নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

তিনটা মৃত্যু

২৩ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:৫৭


অসুস্থ স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে শরাফুদ্দিন পাগাম সাহেব খুব বিমর্ষ হয়ে যান। ধীরে ধীরে স্ত্রীর শরীরটা ছোটো ও কঙ্কালসার হয়ে যাচ্ছে। জীবনের অর্ধেকটা সময় ওর সামনে পড়ে আছে। কত বাসনা এখনো অপূর্ণ রয়ে গেছে তার। ওগুলো সব পূরণ হওয়ার পথে, আর মাত্র কয়েকটা বছর পার হলেই হতো। কিন্তু এর মধ্যেই স্ত্রীর শরীরে দুরারোগ্য ব্যাধি বাসা বেঁধেছে। যে-কোনো সময় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করবেন, শরাফুদ্দিন পাগাম সাহেব তা জানেন, এবং মানসিক ভাবে তা নিয়ে নিজের প্রস্তুতিও আছে তার। কিন্তু তিনি চিন্তিত নাবালেগ মেয়েদুটোকে নিয়ে। এ বয়সে ওরা মা-হারা হয়ে যাবে। মায়ের আদরের মতো পৃথিবীতে আর কিছু নেই। শরাফুদ্দিন পাগাম সাহেব ছোটোবেলায় নিজের মাকে হারিয়ে যে বেদনা পেয়েছিলেন, তা থেকে মেয়েদের বেদনা অনুভব করতে করতে তার দু চোখ ভিজে যায়।

স্ত্রী-বিয়োগের পর মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই আর বিয়ে করবেন না বলে স্থির ভেবে রেখেছেন শরাফুদ্দিন পাগাম সাহেব। তাকে একই সঙ্গে বাবা ও মায়ের ভূমিকা পালন করতে হবে। এ ছোট্ট সংসারটাকে স্ত্রী যেভাবে সামলে গুছিয়ে রাখতেন, মেয়েদের আদর করা ছাড়া সংসারের আর কোনো কিছুতেই কখনো তিনি মনোযোগ দেন নি। প্রয়োজনে একহাঁড়ি পানি গরম করতে হলেও তা পারবেন কিনা সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন। এরকম অনভ্যস্ততার মধ্য দিয়ে নিজের চাকরি বাঁচিয়ে রেখে মেয়েদের নিয়ে কীভাবে সংসার টানবেন, তা ভাবতে গেলেও শরাফুদ্দিন পাগাম সাহেবের দম আটকে আসে। নিজের শরীরটাও যে খুব নীরোগ তাও না। কিন্তু, স্ত্রীর অসুখের কাছে নিজের চিন্তা তিনি আমলেই নেন না কখনো।

একদিন সকালে প্রতিদিনকার মতোই শরাফুদ্দিন পাগাম সাহেব হাঁটতে বেরোলেন। জগিং করতে করতে হঠাৎ পাঁজরের নীচে একটু ব্যথা অনুভব করলেন, তারপর শ্বাসকষ্ট। এরপর নেতিয়ে রাস্তায় পড়ে গেলেন। শরাফুদ্দিন পাগাম সাহেব অসুস্থ স্ত্রী ও মেয়েদুটোর কথা ভাববার জন্য আর জেগে উঠলেন না।



নুরুলুদ্দিন আকন পই পই করে ছোটো ভাইদের বলে রেখেছিল, বাবার অসুখবিসুখে কোনোরূপ অবহেলা না করে যেন যথাসত্বর থানা সদরের হেল্‌থ ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। কেউ কথা শোনে না। মা-বাবা বৃদ্ধ হলে যেন সবার জন্য একটা ‘আপদ’ হয়ে যান। দিনভর মোবাইল টিপাটিপি আর ল্যাপটপ নিয়েই ছোটো ভাইগুলোর ব্যস্ততা। বাবাটা যেন এখন একমাত্র নুরুলুদ্দিন আকনের একার সম্পত্তি, সবখানি খোঁজখবর, দেখভাল শুধু ওকেই করতে হবে। ঢাকা শহরের এক কোণে সে কম দামি একটা মেসে থাকে; বাড়তি খরচ করার অভ্যাস তার কোনোদিনই ছিল না, এখনো নাই; বরঞ্চ বাবার চিকিৎসার জন্য যাতে দুটো পয়সা বাঁচাতে পারে, সে ব্যাপারে তার চেষ্টার অন্ত নাই।

