নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।
বিনীত সতর্কতা : অনেক বড়ো পোস্ট। কমপক্ষে ৩০ মিনিট লাগবে পড়তে।
সেদিন জুম্মাবার ছিল। কুটিমিয়ার বাবা আগেই মসজিদে চলে গেছেন; মাঠে গিয়েছিল বলে সে একটু দেরিতে ঘর থেকে বের হলো।
ঘর থেকে বাইরে কদম ফেলতেই এক জটাধারী পাগল এসে হাঁক দিল, ‘একটা ট্যাকা দে, নইলে ধ্বংস হইয়া যাবি।’
কুটিমিয়া ভয় পেয়ে গেলো। তার জমানো কয়েকটা টাকা ঘরে আছে। সেখান থেকে একটা টাকা নিয়ে এসে পাগলের হাতে দিতে উদ্যত হয়েছে, এমন সময় তার মা এসে ধমকে উঠলো, ‘ট্যাকা কি গাছে দরছে নি? কোতাকর কুন্ পাগলে আইয়া কী না কী কইলো আর অমনি ট্যাকা বাইর কইরা দিওন লাগবো? ট্যাকা থু।’
কুটিমিয়া বিব্রত হয়। সে পাগলকে টাকাটা না দিয়ে লুঙ্গির কোঁচড়ে গুঁজে রাখে। তবে তার মন সারাক্ষণ খুঁতখুঁত করতে লাগলো। সে মসজিদে গেলো, কিন্তু স্থিরভাবে নামাজে মনোনিবেশ করতে পারলো না। তার মনে হলো, এই একটি টাকা দান না করার জন্যই হয়তো এই পাগলের অভিশাপে গোয়ালের হালের গরু দুটি মরে যেতে পারে, তার ছোটো বোনটি অন্ধ হয়ে যেতে পারে, তার মা-বাবা, ভাইবোন, এমনকি সে নিজেও হয়তোবা ভয়ংকর কোনো বিপদে পড়তে পারে। লোকটা তো পাগল না-ও হতে পারে, ভিক্ষুকরূপী ঈশ্বর, মন পরীক্ষা করে দেখার জন্য এক টাকা ভিক্ষা চেয়েছে।
এরূপ নানাবিধ ভাবনা ভাবতে ভাবতে সে যখন নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরছিল, হঠাৎ দেখে সেই পাগলটি থালা হাতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে। সে ছুটে কাছে গিয়ে তার থালায় একটি টাকা রাখে, যেটি সে এই পাগলকে দেবার জন্য ঘর থেকে বের করে এনেছিল।
সেদিন রাতে তার ছোটো বোন নুতুর পাতলা পায়খানা ও বমি হয়, ভোর হবার আগের মুহূর্তে নুতু মারা যায়। দুপুরের দিকে কুটিমিয়ার বাবা বিছানায় পড়েন, তাঁর গুঁটিবসন্ত হয়, সন্ধ্যারাতের দিকে তার মাও টের পায় যে, তার শরীর ভরে গুঁটি উঠছে; পরের দিন সকালে গোয়ালের সবচেয়ে বড় বলদটা একেবারে অকারণে হাম্বা হাম্বা রবে চিৎকার করতে থাকলো, তারপর নেতিয়ে পড়ে মারা গেলো। প্রায় বিশদিন পর্যন্ত কুটিমিয়ার মা-বাবা বিছানায় পড়ে থাকলেন।
কুটিমিয়ার মনে আর কোনো সন্দেহই থাকলো না যে, সেই পাগলের অভিশাপেই তাদের পরিবারে এতো বড় তাণ্ডব বয়ে গেলো। ওর মা পাগলের খোঁজে হন্যে হয়ে উঠলো। কুটিমিয়া নিজেও সেই পাগলকে খুঁজলো, কিন্তু তাকে আর কোথাও পাওয়া গেলো না। তবে অন্য আরেকজন পাগলের সাক্ষাৎ পাওয়া গেলো।
একদিন টিফিন পিরিয়ডে স্কুল ছুটি হয়েছিল। কুটিমিয়া বাড়ি না ফিরে দু শ গজ দক্ষিণে মেঘুলা বাজারে গেলো চুল কাটাতে। সেলুনের পাশে উঠোনের মতো খোলা একটা জায়গা। সেখানে অনেক মানুষের ভিড়। কুটিমিয়া সেখানে গিয়ে দাঁড়ায়। দেখে, তার দ্রুতপঠনের কাবুলিওয়ালার মতো বিশাল-দেহ এক পাগল—কালো রঙের ঢিলেঢালা কাবুলি তার পরনে, মাথায় কালো হ্যাট, চারধারে ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলে, শ্মশ্রূমণ্ডিত মুখমণ্ডল, তার হাতে বাঁশির মতো এক লাঠি, লাঠি নেড়ে নেড়ে সে অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে আর মাঝে মাঝেই চিৎকার দিয়ে ধুয়া তুলছে:
‘এই দুনিয়া ফানা হবে
কিছুই রবে না রে, কিছুই রবে না...’
ভিড় ঠেলে কুটিমিয়া পাগলের একদম কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। পাগলের গলায় লম্বা পুঁতির মালা কিংবা তসবি ঝোলে। সবচেয়ে আশ্চর্য তার ডানহাতের আঙ্গুলভর্তি আংটি— তিনটি আংটি তার তিন আঙ্গুলে শক্তভাবে এঁটে আছে, মাংস ফুলে এতোই স্ফীত হয়েছে যে আংটির পেঁচানো ধার দেখা যায় না। সবচাইতে বীভৎস ও ভয়ংকর দৃশ্য যা দেখে কুটিমিয়ার গা কাঁটা দিয়ে উঠেছিল তা হলো, পাগলের বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির গোড়ায় মাংস ছিদ্র করে একটি বড় সাদা আংটি গেঁথে রাখা হয়েছে। পাগল হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলে, আংটিটা সেই সঙ্গে ঝুলতে থাকে। কী অদ্ভুত হাস্যলীলায় সেই পাগল সবাইকে মাতিয়ে তুলেছে।
এ কোন্ পাগল? কুটিমিয়ার মনে প্রশ্ন জেগেছিল— নতুন বেশে সেই পাগল নয় তো যে একদিন তার কাছে একটা টাকা ভিক্ষা চেয়েছিল, যার অভিশাপে তার ছোটো বোন নুতু মারা গিয়েছিল, গোয়ালের সবচাইতে বড় বলদটা মরে গিয়েছিল, তার মা ও বাবা গুঁটিবসন্তে আক্রান্ত হয়েছিলেন? কিন্তু এই পাগল কোনো টাকা ভিক্ষা চাইছে না। এর কি টাকার দরকার নেই? পেটের খিদে নেই? সে অনর্গল অট্টহাসি হাসছে, গলা ছেড়ে ধুয়া তুলছে—‘এই দুনিয়া ফানা হবে—’, আরো কত মজার মজার কথা বলছে, মানুষ প্রাণভরে তা উপভোগ করছে।
কুটিমিয়ার বুক আনচান করতে লাগলো। তার বুকপকেটে দুটি টাকা আছে, চুল কাটানোর টাকা। আজ যদি এই পাগল টাকা চায় সবার আগে সে-ই তার হাতে টাকা দুটি তুলে দিবে।
বেলা পড়ে যায়, আশ্চর্য পাগলের মেলা তবু ভাঙ্গে না। মন্ত্রমুগ্ধের মতো কুটিমিয়া সেই তখন থেকেই অনড় দাঁড়িয়ে আছে। তার মনে একবার একটু ইচ্ছেও জাগলো— পাগল যখন আসর ছেড়ে বের হয়ে যাবে, সে তার কাছে গিয়ে বলবে, সে যেন তার সাথে তাদের বাড়িতে যায়, তার মা-বাবা এমন একজন পাগলের জন্য অস্থির হয়ে আছেন।
অনেক পরে জটলা ভেদ করে পাগল বের হয়ে গেলো, তার পিছে পিছে ছুটলো কিশোরের দল, অনেক যুবক, এমনকি বয়স্করাও। কুটিমিয়াও পিছু নিল। সে ভাবে, পাগলের একদম কাছাকাছি হবে সে, তার হাত ধরে গা ঘেঁষে হাঁটতে হাঁটতে সে পাগলকে অনুনয় করে বলবে, তাদের বাড়িতে তাকে যেতেই হবে, যেতেই হবে— তার মা-বাবা একজন পাগল খুঁজছেন।
বাজারের ভিতরের গলি দিয়ে পাগল তার ধুয়া তুলতে তুলতে পশ্চিম দিকে ছুটছে। দেখতে দেখতে তার পেছনে প্রচুর মানুষ জড়ো হলো, কেউ জানে না তারা কেন কী উদ্দেশ্যে এই পাগলের পিছে ছুটে চলেছে। মানুষ ছুটছে তো ছুটছেই। যেন এক হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা, সব মানুষ এক বংশীবাদকের পিছে ছুটে চলেছে। এখন মানুষের মুখেও সেই ধুয়া। পাগল সুর তুলে গেয়ে ওঠে—এই দুনিয়া ফানা হবে কিছুই রবে না, সঙ্গে সঙ্গে ছুটন্ত মানুষের মুখেও প্রতিধ্বনিত হতে থাকলো— এই দুনিয়া ফানা হবে কিছুই রবে না।
কিশোর কুটিমিয়া জানে না এই ধুয়ার অর্থ কী। সবে সে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র, এই আধ্যাত্মিক ধুয়ার গূঢ়ার্থ তার বোধগম্য নয়, তবু সে সবার সাথে সুর তুললো— এই দুনিয়া ফানা হবে কিছুই রবে না রে, কিছুই রবে না। যেন এক স্বপ্নাতুর ঘুমের ঘোরে আছে সে, সবাই যেদিকে ছুটছে সে-ও সেদিকে ছুটে চলেছে পাগলের পিছে পিছে। সে দৌড়ে পাগলের নাগাল পাওয়ার চেষ্টা করে, কিছুদূর অগ্রসর হয়, আবার মানুষের চাপাচাপিতে পেছনে পড়ে যায়।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত কুটিমিয়া পাগলের নাগালে চলে এলো। তার বামপাশ ঘেঁষে সে হাঁটতে লাগলো। সুর করে সমবেত ধুয়া তুলতে লাগলো। সে বেমালুম ভুলে গেলো তার মনের সেই কথাটি, যে কথা বলার জন্য সে কত উদ্গ্রীব ছিল— পাগলকে তাদের বাড়িতে যেতে বলবে।
মেঘুলা বাজার পার হয়ে খালপাড়ের সরু রাস্তা ধরে পশ্চিম দিকে পদ্মা নদীর পানে ছুটে চললো পাগল ও তার অনুসারীদের দল। কেউ জানে না কোথায় গিয়ে এই যাত্রা শেষ হবে।
ছুটতে ছুটতে তারা নদীর তীরে চলে এলো। পাগলের দু পাশে জড়ো হয়ে দাঁড়ালো সবাই। প্রমত্ত পদ্মার উত্তাল ঢেউ পাড়ে এসে আছড়ে পড়ছে, দড়াম দড়াম শব্দে ঝপাঝপ তীর ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। নদীর ওপাড় যায় না দেখা, মাঝখানে শুধু ঢেউ আর ঢেউ। কুটিমিয়া ভাবে, পাগলের মনে কতই না বিচিত্র শখ জেগেছে, তাই এই সর্বগ্রাসী পদ্মাকে দেখার জন্য এতোদূর ছুটে এসেছে।
সময় চলে যায়, পাগল একটানা তার ধুয়া গেয়ে যাচ্ছে, ফিরে যাবার কোনো মতিগতি নেই। কুটিমিয়া একবার ভাবে, তার হাত ধরে তাকে টান দিয়ে বলবে, চলো, তাড়াতাড়ি ফিরে যাই। কিন্তু তার সাহসে কুলায় না।
হঠাৎ পাগলের ধুয়া বন্ধ হয়ে যায়। সে স্থির হয়ে আকাশের দিকে মুখ তুলে তাকায়— চোখ জোড়া ঈষৎ মুদিত করে। বিড়বিড় করে কী যেন বলতে থাকে, তারপর অকস্মাৎ ‘আল্লাহু আকবর’ বলে বিকট চিৎকারে চারদিক প্রকম্পিত করে এক লম্ফে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আশ্চর্য পাগল। ঘটনার আকস্মিকতায় মুহূর্তকালের জন্য সবাই স্তম্ভিত হয়ে পড়ে, পরক্ষণেই ‘হায় হায়’ ধ্বনি ওঠে মানুষের, পাগলের মৃত্যু-আশংকায় সবার মুখ শুকিয়ে যায়— প্রবল ঘুর্ণিস্রোত আর ঢেউয়ের তোড়ে নিমিষেই পানির নীচে তলিয়ে যায় পাগল।
পানির নীচে তলিয়ে গেছে পাগল— হতবাক মানুষের উদ্বিগ্ন চোখ ঢেউয়ের ভাঁজ ভেঙ্গে কাছ থেকে বহুদূর চলে যায়— যদিই বা পানির ভিতর থেকে ‘ভুউশ’ করে মাথা তুলে ভেসে ওঠে আশ্চর্য পাগলটি।
সময় পেরিয়ে যায়, সূর্য নামতে থাকে নীচে— একদল মানুষ গভীর উৎকণ্ঠায় অপলক তাকিয়ে থাকে, পাগলের ভাসমান মৃতদেহটি যদি ভেসে ওঠে— যদিই বা ভেসে ওঠে।
পাগলের ভাসমান মৃতদেহটি ভেসে ওঠে না। ধীরে ধীরে মানুষ স্থান ছাড়তে শুরু করে— যেতে যেতে আফসোসে ফেটে পড়ে— হায়, আলাভোলা পাগলটা চোখের সামনে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে মারা গেলো!
হঠাৎ কে একজন চিৎকার করে ওঠে, ‘ঐ যে, ঐ যে দেখা যায়...’
