নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

কৃষকদের জন্য যা যা করা যেতে পারে

২৫ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১:৫০

যে-কোনো মূল্যে আমাদের কৃষকদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আমরা টেকনোলজিক্যালি যত উন্নতই হই না কেন, আমরা কোনো সফটওয়্যার খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবো না, বা না খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য কোনো সফটওয়্যার আবিষ্কার করা সম্ভব হবে না। আমাদের ফসলের মাঠে ধান, গম, সবজি উৎপাদন করা ছাড়া কোনো বিকল্প নাই। এজন্য, কৃষকরা যাতে কৃষিকাজে অনবরত লোকসানের ফলে কৃষি বন্ধ করে না দেন, আমাদের সেই ব্যবস্থা করা জরুরি।

অন্যদিকে ভোক্তা হিসাবে, আমাদের দৈনন্দিন খাবারের জন্য চাল, আঁটা, মাছ, মাংশের দামও নাগালের মধ্যে থাকতে হবে। মনে হচ্ছে, এই কিছুদিন আগেও আমরা ১০-১২টাকা সের দরে চাল কিনেছি। তখন কিন্তু কৃষকের এত হাহাকারের কথা শোনা যায় নি। এখন কৃষকদের জন্য সরকার থেকে প্রচুর সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু, একদিকে চাল-আঁটার দাম আকাশ-ছোঁয়া, অন্যদিকে, ধানের মূল্য অনেক কম হওয়ায় কৃষকরা ক্ষুব্ধ হয়ে কৃষিকাজ ছেড়ে দেয়ারও হুমকি দিচ্ছেন। এটা আমাদের জন্য খুবই সংকটের কথা।

আমাদের দেশে দুর্নীতি এত রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে যে, সরকার যে-কোনো ভালো পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও অচিরেই তাতে দুর্নীতিবাজরা ঢুকে যায়, যার ফলে কৃষকদের অবস্থার উন্নতি করা কতখানি সম্ভব হবে তা বিরাট প্রশ্নের জন্ম দেয়। বর্তমান সময়ে কৃষকরা ধান বিক্রি করতে যেয়ে ধানের মূল্য খুব কম হওয়ায় তারা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এমনও দেখা যাচ্ছে, একমণ ধান বিক্রির টাকা দিয়ে একসের মাংসও কিনতে পারছেন না। অভিমানে বিক্ষুব্ধ হয়ে কৃষিকাজ ছেড়ে দিতে চাইছেন কৃষকরা। কিন্তু সেটা কি কোনো সমাধান এনে দিবে আমাদের জন্য? আমাদের বেঁচে থাকার জন্য কৃষিকাজের বিকল্প নেই। সরকার কৃষকদের বেঁচে থাকার জন্য অনেক পথ খুঁজছেন। কিছুদিন আগে মাননীয় কৃষিমন্ত্রীকেও দেখলাম খুব আন্তরিকভাবেই তিনি বলছেন কীভাবে সমাধান করা যায় তার উপায় খুঁজছেন। অনেকের কাছেই অনেক সমাধান আছে। সবগুলো সমাধানই হয়ত ভালো, কিন্তু তা ‘ভালো’ বা ‘মন্দ’ সেটা নির্ভর করছে তা কতখানি সঠিক ও কার্যকরীভাবে বাস্তবায়ন করা গেলো তার উপর। আমার বাবা একজন কৃষক ছিলেন, এবং আমি নিজে কৃষিকাজ করে বড়ো হয়েছি। আমার সেই সময়ের কৃষিকাজ ও আজকের কৃষিকাজে বেশ তফাত রয়েছে। তবু, আমার জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে আমি এ বিষয়টা আলোচনা করবো ও কিছু সমাধানের পথ বের করার চেষ্টা করবো।

এই মুহূর্তে কৃষকদের জন্য কোন পদ্ধতিটা উপকারী বা অধিক কার্যকর হবে, তা গভীর বিশ্লেষণের প্রয়োজন। আমরা যে পদ্ধতিতেই যাই না, একটা নতুন শ্রেণি গড়ে উঠবে যারা মধ্যস্বত্বভোগীদের স্থান দখল করে নেবে, ফলে মূল কৃষকদের ভাগ্যে কোনো/তেমন পরিবর্তন আসবে না। সরকার যদি সরাসরি কৃষকদের ধান কিনতে চায়, সেটাও খুব বাস্তব হবে না, কারণ, কৃষকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ সম্ভব হবে না, মাঝখানে আরো কয়েকটা দালাল শ্রেণী গড়ে উঠবে, যারা লাভটা খেয়ে ফেলবে। দুর্নীতিও বাড়বে। একটা শ্রেণী একদিকে ধান বিক্রি করবে, আরেকদিকে নিজেই কৃষক সেজে অন্যদের কাছ থেকে ধান কিনে আবার সরকারের কাছে বিক্রি করবে। ধানকল করতে গেলেও অনেক সমস্যা হবে বলে ধারণা করছি।

৪০ কেজি ধান থেকে গড়পড়তা ২৩-২৭ কেজি চাল পাওয়া যায়। কিন্তু এর পেছনে ধান সিদ্ধ ও ভাঙানো বাবদ আরো অনেক খরচ আছে। এই ধান ভাঙানোর প্রক্রিয়ার ভেতরেই মনে হয় অনেক দুর্নীতি জড়িয়ে আছে। যার ফলে চাউলের মূল্য অনেক বেড়ে যায়।