শুরুতে বাবার জ্বর ছিল। পরে সর্দি-কাশি। এরপর শ্বাসকষ্ট যোগ হয়। পাঁচদিনের মাথায় নুরুলুদ্দিন আকনের বকাবকি খেয়ে ছোটো ভাইয়েরা থানা সদরের ক্লিনিকে নিয়ে যায় বাবাকে। ক্লিনিকের ডাক্তার রোগীর অবস্থা ভয়াবহ বলে ঢাকায় রেফার করেন। নুরুলুদ্দিন আকনের মাথা পাগল হয়ে যায়। সে দিশেহারা হয়ে পড়ে। ভাইয়েদেরকে তাড়াতাড়ি অ্যাম্বুলেন্সে করে বাবাকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করতে বলে। ঢাকা আসতেও কমপক্ষে তিন-চার ঘণ্টা সময় লাগবে। এর মধ্যে সে হাসপাতালও ঠিক করে ফেলে। শীঘ্র সবকিছু গুছিয়ে একটা ছোটো ব্যাগ সাথে নিয়ে দ্রুততার সাথে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয় নুরুলুদ্দিন আকন।

রাস্তার ওপারে একটা সাদা ক্যাব দাঁড়ানো ছিল। রাস্তা পার হবার জন্যে সে মাত্র কয়েক কদম পা বাড়িয়েছিল, অমনি বাসটা দড়াম করে এক ধাক্কায় সামনে ফেলে দেয় তাকে, তারপর বুকের উপর একটা চাকা উঠিয়ে দিয়ে ফটাস শব্দে শরীরটা ফাটিয়ে দিয়ে ঘড়ঘড় করে চলে যায় বাসটা।

আমাদের মৃত্যুগুলো এমন আকস্মিক ও অনিশ্চিত।



ছোটো দুটি ছেলেমেয়ে আকিশা ও রোশান আর স্ত্রী শামিলাকে নিয়ে একটা নিরিবিলি চারতলা দালানের উপরের তলায় আলালুদ্দিন মাখনের ছিমছাম সংসার। সুখে-দুঃখে-শান্তিতে বেশ ভালোই কেটে যাচ্ছিল তাদের অনাবিল জীবনটা। কিন্তু মাসখানেক হলো মেয়েটা অসুখে পড়েছে।
অসুখে পড়ার পর থেকে আকিশা সারাক্ষণই মনমরা অবস্থায় থাকে এবং বেশিরভাগ সময়েই তাকে বিছানায় কাত হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।
ছোট্ট আকিশার অসুখটা কিছুতেই সারছে না। ডাক্তার-কবিরাজ বেঁটে খাওয়ানো বাকি আছে, কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি নেই। আগে কতই না চঞ্চল ছিল মেয়েটা। ওর দু বছরের বড়ো রোশানের মনটা সবচাইতে বেশি খারাপ। দু ভাইবোন দিনভর একসাথে খেলা করতো, টিভিতে কার্টুন দেখতো। শামিলা ওদের দুজনকে একসাথে গোসল করাতো, খাওয়াতোও একসাথে। কার্টুন দেখতে দেখতে আকিশা খিল খিল করে হাসতো, এ হাসি দেখে রোশানের খুব মজা লাগতো। আকিশা ভাঙা ভাঙা শব্দে রোশানকে বলতো, ‘আমি জেলি, তুমি তম’ (আমি জেরি, তুমি টম)। জেরি যখন টমকে নানা ছলচাতুরীতে ফাঁদে ফেলতো, তখন হাসতে হাসতে আকিশার পেটে খিল ধরে যেত। আনন্দের আতিশয্যে ভাইয়ের বাহু কিংবা বুকে কামড় বসিয়ে দিত। রোশান হাত দিয়ে লালা মুছতে মুছতে বলতো, ‘এই, কামড় দিও না। আমি ব্যথা পাই।’ আকিশা হা-হা করে হেসে আরো একটা কামড় দিয়ে রোশানের শরীরে গড়িয়ে পড়তো।