চকিতে সবাই ফিরে তাকায়। অবাক হয়ে দেখে— দূরে— বহুদূরে— পানির ওপর সটান চিৎ হয়ে ভেসে ঢেউয়ের সাথে দোল খাচ্ছে আশ্চর্য পাগল— তার সম্পূর্ণ শরীরখানি পানির ওপরে ভাসমান, পা আর হাতগুলো এলোমেলো ছড়ানো— মাঝে মাঝেই ডান হাতের লাঠিটি উঁচিয়ে আকাশের দিকে তুলে ধরে। তীরের মানুষ আশ্চর্য হয়ে ভাসমান পাগলের আজব কীর্তি দেখে। ভাসতে ভাসতে পাগলের দেহখানি আরো দূরে চলে যায়। যতোক্ষণ দেখা গেলো তীরের মানুষ ঠায় দাঁড়িয়ে থাকলো। দূরে যেতে যেতে এক সময় অন্ধকারের ছাযায় সে অদৃশ্য হয়ে গেলো— তখন পশ্চিমাকাশে লাল সূর্য পাটে বসেছে।
বাড়ি ফিরে সে রাতে কুটিমিয়ার বহু রাত অব্দি ঘুম হলো না। সে কেবলই ভাবতে লাগলো, এ কি পাগল, নাকি অন্য কিছু? সে এরূপ আরেক পাগলের কথা শুনেছে, সেই পাগলের দেশ বহুদূরে নয়, তার দাদির বাপের গাঁয়ে সেই পাগলের বাড়ি ছিল, তাদের গ্রাম থেকে মাত্র সাতটি গ্রাম উত্তরে। ছোটোবেলায় তার দাদি তাকে সেই পাগলের কথা বলতেন। সে আসলে পাগল ছিল না, ছিল ফকির। লোকে বলতো পাষাণ ফকির। এক রাতে পাষাণ ফকির ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লো। তার স্ত্রী কাঁদলো, মা কাঁদলো, কিন্তু তাকে ফেরানো গেলো না। সে গৃহত্যাগী হয়ে পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরে বেড়াবে পরমাত্মার সান্নিধ্য লাভের জন্য। পাষাণ ফকির সবাইকে উপেক্ষা করে ছুটে চললো, পিছে পিছে ছুটছে তার ক্রন্দনরতা স্ত্রী ও জননী।
পদ্মার পাড়ে এসে সে পানির ওপর কদম ফেললো। তার মা ও স্ত্রী অবাক হয়ে লক্ষ করলো, ডাঙ্গায় হেঁটে চলার মতো পাষাণ ফকির পানির ওপর দিয়ে অতি স্বাভাবিক পদক্ষেপে ধীরে ধীরে হেঁটে যাচ্ছে। বধূ ও জননী করুণ কান্নায় বুক ভাসালো, কিন্তু পাষাণ ফকির পিছুটানের কোনো ভ্রূক্ষেপই করলো না। সেই যে সে ঘর ছাড়লো, ইহজনমে আর ফিরলো না। তারপর কেউ তার আর কোনো খবর জানতে পারে নি।
২
কার্তিকপুর-নুরুল্লাপুর গ্রামগুলো পীরফকিরদের আখড়া। নুরুল্লাপুরের শানাল ফকির, কার্তিকপুরের মাদাইর ফকির, শ্যামফকির এবং শারফিন ফকিরের ভক্তদের সংখ্যা গুনে শেষ করা যায় না। এঁরা পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে বংশ-পরম্পরায় ফকিরি লাভ করেছেন। ফকিরি প্রাপ্তি অসামান্য সাধনার ব্যাপার। মুরিদ রূপে বছরের পর বছর বাবা-ফকিরের পদসেবা করতে হয়। মৃত্যুর সময় বাবা যাঁকে ফকিরি দান করে যান তিনিই পরলোকগত ফকিরের স্বত্বপ্রাপ্ত উত্তরসূরি। অনেক সময় অনেক মুরিদ ভাগ্যদোষে ফকিরি প্রাপ্তিতে বঞ্চিত হয়ে থাকেন। জনশ্রুতি আছে, ডাইয়ারকুম গ্রামের জাবেদ হাওলাদার জনৈক করিম শাহ্ ফকিরের মুরিদ হয়েছিলেন। কৈশোর-শৈশব থেকেই তিনি ফকিরি প্রাপ্তির বাসনায় বাবা করিম শাহ্’র চরণতলে ভক্তিরত ছিলেন। বাবার শুভ দৃষ্টিও তাঁর ওপরই ছিল এবং মানুষের ধারণা অমূলক ছিল না যে জাবেদ হাওলাদারই বাবার ফকিরি লাভে ধন্য হবেন। বাবা করিম শাহ্ যেদিন শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করবেন, জান কবজ হবার আগের মুহূর্তে তিনি আঁখি মুদিত করে জড়ানো স্বরে টেনে টেনে ডাকলেন, ‘জাবেদ কইরে?’ জাবেদ হাওলাদার তখন বাবার পথ্য তৈরিতে ব্যস্ত ছিলেন। পাশে বসে পাখায় বাতাস করছিলেন জাবেদ হাওলাদারের জ্যেষ্ঠ সহোদর আবেদ হাওলাদার। ফকিরি তাঁরও আরাধ্য ছিল আকৈশোর, কিন্তু তিনি কখনো উপযুক্ত রূপে বাবার সেবায় আত্মনিয়োগ করতে পারেন নি, অধৈর্য হয়ে পড়তেন। আবেদ হাওলাদারের মাথায় কূটবুদ্ধি খেলে যায়; তিনি মাথা নীচু করে বাবার কাছে এগিয়ে এসে অস্থির কণ্ঠে বলেন, ‘বাবা, আমি তো আপনার পায়ের তলায়ই আছি।’ বাবা শরীরে শক্তি সঞ্চয় করে ডান হাত উঁচিয়ে আবেদ হাওলাদারকে স্পর্শ করেন, তারপর ঈষৎ কাত হয়ে তাঁকে লক্ষ করে মৃদু ফুঁ ছুঁড়ে দিয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
এরপর আবেদ হাওলাদার ফকির হলেন বটে কিন্তু তাঁর কনিষ্ঠ জাবেদ হাওলাদার জ্ঞানহারা পাগল হয়ে গেলেন। তিনি দু হাতে বুক চাপড়ান আর চিৎকার করে করিম শাহকে অশ্লীল ভাষায় গালি ঝাড়তে থাকেন। বাবা করিম শাহ্ তাঁর সাথে বেইমানি করেছেন, তাঁকে ঠকিয়ে তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতাকে ফকিরি দান করে গেছেন।
কত দূর-দূরান্ত থেকে যে ভক্তরা ছুটে আসেন তার ইয়ত্তা নেই। কোনো কোনো ফকিরের বিশেষ শ্রেণীর ভক্ত রয়েছে, যেমন রয়েছে মাদাইর ফকিরেরও। এদের মুরিদ হওয়ারও একটা আশ্চর্য জনশ্রুতি আছে। মাদাইর ফকির একবার তাঁর এক শিষ্যের নিমন্ত্রণে ঢাকা গিয়েছিলেন। লঞ্চ থেকে সদরঘাটে নেমে চিকন অলিগলি খুঁজে তিনি শিষ্যের বাড়ি যাচ্ছিলেন; হঠাৎ একদল মেয়ের কলকল হাসিতে ফিরে তাকান, তখনো তিনি বুঝতে পারেন নি এই ললনারা তাঁকেই উদ্দেশ্য করে রঙ্গহাস্যে গলে পড়ছিল। তাদের বিশ্রী আর অশালীন দেহভঙ্গি উপেক্ষা করে তিনি আপন মনে সামনে এগোতে থাকেন— অমন সময় এক মেয়ে দৌড়ে এসে তাঁর হাত টেনে ধরে। বলে, ‘আমার ঘরে আসো গো নাগর।’ হাত ছুটিয়ে নেবার আগেই লক্ষ করে দেখেন আরো অসংখ্য মেয়ে তাঁকে ঘিরে ফেলেছে, তাদের ইঙ্গিতপূর্ণ কুৎসিত হাসিতে মুখরিত চারদিক। তাঁর বুঝতে আর বিলম্ব হয় না যে তিনি বেজায় ভুল জায়গায় চলে এসেছেন।
‘তোরা কী চাস?’ মাদাইর ফকির এ কথা জিজ্ঞাসা করার সঙ্গে সঙ্গে বেশ্যাগণ আবারো কলকল হাসিতে ফেটে পড়ে। অশ্লীল ইঙ্গিতে বলে, ‘তোমারে চাইগো...ঘরে চলো, ঘরে চলো...।’
অতঃপর কেউ তাঁর হাত ধরে টানে, কেউ টানে ধূতি, কেউ তাঁর চুলের বেণি ধরে টানে, কেউবা টানে শ্মশ্রূ। মাদাইর ফকির অস্থির হয়ে বলেন, ‘আমারে ছাইড়া দে তোরা, জ্বালাইস না, ছাইড়া দে।’
বেশ্যাদের কেউ বলে, ‘আসো না নাগর, রস খাইয়া যাও।’
ফকির বলেন, ‘তোরা কি চিনলি না আমারে? আমি তো তোদেরই জাত।’
‘আমাদের জাত?’ ওরা খিলখিল করে হেসে ওঠে, ‘আমাদের জাত হইলে তোমার দাঁড়িগোঁফ গজাইলো ক্যান গো রসের নাগর?’
এমন সময় একজন সামনে এসে হঠাৎ ধূতির কোনা ধরে এক টানে তাঁকে উলঙ্গ করে ফেলে, তখনই সবাই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলো। মাদাইর ফকিরের নিম্নদেশে কোনো পুরুষাঙ্গ নেই, সেখানে একটা পুষ্পের মতো ফুটে আছে শাশ্বত নারীর একখানি যোনি।
‘বাবা’ বলে বেশ্যারা তাঁর পায়ে লুটিয়ে পড়ে। বাবা তাদেরকে ক্ষমা করেন।
পৌষ মাসে যে চাঁদ ওঠে, সেই চাঁদের পূর্ণিমারাতে ফকির বাড়িতে ধামাইল বসে। দূর-দূরান্তের ভক্তরা পায়ে হেঁটে ধামাইলে এসে শরিক হয়।
মাদাইর ফকিরের বাড়িতে যতো ভক্ত আসে, তাদের এক চতুর্থাংশ হলো দেহপসারিণী। কীভাবে মাদাইর ফকিরের অলৌকিক ক্ষমতার কথা সারাদেশে এ নিষিদ্ধ নারীদের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল তা এক বিস্ময় বটে।
৩
পৌষ-চাঁদের ধামাইল একটা দারুণ বিস্ময়। ফকির-বাবাদের অলৌকিক শক্তি-গুরু— অদৃশ্যে থেকে যিনি তাঁদের যাবতীয় ফকিরি সঞ্চালিত করেন, ভরা পূর্ণিমার টলমল লগ্নে তিনি বাবার সামনে আবির্ভূত হোন, সেটাই ধামাইলের লগ্ন। সন্ধ্যায় তেঁতুল গাছের কাঁচা ডাল ভেঙ্গে লাকড়ি করা হয়। বা’র-বাড়ির প্রশস্ত উঠোনের মাঝখানে সেই লাকড়ি সাজানো হয়, তারপর পূর্ণিমা-লগ্নের জন্য অপেক্ষা। ফকির বাবা তাঁর বাবার মাজারের একধারে দরগা করেন; ভক্ত-মুরিদ পরিবেষ্টিত হয়ে আসনে জোড়াসিন দিয়ে বসেন, মাজারের চারপাশ জুড়ে ধূপদানি ও মোমবাতি জ্বলে, কুণ্ডলী পাকানো ধূপের ধোঁয়া ঘরময় ছড়িয়ে পড়ে, গন্ধে ভারী হয়ে ওঠে বাবার আসন এবং সারা ঘর। বাবার সামনে পায়ের কাছে বড় কাষার থালায় সোনারুপার মোহর-অলঙ্কার, টাকাপয়সা; একটু দূরে চালডাল ভর্তি বৃহৎ কয়েকটা ঝাঁকা; দূরাগত ভক্তবৃন্দ সাধ্যমতো থালায় টাকাপয়সা বা গয়নাগাটি ফেলছে, গামছায় বাঁধা চালডাল ফেলছে ঝাঁকার ভিতর। দরগার বাইরে ভক্তদের মানত করা হাঁস-মুরগিতে বোঝাই কয়েকটা খুপরি, বাইরে খুঁটিতে বাঁধা ছাগল-ভেড়া, বা ষাঁড়। ভক্তগণ এসে সর্বাগ্রে বাবার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে, তারপর মোলায়েমভাবে উপুড় হয়ে বাবার পায়ের কাছে মাথা রাখে, মাথা উঠিয়ে দু হাতে বাবার পদধূলি নিয়ে মুখমণ্ডলে মাখে। তুষ্টমুখ বাবার ঠোঁটের কোণে সূক্ষ্ম হাসির রেখা ফুটে ওঠে।
বাবার আসন ঘিরে চারপাশে ভক্তবৃন্দ সমবেত কণ্ঠে অনর্গল জিকির তুলতে থাকে। রাত্রি গভীর হয়, আর ধীরে ধীরে ধামাইলের লগ্ন ঘনিয়ে আসে, অর্ধ-নিমীলিত-আঁখি ফকির-বাবা উর্ধ্বপানে চেয়ে জোড়াসিনে স্থির ও গভীর ধ্যানে মগ্ন— জিকিরের তালে তালে ধূপগন্ধময় বাবার আসনটি যেন দুলতে থাকে।
ধামাইল উপলক্ষে সাতদিন আগে থেকে বাঁশ নাচানো শুরু হয়। বাঁশ নাচানোর জন্য একই মাপের সাতটি লম্বা বাঁশ লাগে। সাত বাঁশের মাথায় সাত রঙের পাটের জুটি বাঁধা হয়। তারপর বাঁশগুলোকে জুটির রঙের কাপড় দিয়ে আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত মুড়িয়ে দেয়া হয়। যারা বাঁশ নাচায় তাদেরকে বলা হয় বাঁইশা। ফকির-বাবার জন্য নিবেদিত-প্রাণ না হলে কেউ বাঁইশা হতে পারে না।
সাতটি বাঁশের জন্য সাত জন বা তার বেশি সংখ্যক বাঁইশা লাগে। ক্লান্ত বাঁইশাকে বদল করার জন্য অতিরিক্ত বাঁইশার প্রয়োজন। বাঁইশাদলের সাথে থাকে একদল ঢোলক ও বাদক। বাদ্যের তালে তালে বাঁশ নাচানো হয়। বাঁশ নাচানোর সময় বাঁইশাগণ খাড়া করে বাঁশ ধরে বাদকদল সমেত উঠোনের একটা নির্দিষ্ট গোলাকার স্থানে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে বৃত্তাকারে ঘুরতে থাকে। প্রথমে দৌড়ে ঘুরতে শুরু করে, তারপর বাদ্যের তালে একসঙ্গে সবার পা থামে, এরপর ধীর তালে একবার ডান পা উঠিয়ে ভিতরের দিকে ফেলে, পরক্ষণেই উঠিয়ে বাইরে নেয়, আস্তে আস্তে সামনে এগোয়— ধীর তালে বাঁশ নাচানো শুরু করে বাঁইশাগণ ক্রমশ দ্রুত কদম ফেলতে শুরু করে চক্রাকারে ঘুরতে থাকে। এভাবেই বাঁইশারা বাঁশ নাচায়। বাঁশ নাচানোর সময় প্রত্যেক বাঁইশা তাদের ঘুর্ণনের ক্রম বজায় রাখে, সেই ক্রমের ব্যত্যয় ঘটানো হয় না। একনাগাড়ে আট-দশ মিনিট পর্যন্ত বাঁশ নাচানো চলে। তারপর উঠোনের মাঝখানে একটা বেতের ঝাঁপি রেখে তার ভিতরে বাঁশের গোড়া ফেলে ঘরের চালের সাথে কাত করে বাঁশ নামিয়ে রাখা হয়। বাঁশ নামানো এবং উঠানোর সময় একই ক্রম বজায় রাখা হয়। সর্বাপেক্ষা গুণী ও একনিষ্ঠ বাঁইশাকে দেয়া হয় প্রথম বাঁশটি।
বেতের ঝাঁপিতে বাঁশ নামিয়ে রাখার পর জনৈক মুরিদ অন্দর বাড়ি থেকে সাজিভর্তি চালডাল এনে সেই ঝাঁপির ভিতরে ফেলে। ঝাঁপি টানার জন্যও একজন নিবেদিত ভক্ত থাকে।
ধামাইলের সাত দিন আগেই বাঁইশাগণ দূর-দূরান্তের মুরিদগণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। বহু পথ পাড়ি দিয়ে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তারা বাঁশ নাচায়। বাঁশ নাচানো শেষে বেতের ঝাঁপিতে চালডাল সংগ্রহ করে। সংগৃহীত বিপুল পরিমাণ চালডাল বহন করার জন্যও দলের সাথে সাগরেদ থাকে। বাঁশ নাচানো শেষে বাঁইশাগণ ক্লান্ত হয়ে পড়লে তারা কোনো এক সাগরেদের বাড়িতে রাত্রিযাপন করে—উঠোনে গোল সারিতে বসে কলাপাতায় পাতলা খিচুরি খায়, তারপর গভীর রাত পর্যন্ত মারফতি আর মুর্শিদি গান গায়। সকালে উঠে অন্য গাঁয়ের সাগরেদগণের উদ্দেশ্যে পুনরায় বেরিয়ে পড়ে। দূরের মুরিদগণের বাড়িতে বাঁশ নাচানো শেষ করে ধামাইলের দু একদিন আগে বাঁইশাগণ ফকির বাড়িতে ফিরে আসে। ধামাইলের দিন সকালে বাড়ি হতে বেরিয়ে কাছের গাঁয়ের ভক্তদের বাড়িতে বাঁশ নাচাতে যায়। ভক্তদের বাড়িতে বাঁশ নাচানো শেষে সৌজন্য স্বরূপ সতীর্থ ফকিরগণের বাড়িতেও বাঁশ নাচানো হয়।
এভাবে বাড়ি বাড়ি বাঁশ নাচানোর মধ্য দিয়ে ধামাইলের লগ্ন ঘনিয়ে আসতে থাকে। সেই সাথে বাবা-ফকিরের বাঁশের নাচ দেখার জন্য ভক্তগণ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকে। লগ্নের ঘণ্টা দুয়েক আগে ফকিরের বাঁশ নিজ বাড়িতে ফিরে আসে। ততক্ষণে দরগায় বাবার আসন ঘিরে ভক্তগণের একটানা জিকিরে চারদিক আন্দোলিত হয়ে ওঠে।
বাঁশ নিজ বাড়িতে ফেরত আসার পর অন্য ফকিরের বাঁশ আসার নিয়ম নেই। অন্য ফকিরের বাঁশ খুব অল্প সময়ের জন্য নাচানো হয়। কিন্তু বাড়ির বাঁশ নাচানো হয় দীর্ঘ সময় ধরে— দুই ধাপে, ফেরত আসার পর থেকেই ভিতর বাড়ির উঠোনে প্রায় ঘণ্টাখানেক, মাঝখানে আধঘণ্টার মতো বিশ্রাম, তারপর বার বাড়ির উঠোনে তেঁতুল গাছের কাঁচা লাকড়ি দিয়ে সাজানো ধামাইল-স্থানের চারধারে বাঁশ নাচানো হয়, ধামাইল শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা চলতে থাকে।
