হয়ে ফিরে গেছে, কারণ ললনাদের মন হরণ ও দৃষ্টি কাড়বার মতো পোশাক-আশাকের চাকচিক্য ও স্মার্টনেস ওদের হয়তো নেই।
হঠাৎ তিনজনের চোখ পড়ে অল্প দূরে। আবছা আলোয় তিন যুবতীর শরীর আর ছায়া দেখা যায়, নিপার বর্ণনায় সব মিলে গেছে। রাইট। নিপা, মিনু ও আঁখিই হবে।
উৎসুক হয়ে ওরা তাকায়।
মেয়ে তিনটা ঠিক কাছাকাছি এসে ইস্ততত এদিক-ওদিক তাকায়, ছোটো ছোটো শব্দে পরস্পর কথা বলে, আড়চোখে ওদের তিনজনকে দেখে। কিন্তু মুখে কিছু বলে না। সুমনরাও মেয়ে তিনজনকে দেখে, কিন্তু মুখ বন্ধ। ওরা কান খাড়া করে মেয়েদের কথা শুনছে। ওরা কী বলাবলি করছে বোঝা যাচ্ছে না। দেখতে কেমন ওরা? যেখানে দাঁড়িয়েছে ঠিক সেখানেই দেয়ালের ছায়া, মুখের আদল কিছুই বোঝা যায় না।
সুমনের মাথায় বুদ্ধি খেলে যায়। নিজে নিজেই বলে, একটু জোরে, যাতে মেয়েরা শুনতে পায়, সুমন- দোস্ত- মেয়েরা একযোগে ওদের দিকে তাকায়। একটা মেয়ে ধীর পায়ে সামনে এগিয়ে আসে, বাকি দুজনও পিছে পিছে। কাছাকাছি আসতেই আলোয় ওদের চেহারা ফুটে ওঠে, মুহূর্তে সুমনদের মন ফুটো হওয়া বেলুনের মতো চুপসে যেতে থাকে।
প্রথম মেয়েটি বলে, এক্সকিউজ মি, আপনারা কি সুমন...
সুমনের পাকস্থলী ভেদ করে বমি আসতে চাইল। চোখ বন্ধ করে সে খানিকটা ভাবলো, যা দেখছি তা ভুল দেখছি, ঠিক দেখছি না। চোখ খুলে সে আবার মেয়ে তিনটার দিকে তাকায়। মনে মনে ওদের লাবণ্যের কথা সে ভেবেছিল, অপ্সরীর মতো রূপসী হতে পারে, হতে পারে তার উলটোটাও, কিন্তু ওরা যে দেখতে এতখানি কুৎসিত আর বীভৎস হতে পারে তা সে কস্মিনকালেও ভাবে নি।
সুমন কাঠখোট্টা স্বরে বলে, হ্যাঁ, আমরাই সুমন। আপনারা কারা?
আমাদের তো আজ এখানে মিট করার কথা, তাই না? আমরা....
হ্যাঁ, মিট তো হলোই।
চলুন না, ভেতরে যাওয়া যাক।
সুমনের মনে আরো দুষ্টুবুদ্ধি চাপলো। মনে যতখানি হতাশা আর বিবমিষা ছিল, প্রাণপণে বিতারণের চেষ্টা করে আরো প্রাণপণে একটু সহজ ও উৎফুল্ল হতে চেষ্টা করলো।

খাবারের পালা শুরু হলো ওয়ানথন আর স্যুপ দিয়ে। খেতে খেতে মেয়েরা জিজ্ঞাসা করে, আচ্ছা, সুমন কে?
সুমনরা নিজেদের দিকে পরস্পর চাওয়া-চাওয়ি করে।
শিপনকে দেখিয়ে সুমন বলে, ওর নাম সুমন।
শিপন দেখায় রোশনকে, সুমন ওর নাম।
রোশন মিটিমিটি হেসে বলে, আসলে জানেন, আমরা তিন ডিসট্রিক্টের তিন সুমন একত্র হয়ে সুমন গ্রুপ অব কোম্পানি করেছি। আমাদের সবার নামই সুমন।
মেয়েরা এটাকে ফান মনে করে। বলে, আপনারা কিন্তু খুবই রসিক।
রোশন বলে, একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো খালাম্মারা?
লজ্জায় মেয়েগুলোর চোখমুখ আরো কালো হতে থাকে। রোশন বলে, আপনাদের হাজব্যান্ডরা কি এখন বাসায় নেই? সবাই একযোগে হো হো করে হেসে ওঠে। হাসি থামলে একটা মেয়ে বলে, হাজব্যান্ড পাব কোথায়, আমাদের তো বিয়েই হয় নি। আমাদের আসলে বিয়ের বয়সই হয় নি। কেবল তো ক্লাস টেনে পড়ি।
ছেলেরাও এটাকে ফান হিসাবে ধরে নেয়। কারণ, নিপা বলেছিল সে সিটি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি দিয়েছে। কথা বলতে বলতে সুমন হঠাৎ নিপাকে বলে, আপনার চেইনটা তো দারুণ। বিদেশি?
হ্যাঁ, আমার মামা সিংগাপুর থেকে পাঠিয়েছে।
একটু দেখানো যাবে?
মেয়েটা ইতস্তত করতে করতে গলা থেকে চেইনটা খুলে সুমনের হাতে দেয়।
সুমন হাতে নিয়ে ঠাট্টা করে বলে, তোরা সাক্ষী, নিপা এটা আমাকে গিফ্‌ট করলো। সবাই হাসে। সুমন চেইনটা নিজের গলায় পরে নেয়।
স্যুপ আর ওয়ানথনের পর ফ্রাইড রাইস, চিকেন ওয়ানিয়ন, শ্রিম খেতে খেতে রসালো গল্পগুজব চলতে থাকে।