যাই হোক, সরকারও এই বিষয়টা সমাধানের জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে মনে হচ্ছে। কিন্তু শুভঙ্করের ফাঁকিটা ঠিক ধরা যাচ্ছে বলে মনে হয় না। যারা চাল কিনে খান, তারা ইচ্ছে করলেই ধান কিনে চাল ভাঙিয়ে নিতে পারেন, ফলে ১৫ টাকা দরের ধান কিনলে ২৫-৩০টাকা কেজি পড়ে চালের দাম। এটা না করে তারা ৪০-৪৫টাকা দরে চাল কিনেন কীজন্য? এখানেও হয় আমাদের ক্যাককুলেশনে ভুল, অথবা বাজার দরে ভুল- কোনো এক জায়গায় সমস্যা আছে।

সরকার যদি কৃষকদের জন্য ভর্তুকির ব্যবস্থা করে, সেটা কৃষকদের কাছে না যেয়ে ভূয়া কৃষকদের কাছে চলে যাবে। বিনামূল্যে সার ও কীটনাশক বা অন্যান্য কৃষি উপকরণ, যেমন চাষের ট্র্যাক্টর, তেল, ইত্যাদি বিনা মূল্যে দিলে উৎপাদন মূল্য কমে আসবে, যার ফলে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়বে না।

বাংলাদেশ একদিকে বিদেশ থেকে চাল আমদানি করছে, অন্যদিকে কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্যে ধান বিক্রি করতে পারেন সেজন্য বিদেশে চাল রপ্তানির কথা বলা হচ্ছে। এখানে সমীকরণটা গোলমেলে হয়ে যাচ্ছে। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার প্রধান ও প্রথম শর্ত হলো ধান ও গমের উৎপাদন হতে হবে দেশের চাহিদার সমপরিমাণ। যতটুকু ঘাটতি থাকবে, সেই পরিমাণ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। দেশের চাহিদা মেটানোর পর দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য পর্যাপ্ত রিজার্ভ রেখে বাড়তি পরিমাণ বিদেশে রপ্তানি করা যেতে পারে। কিন্তু, যখন দেশের ঘাটতি পূরণের জন্য বিদেশ থেকে ধান-গম-চাল আমদানি করা হচ্ছে, ঠিক সেই অবস্থায় আমদানি ও রপ্তানি উভয় প্রক্রিয়া একই সঙ্গে চালিয়ে যাওয়া হলো একটা অবাস্তব ও অকার্যকর প্রক্রিয়া।

কৃষকরা যাতে ধানের ন্যায্যমূল্য পেতে পারেন, এজন্য বিদেশে চাল রপ্তানি করার প্রস্তাবনা উঠে আসছে। সেইক্ষেত্রে সরকার হয়ত কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কিনবে, যাতে কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য পান; সরকার সেই ধান ভাঙাবে, অতঃপর চাল বিদেশে রপ্তানি করা হবে। এতে দেখা যায়, একদিকে এক জাহাজে চাল বিদেশে যাচ্ছে, অন্য জাহাজে বিদেশ থেকে দেশে চাল আসছে। প্রক্রিয়াটা আমার কাছে অদ্ভুত ও হাস্যকর মনে হচ্ছে। সরকার এই চাল বিদেশে রপ্তানি না করে আমদানিযোগ্য পরিমাণ দেশীয় আমদানিকারকদের কাছে বিক্রি করতে পারে। কিংবা সরকারের নিজস্ব গোডাউনে সংরক্ষণ করে খোলা বাজারে বা পাইকারি দরে বিক্রি করতে পারে।

একজন কৃষকের ধান উৎপাদনে কীভাবে খরচ বেড়ে যায় আমরা সেদিকে একটু নজর দিতে পারি।

১। জমিতে ২-৪ বার লাঙল দিতে হয়। হয় ট্র্যাক্টর অথবা হালের গরু প্রয়োজন।
২। ইটা ভাঙতে হয়। ইটা ভাঙার কাজ মেশিন দিয়ে করা যায় না এখনো। ভালো ট্র্যাক্টর হলে এবং মাটি ভেজা থাকলে ইটা হয় না।
৩। মই দিতে হয়। এটাও ম্যানুয়ালি করতে হয়।
৪। বীজ বুনতে হয়।
৫। সার ও কীটনাশক দিতে হয়।
৬। ২-৩ বার মানুষ দিয়ে আগাছা নিড়াতে হয়।
৭। পানি দিতে হয়। সেচকল বা ডিপওয়েল থেকে পানি দিতে হয়। উভয় ক্ষেত্রেই বিদ্যুৎ ও ডিপওয়েল লাগে।
৮। ধান কাটা, মাড়ানো বাবদ মজুরি।
৯। এর বাইরেও অন্যান্য খরচ থাকতে পারে।