বাঁশ বাড়িতে ফেরত আসার সঙ্গে সঙ্গে ভক্তদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা ছুটে এসে উঠোনের মাঝখানে ভিড় করে গোল হয়ে দাঁড়ায়। বাঁইশাদের হাতে বাঁশ নাচে, দরগার ভিতরে একটানা জিকির ধ্বনিত হয়, পুরো আকাশ বাতাস যেন সেই সময় টলমল করতে থাকে
পূর্ণিমালগ্ন রাত্রির শেষ প্রহরে সংঘটিত হলে ধামাইলপর্ব গভীরতর হয়। ক্লান্ত বাঁইশাগণ প্রথম পর্ব বাঁশ নাচানো শেষে বিশ্রামভোগ করতে থাকে, তখন একদিকে বা’র বাড়ির উঠোনে ধামাইলের জন্য তেঁতুল গাছের কাঁচা লাকড়ি সাজানো হতে থাকে, অন্যদিকে ভাবগম্ভীর ভক্তিগীতিতে দরগার ভিতরে সমগ্র পরিবেশ ভারী হয়ে উঠতে থাকে। ক্রমে বাবার শরীরে মৃদু কম্পন শুরু হয়, কিছুক্ষণ পরপর সেই শরীর আপনা থেকেই প্রবলভাবে ঝাঁকি দিয়ে ওঠে, ঝাঁকির সঙ্গে সঙ্গে ‘জয় বাবা’ বলে বিকট শব্দে ফকির-বাবা চিৎকার দিয়ে ওঠেন, সেই চিৎকারের ধ্বনি সমবেত জিকিরের ধ্বনিকে ছাপিয়ে অনেক উচ্চে ওঠে চারপাশ কাঁপিয়ে তোলে। ফকির বাবা তখন আর তাঁর নিজের মধ্যে নেই, ততক্ষণে তাঁর অলৌকিক গুরু তাঁর ওপর এসে ভর করেছেন। সেই গুরু যতক্ষণ তাঁর ওপরে ভর করে থাকবেন ততক্ষণ কী কী তিনি বলবেন, বা কী কী ঘটতে থাকবে তার কিছুই ফকির-বাবার স্মরণে থাকবে না, কেবল ভক্তবৃন্দই সেগুলো মনে রাখবে ও মেনে চলবে।
ফকির-বাবার ওপরে গুরুর ভর করার অবস্থাটাকে ‘ভার’ বলা হয়। ভার অনেক কঠিন অবস্থা। ভারের চাপ সহ্য করতে অনেক শক্তি ও ধৈর্যের প্রয়োজন। ফকির বাবা ইচ্ছে করলে অন্য কোনো ভক্তের ওপর ভার চাপাতে পারেন; ছোটোখাটো ভারের আসরে মাঝে মাঝে এরূপ করা হলেও ধামাইলের লগ্নে কখনোই ভার ফেরানো হয় না, কারণ ধামাইলের ভারই হলো ফকির বাবার প্রকৃত পরীক্ষা।
ভারের সময় ফকির বাবা ভক্তদের সাথে সওয়াল-জবাব করেন। আসলে এই সওয়াল-জবাব ফকির বাবার মুখ দিয়ে বেরোলেও এগুলো কিন্তু তাঁর কথা নয়, তাঁর ভিতরস্থিত শক্তি-গুরুই তাঁর মাধ্যমে এসব করে থাকেন।
সওয়াল-জবাবের সময় ভক্তগণ গুরুর সাথে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পায়। ভক্তরা বালামুসিবত হতে মুক্তি পাবার জন্য গুরুর কাছে পানা প্রার্থনা করে। গুরু তাদেরকে আশ্বস্ত করেন; অনেক সময় এর বিনিময়ে বড় একটা বর চেয়ে বসেন, অসমর্থ ও হতদরিদ্র ভক্তরা তখন বাবার পায়ের ওপর আছাড় খেয়ে পড়ে বাবার এহেন বড় দাবি থেকে মাফ পাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করতে থাকে; যতক্ষণ না বাবা একটা ষাঁড়ের বদলে একটা মোরগ নিতে রাজি হন ততক্ষণ পর্যন্ত সেই ভক্ত বাবার পা জড়িয়ে পড়ে থাকে। তবে কোনো কোনো সময় বাবা তাঁর দাবিতে একেবারে অটল থাকেন; ভক্তের সম্ভাব্য বিপদটা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর, এ থেকেই তা আঁচ করা যায়। অনেক সময় বাবা কোনো কোনো ভক্তের ওপর প্রচণ্ড ক্ষেপে যান। বাবার সাথে সমস্ত যোগাযোগ ছিন্ন করে দীর্ঘদিন ধামাইলে অনুপস্থিত থাকলে, কিংবা বর্তমান বাবার অগোচরে কেউ যদি অন্য বাবার শরণাপন্ন হয়, যা এ-বাবার ওপর অনাস্থার শামিল, পুনর্বার সামনে আবির্ভূত হওয়ামাত্র বাবা তাকে কঠিন অভিশাপ বর্ষণ করেন। সেই অভিসম্পাতে কেউ কেউ ধ্বংস হয়ে যায়, বাবা দয়া না করলে সেই ধাক্কা আর কেউ কাটিয়ে উঠতে পারে না।
পূর্ণিমার লগ্ন সমাসন্ন, বাবার ভার ও ভক্তদের সাথে সওয়াল-জবাব চলমান— জিকিরের ধ্বনি, বাদ্যের বাজনা ও বাঁশির সুরের ঐকতান মূর্ছনা— হঠাৎ একসময় জোড়াসিন ভেঙ্গে সচিৎকারে বাবা উঠে দাঁড়ান, তারপর ভক্তদেরকে ডিঙ্গিয়ে দ্রুত ছুটে চলেন বা’র বাড়ির উঠোনে ধামাইল-স্থানের দিকে— স্বল্প বিশ্রাম শেষে বাদকদল ও বাঁইশাগণ আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল, বাবাকে ছুটতে দেখামাত্র তারা বাঁশ লয়ে বাবার পেছনে ধাবিত হয়ে ধামাইলের জন্য নির্ধারিত স্থানে গিয়ে হাজির হয়।
শিষ্যসাগরেদ সমভিব্যাহারে সাজানো তেঁতুল লাকড়ির চারপাশে বাবা হাঁটু গেড়ে বসেন। জোড়াবদ্ধ দুই হাত বার বার কপালে ঠেকান আর সমস্বরে ঘন ঘন গুরু-ধ্বনি করে ওঠেন। বাঁইশাগণ এখন নাচে না, বাঁশ হাতে দ্রুত ছুটে চলেছে তারা, যতো দ্রুত দৌড়ে চলা সম্ভব। ঢোল ও বাঁশির ঐকবাদনে পূর্ণিমার চাঁদ তখন আকাশে টলমল করে। এরই মাঝে সাগরেদগণ মোমের আগুনে কাঁচা লাকড়ি জ্বালিয়ে দেয়। লাকড়ির ধোঁয়ায় তাদের চোখ নাক মুখ গলে জল ঝরতে থাকে। তবু তারা থেমে থাকে না।
ঠিক লগ্নের সময়টাতে অকস্মাৎ লাকড়ির স্তূপে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে, সেই আগুনের শিখা মানুষের মাথা ছাড়িয়ে বাঁশের মাথায় জুটি পর্যন্ত পৌঁছে যায়। বাদ্যের তাল ও বাঁশির সুরও তখন দ্রুততর লয়ে বাজতে থাকে। বাঁইশাদের গতি তখন পৌঁছে যায় শীর্ষে। লাকড়ি জ্বলতে জ্বলতে আগুনের শিখা নীচে নেমে আসে, যখন একেবারে নিভে যায়, দু হাতে এক খাবলা জ্বলন্ত কয়লা নিয়ে বাবা ছুটে যান কোনো এক পুকুরের পানে। এক ঝাঁপে পানিতে নেমে দীর্ঘ এক ডুব দেন, তারপর শূন্য হাতে উঠে এসে অন্দর বাড়িতে উধাও হয়ে যান। তাঁর সাথে তখন অন্য কারো সঙ্গী হবার নিয়ম নেই।
ভক্তরা ধামাইল শেষে পোড়া লাকড়ির কয়লা কিংবা ছাইয়ের জন্য এক কঠিন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। মুহূর্তে ধূলাবালি আর মাটিসুদ্ধ সেই কয়লা নিঃশেষ হয়ে যায়। এই কয়লার অনেক ফজিলত। যারা এই কয়লা লাভে ব্যর্থ হয় তাদের পরবর্তী ধামাইলের জন্য পুরো একটা বছর অপেক্ষা করতে হয়।
ধামাইললগ্ন পরবর্তী চাঞ্চল্যের মধ্যেই একসময় ভোর হয়, তারপরই মানুষজন উঠোনের একপাশে জড়ো করে রাখা কলাপাতার জন্য ছোটে, অল্পক্ষণের মধ্যেই সিন্নি পরিবেশিত হবে। এই সিন্নি কখনো চালডালের খিচুরি, কখনো বা ভাত ও পাতলা ডাল। পুরো রাতের ধকল শেষে সিন্নি খেয়ে ভক্তগণ ক্ষুধা নিবারণ করে।
এভাবে বাড়ি ফেরার সময় হয়ে যায়। ফকির বাবা অন্দর মহল থেকে ফিরে এসে ভক্তদেরকে বিদায় জানানোর জন্য আসন গ্রহণ করেন। তাঁর জোড়াসিন নেই, চেহারায় সৌম্যভাব, তবু ধামাইলের ধকলে বিধ্বস্ত মনে হয়। ভক্তরা একে একে সভক্তি বিদায় গ্রহণ করে, তিনি মৃদু হেসে নিরুত্তর বিদায় জানান।
৪
সারা বছরে ধামাইল ছিল কুটিমিয়ার জন্য সবচাইতে বড় ও উপভোগ্য উৎসব। ছোটোবেলায় মা-বাবা, চাচা-চাচিদের সঙ্গে সে ধামাইলে যেতো। তাঁরা যে-ফকিরের মুরিদ ছিলেন তাঁর নাম শারফিন ফকির। শারফিন ফকির কার্তিকপুরের সবচাইতে বড় ফকির। তাঁর বাড়িতে বিশাল কয়েকটা টিনের ঘর ছিল, তাঁদের উঠোন দুটির মতো এতো বড় উঠোন অন্য কোনো ফকিরের ছিল না। শারফিন ফকিরের ভারের আসনটা দরগার ঘরে না হয়ে অন্য আরেকটা ঘরে ছিল, যে-ঘরে কোনো বেড়া ছিল না, মাঝখানে ছিল ফকির বাবার আসনখানি, তার ওপরে মখমল কাপড়ের ঝলমলে চাদোয়া, চাদোয়ার ঘেরে অতি চমৎকার করে লেখা ছিল— ‘ভক্তি বিনে মুক্তি নাই।’ শারফিন ফকিরের দরগাটাও ছিল অতি মনোরম ও সুদৃশ্য। এটি একটি চৌচালা টিনের ঘর ছিল, সামনে একটি বড় বারান্দা; ঘরের চাল ও বেড়ার নতুন টিনগুলোই সবচাইতে চমৎকার। দরগার ভিতরে দুটি মাজার ছিল, একটি শারফিন ফকিরের বাবার, আরেকটি তাঁর দাদার। বাবার পাশে আরেকটা স্থান নির্দিষ্ট ছিল, সেটা শারফিন ফকিরের।
এই ঘরটির অবস্থা আগে খুব জীর্ণ ছিল, কোনো এক মুরিদ সবকিছু পালটে নতুন করে গড়ে দিয়েছেন। সেই মুরিদ বড় কয়েকটা কার্গো লঞ্চের মালিক ছিলেন। একবার তিনি পদ্মা নদীর মাঝখানে বোঝাই কার্গো সমেত প্রচণ্ড ঝড়ের কবলে পড়লেন। পাহাড় সমান ঢেউয়ের ওপর তাঁর কার্গো লঞ্চটি খড়ের মতো দলে-মুচড়ে দুলতে লাগলো— বাঁচবার আর কোনো ভরসা নেই। সেই মুহূর্তে মুরিদ চিৎকার করে বলে উঠেছিলেন, ‘দোহাই আলাহ্ রাসূলের, দোহাই বাবা শারফিন ফকিরের।’ মুহূর্তে ঝড় থেমে গিয়ে পুরো আকাশ ঝরঝরে ফরসা হয়ে যায়, যেন এতোক্ষণ কিছুই হয় নি।
শারফিন ফকিরের নামের ওপর এই আশ্চর্য ফজিলত দেখতে পেয়ে তিনি অভিভূত হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বাড়ি ফিরে সপরিবারে বাবার দরবারে হাজির হয়ে বাবাকে সহস্র বার ভক্তি করেন এবং তাঁর সামান্য অর্থ দ্বারা বাবার পুরো দরগা ঘরটার সংস্কার করার অনুমতি গ্রহণ করেন। দরগা ঘরের সামনে বারান্দার বাইরে একটা দেয়ালঘড়ি ঝোলানো আছে, সেই মুরিদের দেয়া। এক ঘণ্টা পরপর সেটা ‘ঢং...’ করে বেজে উঠতো। এ শব্দটা কুটিমিয়ার কাছে দারুণ লাগতো। প্রথমবার যখন কুটিমিয়া এটা দেখেছিল তখন সে জানতো না এটা কী জিনিস। জীবনে এমন আশ্চর্য জিনিস দেখতে পেয়ে তার গর্বের অন্ত ছিল না। সঙ্গীদের সে এর কথা বলেছিল, তখন তারা ওর প্রতি খুব শ্রদ্ধাবনত হয়েছিল।
ধামাইলে আসার খুব ছোটোবেলার দিনগুলোর কথা কুটিমিয়ার মনে নেই। যে-দিনটার কথা তার স্পষ্ট মনে পড়ে সে-সময় কুটিমিয়ার বয়স বড় জোর পাঁচ বছর ছিল। সূর্য মাথার ওপর থেকে সামান্য পশ্চিমে হেলে পড়লে তারা বাড়ি থেকে রওনা করে। তার মায়ের কোলে দেড় বছরের বোন করিমন, কুটিমিয়া তার বাবার কাঁধে, কখনোবা কোলে। কিছুক্ষণ পরপরই বাবা তাকে নামিয়ে দিয়ে হাত ধরে হাঁটেন, তার আগের বছরও সে পুরোটাই বাবার কাঁধে ও কোলে চড়ে গিয়েছিল, সেবার হাঁটতে গিয়ে তার বেশ কষ্ট হচ্ছিল।
ফকির বাড়িতে পৌঁছতে ভরসন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। পথে তার প্রচুর খিদেও পেয়েছিল। বাবার হাতে গামছায় বাঁধা ভাতের থালা ছিল, সে খেতে চেয়েছিল। কিন্তু দেরি হয়ে যাচ্ছে বলে তাকে পথে খেতে দেয়া হয় নি। রাস্তার পাশে দোকান দেখে সে নেবুনচুষ খেতে চেয়েছিল, বাবা একটা লম্বা কাঠিওয়ালা নেবুনচুষ কিনে দিয়েছিলেন। তা দেখে করিমনও খেতে চেয়েছিল, মা জোর করে তার নেবুনচুষের এক কোনা ভেঙ্গে করিমনকে খেতে দিয়েছিল। করিমন খুব খুশি হয়েছিল, কিন্তু কুটিমিয়া সারাপথ গুনগুন করে কেঁদেছিল।
ফকির বাড়িতে পৌঁছে বাবা তাকে নিয়ে ফকিরের সামনে গেলেন। বাবা অনেকক্ষণ উপুড় হয়ে থেকে ভক্তি করলেন, মাথা উঠিয়ে দু হাতে ফকিরের পদস্পর্শ করলেন, সেই পদধূলি নিজ বক্ষ ও মুখমণ্ডলে মাখলেন, ডান হাত বাড়িয়ে কুটিমিয়ার সমস্ত শরীরে বুলিয়ে দিলেন। বাবা বলেছিলেন, ‘বাজান, বক্তি করো।’ কুটিমিয়ার চোখে খুব লজ্জা। মাটিতে হাঁটু গেড়ে উপুড় হয়ে বাবার মতো ভক্তি করতে তার ভীষণ লজ্জাবোধ হচ্ছিল। বাবা আবার বলেন, ‘বাজান, বক্তি করো তো দেহি। বক্তি না করলে গুইন্যা অইবো। জলদি করো।’
কুটিমিয়া গুনাহ্র ভয় কিংবা ভক্তির মাহাত্ম্য জানতো না, শুধু ভক্তির লজ্জাটুকুই তার সমস্ত চোখ জুড়ে ছিল।
সেদিন কুটিমিয়াকে কোনোভাবেই ভক্তি করানো যায় নি, সে পাথরের মতো শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। ছেলেকে ভক্তি করাতে না পেরে কুটিমিয়ার বাবা ফকিরের সামনে খুব লজ্জিত হয়েছিলেন।
এরপর যতোবার সে ধামাইলে গেছে, বাবার সাথে একবারও ফকিরের সামনে গিয়ে উপস্থিত হয় নি— উপুড় হয়ে ফকিরের পায়ে ভক্তি করতে হয়, এই ভয়ে। ভক্তি করতে কুটিমিয়ার লজ্জার অন্ত ছিল না। কখনো কখনো তার মা তাকে হাত ধরে টেনে ফকিরের সামনে নিতে চেষ্ট করতো, কিন্তু সে ছুটে পালাতো, অথবা শক্ত হয়ে পেছনে ঝুলে পড়ে বাঁকা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো, যেতো না। অথচ দূরে দাঁড়িয়ে সে দেখতো তার মা ও বাবা অতিশয় শ্রদ্ধাবিগলিত হয়ে ফকির-বাবার পায়ের উপর দীর্ঘক্ষণ উপুড় হয়ে পড়ে থেকে ভক্তি প্রদান করছেন। ভক্তি শেষে ফিরে এলে কুটিমিয়া একা একা ফকিরের খুব কাছাকাছি গিয়ে মানুষের ভিড়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতো, দেখতো কত মানুষ তার মা-বাবার মতো দীর্ঘ সময় ধরে ভক্তি করে ফকির বাবার পদধূলি গ্রহণ করছে।