সুমনের খাওয়া শেষ হলো সবার আগে। সে উঠে বাইরে চলে যায়। দোকান থেকে তিনটা কাপড়কাঁচা বল সাবান কিনে। রঙিন পেপারে সুন্দর করে মুড়িয়ে তিনটি প্যাকেট করে। প্যাকেট তিনটিসহ আবার এসে খাবারের টেবিলে বসে। সেখানে সবাই খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বেজায় গল্পে মজে গিয়েছে।
সুমন ঘোষণা করলো, সম্ভ্রান্ত বংশীয় রূপসী যুবতীগণ, আমাদের পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য এই সামান্য উপহার। বলে সে তিনটি প্যাকেট তিনজনকে তুলে দেয়। করতালি পড়ে।
সুমন পান খায়; পান আনার কথা বলে উঠে বাইরে চলে গেলো। একটু পরে শিপনও। এই ফাঁকে ওয়েটার এসে সহাস্যে বিলের কার্ডটি সামনে উপস্থাপন করলো। মাত্র সাতাশ শ টাকার বিল উঠেছে।
অনেক সময় পার হয়ে যায়, কিন্তু সুমন আর শিপনের ফিরে আসার নাম নেই।
মেয়ে তিনটা মুখ কালো করে বসে আছে। মুখ কালো রোশনেরও। কারণ, ওরা দুজন ফিরে না এলে সাতাশ শ টাকা ওর পকেট থেকেই খোয়া যাবে।
অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর রোশনকেই বিল পরিশোধ করতে হলো।
মেয়েরা চলে যাবে। কিন্তু নিপার যে চেইনটা নিয়ে সুমন ভেগেছে, সেই চেইন এখন কে এনে দেবে?
এক পর্যায়ে মেয়েটা কেঁদে দিল। এটা তার নিজের চেইন না, তার ভাবীর কাছ থেকে অনেক অনুনয় করে চেয়ে এনেছে সে। এটা না নিয়ে গেলে তার ভাই তাকে আস্ত রাখবে না।
কিন্তু সুমনকে এখন কোথায় পাওয়া যাবে?
শেষ পর্যন্ত সুমনের লন্ড্রির ঠিকানা দিয়ে রোশন কোনোমতে পার পায়।

পরদিন নয়টার দিকে সুমনের লন্ড্রিতে এসে মেয়েটা হাজির। কেঁদেকুটে সুমনের পায়ের ওপর পড়ে গেলো সে। সুমন ক্রূর চোখে ওর দিকে তাকায়। তারপর বলে, নরম কিন্তু ভীষণ কড়া স্বরে, ওই মাগি, তুই এতো কালো অইছিস ক্যান রে?
মেয়েটা আরো গলা ছেড়ে কেঁদে ওঠে।
সুমন বলে, চেইন পাবি একটা শর্তে।
কী শর্ত?
ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে, এখন তো আমার কর্মচারীরা চইলা আসবো, তুই রাইত দশটায় আয়।
ও ভাই, ভাইগো- আপনি আমার মায়ের পেটের ভাই, আমার দিকে চান...
নির্বিকার স্বরে সুমন বলে, মাগি, যা ভাগ, কে তোর চেইন নিছে?
মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলো।