কৃষকের উৎপাদন ব্যয় কমাতে হলে উপরের খাতগুলোতে খরচ কমাতে হবে। কৃষক নিজে যে-কাজগুলো করেন, তার বাইরের প্রতিটা কাজের জন্য মজুরি খরচ অনেক বেশি। যেমন, খেত নিড়ানো বাবদ প্রতি ব্যক্তিকে দৈনিক ৯০০ টাকা দিতে হয় বলে সম্প্রতি টিভি রিপোর্টে জানতে পারলাম। শ্রমিকদের এই দৈনিক মজুরি কমানো যাবে না। সার, বিদ্যুৎ বা পানি সেচ, কীটনাশক, ও বীজ- এই ক্ষেত্রগুলো ছাড়া অন্য কোথাও ব্যয় কমানোর কোনো সুযোগ আপাত নাই বললেই চলে। কাজেই, কর্তৃপক্ষের প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে কৃষকগণ যাতে সার, বিদ্যুৎ, পানি সেচের ব্যবস্থা, ইত্যাদি বিনামূল্যে পেতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা। পানি সেচের জন্য বর্তমানে যে ব্যবস্থা প্রচলিত আছে, আমার কাছে মনে হয়েছে, মূলত সেই ব্যবস্থার কারণেই কৃষকের লোকসানের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। যেমন, প্রতি সেচ প্রকল্পে এক বা একাধিক ডিপওয়েল বসানো হয় পানি সরবরাহের জন্য। মোট ধানের একটা বড়ো অংশ, সম্ভবত তিন ভাগের একভাগ চলে যায় সেই ডিপওয়েল মালিকের কাছে। ডিপওয়েল চলে তেল বা বিদ্যুতে, যার একটা বড়ো খরচ রয়েছে। সেই খরচের কারণে তিন ভাগের এক ভাগও হয়ত ডিপওয়েল মালিককে লোকসানের দিকে ঠেলে দেয়; অর্থাৎ, তিনিও চান তার ভাগের অংশটা যাতে আরো বেশি হয়। আবার, এ জমি যদি বর্গা জমি হয়, তাহলে বাকি তিন ভাগের দুই ভাগ-কে সমান দুই ভাগে ভাগ করা হয়- একভাগ বর্গা চাষীর, অন্যভাগ জমির মালিকের। জমির মালিককে সার ও অন্যান্য অনেক খরচের ভার বহন করতে হয়, যা স্থান ভেদে একেক জায়গায় একেক নিয়ম। কপালে দুর্ভোগ থাকলে ধানের মৌসুমে শিলাবৃষ্টি হলে ধান হয়ে যায় চিটা, বা নষ্ট হয়ে যায়, ফলে ফলন কমে যায় ব্যাপক অংশে।

কৃষকের এই অবস্থা উত্তরণের জন্য যেটা কর্তৃপক্ষ করতে পারে তা হলোঃ

১। প্রতি এলাকার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্র্যাক্টর সরবরাহ করা। ট্র্যাক্টর অপারেটর সরকারের নিয়ন্ত্রণে থেকে (উপজেলা কৃষি অফিসার) পরিচালিত হবে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বা ওয়ার্ড মেম্বারদেরকেও এই দায়িত্ব পালনের জন্য নিযুক্ত করা যেতে পারে।

২। প্রতি এলাকায় সরকারি সেচ প্রকল্প থাকবে। সেগুলোও বিনামূল্যে কৃষকদের ক্ষেতে পানি সেচের ব্যবস্থা করবে। সেচ প্রকল্পও ট্র্যাক্টরের মতো উপজেলা কৃষি অফিসারের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হবে।

৩। সার, বীজ ও কীটনাশকও উপজেলা কৃষি অফিসারের তত্ত্বাবধানে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে।

৪। আরেকটা বিকল্প পথ হলো- কৃষকরা বর্তমান পদ্ধতিতেই চাষাবাদ অব্যাহত রাখবেন। তবে, সরকার থেকে প্রতি বৎসর তাদের ভর্তুকি প্রদান করা হবে। ভর্তুকির জন্য মণপ্রতি একটা দর নির্ধারণ করে দেয়া হবে। মণপ্রতি দর নির্ধারণের ফলে কৃষকরা অধিক ধান ফলনের জন্য উৎসাহিত হবেন; ভর্তুকি লাভের ফলে লোকসানের হাত থেকে রেহাই পাবেন। তবে, এখানে সবচাইতে বড়ো জটিলতা দেখা দেবে প্রকৃত কৃষকের হাতে সঠিক টাকার অঙ্ক পৌঁছানো। বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন ব্যক্তি টাকার ভাগ বসানো শুরু করবে, কৃষকের ভাগ্যে শেষমেষ কিছুই হয়ত জুটবে না। দরিদ্র কৃষকরা ভয়ে হয়ত মুখও খুলবে না। দুর্নীতগ্রস্ত ভূমিহীন অনেকেই রাতারাতি কৃষকের খাতায় নাম লেখাবে। উপজেলা প্রশাসনকে এ ব্যাপারে খুব সূক্ষ্মভাবে কাজ করতে হবে।

কৃষকরা যাতে ধান বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ন্যায্য মূল্য পান, সেইক্ষেত্রে নীচের পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারেঃ

১। এলএসডিতে ধান বেচাকেনার একটা সর্বনিম্ন দর সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করে দেয়া যেতে পারে।