ধামাইল শেষে পরদিন নুরুল্লাপুরের মেলায় যেতো তারা। নুরুল্লাপুরের শানাল ফকিরের বাড়িতে বিরাট মেলা বসে। ধামাইলের দু দিন আগে মেলা শুরু হয়, ধামাইলের পর আরো সাত দিন পর্যন্ত সেই মেলা থাকে। অত্র অঞ্চলে শানাল ফকির হলেন সবচাইতে বড় ফকির। সারা দেশ জুড়ে তাঁর লাখো লাখো মুরিদ। শানাল ফকির এখন আর জীবিত নেই, কিন্তু তাঁর ছেলেরা আছেন, প্রত্যেক ছেলেই উত্তরাধিকার সূত্রে বাবার কাছ থেকে ফকিরি প্রাপ্ত হয়েছেন। তাঁরা আলাদা আলাদা ধামাইল করেন, সারা দেশের মুরিদগণ নিজেদের পছন্দমতো যে কোনো পুত্রের কাছে ভক্তি প্রদান করে। ছেলেরা আলাদা ধামাইল করলেও মেলার আয়োজন হয়ে থাকে যৌথভাবে। সারা দেশে এরূপ বৃহৎ মেলা অন্য কোথাও দেখা যায় না। পুরো গ্রামের বিশাল এক চক জুড়ে মেলার স্থান নির্ধারণ করা হয়, গাঁয়ের মানুষ নিজ উদ্যোগে মেলার যাবতীয় নিরাপত্তা, দোকানঘরের জন্য স্থান বণ্টন ও অন্যান্য বিষয়াদির দায়িত্বভার গ্রহণ করে।
সার্কাস আর যাত্রাপালা হলো মেলার সবচাইতে আকর্ষণীয় বিষয়। যেনতেন সার্কাস আর যাত্রাপালাকে এখানে আসার অনুমতি দেয়া হয় না। দেশের সর্ববৃহৎ ও শ্রেষ্ঠ সার্কাস দল— বর্ধ্বনপাড়ার ‘অপেরা সার্কাস’ই প্রায় প্রতি বছর নিমন্ত্রণ ও অনুমতি পেয়ে থাকে। এর বাইরে অনেকগুলো পুতুল নাচ ও চড়ক গাছ থাকে। মেলার পুরো জায়গাটাকে কয়েকটা ভাগে ভাগ করা হয়। এক ভাগে শুধু মিষ্টির দোকান—রসগোল্লা, আমৃতি, চমচম, খেজুর, জিলাপি, সন্দেশ—দোকানের পর দোকান থরে থরে পাত্র ভর্তি সাজানো থাকে। অন্যদিকে ভাজাপুরি, যেমন, চানাচুর, মুরলি, নিমকি, পাপরভাজা, গজা; একদিকে খেলনা—হরেকরকম বাঁশি, রং-বেরঙের বেলুন, মাটির তৈরি পুতুল, হাতি, ঘোড়া, গরু, লঞ্চ, স্টিমার, ঠাকুর-দেব-দেবী; একদিকে মেয়েলি কসমেটিকস, চুড়ির বাহার হলো তাতে সবচাইতে বেশি, তাছাড়া আলতা, স্নো, পাউডার, খোঁপার বেণি; একদিকে নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রও থাকে, যেমন বলন, ডাল ঘুটনি, তাওয়া, কড়াই, হাঁড়িপাতিল। মেলার একধারে খাবারের হোটেল, পাশেই মাছতরকারির দোকানপাট। থৈথৈ করে মানুষ, এতো ভিড় এবং হট্টগোল— বহুদূর থেকে তার শোরগোল শোনা যায়।
৫
সিন্নি খাওয়ার পরপরই কুটিমিয়া নুরুল্লাপুরের মেলায় যাওয়ার জন্য ছটফট শুরু করে দিত। কিন্তু একটু বেলা না হলে এবং ফকির বাবার কাছ থেকে বিদায় না নিয়ে বাড়ি ত্যাগ করা যায় না, তাই দেরি হতে থাকতো। এই দেরি হওয়া কুটিমিয়ার একদম সহ্য হতো না।
শারফিন ফকিরের বাড়ি থেকে বেরোনোর পথে হাওয়ার বেগে উড়ে নুরুল্লাপুরে গিয়ে পৌঁছতে ইচ্ছে হতো। যখন সে কাঁধে চড়ে যেতো, বাবার ঘাড়ে ঝাঁকি দিয়ে এবং মাথায় চুল শক্ত করে ধরে সামনে ঝুঁকে কুটিমিয়া বলতো, ‘তারতারি কইরা আডো বাজান, তারতারি...।’ যখন তার হেঁটে চলার বয়স হলো, সে দৌড়ে বাবার আগে আগে ছুটতো। শানাল ফকিরের মেলা অনেক দূর। ছোটো পায়ে কুটিমিয়া কেবলই দৌড়ে ছুটতো। পথ চলতে চলতে সে দেখতো, মেলা থেকে কিশোর-কিশোরীদের হাতে লাল নীল বাঁশি, বাঁশির মাথায় রঙিন বেলুন, ফুঁ দিয়ে বেলুন ফোলায়, ফুঁ ছেড়ে দেয়, বেলুনের বাতাস বাঁশির মুখ দিয়ে বের হয় আর সুরেলা সুরে বাঁশি বেজে ওঠে। হরেকরকম বাঁশি, দোতারা, ডুগডুগি, পুতুল। যার হাতেই সুন্দর একটা খেলনা সে দেখতো, সাথে সাথে ওটা দেখিয়ে বলতো, ‘বাজান, আমারে এই বাশিডার মতন একটা সুন্দর বাশি কিইন্যা দিবা—দিবা কিন্তু...।’ মেলার আরো কাছাকাছি হতেই দূর থেকে অসংখ্য চড়ক গাছের ক্যা-ক্-কুক আওয়াজ, বাঁশি আর ডুগডুগির বাজনা, মানুষের চিৎকার আর হৈ-হল্লা কানে এসে লাগতো—তা শুনে কিশোর কুটিমিয়ার মনে ঝিলিক দিয়ে আনন্দ জেগে উঠতো। লম্বা এক দৌড়ে চোখের পলকে মেলায় পৌঁছে যেতে ইচ্ছে হতো তার।
মেলায় এসে সর্বাগ্রে তার বাঁশি কেনা চাই—বাঁশির প্যাঁ-পু শব্দ তার মধ্যে একটা উন্মাদনার সৃষ্টি করতো। আরেকটা জিনিসের প্রতি তার দারুণ ঝোঁক ছিল—তা হলো কাগজের বেজি। বেজির মাথায় বাঁধা সুতা ধরে টান দিয়ে সুতাটি ছেড়ে দিলে কড়্ড়ৎ করে ওটা দৌড় মারে। বাঁশি আর বেজি কেনার পর কুটিমিয়া শান্ত হতো। কিন্তু যখনই নতুন কোনো একটা খেলনার প্রতি তার চোখ পড়তো, সঙ্গে সঙ্গে সে বাবার হাত টেনে ধরে বলতো, ‘বাজান, এইডা কিন্যা দিবা?’ বাবা বলতেন, ‘দূর ব্যাডা, ঐড্যা কোনো খেলনা অইলো?’ তারপরও সে নাকি সুরে গুনগুন করে কাঁদতো, ঐ সময় তার মা তাকে একটা ঝাড়ি দিয়ে ভর্ৎসনা করতো। তাতে কুটিমিয়ার কান্না কিছুটা কমতো।
প্রতি বছরই যে নুরুল্লাপুরের মেলায় যাওয়া হতো তা কিন্তু নয়। যে বছর হাত টান থাকতো, সে বছর শারফিন ফকিরের বাড়ি থেকে সোজা বাড়ি ফিরে আসতো তারা। মেলায় না যাওয়ার দুঃখে সারা রাস্তা গুনগুন করে কাঁদতে থাকতো কুটিমিয়া। জয়পাড়া বাজারে এসে তাকে রসগোল্লা সাধা হতো, কিন্তু সে একটা ঝামটা দিয়ে বাড়ির পথে পা বাড়াতো।
কিশোর কুটিমিয়ার মনের ভিতরে এক আশ্চর্য শারফিন ফকির বসবাস করতেন। তার খুব ইচ্ছে হতো শারফিন ফকিরের মতো হতে।
ধামাইল শেষ হওয়ার পর বেশ কিছুদিন পর্যন্ত বাড়িতে কুটিমিয়া খুব আমোদে থাকতো। তাদের রসুই ঘরের পেছনে দক্ষিণ দিকে একটা পোড়ো ভিটা ছিল, সেখানে আগাছা ও ময়লা পরিষ্কার করে খেজুরের ডাওগা আর কলাপাতা দিয়ে একটা দরগা ঘর বানাতো সে। দরগা ঘরের মাঝখানটায় সে জোড়াসিন দিয়ে শারফিন ফকিরের মতো বসতো। তার ছোটো বোন, চাচাতো ভাইবোন, প্রতিবেশী ছেলেমেয়েরা ছিল তার মুরিদ। কিশোর কুটি ফকিরের মুরিদরা অনেক লম্বা সময় পর্যন্ত তার পায়ের কাছে উপুড় হয়ে পড়ে ভক্তিরত থাকতো। মুরিদগণের অবশ্য ভক্তি ব্যতীত অন্য কোনো কর্ম ছিল না, তাই তারা একের পর এক কেবল ভক্তিই দিয়ে যেতো। সে সময় তার মুরিদরা কিন্তু তাকে কুটি ফকির ডাকতো না— কেউ ভুল করে ডেকে বসলে কুটিমিয়া বেজার-কুজার হয়ে বলতো, ‘আমারে কুডি কইবা না। আমার নাম কি কুডি ফকির? আমার নাম অইলো শারফেন ফকির।’
ধামাইলের দিন শারফিন ফকির গায়ে লাল গেরুয়া ও মাথায় লাল পাগড়ি পরতেন। কিশোর শারফিনের কোনো লাল পোশাক ছিল না, তবে লাল-নীল-সবুজে মেশানো বাবার যে গামছাটা সে পেতো, তা পরেই সে তার আসনে গিয়ে বসতো। সে ধামাইলও করতো। বাঁশের কঞ্চি, কিংবা পাটখড়ির মাথায় পাটের জটা, কিংবা পুরনো কাপড়ের টুকরো বেঁধে বাঁশ বানাতো। বাঁইশাদের সংখ্যা ছিল অনির্দিষ্ট, তিনজন উপস্থিত থাকলে তিন, দশজন হাজির থাকলে দশ; ছেলে আর মেয়েতে কোনো বাছবিচার নেই।কুটিমিয়া ফকির যদিও, কিন্তু সে নিজেও বাঁশ নাচাতো; বাঁশ নাচানো খেলতে খেলতে মাঝে মাঝে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া লেগে যেতো। তার জের ধরে কুটিমিয়া দাপাদাপি করে দরগা ঘরটা ভেঙ্গে ফেলতো, ভেঙ্গে ফেলতো নাচের বাঁশগুলোও।
একবার পরপর দু বছর তারা ধামাইলে গেলো না। সে সময় কুটিমিয়াদের সংসারে আয়উন্নতি একটু ভালো হচ্ছিল। পৌষ-চাঁদে ধামাইল হয়। পূর্ণিমার পরের দিন করিমন অসুখে পড়লো। ঘন ঘন পাতলা পায়খানা আর বমি। কুটিমিয়ার চাচা মেঘুলা বাজার থেকে কল্পনাথ ডাক্তারকে ডেকে আনলেন। তার পথ্যে পায়খানা আর বমি থামলো বটে, কিন্তু করিমনের সমস্ত খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো। সে ঘন ঘন চোখমুখ খিঁচতে লাগলো। কেউ কেউ বললো ধনুষ্টংকার। আবার ডাক্তার ডাকা হলো, কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না। মাঝে মাঝে করিমন চোখ উলটে পড়ে থাকে, নাড়ি নড়ে কী নড়ে না, সারা বাড়ি ভরে কান্নার রোল ওঠে। কিছু পরে হয়তো করিমন সামান্য নড়েচড়ে ওঠে—এভাবে চার-পাঁচ দিন চলে যায়। এমন সময় একজন বললো, ‘খামাখা ডাক্তার দেখাইতেছাও। এই রোগ তো ডাক্তারের রোগ না। ডাক্তার বাইড্যা খাওয়াইলেও কিছু অইবো না। এইড্যা অইলো ফকিরের রোগ।’ কুটিমিয়ার চাচিজান দৌড়ে তার বাপের গ্রাম শিমুলিয়ায় গিয়ে তার চাচা কালু ফকিরকে ধরলো। কালু ফকির এলেন, করিমনের মাথার কাছে বসে একের পর এক বিড়ি টানতে লাগলেন। বিড়ির ধোঁয়ায় পুরো ঘর ভরে গেলো। ওপরে ছাদের দিকে একপলক তাকিয়ে থেকে কালু ফকির বললেন, ‘খুব গাড়াইয়া গেছে রে...।’ কুটিমিয়ার মা হাউমাউ করে কেঁদে ফেলে কালু ফকিরের পায়ের ওপর ভক্তি দিয়ে পড়ে গেলো। বললো, ‘বাবা, আমার মেয়ারে বাছাও তুমি বাবা, তুমি ছাড়া গতি নাই বাবা...।’
‘ভার লাগবো’, কালু ফকির গম্ভীর স্বরে বলেন, ‘তরে অনেক বড়ডায় ধরছে। ভার ছাড়া ছোডান যাইবো না।’
ঐদিন রাত্রেই ভারের আয়োজন করা হলো। কুটিমিয়াদের ঘরে ভার বসবে। শিমুলিয়া থেকে কালু ফকিরের আরো কয়েকজন শিষ্য সঙ্গে আসবে। ভারের জন্য এক প্যাকেট মোমবাতি, এক প্যাকেট বিড়ি, এক প্যাকেট দিয়াশলাই লাগবে।
এশা’র পর ভারের গান শুরু হলো। ঘরের মাঝমাঝি জায়গায় নিথর হয়ে করিমন শুয়ে আছে, তার সিথানের কাছে লম্বা ঘোমটা টেনে বসেছে তার মা। এক ধারে মাটির গাছায় সর্ষের তেলে ঝিনুকবাতির সলতে জ্বলছে। ঘর ভর্তি মানুষ গান ধরলো :
আমায় আর কান্দাবি কতকাল
দয়াল আর কান্দাবি কতকাল
আজ আমার দুঃখেরই কপাল...
সবাই দুলে দুলে গান গায়, সুরের মূর্ছনায় ঘর ভারী হয়। এক গান থামে, তার রেশ ধরেই শুরু হয় আরেক গান, সবই মুর্শিদি আর মারফতি। গান গাইতে গাইতে এক সময় গভীর ভাবরসে আসর পুরোপুরি জমে উঠবে, আধো আলো আধো অন্ধকারের মাঝখানে আচমকা শরীর ঝাঁকি দিয়ে দয়াল দয়াল বলে সারা ঘর কাঁপিয়ে সুগম্ভীর চিৎকার দিয়ে উঠবেন ফকির বাবা। সহসা গান থেমে যাবে, তার বদলে একটানা আল্লাহু-আল্লাহু জিকির ধ্বনিত হতে থাকবে। ভারের ঘোরে ফকির বাবা ভক্তের প্রতি তাঁর জমাট ক্ষোভ প্রকাশ করবেন—কী কারণে করিমনের ওপর তাঁর নজর পড়েছিল।
রাত্রি গভীর হয়, গভীর হয় গানের ঐকতান, ঘর ভেদ করে নিজ্ঝুম চরাচরের অনেক দূর ভেসে যায় গানের সেই সুর।
প্রহর পেরিয়ে যেতে থাকে, গান গাইতে গাইতে সবার গলা ধরে আসে, দু চোখ তন্দ্রাক্লিষ্ট হয়, ধ্যানমগ্ন ফকির বাবা অর্ধ-মুদিত নয়নে সেই যে জোড়াসিনে উর্ধ্বপানে চেয়ে আছেন, তাঁর শরীরে ভার-গ্রহণের কোনো লক্ষণই দেখা যায় না।
ভোরের আজান পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্পষ্ট হয়ে যায়, আজ আর ভার আসবে না। ভক্তের ত্রুটির কারণে অসন্তুষ্ট হলে কোনো কোনো সময় ‘দয়াল’ মুখ ফিরিয়ে রাখেন। ফকির বাবার বিষণ্ন ও অবসন্ন অবয়বে বিরক্তি ফুটে ওঠে, ভক্তের প্রতি দয়াল বাবা মোটেও সদাশয় নন, রাতভর তাঁর অক্লান্ত সাধনা বৃথা গেছে।
পরের রাতে আবারো ভার বসলো। আগরবাতি, মোমবাতি, ঝিনুকবাতি, বাবার জন্য পানবিড়ি, সব সম্পন্ন হলো।
ভারের জন্য এতো দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় না। রাত্রি গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দয়াল বাবা উদয় হোন, ভক্তের সাথে তাঁর দেনদরবার শেষ করে বিদায় নিয়ে চলে যান।
কিন্তু এদিনও ভারের কোনো আলামত পাওয়া যাচ্ছে না। উপস্থিত সুধীজনেরা কেউ কেউ এ বাড়ির প্রতি খুব নাখোশ হলেন, এরা দয়াল বাবার হুকুমাত মান্য করে না ঠিকঠাক। কেউ কেউ অবশ্য খুব আফসোস করে বলতে লাগলেন, দয়াল বাবা এইভাবে মুখ ফিরাইয়া নিলে ওগোর কী দশা অইবো? বাবার কি মায়ামমতা একটুও নাই?
ভাব সমুদ্রে উথালপাথাল ঢেউ খেলে যায়, কিন্তু দয়াল মুর্শিদ দেখা যে দেয় না, দেয়ই না।
আগের রাতের মতো এ-রাতের ভারও যখন বৃথা যায়—এমন সময় দয়াল বাবা কালু ফকির গর্জন করে উঠলেন—রক্ষা নাই—রক্ষা নাই—রক্ষা নাই—হাঁটু গেড়ে প্রবল শক্তিতে দু হাতে মাটির ওপর ধম-ধম-ধম করে চাপড় মারতে থাকেন—এতো প্রচণ্ড সেই চাপড় যে খেজুর পাতার বিছানা সমতে মাটির অংশটুকু নীচের দিকে দেবে যেতে থাকলো।
গান থেমে যায়, সমবেত আল্লাহু জিকির ধ্বনিত হতে থাকে—সেই সঙ্গে ফকির বাবার মুখে অনর্গল উচ্চারিত হয়—‘রক্ষা নাই...রক্ষা নাই...রক্ষা নাই...’
শংকিত রহিমন বিবি ফকির বাবার সম্মুখে অগ্রসর হয়, সে পাগলিনীপ্রায়, সক্রন্দনে বারংবার বাবার কাছে যাচনা করতে থাকে—‘দোহাই তোমার আল্লাহ রাসূলের, বাবা, বড় পীর আব্দুল কাদের জিলানীর দোইাই লাগে, আমার করিমনরে ফিরাইয়া দেও বাবা...।’ অস্থির আর্তনাদে সে বাবার সামনে আছড়ে পড়তে লাগলো।
কিন্তু কালু ফকিরের মুখের ধুয়া অপরিবর্তিত—‘রক্ষা নাই...রক্ষা নাই...রক্ষা নাই...’
‘রক্ষা নাই’ ধুয়া তুলতে তুলতে হঠাৎ কালু ফকির নিস্তেজ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঝড়ের পর প্রকৃতি শান্ত হয়। ভারের পর দয়াল বাবার অমঙ্গল-আভাসে পুরো ঘর থমথমে হয়ে উঠলো। ক্লান্তি দূর হলে কালু ফকির ধীরে ধীরে উঠে বসলেন। তিনি অতি ভগ্নহৃদয়, দুঃখ-ভারাক্রান্ত, ভক্তের বিপদ দূর করতে আজও ব্যর্থ হলেন!