বিকেলে খুব ডাঁটের সাথে বসে সুমন সারাদিনের হিসেব মেলাচ্ছিল। এমন সময় ঘর আলো করে কে একজন এসে তার সামনে দাঁড়ায়। ওর দিকে তাকিয়ে সুমন হতবিহ্বল হয়ে যায়, এমন মেয়েকে সে কোনোদিন কল্পনায়ও ভাবে নি।
আপনি কি সুমন রহমান? মেয়েটি জিজ্ঞাসা করে।
সুমনের মনে হয়, এই কণ্ঠস্বর তার অতি পরিচিত। কোথায় কবে যেন এর সাথে বহু কথা হয়েছিল।
সুমন উঠে দাঁড়ায়। তার চোখে চোখ রেখে বলে, আপনার নামটা কি জানতে পারি ম্যাডাম?
জি জনাব, অবশ্যই। মেয়েটি ব্যঙ্গাত্মক হাসি হেসে বলে, নিপাকে নিশ্চয়ই আপনি চেনেন।
হ্যাঁ, হ্যাঁ, ও তো কাল এসেছিল।
জি না জনাব, ও আসে নি। আমার নামই নিপা। ওরা আমার পাড়ার মেয়ে।
তাহলে? সুমন অবাক হতে থাকে।
হ্যাঁ, আপনার সাথে একটু মজা করার জন্য ওদেরকে পাঠিয়েছিলাম। মজাও হলো, প্লাস আপনাকেও চেনা হলো। এবার চলুন।
কোথায়?
যেখানে আপনার যাওয়া প্রয়োজন।
আপনাদের বাসায়? সুমন কম্পিত স্বরে এই অনর্থক ঠাট্টার কথাটি বলে।
আপনাদের মতো লোক কখনো আমার বাসায় যেতে পারে না। স্যরি জনাব। আর দেরি কেন, বাইরে পুলিশের গাড়ি অপেক্ষা করছে। আর কারো কাছ থেকে তো আর শুনবার সুযোগ নেই, তাই আমিই বলছি। আমার বাবা একজন পুলিশ অফিসার। আমার চাচাও একজন ম্যাজিস্ট্রেট। আমার দাদা সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ছিলেন, আমার ফুফু সুপ্রিম কোর্টের একজন নামজাদা ব্যারিস্টার। আমাদের পরিবার এমনই। তাই আপনার মতো একজন কুৎসিত লোককে এভাবে ধরা সম্ভব হলো। আসুন, আশা করি শ্বশুর বাড়িতে আপনার সময় ভালোই কাটবে।

৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৬



নাটকের শেষে এই গান (যাঁরা আগে মিস করেছেন, তাঁদের জন্য) :)

ভ্রমর কইও গিয়া
শ্রীকৃষ্ণ বিচ্ছেদের অনলে
অঙ্গ যায় জ্বলিয়ারে ভ্রমর কইও গিয়া
গীতিকার ও সুরকারঃ রাধারমণ দত্ত
মূল গায়কঃ রাধারমণ দত্ত।
বাংলাদেশী গায়কঃ ফেরদৌসী রহমান, দিলরুবা খানমসহ অনেকে। এদের গাওয়া গানটি অপেক্ষাকৃত দ্রুতলয়ের।
ভিডিওতে গেয়েছেনঃ আরমিন মুসা। ফুয়াদ আল মুক্তাদিরের ফিচারিঙে আরমিন মুসার গানটি অনেক বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এটি অপেক্ষাকৃত ধীরলয়ে গাওয়া হয়েছে। রোমানীয় এবং তাজিক ভার্সন দুটিতে প্রায় একই বিট ব্যবহৃত হয়েছে।

এই ভিডিওতে মডেল হয়েছেন আপনাদের প্রোফাইল পিকচারগণ :)


মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৪৫

ডার্ক ম্যান বলেছেন: বেশ মজা পেলাম। আপনার স্বাস্থ্য এখন কেমন? অসুখ কি আগের চেয়ে কমছে?

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:২২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: স্বাস্থ্য আল্লাহর রহমতে ভালো। দোয়া করবেন।

২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:১১

ওমেরা বলেছেন: খুব Fantastic হয়েছে ভাইয়া ।

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:২২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ভালো লাগলো।

৩| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:৩১

আহমেদ জী এস বলেছেন: সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই ,




ওয়াও...................

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:২১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: একেবারে সমস্যার আগায় আঘাত করেছেন :)

৪| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১২:৪৮

সুমন কর বলেছেন: গল্পটি আগে পড়েছিলাম।

ভিডিওটি ভালো হয়েছে।

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:২০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন ভাই।

৫| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪১

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: কিতা কইবাম মেয়া বাই!!

প্যাখেজ নাঠক দেখথে গিয়া(ফড়ুন ফড়তে গিয়া) খালি সুমন নামটায় আটকােইয়া গেছি!

জাইগ্গা নাঠক আর ভিডিওতে ওভার অল + !;)

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:২০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সুমন কেডা?

৬| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৩:২৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: বেশ-গল্পটি

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:১৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ।

৭| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৪৬

সোহানী বলেছেন: হাহাহাহা...... যাক এরকম সুমন খুব একটা ধরা পরে না। মেয়েগুলোই বেশী ধরা খায়................ ভালোলাগলো।

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:০৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমারও ভালো লাগলো। একটু ব্যস্ত ছিলাম বলে খুব ব্যস্ত ছিলাম। একটু সময় পেলাম বলেই এখন একটু সময় পেলাম :)

ধন্যবাদ আপু।

৮| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১২:০৫

মেঘনা পাড়ের ছেলে বলেছেন: মূল গানটা গেয়েছিলেন দিলরুবা খান...........

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৩:৩৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: দিলরুবা খানম তো গাইলেন এই সেদিন, পাগল মন এর সাথে, তার অনেক আগেই ফেরদৌসী রহমান গেয়েছিলেন। আমি শচীন দেব বর্মনের সমসাময়িক কোনো শিল্পীর কথা ভাবছিলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.