ছোটো দুই ভাইবোনের এরকম আলাভোলা খেলা ও খুনসুটি দেখতে আলালুদ্দিন মাখন ও শামিলার খুব ভালো লাগতো। এ নিয়ে দুজন আলাপও করতো – ‘বাচ্চারা হলো আল্লাহর তরফ থেকে সবচাইতে সেরা পুরস্কার। দেখো, ওদের খেলাধুলা দেখতে দেখতেই আমাদের আনন্দে মন ভরে থাকে।’
মাঝে মাঝে দু ভাইবোন ছোটোখাটো জিনিস নিয়ে কাড়াকাড়ি করতো। এগুলো দেখতে খুব মধুর লাগতো। কখনো সখনো আলালুদ্দিন মাখন মনে মনে খুব করে চাইত, ওরা দু ভাইবোন একটু ঝগড়া করুক। কিন্তু ওদের ঝগড় খুব কোমল হতো। আকিশার কোনো খেলনা যদি জোর করে রোশান নিয়ে নিত, আকিশা বড়োজোর গলা সামান্য বাড়িয়ে মৃদু রাগের স্বরে বলতে পারতো, ‘দাও! দাও! আমার খেলনা দাও!’ এরপর রোশান খেলনা ফেরত না দিলে আকিশা কেঁদে কেঁদে বাবা বা মায়ের দিকে তাকিয়ে বলতো, ‘দেয় না! দেয় না!’

আজকাল এসবের কিছুই হয় না। এজন্য রোশানকেও খুব মন খারাপ করে থাকতে দেখা যায়। টিভিতে কার্টুন দেখতে তার তেমন মন নেই, খেলনা নিয়েও কদাচিৎ বসতে দেখা যায় তাকে। নার্সারির পড়ারও তেমন চাপ নেই। আলালুদ্দিন মাখন বা শামিলা দুজনেই ওকে পড়ায়। কিন্তু, রোশান পড়তে চায় না। হঠাৎ হঠাৎ কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে ওঠে, ‘ভালো লাগে না আমার।’ স্বামী-স্ত্রী ঠিকই বুঝতে পারে, ছোটোবোনের অচঞ্চলতার কারণেই সে এতটা মনমরা হয়ে থাকে। আলালুদ্দিন মাখন সময় পেলে রোশানকে নিয়ে একটু বাইরে ঘুরতে যায়। মাঝে মাঝে ছাদে যায়, যেখানে অন্য বাচ্চারাও আসে। সেখানে কিছুটা উৎফুল্ল সময় কাটালেও বাসায় ফিরে আসার পর আগের মতোই বিমর্ষ হয়ে পড়ে রোশান।

ছেলেমেয়েদের এরকম অসুখবিসুখে কোনো মা-বাবার মন ভালো থাকে না।

এর মধ্যে একদিন শামিলার নানা ও নানিজান ওদের বাসায় বেড়াতে এলেন। পুরো দালানের চারদিকের পরিবেশ এবং আকিশার চেহারা দেখে তিনি বললেন, ‘তোমরা বাসাটা বদলাইয়া ফালাও। অন্য খোলামেলা জায়গায় যাও। এ জায়গাটা ভালো না।’
আলালুদ্দিন মাখন আর শামিলা দুজনই খুব চিন্তিত হলো নানাজানের কথায়। নানাজান খুব কামেল মানুষ। তিনি যা বলেন খুব ভেবেচিন্তে বলেন, তাঁর কথার মূল্য অনেক।
নানাজানকে অনেক অনুনয় বিনয়ের পর তিনি জানালেন, এ দালানটা জিনের নজরে পড়েছে। এ কথা শুনে ওরা দুজনেই চমকে ওঠে। হায়, আকিশার উপর তাহলে জিনের আছর পড়ে নি তো! নানাজান কিছুক্ষণ গম্ভীরভাবে চুপচাপ থাকার পর ধীরে ধীরে মাথা উপর-নীচ দুলিয়ে বললেন, ‘খুব খারাপ জিন এটা। তোমরা জলদি বাসা বদলাইয়া ফালাও।’