মজলিশ ভাঙ্গবার কিছুক্ষণ আগে কালু ফকির গম্ভীর গলায় বললেন, ‘বাবার দরগায় একটা বড় খাসি দিস্।’
কালু ফকিরের দরগায় খাসি দেয়া ভীষণ দায় হয়ে হলো। একটা মোরগ, কয়েক সের চালডাল তেমন কোনো সমস্যা নয়, কিন্তু একটা বড় খাসি কুটিমিয়ার বাবার জন্য পাহাড়সম কঠিন।
করিমন ধীরে ধীরে সুন্দর ও সুস্থ হয়ে উঠলো। সে কুটিমিয়ার সাথে আগের মতো চঞ্চল হয়ে খেলাধুলোয় মেতে উঠলো।
আশ্বিন মাসের শেষ তারিখে দিবাগত রাত্রে কালু ফকিরের বাড়িতে উরস শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। ভক্তরা বিগত বছরের মানত কিংবা খাজা বাবার আদিষ্ট সামগ্রী উরসের সময় বাবার দরবারে উৎসর্গ করে।
কুটিমিয়ার মা’র মনে সামান্য চালাকি আর সন্দেহের উদ্রেক হয়। ফকির বাবা ভারের সময় কোনো মানত চান নি, যখন খাসির কথা বলেন তখন ভার শেষ হয়ে গিয়েছিল, কাজেই খাসির কথা দয়াল বাবা বলেন নি। খাসি না দিয়ে ছোটোখাটো কিছু একটা দিলেই সারবে। তাছাড়া, এমনও তো হতে পারতো যে, ভার-টার কিছুই না, করিমন এমনি এমনি ভালো হয়ে উঠেছে, সেজন্য একটা বড় খাসি দেয়ার কোনো মানে নেই।
কার্তিকের মাঝামাঝি এসে করিমন শুকোতে শুরু করলো। তার খাওয়া দাওয়া বন্ধ হলো, চঞ্চলতা থেমে গেলো, কয়েক দিনের মাথায় বিছানায় পড়লো। সে মড়ার মতো পড়ে থাকে, নাড়ি নড়ে না, শ্বাস-প্রশ্বাস চলে কী চলে না।
একদিন রাতের শেষ প্রহরে রহিমন আর্তনাদ করে ওঠে। কী মড়ার ঘুমই না সে ঘুমিয়েছিল! কোন ফাঁকে করিমনের প্রাণপাখি খাঁচা ছেড়ে উড়ে গেছে মা তা টের পায় নি, ছোট্ট চড়ুই পাখির মতো ওর নিথর দেহটি রহিমনের বুকের কাছে ঠান্ডা হিম হয়ে পড়ে আছে।
কুটিমিয়ার মা’র মাতম উঠলো। ভোরের প্রকৃতিতে তার করুণ কান্নার সুর বহুদূর—বহুদূর ভেসে গেলো, অবিরাম।
ডাউনলোড লিংক : ই-বুক 'লৌকিক রহস্য; অথবা অলৌকিক', এপ্রিল ২০১৮
১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:০৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ঠাকুরমাহমুদ ভাই, শুরুতেই দুঃখ প্রকাশ করছি, পোস্টটা সাময়িকভাবে কমেন্ট মডারেশনে নিয়েছিলাম বলে। এখন মুক্ত।
আপনার আইডিয়া ঠিক। অনেক কিছুই আমার চোখের সামনে ঘটতে দেখেছি। ধামাইল, মেলা, ফকির- এগুলো আমাদের সময়ে খুব ঐতিহ্যবাহী ছিল। এখনো আছে।
অনেক ধন্যবাদ দীর্ঘ গল্পটা পড়া জন্য। শুভেচ্ছা।
২| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:০৪
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
বড় পোষ্ট পড়তে আরাম । দিন দুয়েক আগে আমিউ একটা ইয়া বড়
পোষ্ট লিখে সামুতে প্রকাশ করতে গিয়ে নিজেই বেসামাল হয়ে গেছি।
রাজিব নুরের নাকি ৩৫ মিনিট লেগেছে সেটা পাঠ করতে ।
যাহোক, এই পাগল ও মহাসাধকদের কাহিনীর ২ নম্বর পর্যন্ত পাঠ করে
একে এখন প্রিয়তে নিয়ে গেলাম পরে এসে আবার পাঠ করব বলে ।
শুভেচ্ছা রইল
১৭ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ডঃ এম এ আলী ভাই, দীর্ঘ পোস্টটি পড়ার উদ্যোগ নেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমাদের এই ব্যস্ত সময়ে ছোটো ছোটো রম্যধর্মী চটুল পোস্ট পড়তেই আমরা বেশি পছন্দ করি। তারপরও অনেকে বড়ো পোস্ট পড়েন অনেক ধৈর্য নিয়ে, সেটা দেখলে বেশ আনন্দ হয়। একটা গল্পকে সার্থকভাবে এগিয়ে নিয়ে সমাপ্ত করতে চাইলে তাকে কোনো গণ্ডির মধ্যে বেঁধে রাখা যায় না। অনেক দীর্ঘ হয়ে গেলে সেটা ব্লগে শেয়ার করতে গেলে একটু ইতস্ততঃ বোধ হয় বৈকি। এ ধরনের বড়ো পোস্টও কেউ পড়ছেন, সেটা দেখে স্বাধীন ভাবে লেখার অনুপ্রেরণা পাই।
অনেক ভালো থাকবেন। শুভেচ্ছা।
৩| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:০১
রাজীব নুর বলেছেন: ত্রিশ মিনিট লাগুক আর ষাট মিনিট লাগুক। আপনি যখন কষ্ট করে লিখেছেন তাহলে আমার ল্যাপটপ কোলে নিয়ে পড়তে কোনো অসুবিধা নাই।
১৭ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: খুবই উৎসাহব্যঞ্জক কথা। এমন কমেন্টে হাত খুলে লেখার অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়। অনেক ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই।
৪| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: সত্য কথা বলি, সামুতে বিষেষ কয়েকজনের পোষ্ট আমি খুব মন দিয়ে পড়ি। তার মধ্যে আপনি একজন। আপনি আমাকে শিখিয়েছেন অন্যের পোষ্ট পড়তে এবং কেউ মন্তব্য করতে মন্তব্যে উত্তর দিতে।
১৭ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এ কমেন্টে আরো আপ্লুত হলাম। আপনি নিজে প্রতিভাবান ও পরিশ্রমী ব্লগার। নিজ প্রতিভায়ই শীর্ষে এসেছেন। এটা বজায় থাকবে, এই কামনা করছি।
৫| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:১৭
কল্পদ্রুম বলেছেন: পিডিএফ ভার্সন ডাউনলোড করে নিয়েছি।লিংক দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
১৭ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৪৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ কল্পদ্রুম পিডিএফ ডাউনলোড করার জন্য। খুশি হলাম।
৬| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:২২
সুপারডুপার বলেছেন: এই পোস্টটি অনেক আগেও ব্লগে পড়েছিলাম। আপনার কি এটা রিপোস্ট?
বুঝে শুনে খোদা পাগল বা সত্যিকারের পাগল খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন।
১৭ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৫৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হ্যাঁ, এটা আগেও, ২০০৯ সালের দিকে পর্ব আকারে, ২০১২ সালের দিকে কিছু অংশ ব্লগে পোস্ট করা হয়েছে। এবার পরিমার্জিত/পরিবর্ধিত রূপে একখণ্ডে পোস্ট করা হলো।
ব্লগে আগেও পড়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো।
বুঝে শুনে খোদা পাগল বা সত্যিকারের পাগল খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। মূল্যবান কথা। কে যে সত্যিকার খোদাপাগল, আর কার ভেতরে ব্যসায়িক ভণ্ডামি লুকিয়ে আছে, তা বুঝতে পারা খুব কষ্টকর।
ধন্যবাদ সুপারডুপার।
৭| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১:৩০
নেওয়াজ আলি বলেছেন: আপততঃ ল্যাপটপ ব্যবহার করতে পারছি না । তাই মোবাইলে পড়ি । কোন অসাধারণ বড় লেখা পড়তে যাই খুব কষ্ট হয় । চোখ ঝাপসা হয়ে আসে ।
১৭ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:২৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ নেওয়াজ আলি ভাই। শুভেচ্ছা।
৮| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:৫৭
ঢুকিচেপা বলেছেন: গল্পটা ভাল লেগেছে। পুরো গল্প পড়ার পরেও একটা জায়গাতে মনটা আটকে যাচ্ছে, মাদাইর ফকির যদি মহিলাই হবে তাহলে ভয়েসের ব্যাপারটা কি দাঁড়ালো ? ওটা কি অলৌকিক ধরবো নাকি ঊষা উথুপের মতো ভয়েস।
ধন্যবাদ।
১৭ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:৩৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: মাদাইর ফকিরের ঘটনাটা অলৌকিক ধরতে হবে। এটা বহুল শ্রুত একটা গল্পের উপর ভিত্তি করে লেখা।
গল্পটা ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগছে আমার। ধন্যবাদ দীর্ঘ গল্পটি পড়ার জন্য।
৯| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৫৭
কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: তবে কি দয়ালবাবা সত্যই নাখোশ হয়েছিলেন?
এত পাগলের মেলায় তাহলে আসল পাগল খুঁঝে পাওয়াই ভার।
১৭ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:৩৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: তবে কি দয়ালবাবা সত্যই নাখোশ হয়েছিলেন? কুটিমিয়ার মনে এরকম একটা ধারণা জন্মেছিল।
এত পাগলের মেলায় তাহলে আসল পাগল খুঁঝে পাওয়াই ভার। কে যে আসল পাগল, তা আসলেই খুঁজে পাওয়া ভার।
ধন্যবাদ পোস্ট পড়ার জন্য।
১০| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:৫৪
রাজীব নুর বলেছেন: কুটিমিয়া মিয়ার বাবা কুটিকে রেখেই মসজিদে চলে গেছে। ছেলেকে সাথে করে নিয়ে যাবে না? একটূ দেরী করলে কি হতো!
মেঘুলা বাজারটা ঠিক কোথায় বলেন তো। নামটা চেনা চেনা লাগছে।
১৭ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৩২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কুটিমিয়া মিয়ার বাবা কুটিকে রেখেই মসজিদে চলে গেছে। ছেলেকে সাথে করে নিয়ে যাবে না? একটূ দেরী করলে কি হতো! মসজিদ কাছাকাছি ছিল।
ফুলতলা- শাইনপুকুর- নারিশা- মেঘুলা- দোহার - জয়পাড়া। আশা করি এখন চিনতে পারছেন।
১১| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৫৬
শেরজা তপন বলেছেন: আপাতত অর্ধেক পড়লাম ভাই-বাকিটা পরে পড়ব। আপনার আধা ঘন্টা -আমার মনে হয় এক ঘন্টার সমান হবে
১৭ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৩৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপাতত অর্ধেক পড়ার জন্যই অনেক অনেক ধন্যবাদ শেরজা তপন ভাই। খুশি হলাম। আমি অবশ্য বলেছি, কমপক্ষে ৩০ মিনিটের কথা, বেশি তো লাগতেই পারে
১২| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৫০
লরুজন বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন:
এই মন্তব্যটি মুছে ফেলা হয়েছে, মন্তব্য করার সময় ব্লগ ব্যবহারের শর্তাবলীর দিকে খেয়াল রাখুন । শর্তাবলী
আ ঢুলো, মিরোরডডল কমেন্ট করে না?
১৭ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: নজরুল ভাই, কেমন আছেন?
১৩| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৮
মিরোরডডল বলেছেন:
@ লরুজন
ম্যান , হোয়াট’স ইউর প্রবলেম ?
হোয়াই ইউ আর কলিং হিম ধুলো ?
এই নিকটা আমি দিয়েছি, শুধু আমি এই নামে ডাকবো ।
নট ইউ
১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:১৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ও তো ঢুলো বলেছে
১৪| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:২১
মিরোরডডল বলেছেন:
এটা স্পেল এরর । আগের পোষ্টগুলোতে ধুলো বলেই ডেকেছে ।
ভদ্রলোকের প্রবলেম কি ? এর যন্ত্রণায় কমেন্ট করাও যায়না । বসে বসে গোনে কয়টা কমেন্ট ।
এই পোষ্টে অবশ্য হি ইজ ওকে । এটাতো পাগল নিয়েই
ধুলো অনেক বড় পোষ্ট । সময় নিয়ে পড়বো । এই পোষ্ট পড়ার আগে চা টা নিয়ে আয়োজন করে বসতে হবে যেন ধৈর্যহারা না হই
১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অ্যাডমিন/মডারেটরের ভূমিকার প্রশংসা করতে হয়। তারা যে অ্যাক্টিভ তারও প্রমাণ পাওয়া গেল। আপত্তিকর কমেন্টগুলো মুছে ফেলা হচ্ছে। লরুজনও হয়ত শীঘ্রই অ্যাডমিনের চোখে পড়বেন।
হ্যাঁ, পোস্ট বড়ো। একদিনে না পড়ে ৭দিনে পড়া যেতে পারে।
১৫| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৪০
মিরোরডডল বলেছেন:
আমি কি ধুলো ? সাত দিনে পড়ে পোষ্টের মজা নষ্ট করবো যেমন ধুলো একটা মুভি কয়েকদিনে দেখে । নো ওয়ে !
নাহ থাক, এডমিনের কিছু করার দরকার নেই । মানুষকে সিলি রিজনে পানিশমেন্ট দিতে ভালো লাগেনা । এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে আই উইশ ।
১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৪৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমি কি ধুলো ? হাহাহাহা। কিছুক্ষণের জন্য আমি ব্লক্ড হইয়া গেছিলাম। স্ক্রল করে উপর-নীচ করেছি কয়েকবার তবে, এখানকার সিকোয়েলগুলো এমন, একটা পড়লেও কিছু মজা পেতে পারেন
পরের অংশ - আচ্ছা
১৬| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী এখন মনে পড়েছে। শাইনপুকুর আমি বেশ কয়েকবার গিয়েছি।
১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৪০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: জেনে ভালো লাগলো যে আপনার মনে পড়েছে।
১৭| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:১৫
শায়মা বলেছেন: ভাইয়া পাগল, সাধক, দরবেশ, পীর ফকিরেরা সবাই এক এক রহস্য! কেউ কেউ তাদের অবিশ্বাস্য রকমের শক্তিকে বিশ্বাস করে, কেউ করে না। গল্পটাও তেমনই। ৩০/৪০/৫০ মিনিটে তোমার গল্প পড়লেও মনে হয় কেউ বিরক্ত হবে না।
১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:০৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
পাগল, সাধক, দরবেশ, পীর ফকিরেরা সবাই এক এক রহস্য! কেউ কেউ তাদের অবিশ্বাস্য রকমের শক্তিকে বিশ্বাস করে, কেউ করে না। ঠিক বলেছেন। এদের অনেকের অনেক কার্যকলাপ আছে যা আমাদের সাধারণের কাছে বোধগম্য না, কিংবা ব্যাখ্যাত অতীত।
গল্পটাও তেমনই। ৩০/৪০/৫০ মিনিটে তোমার গল্প পড়লেও মনে হয় কেউ বিরক্ত হবে না। আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিলেন। অনেক ধন্যবাদ আপু।
১৮| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:১৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ফকিরদের ভণ্ডামি আর সাধারণ মানুষের অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে ভালো লিখেছেন। কুটি মিয়া ফকিরকে উপুর হয়ে ভক্তি দেখায় না। সাধারণ মানুষ না বুঝলেও কুটি মিয়ার অবচেতন মন জানে এটা খারাপ কাজ। কুসংস্কার খারাপ জিনিস। আগে আমাদের স্কুলে পড়ার সময় এক ধরনের চিঠি পেতাম বন্ধুদের কাছ থেকে তারা বলত যে এই চিঠি আরও দশ জন হাতে লিখে বিলাতে হবে, না হলে অনেক বিপদ হবে। চিঠিতে এ ধরনের কিছু বিপদের উদাহরণ দেয়া থাকত। আমি কখনও বিলাইনি। ক্লাস সিক্স এ থাকতে বাসার কাছে একটা পুরানো গাছের নীচে এরকম একটা জটাধারি পাগল সব সময় বসে থাকত। এক দিন আমি পাশ দিয়ে যাচ্ছি, হঠাৎ পাগলটা আমাকে ইশারায় কাছে ডাকল। ভয়ে আমার অবস্থা খারাপ। কাছে যাওয়ার পর আমাকে তার সিগারেট দেখিয়ে বলল যে তার জন্য একটা দিয়াশলাই (কোথায় যেতে হবে হাতের ইশারায় দেখিয়ে দিল) নিয়ে আসতে হবে। আমি বাধ্য ছেলের মত প্রায় আধা কিলো দুরের দোকান থেকে তার জন্য দিয়াশলাই নিয়ে আসলাম। এর পরে ছাড়া পেলাম। আসলে আমি ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম।
১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:১২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আগে আমাদের স্কুলে পড়ার সময় এক ধরনের চিঠি পেতাম বন্ধুদের কাছ থেকে তারা বলত যে এই চিঠি আরও দশ জন হাতে লিখে বিলাতে হবে, না হলে অনেক বিপদ হবে। চিঠিতে এ ধরনের কিছু বিপদের উদাহরণ দেয়া থাকত। ৪০ বছর আগে স্কুল লাইফেও এসব চিঠি বা লিফলেট পেতাম, কখনো বাসেও। যেভাবে পেতাম ওভাবেই ফেলে দিতাম। এখন পাবেন ফেইসবুকে ইনবক্সে এসব। এগুলোর যন্ত্রণায় অনেকে চিরতরে ব্লক খেয়ে বসে আছেন।
আপনার বাসার কাছের জটাধারী পাগলের প্রেম-বিরহের কোনো ঘটনা থাকতে পারে।
বিস্তৃত কমেন্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর।
১৯| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:২৬
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: তিন পগলের বসলো মেলা নদে এসে
ওরে মন নদে এসে
তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে
পাগলের ষংগে যাবি পাগল হবি বুঝবি শেষে
তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে
গানটাই আপনি মনে পড়লে পাঠান্তে
শেষদিকে পুরাই আবিষ্ট করে ফেলেছিলেন বর্ণণায়
+++
১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৪৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: তিন পাগলের কথা মনে করাইয়া দিলেন ভাই। গানটা আরেকবার শোনা যাক। গল্প পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
২০| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:১৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আল্লাহ ঠিক , নবী ঠিক পাগলকে নিয়ে একটি পোস্ট দিন।
অনেক দিন দেখি না তাকে।
আহা কি মিছিলই না করতেন উনি।
১৮ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আল্লাহ ঠিক , নবী ঠিক পাগল - এই পাগলকে তো আমি চিনতে পারলাম না তা ব্যাপারে কিছু জানা থাকলে আপনিই বরং একটা পোস্ট দিন সাজ্জাদ ভাই।
২১| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:২৫
লরুজন বলেছেন: ঢুলো ভাই ঢুলো ভাই এইডা কি ঠিক হইল আপনে খালি একজনের লাগি ঢুলো?
আমরা বেবাব কি দোষ কইচ্চি - আমি কিন্তক খেলমু না!!!
মিরোরডডল আপনের লগি আড়ি, আপনের লগে কথা নাই হুম
১৮ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কথা আছে, ইনবক্সে আইসেন আজকে
২২| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৫৫
লরুজন বলেছেন: ঢুলো ভাই,
তিন পাগলে বইছে মেলা বইলা একটা গান আছে
পাগল নিয়া আর কিছু জানিনা
ভাই আমি কি দোষ কইচ্চি একদম এডমিনরে টাইন্না আনতাছেন
আপনের প্রত্যেকটা পোস্টে মিরোরডডল দশ বারটা কমেন্ট করে
হেইডা যেমন এডমিন দেখে আমি কি কমেন্ট কইচ্চি হেইডাও এডমিন দেখে
কিন্তু কথা হইতাছে কথা না, আপনে খ্যাপা কেন?