২। ব্যবসায়ীদের কর্তৃক কৃষকদের কাছ থেকে খোলা বাজারে ধান কেনাবেচা নিষিদ্ধ করতে হবে। কৃষকদের কর্তৃক সরাসরি সরকার নির্ধারিত স্থানে সরকারের নির্দিষ্ট এলএসডি বা অ্যাজেন্টের কাছে ধান বিক্রির নিয়ম জারি করা যেতে পারে। তবে, কারা ব্যবসায়ী আর কারা খুচরা বা সাধারণ ক্রেতা, সেটা নির্ণয়ের একটা পদ্ধতি থাকতে হবে। এটা জটিল প্রক্রিয়া সন্দেহ নেই, তবে একটা ফুলপ্রুফ সিস্টেম বের করা আবশ্যিক।

৩। প্রতি উপজেলায় একটা এলএসডি থাকবে, যেখানে কেন্দ্রীয়ভাবে কৃষকদের কাছ থেকে সরকার কর্তৃক ধান কেনার ব্যবস্থা থাকতে পারে। যিনি ধান বিক্রি করছেন, তিনি তার নিজের ক্ষেতে উৎপাদিত ধানই বিক্রি করছেন, এটা নিশ্চিত করা জরুরি। অন্যথায়, কিছু দালাল বা ফরিয়া বা মধ্যস্বত্বলাভী ব্যক্তিরা মাঠ বা গ্রাম পর্যায়ে কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে এনে এলএসডিতে সরকার নির্ধারিত দরে ধান বেচা শুরু করবে। কালক্রমে এখানেও দুর্নীতি ঢুকে যাবে। তবে, কাজটি সহজ করার জন্য দুর্গম এলাকায় সরকার কর্তৃক একটা মধ্যবর্তী অ্যাজেন্ট নিয়োগ করা যেতে পারে। অ্যাজেন্টের কাছে বিক্রির অন্য একটা সর্বনিম্ন দর বেঁধে দেয়া যেতে পারে।

৪। এলএসডি থেকে সাধারণ ক্রেতাদের কাছে ধান বিক্রির ব্যবস্থা থাকতে হবে। এটা হবে কৃষকদের কাছ থেকে কেনা দরের চাইতে কম। একই সাথে এটাও নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কোনো দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা এলএসডি থেকে ধান কিনে আবার এলএসডিতেই চড়া দরে বিক্রি করতে না পারে।

৫। এলএসডি থেকে ধান ব্যবসায়ীদের কাছে ধান বিক্রি করতে হবে এই শর্তে যে, তারা ধান ভাঙ্গিয়ে চাল বিক্রি করবে, কোনোক্রমেই ধান বিক্রি করতে পারবে না। কারণ, এরাও অসৎ উপায়ে সরকারের কাছে চড়া মূল্যে ধান বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে পারে। এই প্রক্রিয়া বন্ধ করা না গেলে সরকারকে অহেতুক অনেক ভর্তুকি দিতে হবে। এই ধান বিক্রির মূল্য এমন হতে হবে, যাতে চালের মূল্য বেড়ে না যায়। চালের মূল্য যাতে স্থিতিশীল থাকে, সেটা সূক্ষ্মভাবে হিসাব করে এলএসডি থেকে ধান বিক্রির দর নির্ধারণ করতে হবে। আরেকটি বিকল্প পথ হতে পারে, সরকার এই ধান সরাসরি চালে পরিণত করবে, এবং সেই চাল খুচরা বা পাইকারি দরে বাজারে ছাড়বে।

সর্বশেষ জানা গেল যে, চাল আমদানির উপর শুল্কহার বাড়ানো হচ্ছে, যাতে চাল আমদানিকারকরা চাল আমদানিতে নিরুৎসাহিত হোন। আমার কাছে এটা একটা সুইসাইডাল অ্যাটেম্পট মনে হচ্ছে। কারণ, এতে হিতে বিপরীত হয়ে যাবে। একদিকে বাজারে চালের মূল্য বেড়ে যাবে, অন্যদিকে কৃষকদের ধানের মূল্যও বাড়বে, কিন্তু ধান বেচা ও চাল কেনার আনুপাতিক হার অপরিবর্তিত থাকবে; আরেকটা বিষয় হলো, চালের দরের সাথে আমাদের যাবতীয় জিনিসপত্রের দাম পরিবর্তিত হতে থাকে; ফলে চালের মূল্য বেড়ে গেলে অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রীর দামও বাড়বে সন্দেহ নেই। এতে কৃষকরা 'ন্যায্য' দাম পাওয়া থেকে বঞ্চিতই থাকবেন। তাই, চাল আমদানির শুল্কহার না বাড়ানোই উত্তম হবে। বরং, সরকারিভাবে ধান কিনে, সরকারি ব্যবস্থাপনায় ধান থেকে চাল ভাঙানোর প্রক্রিয়া শুরু করা একটা উত্তম পদ্ধতি হতে পারে।

কৃষকদের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য মাঠ পর্যায়ের সরকারি কর্মাকর্তাদের আন্তরিকতা, কর্মনিষ্ঠা, সত্যনিষ্ঠা ও সদিচ্ছা অত্যন্ত জরুরি। কেবল তারাই পারেন সরকারের যে-কোনো পদক্ষেপকে সাফল্যমণ্ডিত করে একদিকে কৃষকদের মুখে হাসি ফোটাতে, অন্যদিকে সরকারের সাফল্যের যাত্রাকে অব্যাহত রাখতে।