দালানটা খুব পুরাতন না, বরঞ্চ আশপাশের দালানগুলোর তুলনায় এটাকে বেশ নতুনই বলা চলে। তবে, এ দালানটা ঘেঁষে পেছনে একটা উঁচু ঢিভি এবং তার উপর বিরাট ঝুঁপড়িওয়ালা একটা কড়ই গাছ দালানের ছাদ ছাড়িয়েও অনেক উপরে উঠে গেছে। কিছু দূরে রাস্তার উপর একটা বাঁশঝাড় অনেক জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে আছে। আম-জাম-দেবদারু গাছও জায়গা অন্ধকার করে কোথাও কোথাও জড়াজড়ি করে দাঁড়িয়ে আছে। জায়গাটা মোটের উপর পরিচ্ছন্ন হলেও সূর্য ডোবার বেশ আগে থেকেই আলো-আঁধারীতে চারদিকটা কেমন ভুতুড়ে হয়ে ওঠে। এতদিন আলালুদ্দিন মাখন বা শামিলা এ ব্যাপারটা তেমন গুরুত্ব দেয় নি বা খেয়াল করে নি, কিন্তু নানাজানের কথার পর থেকে পুরো এলাকাটাই এখন ওদের কাছে ভৌতিক মনে হচ্ছে। সন্ধ্যা হওয়ার আগেই দরজা-জানালা বন্ধ করে পর্দা টেনে দেয়। পর্দার ফাঁক দিয়ে হঠাৎ কড়ই গাছের দিকে চোখ গেলে গা শিউরে ওঠে।

স্বামী-স্ত্রী দুজনে খুব দ্রুত বাসা বদল করে অন্যদিকে চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে।