আপনে সরাসরি কইবেন আমি কি আপনারে কমেন্ট করুম
নাকি করুম না?
আইচ্চা ঠিক আছে মিরোরডডল আগামীতে দশটা কেন
বিশটা কমেন্ট করলেও আমি আর কিছু কমু না
@স্যরি মিরোরডডল
স্যরি ঢুলো
১৮ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
২৩| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:২৩
শায়মা বলেছেন: ইয়ে!!!!!!!!!!!!!! এইমাত্র লরুজন ওরফে গরুজান ওরফে নজরুলভাইয়া আমার কাছে ধরা পড়ে গেলো!!!!!!!!!!
ভাইয়ু মালটি এক্সপার্টরাই একমাত্র মালটিবাজদেরকে ধরিতে পারে। ডু নট ফরগেট দ্যাট ভীতুভাইয়ুমনিতা!!!!!!!!!
১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:২৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বলেন কী? কীভাবে ধরা পড়লো?
২৪| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:২৫
শায়মা বলেছেন: ডলু আপুনি আর ঢুলো ভাইয়ামনি লরুজান ওরফে গরুজান ওরফে নজরুল ভাইয়া কে আমি চিনে ফেলেছি।
রঙ্গিলা জালে ........ হাহাহাহহাহাহা
১৮ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধরা পইড়া গেছেন তিনি রঙ্গিলা জালে
২৫| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৫৬
ডি মুন বলেছেন:
চমৎকার গল্প।
ফকিরদের বিষয়াশয় নিয়ে খুব বেশি কিছু জানি না, এজন্য বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। আমাদের দেশের মানুষদের মধ্যে, বিশষত গ্রামাঞ্চলে ফকিরদেরকে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে মনে করেন অনেকে। অনেক পরিবারে বাচ্চা কাচ্চা না হলে ফকিরের দরগায় দৌড়ান, মানত করেন, মাদুলি নেন। তবে ইদানিং ফকিরদের প্রভাব কমে এসেছে। চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতিতে, এবং ফকিরদের জালিয়াতির বহু প্রমাণ পাওয়াতে মানুষ ফকিরদের থেকে এখন দূরে থাকারই চেষ্টা করে।
গল্পের শুরুতে 'কুটিমিয়া' নামটা পড়ে ভেবেছিলাম কোনো গ্রামীণ কর্মঠ মানুষ (আইমিন মিডল-এজড ম্যান)। পরে বোঝা গেল যে কেবল ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। গল্পটা দীর্ঘ হলেও সুখপাঠ্য। দুয়েকটা জায়গাতে যেমন বেশ্যাদের ব্যাপারটা কিংবা বাইশা নিয়ে বর্ননা খানিকটা মনোটোনাস / ক্লিশে লেগেছে। এটুকু ছাড়া পুরো গল্প জুড়েই একটা আগ্রহ জাগানিয়া ব্যাপার ছিলো।
ছেলেমেয়েগুলোকে নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে, তারপর নিজেই নদীতে ঝাঁপ দেয়া হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার রিভার্স ইভেন্টের মতো। ধামাইল বলতে আগে শুধু ধামাইল গান বুঝতাম, সিলেট অঞ্চলের। ফকিরদের এমন ধামাইলের কথা জানা ছিলো না। বাঁশ নিয়ে নৃত্যের ব্যাপারটাও প্রথম জানলাম।
গল্পে ফকিরদের একটা দারুণ জগত নির্মান করতে পেরেছেন। আর সেই সাথে তাদের অলৌকিকতার ছটা কিংবা মানুষের মধ্যে তাদের প্রতি বিশ্বাসের ব্যাপারটা সুন্দরভাবে তুলে এনেছেন। নামকরণটাও ইন্টারেস্টিং। এ ধরণের ব্যক্তিদের সহজে বিশ্বাস বা অবিশ্বাস কোনোটাই করা যায় না। একটা দ্বিধা মনের ভেতরে থেকেই যায়।
উপভোগ্য হয়েছে লেখাটা।
ধন্যবাদ
১৮ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ফকিরদের বিষয়াশয় নিয়ে খুব বেশি কিছু জানি না, এজন্য বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। আমাদের দেশের মানুষদের মধ্যে, বিশষত গ্রামাঞ্চলে ফকিরদেরকে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে মনে করেন অনেকে। অনেক পরিবারে বাচ্চা কাচ্চা না হলে ফকিরের দরগায় দৌড়ান, মানত করেন, মাদুলি নেন। তবে ইদানিং ফকিরদের প্রভাব কমে এসেছে। চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতিতে, এবং ফকিরদের জালিয়াতির বহু প্রমাণ পাওয়াতে মানুষ ফকিরদের থেকে এখন দূরে থাকারই চেষ্টা করে। পশ্চাদপদ গ্রামাঞ্চলে আগের দিনে ডাক্তার বা হাসপাতালের অভাব ছিল প্রকট। সামান্য জ্বর-কাশি বুকে ব্যথা হলেও মানুষ দৌড়াত ফকির বা কবিরাজের কাছে। রোগশোকও সারাবছর লেগে থাকতো। এমন অবস্থায় ফকির-কবিরাজদের উপস্থিতি বা কার্যতৎপরতা অনেক বেশি ছিল। তবে, আপনার কথা ঠিক। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সাথে সাথে ডাক্তার-হাসপাতালের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমন ফকিরদের কার্যকলাপও অনেক কমে গেছে। আগে যেমন ফকিররা ছিল প্রথম ভরসা, এখন তারা হয়ে গেছে লাস্ট রিসোর্ট।
গল্পের শুরুতে 'কুটিমিয়া' নামটা পড়ে ভেবেছিলাম কোনো গ্রামীণ কর্মঠ মানুষ (আইমিন মিডল-এজড ম্যান)। পরে বোঝা গেল যে কেবল ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। গল্পটা দীর্ঘ হলেও সুখপাঠ্য। দুয়েকটা জায়গাতে যেমন বেশ্যাদের ব্যাপারটা কিংবা বাইশা নিয়ে বর্ননা খানিকটা মনোটোনাস / ক্লিশে লেগেছে। এটুকু ছাড়া পুরো গল্প জুড়েই একটা আগ্রহ জাগানিয়া ব্যাপার ছিলো। গ্রামাঞ্চলে ছোটোশব্দের নামগুলোর সাথে মিয়া যোগ করে ডাকার প্রচলন খুব পুরোনো, ছোটো থেকেই। যেমন, লালমিয়া, কুটিমিয়া, সোনামিয়া, ধলামিয়া। 'বাইশা' বর্ণনাটা দেয়া হয়েছে ইচ্ছে করেই, এ পদ্ধতিটা সম্পর্কে একটা ধারণা রেকর্ড করে রাখার জন্য।
এ গল্পটা পর্ব আকারে শেয়ার করার সময় কেউ কেউ সিলেটের ধামাইলের কথা উল্লেখ করেছেন। ঐ ধামাইল সম্পর্কে আবার আমার কোনো আইডিয়া নাই
এ ধরণের ব্যক্তিদের সহজে বিশ্বাস বা অবিশ্বাস কোনোটাই করা যায় না। একটা দ্বিধা মনের ভেতরে থেকেই যায়। চমৎকার একটা কথা বলেছেন। পুরোপুরি একমত।
অনেক সুন্দর ও গঠনমূলক একটা কমেন্ট। কতখানি মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন তা কমেন্ট থেকে স্পষ্ট। এত সময় ব্যয় করে এত চমৎকার কমেন্ট দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ডি মুন ভাই।
২৬| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৪১
মিরোরডডল বলেছেন:
ফাইনালি অফলাইনে আজ সকালে পড়েছি ।
প্রথমে এক টাকা দিতে না পারায় অনুশোচনায় কুটি মিয়ার যে ভাবনা কি কি হতে পারে বা পারতো, সেটা খুবই ম্যচিউর । একটা বাচ্চা চ্ছেলে এরকম বড়দের মতন ভাবে ! সেতো পাগলটিকে দেরিতে হলেও টাকাটা দিয়েছিলো মসজিদ থেকে ফেরার সময় , তারপরও অভিশাপ ?
দ্বিতীয় পাগলটা হয়তোবা খুবই ভালো সাঁতারু ছিলেন যে পানির নীচ দিয়ে অনেকদুর পর্যন্ত গিয়েছিলো, তারপর ফ্লোটিং করেছে । পানির ওপর ভেসে থাকা যায় । পানির ওপর দিয়ে হেঁটে যাবার গল্পটা অবশ্য ইন্টারেষ্টিং, ওটা নরমাল না ।
ধামাইলের পর্বের এই যে ফকির মুরিদ আর যা কিছু জানলাম, পারসোনালি এটা আমার কাছে একদমই একটা অসুস্থ পরিবেশ মনে হয়েছে । এরকম ভালো লাগেনা । ভালো লাগলো যে কুটি মিয়া ফকিরকে ভক্তি করেনি । শেষটা স্যাড
১৮ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সেতো পাগলটিকে দেরিতে হলেও টাকাটা দিয়েছিলো মসজিদ থেকে ফেরার সময় , তারপরও অভিশাপ ? খুব ভালো পয়েন্ট তুলে ধরেছেন। এখানে দুটো দিক আছে। (১) ওটা কুটিমিয়ার ধারণা, মায়ের কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে পাগল হয়ত অভিশাপ দিয়েছিল। (২) এটা যে কুসংস্কার, সেটাও প্রকারান্তরে প্রমাণ করা যে, টাকা দান করার পর আর অভিশাপ থাকে না। কুটিমিয়ার বোনের মৃত্যুর ব্যাপারে ঐ অভিশাপের কোনো প্রভাব নেই।
পাগলের পানির উপর ঝাঁপ দেয়া পুরোপুরি কাল্পনিক গল্প। তবে, আমাদের এলাকায় এক পাগল খাল-বিলের পানিতে ভেসে থাকতেন অনায়াসে অনেক্ষণ (আমি দেখি নাই, কিন্তু এটা সহজেই পারা যায়)। সেই গল্পের উপর ভিত্তি করে লেখা। পানির উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া পাগলের ব্যাপারে জনশ্রতি আছে। তা থেকে লেখা।
ধামাইল পর্ব আমি নিজে দেখেছি। সম্ভবত সর্বশেষ ক্লাস টু-থ্রিতে থাকা অবস্থায়, আজ থেকে প্রায় ৪২/৪৫ বছর আগে। তখন ছোটো চোখে এগুলো খুব গাম্ভীর্যপূর্ণ ও আকর্ষণীয় মনে হতো, রহস্যময় তো অবশ্যই।
আপনিও খুব ডিটেইলড একটা কমেন্ট করেছেন। গল্পের প্রায় সব অংশেই আলোকপাত আছে।
বিরাট পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
২৭| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৫০
মিরোরডডল বলেছেন:
শায়মা বলেছেন: ডলু আপুনি আর ঢুলো ভাইয়ামনি লরুজান ওরফে গরুজান ওরফে নজরুল ভাইয়া কে আমি চিনে ফেলেছি।
রঙ্গিলা জালে ........ হাহাহাহহাহাহা
আপু আমিও একজনকে গেজ করি যে আটকানো ছিলো । কমেন্টে মিল আছে । সামটাইমস ইরিটেট করলেও ফানি ছিলো ।
হু নোজ মে বি দা সেইম পারসন
১৮ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কে?
২৮| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৬
মিরোরডডল বলেছেন:
ধুলো ডিড ইউ সি হি সেইড স্যরি । বলেছিলাম এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে
১৮ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
২৯| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৬
মিরোরডডল বলেছেন:
ওটা কুটি মিয়ার ধারনা তাহলে ঠিক আছে । হুম, টাকা দেয়া না দেয়ার সাথে অভিশাপ দেয়া না দেয়ার যে আসলে সম্পর্ক নেই, কুসংস্কার, এই লজিকটাও ঠিক আছে । অল গুড ।
ধামাইলের বিষয়টা যে ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে লেখা ওটা বুঝতে পেড়েছি ব্রিফ পড়ে ।
আমি কিন্তু ধুলোর এলাকায় গিয়েছি ।
২৭ প্রশ্নের উত্তর আমার মনে হয়েছে ওটা এ্যাক্সজাবিয়ান, নট সিওর ।
১৮ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধুলোর এলাকায় সর্বশেষ কবে গিয়েছেন? নিশ্চয়ই বাসে/কারে গেছেন, কারণ, লঞ্চের যমানা শেষ হয়েছে অনেক আগে।
কোন জায়গায় গেছেন?
৩০| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:০৪
মিরোরডডল বলেছেন:
২০১৬ বাই কার মইনট ঘাট, কার্ত্তিকপুর । তারপর এপারে গাড়ী রেখে নৌকায় ওপারে যে চর আছে একটা ওখানে । এতো সুন্দর । আমি সানসেট দেখে মুগ্ধ !
১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:১২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: মাইনট ঘাটের অনেক প্রশংসা ও প্রচার শুনেছি, কিন্তু যাওয়া হয় নি। আমার স্ত্রীও ওখানে যাওয়ার জন্য পাগলিনী। কারণ আর কিছু না - এক গাড়ি ইলিশ মাছ কেনা আমার সাথে তো একদিন ঝগড়া লেগে গেল। আমি বললাম, ওখান থেকে ইলিশ কিনে আনতে যে-দাম পড়বে, তার চাইতে কারওয়ান বাজারে সস্তায় পাওয়া যাবে
৩১| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:০৭
মিরোরডডল বলেছেন:
ধুলোতো দোহার , সাত আট মিনিট ড্রাইভ মইনট ঘাট থেকে । ধুলোর বাড়ীর এতো কাছে এতো সুন্দর চর !
১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:১৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অদূর ভবিষ্যতে আমার যাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম করোনা কবে শেষ হবে তা নিশ্চিত না। তবে, একদিন হয়ত যেতে হবেই পরিবারের সবার চাপের মুখে
৩২| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩১
মিরোরডডল বলেছেন:
আমি যতটুকু জানি ইলিশের হাবটা হচ্ছে মাওয়া ঘাট, মইনট ঘাট থেকে আরও কিছুদুর দোহার পার হয়ে । ধুলোর মাস্ট উচিৎ হবে ধূলি আর টেপাটেঁপিকে নিয়ে সানসেট দেখতে সেই চরে যাওয়া । ঢাকা থেকে ইটস আ শর্ট ড্রাইভ । সেইবার আমি ফ্রেন্ডসদের নিয়ে গিয়েছি , আবারও ইচ্ছে আছে জানিনা কবে সেই দিন আসবে , আদৌ আসবে কিনা ।
২২ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:৫৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এই বেল্টে মাওয়া, চাঁদপুর এরকম কয়েকটা হাব আছে, আগে বোধহয় গোয়ালন্দও ছিল। আমার খুব বেশি ধারণা নেই। বরিশাল আর পটুয়াখালিতেও প্রচুর ইলিশ পাওয়া যায়।
যাব সানসেট দেখতে, যাব না কেন? কবে যাব, জানি না। ছেলেমেয়েদের বিয়ে হোক - বউজামাই নিয়ে ওরা যাবে, সেটা নিশ্চিত
৩৩| ১৯ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:০৮
রবিন.হুড বলেছেন: লেখাটা পড়লাম। ভালো লিখেছেনে। পীর ফকিরদের আধ্যাতিকতা বেশি না কি ভন্ডামি বেশি?
২২ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:০২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। প্রশ্নটা গুরুত্বপূর্ণ। ভণ্ড পীরের অভাব নাই। আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক পীরের ভণ্ডামি ভাইরাল হচ্ছে। তবে, সত্যিকার আধ্যাত্মিক পীর অবশ্যই আছেন। আধ্যাত্মিক পীরদের চিনিতে হলে নিজেকেও ঐ লেভেলের কেউ হতে হবে বলে আমি মনে করি।
ধন্যবাদ আপনাকে।
৩৪| ১৯ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৬
মিরোরডডল বলেছেন:
শামা কোথায় ? আজ না শামার আসার কথা ছিলো ? ইনফ্যাক্ট গতকাল রাতেই আসার কথা ।
২২ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:০৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: শামা তো সময়মতো এসে গেছে, কিন্তু ডুলু কোথায়?