২৫ মে ২০১৯




এখানে সাজ্জাদ ভাইয়ের সুন্দর একটা কমেন্ট আছে। আমার পোস্টের সাথে তার কমেন্টটাও পড়তে পারেন।



মন্তব্য ২১ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০১৯ দুপুর ২:৩৫

আমি মুক্তা বলেছেন: ধান সংগ্রহ করে তা থেকে চাল তৈরি করে বিক্রি করা একটা খুবই লাভজনক ব্যবসা। দেশের অনেক স্থানেই গত কয়েক বছরে এই ব্যবসা অনেককে কোটিপতি বানিয়ে দিয়েছে। গত ১০-১৫ বছরে বাড়ি, গাড়ি ও আরোও অনেক কিছুই তারা করেছে শুধুমাত্র এই ব্যবসা থেকেই। যেখানে তাদের ১০-১৫ বছর পূর্বেও দেখেছি শ্রম বিক্রি করে জীবন চালাতে।

২৫ শে মে, ২০১৯ দুপুর ২:৪৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এগুলোকেও নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। ধান ভাঙানোওয়ালাদের জন্য সর্বনিম্ন ধানের দর আর বাজারে সর্বোচ্চ চালের দর বেঁধে দিয়ে হয়ত একটা ব্যালেন্স রক্ষা করা সম্ভব।

ধন্যবাদ সুন্দর একটা পয়েন্ট তুলে ধরার জন্য।

২| ২৫ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৭

টারজান০০০০৭ বলেছেন: কিছুই করিতে হইবে না , সরকার শুধু ৫০ টাকা কেজি ধরে ধান কিনুক।আমাদের তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ কৃষিতে ফিরিয়া আসিবে , দেশ , কৃষক ও কৃষি বাঁচিয়া যাইবে !

২৫ শে মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: তরুণরা কৃষিবিমুখ, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই। আইটি সেক্টর, বিজনেস সেক্টর তরুণদের বড়ো আকর্ষণ বর্তমানে। ফলে, কৃষি হয়ে পড়ছে অবহেলিত। শিক্ষিত তরুণরা কৃষির প্রতি আগ্রহী হলে এই সেকটরেও টেকনোলজির যথোপযুক্ত ব্যবহার সম্ভব হবে। কৃষির ব্যাপক উন্নতিও সম্ভব হবে। এজন্য, কৃষিখাত যাতে লাভজনক হয়, সে উদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। ধানের মূল্য বৃদ্ধিসহ কৃষিখাতে সরকারি সুযোগ সুবিধাও অনেক বাড়ানো দরকার। তবে, ২০টাকা কেজি না হোক, এমন একটা ব্যালেন্সড প্রাইস নির্ধারণ করতে হবে, যাতে অন্যান্য সেক্টরের সাথে প্রতিযোগিতায় কৃষিখাত পিছিয়ে না থেকে সমপর্যায়ে থাকে।

সুন্দর সুপারিশের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

৩| ২৫ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
সবাইকে সৎ হতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে সৎ লোক খোঁজা মানে ঠগ বাঁছতে গাঁ উজার অবস্থা। আমরা কেউই সৎ নই। যারা নিজেদেরকে সৎ বলে দাবি করি তারা বেশীর ভাগই সুযোগ না পেয়ে সৎ।

তবে আমার মনে হয়- সাধারণ ভোক্তারা বিশেষ করে গ্রামের ভোক্তারা বাজার থেকে সরাসরি চাল না কিনে ধান কিনে তা থেকে চাল তৈরী করে নিতে পারেন। এটা অনেক কম খরচে হতে পারে।

সমস্যা হচ্ছে- গ্রামের মানুষেরও এখন অনেক টাকা। বিদেশে চাকরি করে। তাই বউরা কাজ করতে চায় না। টিভি দেখে আর শপিং করে বেড়ায়।

আপনার প্রস্তাব সুন্দর। আমি এটাকে সমর্থন করছি।

২৫ শে মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমাদের সবসময়ই টার্গেট থাকতো যাতে ক্ষেত থেকে এক বছরের ধান পাই। সেই ধান গোলায় রাখা হতো। গোলা ভরে গেলে বাচ্চা হয়েও আমাদের মনোবল খুব চাঙ্গা থাকতো এটা ভেবে যে, গোলাভর্তি অন্তত এক বছরের ধান আছে। ধান বেশি হলে বেচা হতো। কিন্তু কম হলে মন খারাপ হতো। সেই ধান শেষ হলে আবার ধান কিনে সিদ্ধ করে চাল ভাঙানো হতো। এভাবেই বছর পার করতাম। ধানের মূল্য নিয়ে আমাদের কোনোদিন মাথা ঘামাতে হয় নি। আশ্চর্য হলো, কোনো বছর ধানের মূল্য কম হলে আমরা বরং খুশিই হতাম। কারণ, ধানের মূল্য কম মানে চালের দামও কমবে। কখনো না কখনো আমাদের, কিংবা আত্মীয়স্বজনদের বা পাড়াপড়শিদের তো চাল কিনতে হবেই; কাজেই চালের দাম কম হলে আমর সবাই সুখেই থাকবো। এজন্য, ধানের মূল্য কম হলে কোনো আক্ষেপ হতো না। মোট কথা, এটা কোনোদিন কোনো ইস্যু ছিল বলে মনে পড়ে না।