একদিন সারাদিন আকাশ জুড়ে মেঘ ছিল, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলো। বিকেলের দিকে কিছুক্ষণ দমকা বাতাসও বয়েছিল। প্রতিদিনকার চাইতে একটু আগেই ছাদের দরজাটা আটকে দিয়ে এলো আলালুদ্দিন মাখন।
আজ আকিশার মর্জিটা একটু বেশিই মনে হচ্ছে। মেঘ-তুফানের সাথে জিনদের মেজাজ-মর্জিও ওঠানামা করে কিনা তা ওরা জানে না। একটু পর পর আকিশা কান্না করে উঠছে। পেটে ব্যথা কিনা, তা ছোট্ট আকিশা হয়ত বুঝতে পারে না। পেট ব্যথা হলেও বাচ্চারা এরকম ঘন ঘন কান্নাকাটি করে।
অনেক চেষ্টা-তদবিরের পর আকিশা ঘুমালো। আলালুদ্দিন মাখন ও শামিলা এতক্ষণ পর একটু স্বস্তি পেলো। রাতও গভীর হয়েছে। বাইরে বৃষ্টি ছিল এতক্ষণ, এখন নেই মনে হচ্ছে। তবে মাঝে মাঝে বাতাসের ঝাপটা শোনা যায়।
ওদের সবার চোখ মুদে এসেছে। এমন সময় ছাদের দরজায় কীসের শব্দে শামিলার হালকা ঘুম ভেঙে যায়। সে আকিশাকে বুকে টেনে নিয়ে কান খাড়া করে শোনে, শব্দটা আসলেই ছাদের দরজা থেকে আসছে কিনা। একটু পর আবার আওয়াজ হলো। থেমে থেমে কে যেন ছোট্ট হাতে ছাদ থেকে দরজায় থাপ্পড় দিচ্ছে। শামিলার শরীর কেঁপে উঠলো। সে ফিসফিস করে আলালুদ্দিন মাখনকে ডাকে।
-‘কী হয়েছে?’
-‘আমার খুব ভয় করছে।’
-‘কী হয়েছে? কীসের ভয়?’
-‘নানাজান ঠিকই বলেছিলেন। বাসাটা ভালো না। ঐ শোনো, ছাদ থেকে কে যেন দরজা থাপড়াচ্ছে। মনে হয় একটা বাচ্চা জিন।’
-‘ধূর! কী বলো? আমি তো কোনো শব্দ শুনতে পাচ্ছি না।’
শামিলা আবারও কান খাড়া করে কিছু একটা শব্দ শোনার চেষ্টা করলে আলালুদ্দিন মাখন বললো, ‘ওসব কিছু না। ঘুমাও। হয়ত ভুল শুনেছ। বা স্বপ্নে কিছু দেখেছ।’
-‘না না। আমি ঠিকই শুনেছি।’ শামিলা জোর দিয়ে বলে।
এবার দুজনেই সেই শব্দ শোনার জন্য অপেক্ষা করতে থাকলো। আলালুদ্দিন মাখন শেষমেষ বললো, ‘কড়ই গাছের ডালটা এসে পড়েছে দরজা বরাবর। বাতাসে ঐ ডাল দরজায় আছড়ে পড়লে থাপ্পড়ের মতোই শোনায়। ঘুমাও। ওসব বাজে চিন্তা মাথায় ঢোকালে ভয় আরো বাড়বে।’
কিন্তু শামিলা স্বামীর কথায় আশ্বস্ত হতে পারলো না। সে বার বার আলালুদ্দিন মাখনকে বাহু দিয়ে ধাক্কাতে লাগলো আর বলতে থাকলো, ‘তুমি ঘুমিয়ো না। জিনটা আবার আসবে, আমি নিশ্চিত। নানাজানের কথা মিথ্যা হতে পারে না।’
আলালুদ্দিন মাখন শামিলাকে জড়িয়ে ধরে বললো, ‘আল্লাহর নাম লও। ইনশা’ল্লাহ কিচ্ছু হবে না।’ ঠিক ঐ মুহূর্তে ছাদের উপর থেকে কড়ই গাছের ডালপালা মটমটিয়ে ভেঙেচুরে ঝপঝপ করে কী যেন নীচে পড়ে গেল – সেই সাথে গাছ থেকে কয়েকটা বিরাটকায় বস্তুর পাখা ঝাপটে আকাশে উড়ে যাওয়ার শব্দ হলো- আর শামিলা বিকট চিৎকারে আকিশাকে সাপটে ধরে আলালুদ্দিন মাখনের শরীর জড়িয়ে ধরলো। এই চিৎকারের শব্দে আকিশা যেমন কেঁদে উঠলো, রোশানও ঘুমের মধ্যে উঠে হতবিহ্ববল অবস্থায় বিছানায় বসে পড়লো।
ঘরে আলো জ্বেলে দিল। শামিলা তখনো থরথর করে কাঁপছে। আলালুদ্দিন মাখন বুঝতে পারছে না হঠাৎ কী হয়ে গেলো। এতক্ষণ শামিলার কথাকে অগ্রাহ্য করলেও নানাজানের কথা স্মরণে আসায় শামিলার কথাকে সে মনে মনে সায় দিল। আল্লাহ-বিল্লাহ করতে করতে, বার বার সুরা, কালিমা পড়ে ছেলেমেয়েদের শরীরে ফুঁক দিতে দিতে তারা রাত পার করলো এবং প্রতিজ্ঞা করলো, আগামী সপ্তাহখানেকের মধ্যেই যেমন করেই হোক তারা এই বাসা ত্যাগ করে অন্য বাসায় উঠবে।

সকালে সূর্য ওঠার পর শামিলার ভয় চলে গেলো। আলালুদ্দিন মাখন স্ত্রীর এই নির্ভীক ভাব দেখে অফিসে যেতে সাহস করলো।