মান-অভিমান-রাগ করতে হয় পরিবারের মানুষের সাথে, বা খুব আপনজনদের সাথে, যারা এগুলোর মূল্য বুঝবে। ব্লগের সাথে অভিমান করে দূরে থাকা বোকামি। কেউ মনে রাখবে না। নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখতে চাইলে ফিরে এসে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হোন। আপনার পক্ষে লড়ার জন্য সমমনাদের পাবেন।
আরেকটা জিনিস মনে রাখতে হবে- মশা মেরে কখনো হাত নোংরা করতে নেই।
আশা করি এখনই লগিন হবেন।
৩৫| ২০ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:২০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২১০
লেখক বলেছেন: আল্লাহ ঠিক , নবী ঠিক পাগল - এই পাগলকে তো আমি চিনতে পারলাম না তা ব্যাপারে কিছু জানা থাকলে আপনিই বরং একটা পোস্ট দিন সাজ্জাদ ভাই।
উনি দোহার উপজেলার এক জন বিশিষ্ট পাগল ছিলেন । উনাকে দোহার উপজেলার পাগল সম্রাট বললেও কম বলা হবে। ওনাকে আমি দেখতাম প্রতি বৃহস্পতিবার জয়পাড়া হাটের দিন ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে মিছিল করতেন আর বিভিন্ন দোকানপাট থেকে কিছু কিছু অনুদান সংগ্রহ করতেন। উনার মিছিল করার কাজ শেষ হলে যে সকল অনুদানের অর্থ উঠত সেই অর্থ দিয়ে তিনি কখনো ফল কখনো কাঁঠাল ইত্যাদি কিনে তার সাথে মিছিলে অংশগ্রহণকারী বাচ্চাদেরকে খেতে দিতেন।
আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম বছর কয়েক আগে তিনি মারা গেছেন। উনাকে খুব মিস করছি।
২২ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:১০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: দীর্ঘদিন গ্রামে কাটানোর পরও এ বিশিষ্ট 'পাগল সম্রাট'কে চিনতে পারছি না বলে কিছুটা খারাপই লাগছে। বাচ্চাকাচ্চাদের নিয়ে মিছিল করে অনুদান সংগ্রহ, ফল কিনে ওদের খাওয়ানো- এ জিনিসটা আমার মন কেড়ে নিল। আর খারাপ লাগলো তার মৃত্যুর খবরটা শুনে।
ধন্যবাদ এ পাগলকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য।
৩৬| ২১ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:৪২
সোহানী বলেছেন: আগে মানে ছোটবেলায় এরকম পীর ফকির প্রায় দেখা যেত ও গল্প শুনা যেত যা এখন অনেক কম মনে হয়।
অর্ধেক পড়েছি, বাকিটুকু চোখ বুলিয়েছি....। সময়ের একটু টানাটানিতে আছি। তবে কুটি মিয়ার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে ভালোলাগা।
২২ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:১৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আধুনিকতার ছোঁয়া, জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতি, শিক্ষাদীক্ষার হার বৃদ্ধি, জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি- ইত্যাদি অনেক কারণেই পীর ফকিরদের সংখ্যা এখন অনেক কমে গেছে। উপরে উল্লেখ করেছি, আমাদের ছোটোবেলায় দেখেছি, কারো একটুখানি অসুখ-বিসুখ হলেই মানুষ সবার আগে দৌড়ে যেত ফকির বা কবিরাজের কাছে, তাদের নিয়মিত ঝাড়পুক, পানি পড়া, ইত্যাদি ছিল নিয়মিত ওষুধ। এখন মানুষ ঘরের কাছেই ডাক্তার পায়। অল্প সময়েই রোগ সেরে যায়। ফকিরের কাছে যেতে হয় না, ফকিররাও ঘরে বসে না থেকে কায়িক কাজকর্মে নেমে পড়ে।
অর্ধেক পড়ার জন্যন ধন্যবাদ আপু।
৩৭| ২২ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৩:২৮
সুপারডুপার বলেছেন:
অন্ধ দরবেশ বাবা আজিজ তাঁর নাতনি ইশতারকে নিয়ে পীরফকিরের সমাবেশের দিকে যাত্রার উপর মুভি : ' Bab'Aziz: The prince who contemplated his soul' দেখতে পারেন। আশা করি আপনার ভালো লাগবে। নিচে ইউটিউব লিংকে ইংরেজি সাবটাইটেলে দেখতে পারবেন। ভালো থাকবেন :-
২২ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:৩৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ লিংকের জন্য। ইরান-তিউনিশিয়ার মুভি। উইকিপিডিয়া থেকে সারাংশ জেনে নিয়ে মুভিটা দেখা শুরু করলাম। ক্লাসিক মুভি।
২২ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:১২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এ মুভিটা এতটাই ক্লাসিক এবং অসাধারণ যে, একবারের দেখায় এ মুভির অনেক কিছুই অস্পষ্ট থেকে গেছে। প্রতিটা কথা পড়ার জন্য থামতে হয়েছে এবং বার বার পেছনে যেয়ে পড়তে হয়েছে।
কয়েকটা জিনিস যদি ক্লিয়ার করতেন :
১। অন্ধ দাদা যে প্রিন্সের গল্প বললেন, সেই প্রিন্সই কি এই অন্ধ দরবেশ? তাই হয়ে থাকলে ইশতার নামের এই নাতনি কোথা থেকে আসলো? তা না হয়ে থাকলে, ঐ প্রিন্সের দরবেশ হয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়েই কি গল্প শেষ, নাকি প্রতিকী কিছু আছে এতে?
২। বৃদ্ধ যেই গ্যাদারিঙের কথা বলছিলেন, এই মৃত্যুর জায়গাটা বোঝানো হয়েছে নাকি তা দ্বারা?
৩। বৃদ্ধ দাদা গল্প বলার সময় এক ছুটন্ত হরিণকে ধাওয়া করতে যেয়ে নিখোঁজ হোন। পথিমধ্যে যে মসজিদ বা আস্তানা থেকে ইশতার বেরোলো, সেখানেও একটা হরিণের পিছে ধাওয়া করতে যেয়ে ইশতার হারিয়ে গেল। ছবির শেষে এসেও আবার একই হরিণের দেখা পাওয়া গেল। এটা কোন হরিণ? এটা দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
৪। শুরুতেই দেখা গেল বৃদ্ধ এবং ইশতার জায়েদের আক্রমণের শিকার হলো। পরে এই জায়েদই আবার কীভাবে কই থেকে হারানো ইশতারকে নিয়ে এলো বৃদ্ধের কাছে?
৫। কুয়ো থেকে তোলা লোকটার গল্প থেকে কী বোঝানো হয়েছে (যিনি পাতালে এক প্রাসাদে পৌঁছে গিয়েছিলেন)। এ ছবিটা আমার একটা গল্পের প্লটকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। আমার আকাশযাত্রা গল্পের বিপরীত এপিসোড ছিল 'পাতালযাত্রা' - এই পরিকল্পনা মাঠে মারা গেল দেখি
৬। নুর কেন জায়েদের পোশাক নিয়ে এই গেদারিঙে এলো, এটাও বোঝা গেলো না। শেষ গেদারিঙে নুর মেয়েদের পোশাকেই ছিল। জায়েদের যে পোশাক খুলে নুর নিয়ে গিয়েছিল, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জায়েদকে সেই পোশাকেই দেখা গেল। এটা ক্লিয়ার হয় নি।
৭। হাসানের ভাইকে কে হত্যা করেছে, সেটাও ক্লিয়ার হয় নি। মোটর বাইকওয়ালা কে?
৮। শেষ মুহূর্তে পোশাকবিহীন হাসান কোথা থেকে এসে উপস্থিত হলো বৃদ্ধের কাছে? বৃদ্ধ মারা যাওয়ার পর তার পোশাক পরে সে হাঁটতে শুরু করলো।
আবার দেখতে বসলে হয়ত এই প্রশ্নগুলোর উত্তর নিজেই খুঁজে পাব, আবার উত্তরগুলো অস্পষ্টও থেকে যেতে পারে। আপনার জানা থাকলে উত্তরগুলো দিবেন আশা করি।
মৃত্যু নিয়ে এবং মায়ের পেটে শিশুর চিন্তাভাবনা নিয়ে খুব গম্ভীর ও তাৎপর্যবহ কিছু কথা আছে ছবিটাতে।
অল্প কয়েকটা সিনে নুর খুব সাবলীল ছিল। শিশু চরিত্রে ইশতার দুর্দান্ত। গজলগাওয়া রমণীর একঝলক চাহনি মরুদ্যানে মিষ্টি বৃষ্টির মতো স্নিগ্ধ ছিল।
পাতালে পড়ে যাওয়া পিংক কালার পোশাকে চরিত্রটা ভালো করেছে। তার নাম ভুলে গেলাম এই মুহূর্তে।
বৃদ্ধের ভূমিকায় দাদা (বেব আজিজ) খুব দুর্দান্ত ছিলেন।
মনে দাগ কেটে যায় এসব ছবিতে।
২২ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ছবিটা আবার দেখলাম। উপরের অনেক প্রশ্নেরই জবাব পাওয়া গেছে। এত ব্যস্ততার মধ্যে ছবি দেখতে গেলে, তা যদি আবার এমন কঠিন ও কমপ্লেক্স হয়, তাহলে অনেক কিছু মিস হয়ে যায়। লাল চুলের দরবেশই হাসানের ভাই হোসেনকে (হোসেনের ইচ্ছাতেই) মেরে ফেলেছিল। এই লাল চুলের দরবেশই ছিল প্রিন্সের সাথে। এই লাল চুলের দরবেশ গায়েব হয়ে গেলে তার পোশাক পরে প্রিন্স হাঁটতে থাকে। এই প্রিন্সই হলো বৃদ্ধ দাদা বা বৃদ্ধ দরবেশ।
কিন্তু এই লাল চুলের দরবেশ, হরিণকে পিন্সের সময়কাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দেখা গেল। টাইমের ব্যাপারটা আমার কাছে ক্লিয়ার না।
পুরা গল্পটি আধ্যাত্মিক, কিন্তু তার চাইতে বেশি মনে হয়েছে পরাবাস্তব। ওসমানের কুয়োতে পড়ে রাজপ্রাসাদ দেখা এবং নাই হয়ে যাওয়া তো পিওর পরাবাস্তব কাহিনি।
পুরা গল্পে হরিণটাই মনে হচ্ছে প্রধান চরিত্র। হরিণের পেছনে ছুটতে গিয়ে প্রিন্সের এই হাল হয়েছিল। এই হরিণ প্রিন্সের কাল থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত উপস্থিত।
নূরের ভূমিকায় অভিনয় করা ফারাহানিকে এখন চিনতে পারলাম, যিনি রিসেন্টলি এক্সট্র্যাকশন মুভি করেছেন। তার অভিনয়টা অল্প পরিসরে হলেও মনে গভীর দাগ কেটেছে। উপরের কমেন্টে যার নাম ভুলে গিয়েছিলাম, তার নাম ওসমান। এখন মনে হচ্ছে, ওসমানের অভিনয়ই সেরাদের দলে ছিল। দুর্দান্ত।
এই কাহিনি এখন আমার ছোটোবেলায় দেখা পীর ফকিরদের ওরসের কথা মনে করিয়ে দিল। অনেক অনেক মিল। সেজন্যই বোধ হয় লিংকটা দিয়েছেন।
ওসমান রাজপ্রাসাদে যার প্রেমে পড়েছিল, পরিচালকের দক্ষতার কথাটা বলছি, কৌশলটা অত্যন্তব ক্লাসিক পর্যায়ের ছিল তার চেহারা না দেখানো।
ছবিতে মনে হয় মাঝে মাঝে কিছু আগ-পিছ হয়ে গেছে এডিটের সময়, বিশেষ করে মাঝপথে ইশতার হারিয়ে যাওয়ার পর দাদার খোঁজার অংশ সিকোয়েন্সিয়ালি নাই এখানে।
ইশতারের অভিনয় অত্যন্ত ন্যাচারাল ছিল।
৩৮| ২২ শে জুলাই, ২০২০ ভোর ৬:০০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
সুপারডুপার বলেছেন:
অন্ধ দরবেশ বাবা আজিজ তাঁর নাতনি ইশতারকে নিয়ে পীরফকিরের সমাবেশের দিকে যাত্রার উপর মুভি : ' Bab'Aziz: The prince who contemplated his soul' দেখতে পারেন। আশা করি আপনার ভালো লাগবে। নিচে ইউটিউব লিংকে ইংরেজি সাবটাইটেলে দেখতে পারবেন। ভালো থাকবেন :-
মনে হচ্ছে ফরাসী মুভি। আমি সময় পেলে অবশ্যই দেখবো্
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সময় পাওয়া খুবই কঠিন কাজ।
২২ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:৩৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আরবী-ফারসী ভাষার মুভি। ইরান-তিউনিশিয়ায় চিত্রায়িত। দেখা শুরু করেছি।
৩৯| ২২ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১৪
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: একবারে পড়তে পারিনি তিনবারে পড়েছি। অসাধারণ বর্ণনাশৈলী খুব ভালো লেগেছে ।
২২ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:৪৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এত ধৈর্য নিয়ে তিন বারে পড়ে শেষ করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দেশ প্রেমিক বাঙালি। খুব খুশি হলাম।
৪০| ২২ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৯
মিরোরডডল বলেছেন:
ধুলো
২২ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হোয়ার হ্যাড ইউ বিইন সো লং?
এই কয়দিন কই আছিলেন?
৪১| ২২ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৯
মিরোরডডল বলেছেন:
আই থিংক আই’ম টকিং টু সামওয়ান হিয়ার
ইউ দেয়ার ?
২২ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: প্লিজ ওয়েট। ওয়েলকাম ব্যাক।
৪২| ২২ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০১
মিরোরডডল বলেছেন:
থ্যাংকস ।
মান-অভিমান-রাগ করতে হয় পরিবারের মানুষের সাথে, বা খুব আপনজনদের সাথে, যারা এগুলোর মূল্য বুঝবে।
আই নো ইটস ভার্চুয়াল অনলি, তারপরও এখানে কি ধুলো ডুলুর বন্ধু ছিলো না ?
আমার সামনে যদি কেউ ধুলোকে নিয়ে এরকম কথা বলতো আমি তার ফেসে পাঞ্চ করতাম ।
ব্লগের সাথে অভিমান করে দূরে থাকা বোকামি। কেউ মনে রাখবে না।
ধুলোও মনে রাখবে না ? আমিতো ধুলোর কাছ থেকে এমন তিনটা কিছু নিয়েছি, যার কারনে ধুলো না থাকলেও আমি মনে রাখবো ।
আরেকটা জিনিস মনে রাখতে হবে- মশা মেরে কখনো হাত নোংরা করতে নেই।
আমি হাত দিয়ে মারিনা স্প্রে করি । একেও আমার স্প্রে করেই মেরে ফেলতে ইচ্ছে করেছে ।
২২ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ব্লগে কিছু সিস্টেমেটিক প্রসিডিউর আছে। নাম্বার ওয়ান, মডারেটরের চোখে কোনো কমেন্ট আপত্তিকর বিবেচিত হলে তারা ওটা ডিলিট করে দিবেন। আমি অ্যাডমিনের এ স্টেপের প্রশংসা করেছি উপরে। এতেও কাজ না হলে পার্টিক্যুলার কমেন্টের উপর রিপোর্ট করা যায়, অ্যাডমিনের কাছে রিপোর্ট করা যায়। এতেও কাজ না হলে অনেকে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে পোস্ট লিখেও প্রতিবাদ জানান বা অ্যাডমিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
প্রথমত, কারো আক্রমণের শিকার হলে নিজে থেকে তার প্রতিবাদ করতে হবে, যেটা আপনি করেছেন, এবং প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে হবে, সেটা মনে হয় করেন নি, কারণ আরো কয়েকটা পোস্ট আন-আনসার্ড ছিল। কয়েকজনে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন, যেমন সোহানী আপু, এবং তার উপরের কমেন্টে আমিও কিছু পরামর্শ দিয়েছি। ইয়্যু মে হ্যাভ মার্ক্ড হাউ আই হ্যাড বেন ডিলিং/ট্যাকলিং দিস। জাস্ট ডোন'ট পে এনি হিড টু দিস, নো অ্যাটেনশন।
লরুজনের কমেন্টগুলো তো ছিল পারসোনাল অ্যাটাক, কিন্তু একই পোস্টে নবীদের নিয়ে অত্যন্ত আপত্তিকর একটা কমেন্ট আছে। সবার আগে তো ঐ কমেন্টের উপর রিপোর্ট করা উচিত ছিল। শুধু ভিজুয়ালাইজ করুন, অমন একটা কমেন্ট যদি কোনো সংবাদপত্রে ছাপা হতো, তা হলে সারাদেশে তার প্রতিক্রিয়া কত ভয়াবহ হতো। আমার আক্ষেপ হচ্ছে, তার উপর এখনো কোনো অ্যাকশন হয় নি।
৪৩| ২২ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৭
মিরোরডডল বলেছেন:
আমিতো এই দুদিন আসিনি ধুলো । এর মাঝে যে কমেন্ট এগুলো আজ রিপ্লাই করছি । আমার লাস্ট মেসেজে আমি সেই রাতের কথা বলেছি । যেটা আমাকে আপসেট করেছে । আমি সেদিনই ইমেইল করেছি এডমিনকে স্ক্রিনশট আর লিংক দিয়ে এন্ড স্যাডলি ইটস টু ডেইজ বাট নো রেসপন্স । এটার জন্যই ওয়েট করেছিলাম । শকিং !
বাই দা ওয়ে এটা কি ধুলোর রিপ্লাই আমার লাস্ট কমেন্ট এর ?
২২ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:১৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অল্পদিনেই ব্লগে নিজের একটা পজিটিভ এবং ইনফ্লুয়েনশিয়াল ইমেজ তৈরি করেছেন আপনি। আপনাকে জাস্ট মনে করিয়ে দিই, আমার পোস্টে মনে হয় ৩ কি ৪দিন কমেন্ট করেছিলেন, তাতেই আপনাকে আমার একটা গানের পোস্ট উৎসর্গ করেছিলাম। কমেন্টে আপনার আন্তরিকতার ছোঁয়া থাকে, গভীর এবং হৃদয়গ্রাহী।
আপনার ব্যাপারে সাড়ে চুয়াত্তরের একটা পোস্টে আলোচনা হচ্ছিল। আপনার অনুপস্থিতি ব্লগারগণ ফিল করতেন, আমি নিশ্চিত। আমিও ফিল করছিলাম বলেই উপরের কমেন্টে এগুলো উল্লেখ করেছি এবং আপনার একটা পোস্টে গিয়েও আমার মতামত জানিয়ে এসেছি। অতএব, আপনার কথা কেউ ভাববে না, বা স্মরণ করবে না, সেটা ভুল। আমার পক্ষ থেকেও আন্তরিকতার চূড়ান্তটাই দেখানো হতো/হবে।
ম্যান-পাওয়ার কন্সট্রেইন্ট-এর কারণে হয়ত অ্যাডমিনের পক্ষে কুইক অ্যাকশন নেয়া সম্ভব হয় না। এমনিতেই সার্ভারে কাজ হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। আশা করি অল্প সময়ে সুরাহা হবে।
নো মোর আপসেট। নো ডিপ্রেশন। চিয়ার্স।
৪৪| ২২ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৪৩
আহমেদ জী এস বলেছেন: সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই ,
পড়েছিলুম আগেই , মন্তব্য করছি এখন।
অলৌকিক বা পীর -ফকিরদের কেরামতিতে আমার সংশয় আছে তাই এই লেখার বিষয়বস্তুর উপরে মন্তব্য করছিনে।
মন্তব্য করছি এটা বলতে যে, ইদানীং আপনার লেখাগুলোও অলৌকিক হয়ে উঠছে, কি গল্পে - কি লেখার ষ্টাইলে !
২২ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
মন্তব্য করছি এটা বলতে যে, ইদানীং আপনার লেখাগুলোও অলৌকিক হয়ে উঠছে, কি গল্পে - কি লেখার ষ্টাইলে !