কিন্তু, আজকের চিত্র ভিন্ন। ধানের মূল্য কম হওয়ায় আমরা যারা ধান বা চাল কিনে খাই, তাদের খুশি হওয়ার কথা। কৃষকদের খুশি না হলেও অন্তত এরকম বিক্ষোভ করার কথা ছিল না। কিন্তু তারা বিক্ষোভ করছেন। কারণ, তাদের লোকসানের পরিমাণ এত বেশি হয়ে গেছে যে, বেঁচে থাকার জন্য শেষ আশ্রয় হিসাবে তারা অভিমানে ফেটে পড়েছেন।

ধান কিনে চাল ভাঙানোর প্রক্রিয়াটা কষ্টসাধ্য একদিকে, অন্যদিকে আমাদের বউঝি-মায়েরা বর্তমানে অধিক বিলাসী জীবন যাপনে অভ্যস্ত, যাতে তারা সেই ধান ভানা বা ধান ভাঙানোর মতো পরিশ্রমে যার যেতে আগ্রহী হোন। আপনার এ পয়েন্টটা বাস্তব থেকে নেয়া।

সৎ লোকের ডেফিনিশন সম্পর্কে আমি আপনার সাথে একমত।

পোস্ট সমর্থন করার জন্য ধন্যবাদ সাজ্জাদ ভাই।

৪| ২৫ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৫:১৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি পোষ্টের এক জায়গায় বলেছেন, "যারা চাউল কিনেন, তারা অবশ্যই ধান কিনে, ধান ভাংগিয়ে কম খরচে চাউল পেতে পারেন"।

-ঢাকা শহরে থেকে ধান ভাংগিয়ে চাউল বানানোর সম্ভব? চাকুরীতে, আপনাকে এতদিন বেতন কে দিয়েছে?

২৫ শে মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: যাই হোক, সরকারও এই বিষয়টা সমাধানের জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে মনে হচ্ছে। কিন্তু শুভঙ্করের ফাঁকিটা ঠিক ধরা যাচ্ছে বলে মনে হয় না। যারা চাল কিনে খান, তারা ইচ্ছে করলেই ধান কিনে চাল ভাঙিয়ে নিতে পারেন, ফলে ১৫ টাকা দরের ধান কিনলে ২৫-৩০টাকা কেজি পড়ে চালের দাম। এটা না করে তারা ৪০-৪৫টাকা দরে চাল কিনেন কীজন্য? এখানেও হয় আমাদের ক্যাককুলেশনে ভুল, অথবা বাজার দরে ভুল- কোনো এক জায়গায় সমস্যা আছে।

সম্পূর্ণ প্যারা হলো উপরেরটা। গ্রামের মানুষের চিরকালীন অভ্যাস হলো ধান কিনে সিদ্ধ করে ভাঙিয়ে চাল খাওয়া। এর ফলে দুটো উপকার হয়- ১) বাজারের চাইতে চালের মূল্য কম পড়ে। ২) বাজারের চালের চাইতে ভালো মানের চাল বাড়িতে পাওয়া যায়, যাতে খুদ-কুড়া, ভাঙ্গা চালের পরিমাণ কম থাকে, ভাত বড়ো হয়। যারা একটু সচ্ছল, তারা যুগ যুগ ধরে এভাবেই ধান কিনে তা থেকে চাল ভাঙিয়ে থাকেন। যাদের একযোগে বেশি পরিমাচাণ ধান কেনার সামর্থ নেই, তারা বাজার থেকে খুচরা চাল কিনে থাকে। তবে, অনেকে এসব ঝামেলা এড়ানোর জন্য বস্তায় বস্তায় চালও কিনে থাকে।

কিন্তু, ধান ভাঙিয়ে চাল কেনার মধ্যে এত সুবিধা থাকা সত্ত্বেও মানুষ তা করছে না কেন? এখন চালের চাইতে ধানের মূল্য তুলনামূলকভাবে অনেক কম। যারা চাল কিনেন, তারা এ পদ্ধতিতে অনেক লাভবান হতেন। তা সত্ত্বেও মানুষ এ পদ্ধতিতে কেন যাচ্ছেন না? এর জবাবে উপরে সাজ্জাদ ভাই সুন্দর কিছু কথা বলেছেন। তিনিও বলেছেন ধান কিনে চাল ভাঙানোর কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না কারণ- সমস্যা হচ্ছে- গ্রামের মানুষেরও এখন অনেক টাকা। বিদেশে চাকরি করে। তাই বউরা কাজ করতে চায় না। টিভি দেখে আর শপিং করে বেড়ায়। (সাজ্জাদ ভাই বলেছেন)। আর শহুরে মানুষের পক্ষে এটা করা সম্ভবও না। ফলে, ধানের দামের জায়গা অপরিবর্তিত থাকছে, চালের দাম বাড়ছে বই কমছে না (গত বছরের তুলনায় এবার চালের দাম কমেছে)।