দুপুরের দিকে শামিলার ফোন। ওর কথা জড়িয়ে যাচ্ছে। আলালুদ্দিন মাখন বার বার বলছে, ‘শামিলা, আমি বুঝতে পারছি না তুমি কী বলছো। প্লিজ একটু দম নিয়ে আবার বলো।’
কিছুই বোঝাতে না পেরে শেষে বললো, ‘খুব খারাপ খবর। তুমি জলদি বাসায় চলে আসো।’
‘খুব খারাপ খবর’-এর কথা শুনে আলালুদ্দিন মাখনের বুক দুরু দুরু করে ওঠে। আকিশার কিছু হয় নি তো! সে দ্রুত বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

ঘটনা বুঝবার জন্য আলালুদ্দিন মাখনকে সিঁড়ি বেয়ে নিজের ফ্ল্যাটে যেতে হলো না। বিল্ডিঙের পেছনের দিকে একটা নয়-দশ বছরের মেয়ের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। মেয়েটার শরীর ফেটে গেছে, চারদিকে হাত-পা ছড়ানো, মুখ থেতলে গেছে। সবাই বলাবলি করছে, ছাদের উপর থেকে পড়ে মারা গেছে মেয়েটা।

পুলিশী তদন্তে ঘটনা বেরিয়ে এলো।

মেয়েটা অন্য বিল্ডিঙের একটা ফ্ল্যাটে কাজ করতো। ঘটনার দিন একটা প্লেট ভেঙে ফেলায় বাসার মহিলা ওকে বকাবকি করেন এবং একটা চড়ও দেন। এতে সে ভয় পেয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। সে এ বিল্ডিঙের ছাদে এসে লুকিয়েছিল। তৃতীয় তলার বুয়া বিকেলে ওকে এ ছাদে দেখেছিল। এখানে এসেছে কেন জানতে চাইলে বলেছিল, খেলতে এসেছে। মেয়েটা বাসা থেকে চলে আসার পর থেকেই ওকে খোঁজা হচ্ছিল। বাসার মানুষরা ভেবেছিলেন ও পালিয়ে বাড়ির দিকে রওনা করেছে, যদিও সে একা বাড়িতে যেতে পারবে না, এবং পথে হারিয়ে যাবে বলে তারা জানতেন। তাই সম্ভাব্য সবগুলো রাস্তায় খোঁজা হয়েছিল, পরিচিত কয়েকটা বাসা, যেখানে আগে ও গিয়েছিল, সেখানেও খোঁজা হয়েছিল।
দালানের ছাদে একটা পানির ট্যাংকি আছে। পানির ট্যাংকিটা দালানের কিনার ঘেঁষে দাঁড়ানো। মেয়েটা কিছু না বুঝে, বা কোনো কারণ ছাড়া, কিংবা নিছক খেয়ালের বশে ছাদের কিনার থেকে ট্যাংকির উপরে ওঠার চেষ্টা করার সময় পা ফস্‌কে নীচে পড়ে যেয়ে থাকতে পারে, কিংবা ট্যাংকির উপরে ওঠার পর হয়ত পা ঝুলিয়ে বসেছিল এবং ঘুমের ভাব আসায় ভারসাম্য হারিয়ে নীচে পড়ে যায়।

ঘটনা শোনার পর আলালুদ্দিন মাখন আর শামিলা দুজনেই কষ্টে মুহ্যমান হয়ে পড়লো। আহারে, অবুঝ অসহায় মেয়েটা সেদিন কতই না কাতর ভাবে দরজা থাপড়াচ্ছিল খুলে দেয়ার জন্য। হায়! কীভাবে এত আহাম্মকী কাজটা তারা করতে পারলো? না জানি কত কষ্ট করেছিল মেয়েটা বৃষ্টি আর বাতাসের ঝাপটায়। কীভাবে ওর গরীব মা-বাবা ওর এই থেতলে যাওয়া মুখের কথা ভুলবে? তাদের অন্তর কি কোনোদিন শান্তি পাবে?
আলালুদ্দিন মাখন আর শামিলা মৃত মেয়েটার কথা ভাবে, বুক চাপড়ায়, কষ্টে ছেলেমেয়েদেরকে সাপটে ধরে, আর বুকের মানিক হারিয়ে গেলে কী যে কষ্ট, তা পলে পলে অনুধাবন করতে থাকে।