:
কিংবা
হাহাহাহাহাহাআ
হাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহহা
হাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহা
হাহাহাহাহাহাহহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহা
হাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহা
হাহাহাহাহাহাহহাহাহাহাহাহাহাহহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহা
হাহাহাহাহাহাহাহাহাহহাহাহাহাহাহাহাহহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহা
হাহাহাহাহাহাহহাহাহাহাহহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহা
অনেক ধন্যবাদ এ কমেন্টের জন্য প্রিয় আহমেদ জী এস ভাই। শুভ কামনা রইল।
৪৫| ২২ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫৬
মিরোরডডল বলেছেন:
ওয়াও! হোয়াট এ সুইট কমেন্ট ! দিস ইজ মাই ধুলো । থ্যাংকস । উই আর ফ্রেন্ডস এগেইন
২২ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:০৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আজকে গ্যাজেল আর ডিয়ার নিয়া খুব কনফিউশনে আছি। এ দুটো তো র্যাবিট বেবি অ্যান্ড ফউন মনে হচ্ছে। লুকিং নাইস
৪৬| ২২ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:১৯
মিরোরডডল বলেছেন:
গ্যাজেল আর ডিয়ার একই প্রজাতির হলেও শিংগুলো ডিফারেন্ট হয় । আর এই ছবিতে ফউন না, ওটা র্যাবিট আর ডিয়ার
২২ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:২৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
৪৭| ২২ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৩৬
মিরোরডডল বলেছেন:
এটাতো বন্ধু না । মা শিশু । হা হা হা ......
আমারটা ছিল ভিন্নরকম বন্ধুত্ব
সো লং কোথায় ? মাত্র দুদিন । অফিস খোলা । তাই কাজেই বিজি ছিলাম । আফটার অফিস, ইউজালি যা করি গান মুভি এগুলোতেই সময় চলে যায় ।
২৩ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
৪৮| ২৩ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৬
মিরোরডডল বলেছেন:
অনেক সুইট
২৩ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
৪৯| ২৩ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩১
ডার্ক ম্যান বলেছেন: আমার বান্ধবীর গান শুনুন । চেহারা দেখে বলুন উনি কোন ব্লগারের মতন
চলে যাও
২৩ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: গানটা সুন্দর। ভিউয়ারদের এত ডিসলাইক-এর কারণ জানি না। এটা মানুষের অপক্ব ও চটুল মানসিকতা।
ব্লগ-ডে'র ছবি থেকে অল্প কয়েকজন ব্লগারের চেহারা আমি চিনবো। সেই ছবি থেকে কোনো ব্লগারের সাথে আমি মিল পাই নি।
৫০| ২৩ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৩
ডার্ক ম্যান বলেছেন: সম্ভবত গায়িকা নিজেই মডেল হওয়ায় এত ডিজলাইক
২৩ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কমেন্টে কেউ কেউ এটা লিখেছে। সবাই নিজেকে প্রচার করতে চায়, কেউ একটু সংযত থাকে, কেউ সংযত থাকতে পারে না। অনন্ত জলিল বা মাহফুজুর রহমান এদিকে অগ্রপথিক। তবে, এসব ক্ষেত্রে নেগেটিভ কমেন্ট না করে এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয় মনে করি।
৫১| ২৩ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:০২
মিরোরডডল বলেছেন:
মুভিটা দেখলাম গতকাল Bab'Aziz: The prince who contemplated his soul'
ভীষণ ভালো লেগেছে । ব্যতিক্রমধর্মী একটা মুভি, আগে এরকম দেখিনি ।
আরও ভালো লেগেছে এই গানটা । একদম সুপারডুপার
People of this world are like the three butterflies
In front of a candles flame
The first one went closer and said, I know about love
The second one touched the flame lightly with his wings and said
I know how love’s fire can burn
The third one threw himself into the heart of the flame
And was consumed
He alone knows what true love is
২৩ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:১১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ছবিটা দেখেছেন জেনে ভালো লাগলো। আমি গানগুলো শুনি নি, শুধু পড়েছি। কথাগুলো খুব গভীর হওয়ায় একটু ক্রস করে গেলেই আবার পেছনে যেয়ে পড়েছি।
হ্যাঁ, গানের কথাগুলো অসাধারণ। যে গানের উপর পুরো মুভি দাঁড়িয়ে আছে, সেটা হলো দরবেশের অ্যাটম সংক্রান্ত গানটা, যা মুভিতে বার বার গাওয়া হয়েছে।
তো, উপরে আমার কিছু প্রশ্ন আছে, ইউটিউবেও কিছু প্রশ্ন রেখেছি। উত্তরগুলো আপনি পেয়ে থাকলে এখানে দিতে পারেন।
৫২| ২৩ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:২০
মিরোরডডল বলেছেন:
সুডু কান ধরে উঠবস করবে যে আর কখনও ধুলোকে মুভি দিবেনা কারণ ধুলো যেই বড় একটা প্রশ্নের লিস্ট করেছে আমি দেখেছি আর হাসছি । সুডু এই প্রশ্নপত্র দেখেই মনে হয় তিউনিশিয়া সেই মরুভুমিতে চলে গেছে
২৪ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সুডু'র উত্তরগুলো জানা আছে অবশ্যই। নইলে এত রিলেভেন্ট একটা মুভি হঠাৎ করে দেয়া সম্ভব হতো না।
৫৩| ২৪ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২১
মিরোরডডল বলেছেন:
হুম সেটাই । সে নিশ্চয়ই ধুলোকে রিপ্লাই করবে । ধুলো নিজেও অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর পরে বলেছে । আমারও তাই মনে হয় । বাচ্চা মেয়েটা আর বাবা আজিজ খুব সুন্দর অভিনয় করেছে । নুরকে খুবই ভালো লেগেছে আর সেই মেয়েটাকে । মসজিদে গান হচ্ছিলো । ঘোমটা তুলে মেয়েটাকে যখন দেখে সি অয়াজ সো বিউটিফুল !!!
২৪ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: প্রিন্সের গলায় একটা মেটালিক হার বা মালা ছিল বড়ো চ্যাপ্টা পাতের তৈরি। সেই মালাটা দেখা যায় বৃদ্ধ দাদুর গলায়। প্রিন্স যখন ধ্যান থেকে জাগ্রত হয়, তখন তার বাহ্যিক চোখ অন্ধ হয়ে গেছে। বৃদ্ধ দাদাও অন্ধ। কনক্লুশন - প্রিন্সই হলো দাদা। প্রশ্ন- প্রিন্স বিয়া করলো কবে, ছেলেমেয়ে, নাতনি কোথা থেকে এলো। পালক/অ্যাডাপ্টেড? মৃত্যুর আগে সেই মালাটি নাতনিকে দিয়ে যান বৃদ্ধ।
আরেকটা সুন্দর দৃশ্য ছিল। লেখকের চিঠিটা নিয়ে আসে ওসমান। যে বিবাহিতা নারীকে চিঠিটা পড়ে শোনাচ্ছিল, ঐ সিনটাও দারুণ ছিল। 'মাই হাজব্যান্ড' বলার সাথে সাথেই ওসমান দৌড়ে পালাতে গিয়ে এক কুয়োর মধ্যে ঝাঁপ দেয়, মুহূর্তেই সে নিজেকে এক প্রাসাদে আবিষ্কার করে।
ওসমানের গল্পটা দারুণ লেগেছে। দৃশ্যায়নও হয়েছে দারুণ।
৫৪| ২৪ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:০২
মিরোরডডল বলেছেন:
বাবা আজিজ প্রিন্স, এ বিষয়ে দ্বিমত নেই । গ্র্যান্ডডটারকে বলা হয়েছে মিরাকল । এ বিষয়ে আমারও কনফিউশন আছে । এ কথার উল্লেখ ছিল সে বয়সে ছোট কিন্তু অন্তরে ম্যাচিউর । ইস্তারের জ্বরের সময় জায়েদ যখন নুরের গল্প শোনায়, সে চোখ খুলে প্রথমেই প্রশ্ন করে আর ইউ ইন লাভ, ওটা খুব ভালো লেগেছে ।
ওসমানের পুরো উপস্থিতিটুকুই ফান ছিল । আমার ভালো লেগেছে ওই পাগলকে যে শুধু সুইপ করে । প্রতিটা এক্সপ্রেশন মজা লেগেছে ।
তবে একটা বিষয় বলতেই হয়, যে লাইফ দেখানো হয়েছে, ফিকশন জীবন থেকেই নেয়া হয় , অলৌকিক বিষয়টা ছাড়া মানুষের জীবন ওখানে নিশ্চয় এরকম ছিল বা এখনও কোথাও থাকতেও পারে মুরুভুমিতে । কি যে কষ্ট ! খুবই মায়াও লেগেছে আমার ওরা যখন খায় ওটা দেখে । ইস ! মানুষের খাবার কষ্ট দেখতে আমার ভালো লাগেনা ।
২৪ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:০৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ছবির ফেইসগুলো আমাদের পরিচিত মুখ না হওয়ায় কনফিউশন হয়েছে বেশি। যে স্যুইপ করছিল, তার চুল লাল। তাকে ওসমানের গল্পে পাওয়া যায়, আবার দাদুর সাথে মসজিদেও পাওয়া যায়। ছবির শুরুতেও তাকে পাওয়া যায়। সেই খুন করে হাসানের ভাই হোসেনকে। আবার হাসানকে উদ্ধার করে। মূল দরবেশ, প্রিন্সের পাশে যে ছিল তার চেহারাটা বোঝা যায় না। তবে, আগে তাকেই বলেছিলাম অলথ্রু ছবিতে দেখা গেছে বলে, এখন মনে হচ্ছে সেই দরবেশ ভিন্ন একজন, যাকে আর মুভিতে দেখা যায় না।
হরিণ আর লাল-চুল দরবেশের আগাগোড়া বিভিন্ন টাইম লাইনে উপস্থিতি কনফিউজ করেছে। কয়েকদিন আগে জাদু বাস্তবতা নিয়া একটা রম্য পোস্ট ফেইসবুকে শেয়ার করেছি। ওটা ব্লগেও আসবে এর পর। এ ছবিটা এখন আগাগোড়া পরাবাস্তব ছবি মনে হচ্ছে।
৫৫| ২৪ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:১৯
মিরোরডডল বলেছেন:
হুম ধুলো সব ঠিকই বলেছে । একমত ।
ধুলোকে একটা গান দিয়েছিলাম, শুনেছে ?
আর একটা কথা, ধুলো কি জানে, এতকিছুর পরেও ধুলোর সেই ভাই যাকে ধুলো নাইসলি কমেন্ট রিপ্লাই করে, ইনবক্স করে কথা বলে, সে এখনও আযেবাজে কথা ছড়িয়ে যাচ্ছে । আমি নাকি সেইসব ভাল্গার ছবি দিয়েছি তার পেইজে, অনেকে তাকে বিশ্বাস করবে যেহেতু সে পুরনো এখানে, এটা কি ভালো করছে ? আমি অবাক কেনো মানুষ এতো মিথ্যা কথা বলে !!!
২৪ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:২২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: গানটা শুনেছি। ওটার সাথে আরো কয়েকটা শোনা হয়েছে।
সবকিছু সার্ভারে রেকর্ডেড থাকে, কে কী করলো। কে কার পোস্টে কী ধরনের ছবি দিল, এটা মডারেটররা ট্রেস করে বের করতে পারেন। আপনি ডিফল্টার না হয়ে থাকলে নীরব থাকুন। কাউকে আলোচনায় আনা মানে তাকে হাইলাট করা এবং প্রোমোট করা। আমি এই জিনিসটা খুব ভালো করে বুঝি। অনেকে উদ্দেশ্যমূলকভাবেই এটা চায়। কেউ আপনার ব্যাপারে সরাসরি কিছু বললে রিপোর্ট করতে থাকুন। রিপোর্টে কোনো অ্যাকশন না হলেও রিপোর্ট করুন। প্রতিটা রিপোর্ট আপনার রেকর্ড, আপনি যে উত্যক্ত হয়ে রিপোর্ট করেছেন তার প্রমাণ। এমনকি, অফলাইন লিগ্যাল অ্যাকশনের জন্যও এগুলো দরকার আছে। তবে রিপোর্ট ভ্যালিড এবং স্পেসিফিক হতে হবে।
আমি শুধু ভাবছি, কোনো এক ব্লগ গেদারিঙে এদের সাথে মুখোমুখি হলে এরা কি লজ্জা পাবেন না?
৫৬| ২৪ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৪০
মিরোরডডল বলেছেন:
এদের সাথে কে ব্লগ গ্যাদারিং করবে ?
২৪ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৪৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
৫৭| ২৪ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১১:১৮
মিরোরডডল বলেছেন:
ধুলো কি পরিচয় করিয়ে দেবে কোনটা কে? সবাইকেতো চিনি না ।
পিঙ্ক শাড়ি সাদা স্কার্ফ, এটা কে?
মনিপুকে চিনি । অনেকই কিউট !
ধুলো কি কখনও গেছে ? আই ডোন্ট থিংক সো ।
২৬ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৫১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমিও সবাইকে চিনি না। ঐ সময়ের কিছু পোস্টের লিংক দিব, যেখানে কারো কারো পরিচয় দেয়া আছে।
৫৮| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১২:০১
এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: আপনার এ পর্যন্ত কতটি গ্রন্থ ছাপা হলো? গ্রন্থগুলোর সারসংক্ষেপ, প্রচ্ছদ এবং সংশ্লিষ্ট মজার স্মৃতি বা ঘটনা, যদি থাকে, নিয়ে আলাদা একটি পোস্ট চাই আপনার কাছে।
২৬ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৫৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: প্রিয় ম্যাভেরিক ভাই মামুন, আমার বইয়ের সংখ্যা ৯টা। কম্পাইল করেছি ৪/৫টা। সবুজ অঙ্গন নামে একটা সাহিত্য ম্যাগাজিন সম্পাদনা করতাম।
আমি জানি, আপনি বই প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। করোনা পরিস্থিতির উপর আগামী বইমেলার ভবিষ্যত নির্ভর করছে। শুভ কামনা থাকলো আপনার বইয়ের জন। খুব মূল্যবান (কনটেন্টের দিক থেকে) বই হবে, বলাই বাহুল্য।
৫৯| ২৬ শে জুলাই, ২০২০ ভোর ৬:৪১
শের শায়রী বলেছেন: কুটি মিয়া যেন অন্ধ ভক্তির মাঝে এক প্রতিবাদ স্বরূপ, এটা আমার বেশ লেগেছে সোনা ভাই। ব্যাসিকালি পীর ফকিরদের প্রতি অন্ধ ভক্তি অনেক দেখেছি কারন আমার বেড়ে ওঠে এক রকম গ্রামীন পরিবেশে। বাইশার ব্যাপারটা একদম নতুন আমার কাছে, আমাদের এলাকায় এর প্রচলন দেখি নি। আজ রাতে আর ঘুম হল না, তাই সময় নিয়ে পড়লাম।
আপনার বর্ননাশৈলী সব সময়ই মুগ্ধকর। আপানার উদ্দেশ্যে একটা পোষ্ট লেখব গান নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি মুলতঃ রাহ রাগিনীর ওপর। ভালো থাকুন সোনাবীজ ভাই।
২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১২:০১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ছোটোবেলাকার ছোটো চোখে যা দেখতাম তাই রহস্যময় মনে হতো। বর্ণিত ধামাইল ছিল এক অদ্ভুত রহস্যময় ও চিত্তাকর্ষক রাজ্য, যা আমাকে খুব টানতো। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এখন যেমন অনেক রহস্যের ভেদ বুঝতে পারছি, তেমনি অনেক রহস্য আবার এখনো অনুন্মোচিত রয়ে গেছে।
বাইশার মতো 'ভার' নামক আরেকটা বিষয় ছিল, যা আমার কাছে এখনো খুব রহস্যময় মনে হয়। এর সাথে এমন কিছু সত্য আছে, যা আমাকে খুব গভীর ভাবে ভাবতে বাধ্য করে।
আপনার গানের পোস্টের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। আমি গানের পাগল হলেও গানের ব্যাকরণ সম্পর্কে আমার ধারণা জিরো। আপনার পোস্ট পড়ে হয়ত অনেক কিছু জানতে পারবো।
সুন্দর কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ প্রিয় শের শায়রী ভাই।
৬০| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:২৩
মিরোরডডল বলেছেন:
নাহ ধুলো, কষ্ট করে পোষ্টের লিংক দিতে হবে না ।
আমি ছবি আপুর কয়েকটা পোষ্ট দেখেছি, ওখানে কিছুটা ডিটেইলস পেয়েছি ।
থ্যাংকস ধুলো ।
৩১ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:০২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: যাক, কিছু নাম জানতে পেরেছেন জেনে আত্মা শান্তি পেল
৬১| ৩১ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:০৩
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: পড়া শুরু করে কি মনে করে কমেন্টে এলাম, কমেন্ট পড়ে পড়ে এগিয়ে এসে আপনার দেয়া গান 'লাল কুর্তাওয়ালা' শুনে বিদায় নিলাম! আবার আসার জন্য পোষ্ট পর্যবেক্ষনে রেখে গেলাম। গানে দেখলাম আমার ছবিও আছে, হোয়াট এ লাক! গান্টা নামিয়ে নিয়ে ভাবছি, আমার ফেবু ওয়ালে শেয়ার দিবো!
৩১ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:২১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হাহাহাহাহাহা। আপনি যে গানটা দেখতে পেরেছেন শেষ পর্যন, এবং তাতে যে আপনার ছবি আছে, এটাতে আমি খুব আনন্দিত। আমার একটা ব্যাড লাক হলো, আমি ঐ ব্লগডে মিলনমেলায় ছিলাম না তাই আমার কোনো ছবিও নাই। হোয়াট এ ব্যাড লাক
অনেক ধন্যব্দা সাহাদাত ভাই। ইদ মোবারক।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৩৭
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
সোনাবীজ ভাই,
গল্পটি পড়ে মনে হয়েছে আপনি সামনা সামনি দর্শক ছিলেন নয়তো এতো পরিস্কার করে কিভাবে লিখলেন! আমার কাছে মনে হয়েছে আমি নিজেও সামনা সামনি দেখছি এলইডি’তে।
আপাতত পাগল/পীরদের নিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না, তবে কথা সত্য এমন পাগল ছিলো, আমি নিজেও দেখেছি বেশ কিছু। রহস্য বলে মেষ করা যাবে না। হয়তোবা আপনার মতো লিখবো কোনোদিন। - হয়তোবা।
ধন্যবাদ, পড়ার মতো একখানা গল্প বটে।
ভিন্ন বিষয়: ব্লগার নূর মোহাম্মাদর নূরু ভাই এর পোস্ট নায়ক বুলবুল আহমেদ। সেখানে আমার একটি মন্তব্য আছে পড়ে দেখতে পারেন।