-ঢাকা শহরে থেকে ধান ভাংগিয়ে চাউল বানানোর সম্ভব? সম্ভব না। তবে, কারো কারো জন্য সম্ভব হতে পারে। আমার বাসায় সর্বশেষ কবে চাল কিনেছি আমি মনে করতে পারছি না (জরুরি সময়ে অল্পবিস্তর চাল কেনা ছাড়া)। আমি যখন যেখানেই থাকি না কেন, একসাথে কয়েক মণ ধান কিনে বাসায় রাখি। আশেপাশে কোনো গৃহস্থ বাড়ি থেকে কিংবা কোনো প্রফেশনালদের দিয়ে ধান সিদ্ধ করিয়ে চাল ভাঙিয়ে নিই। আমার ক্ষেত্রে কম মূল্যে চাল কেনা উদ্দেশ্য থাকে না; এবং তাতে মূল্য কমও হয় না (অনেক সময় খাজনার চাইতে বাজনা বেশি হয় বলে)। কিন্তু, যাতে ভালো চাল পাই, ভেজালমুক্ত, সেটা নিশ্চিত করি। বর্তমানে আমি শহরে থাকলেও আমার বাড়ি থেকে এ পদ্ধতিতে চাল আনা হয়।

চাকুরীতে, আপনাকে এতদিন বেতন কে দিয়েছে? – আমার টেক্সটে বলেছি, আমি একজন কৃষকের ছেলে; আমি নিজেও কৃষিকাজ করে বড়ো হয়েছি। ---- প্রিয় চাঁদগাজী ভাই, আমার অন্তরে আপনার জন্য একটা অনেক শ্রদ্ধার জায়গা আছে। আপনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার চাচা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি বেশিরভাগ সময় নেংটা থাকতাম। যে চেতনা নিয়ে বড়ো হয়েছি, যুদ্ধে যাওয়ার মতো বয়স হলে আমাকে কেউ ঘরে আটকে রাখতে পারতো না। --- আমার আগের পুরোনো পোস্টগুলোতে মাঝে মাঝে আপনার কমেন্ট চোখে পড়ে। প্লাস, অন্যান্যদের পুরোনো পোস্টেও আপনার কমেন্ট দেখি। সেগুলো খুব বুদ্ধিদীপ্ত, পরিশীলিত ও পোস্টের সাথে প্রাসঙ্গিক; তাতে আপনার প্রজ্ঞা, ব্যক্তিত্ব ও মননশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়। আপনাকে বিনীত ভাবে অনুরোধ করবো- নিজের সবচাইতে মর্যাদাপূর্ণ ও শ্রদ্ধার জায়গাটা দয়া করে ধরে রাখবেন। বিভিন্ন ইঙ্গিতপূর্ণ ও দাম্ভিকতাপূর্ণ কমেন্ট আপনাকে উপরে তোলে না, মিডিয়ায় সাড়াসাগানো এক হাস্যকর ব্যক্তির কথা মনে করিয়ে দেয়। এমন করে যে কেউ কমেন্ট করতে পারেন, তাতে ক্রেডিটের কিছু নেই, এবং ট্যালেন্টেরও কিছু নাই।

এ দেশে ভেসে আসি নি। এ ব্লগেও ভেসে আসি নি। মুখস্থ কথা বলি না। প্র্যাক্টিক্যাল জ্ঞান নিয়ে চলি ও জীবিকা নির্বাহ করি। আমার এ কমেন্ট কীজন্য আমার ভেতর থেকে উৎসারিত হয়েছে, সেটা যদি বুঝে থাকেন, তাহলে দয়া করে মাটির দিকে তাকান, নিজেকে জানুন এবং নিজেকে চিনুন।

ধন্যবাদ প্রিয় চাঁদগাজী ভাই। শুভেচ্ছা রইল।

৫| ২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ৮:২৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধান বেচতে হলে বিক্রেতার কৃষি কার্ড থাকতে হয়, এটা জোগাড় করতে প্রচুর ঘুসের লেনদেন হয়।
আবার কেন্দ্রের কর্তারা ধানে আদ্রতা বেশি, চিটা বেশি হেন তেন দেখিয়ে একটা অংশ ঘুষ দাবি করে।

২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ১০:০১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এজন্যই বলেছি, বিষয়টা খুব জটিল। সৎ ও নিষ্ঠাবান সরকারি লোক না হলে কোনো পদক্ষেপই সফল হবে না। ফুলপ্রুফ সিস্টেমের জন্য কৃষিকার্ড থাকা জরুরি। আবার, চাতুর্য ও দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য ধানের গুণগত মান পরীক্ষা করাও আবশ্যক। আমাদের দেশে চালে পাথর মেশানো, কেমিকেল বা সাবান দিয়ে চকচকে করা নতুন কিছু না। মসলায় পাথরের গুঁড়া, কাঠের গুঁড়া ইত্যাদি মেশানো হয়। কাজেই, ধানের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য কেউ কম শুকনা ধান বেচতে আনবে না, বা চিটাযুক্ত ধান আনবে না, সেটাও কিন্তু হলফ করে বলা যায় না। এ সবকিছুর জন্যই একটা স্বচ্ছতা ও দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশের দরকার।

তবে, ঘুষ বাণিজ্য যদি বন্ধ করা যায়, তাহলে বাকি দুর্নীতি অটোমেটিক্যালি কমে আসবে।

ধন্যবাদ গিয়াস ভাই সুন্দর কমেন্টের জন্য।

৬| ২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ৮:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্ট টি ফেসবুকে পরেছি।
আমি আপনার সাথে একমত।

২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ১০:০১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ফেইসবুকে পোস্টটি পড়ার জন্য এবং একমত পোষণের জন্য ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই।

৭| ২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ৯:২০

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: আপনার সাথে একমত :)

২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ১০:০৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: একমত পোষণের জন্য ধন্যবাদ।

একটা প্রশ্ন ছিল। প্রায় কমেন্টেই আপনার একটা হাসির ইমো দেখতে পাই, যা অনেক সময় আপনার কমেন্টের গুরুত্ব হ্রাস বা মূল্যহীন করে ফেলে। এই হাসির ইমো'র কারণ কী, বলবেন প্লিজ?

৮| ২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ১০:১৩

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: Nice observation !

আসলে আমি নিজে সবসময় হাসিখুশি থাকি এবং এটার দ্বারা আমার একটি হাস্যোজ্জ্বল প্রতিচ্ছবিই ফুটে ওঠে বলে আমার বিশ্বাস। তবে কমেন্ট এ হাসির ইমো ব্যবহার করলে তা কমেন্টের গুরুত্ব হ্রাস বা মূল্যহীন করে তা এবারই প্রথম শুনলাম। বিষয়টা দেখছি ভেবে দেখতে হচ্ছে !

আবার আমি এটার দ্বারা একরকমের আশ্বাস ও বোঝাই। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন :)

২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:২০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সবাই হাসিখুশি থাকতে পছন্দ করে। তবে, ইমোর ব্যবহারটা সম্পর্কে সতর্ক না হলে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হতে পারে সহজেই। তবে কমেন্ট এ হাসির ইমো ব্যবহার করলে তা কমেন্টের গুরুত্ব হ্রাস বা মূল্যহীন করে তা এবারই প্রথম শুনলাম। এটা প্রথম শোনার ব্যাপার না আসলে, এটা বোঝার ব্যাপার।

ধন্যবাদ।

৯| ২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ১২:৪৫

অপু তানভীর বলেছেন: সরকার কি এই ব্যাপার গুলো জানে না ? অবশ্যই জানে এবং খুব ভাল করেই জানে । তাদের কাছে সমাধান পদ্ধতিও জানা আছে ।
কিন্তু সরকার এসবের কিছুই করবে না ।
আর আমাদের সরকারি কর্মকর্তা এতোই সৎ যে তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু আশা করা বিরাট বোকামির কাজ !

১০| ২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ১:২৬

জাহিদ অনিক বলেছেন: কৃষকদের উন্নতির কথা সত্যিভাবে ভাবতে চাইলে একজন কৃষকের মত ভাবতে হবে, তার জায়গা থেকে ভাবতে হবে।
আপনি কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন বলেছেন, আপনি নিশ্চয়ই জানবেন তাদের চাহিদাগুলো।

পোষ্টের কয়েকটা টপিক ভালো লেগেছে। কয়েকজন কৃষক মিলে একটা রাইচ মিলের মত ব্যবস্থা করে নিজেরাই ধান থেকে চাল তৈরী করে বিক্রি ব্যবস্থা করা গেলে ভালো হয়, কিন্তু সেখানেও মূলধন ও নিজেদের মধ্যে রেষারেষির ভয় থাকে। ভর্তুকি দেয়া উচিত সরকারের। অবশ্যই উচিত।

১১| ২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ১:৫৮

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: সুন্দর অালোচনা করেছেন। প্রশ্ন হল, এসবের বাস্তবায়ন আদৌ কখনো হবে কী না/বাস্তবায়িত হলে বালিশ কিনতেই অর্ধেক বরাদ্দ শেষ হবে কিনা।


বিভিন্ন সমস্যা/ইস্যুতে আমাদের ব্লগে যেসব আইডিয়া এসেছে তার অর্ধেকও যদি বাস্তবায়ন করা হতো আজ হয়তো কৃষকদের এমন অবস্থায় পড়তে হতো না। দেশও অারো অনেকদূর আগাতো...

১২| ২৬ শে মে, ২০১৯ ভোর ৪:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:


দেশে গলাকাটা ক্যাপিটেলিজম চলছে, এটাকে কার্যকরী করছে "স্বল্প সময়ের বিনিয়োগ", যেমন কন্ট্রাকটরী, এসপোর্ট-ইমপো্র্ট, মহাজনী, সোনা ইত্যাদির চোরাকারবারী, কিনে-সাথে সাথে বিক্রয় (ধানের চাতাল); কৃষকেরা এগুলোতে অংশ নিতে পারার কথা নয়; আবার কৃষিকদের উৎপাদন কম মুল্যের, কারখানাার প্রডাক্টের মুল্যের সমান নয়; কিন্তু উৎপাদনের সাইকেল ও ওয়র্কিং আওয়ার দীর্ঘ; এগুলোর সমাধানের জন্য, কৃষিতে কঠিন অংকের কমপ্লেক্স ফাইন্যান্স দরকার।

১৩| ২৬ শে মে, ২০১৯ ভোর ৪:১২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমি ৫ম শ্রেণী (এই সময় আমার বাবার মৃত্যুর হয়) থেকে শুরু করে, ইন্টারমিডিয়েট পাশ করা অবধি প্রফেশানেল কৃষক ছিলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.