৩০ আগস্ট ২০২০

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১:১৫

মুক্তা নীল বলেছেন:
আমাদের মৃত্যু নিশ্চিত কিন্তু কখন যে হবে সেটাই অনিশ্চিত । ১ নং ও দুই নং ঘটনায় মৃত্যু আমাদের আশেপাশের অনেকের এরকম হচ্ছে এবং বাস্তবিক টাই আপনি লিখেছেন । কিন্তু শেষের গল্পটি পড়ে কি লিখবো তা আর বুঝতে পারছি না । শিশুশ্রমিক বাচ্চাদের উপর নির্যাতনের ঘটনায় উপযুক্ত শাস্তি পায়না আমাদের দেশের মানুষ । আসলে ভাই আমি আর কি বলবো বুঝতে পারছি না শেষের গল্পটি অত্যন্ত প্যাথেটিক ।

২৪ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:২২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: গল্পপাঠ ও কমেন্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।

বাস্তবতার সাথে পাঠকের মন বা ভাবনা নিয়েও গল্প তিনটাতে একটু খেলা করার চেষ্টা আছে এখানে। মানুষের মৃত্যু কখন, কোথায় হবে, কার মৃত্যু আগে, কার পরে - এটা কখনো কেউ বলতে পারে না। স্বয়ং আল্লাহ তা'য়ালাই তা জানেন। প্রথম দুই গল্পে দুজন অসুস্থ মানুষ আছেন। তাদের অসুস্থতা নিয়ে পরিবারের সবাই চিন্তিত, পাঠকও চিন্তিত হবেন তার মৃত্যুর আশঙ্কা নিয়ে। কিন্তু, অসুস্থ ব্যক্তিরা রয়ে গেলেন, মারা গেলেন অন্য কেউ, সুস্থ মানুষ দুজন। মানুষের মৃত্যু এতটাই আকস্মিক এবং জীবনটাও অনিশ্চিত।

শেষ গল্পে ভৌতিক আবহের ভেতর দিয়ে পাঠক অসুস্থ বাচ্চার ব্যাপারে চিন্তিত হবেন। বুদ্ধিমান পাঠকগণ আগের গল্পের ক্রম অনুসারে এখানেও ভাবতে শুরু করবেন, অসুস্থ বাচ্চাটার বদলে সুস্থ বাচ্চাটা হয়ত মারা যাবে, যেহেতু গল্পে 'তিনটা মৃত্যু' লেখা আছে, কিংবা স্বামী-স্ত্রী'র কেউ, বা নানা-জান বা নানিজানের কথাও কেউ ভাববেন হয়ত। কিন্তু দুর্ঘটনায় এমন এক অপমৃত্যুর খবর উঠে এলো, যা পাঠক কল্পনা করেন নি। গল্পের কৌশল হিসাবে আমি এটা লিখেছি।

শিশুশ্রমের বিচার আসলেই হয় না। এদের জীবনটা আসলে খুবই মর্মান্তিক বেদনায় ভরা। যে শিশুটা বাসায় বাসায় কাজ করছে, পথে পথে হাঁটছে, খোঁজ নিলে হয়ত জানা যাবে ওর মা-বাবা বেঁচে থেকেও বেঁচে নাই, কিংবা, ও জানেই না ওর মা-বাবা আছে কী নাই। কিন্তু বেঁচে থাকার জন্য ওর কিছু খাবারের প্রয়োজন, লেখাপড়ার কথা আসবে পরে। এই খাবার ওকে কে দিবে? যারা ওকে পুনর্বাসন করতে পারবে, তারা কেউ কোনোদিন ওদের কথা ভাববে না- বাস্তবতা হলো এটাই।

ভালো থাকবেন আপু। শুভেচ্ছা।

২| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১:৫৩

জোবাইর বলেছেন: তিনটি অপ্রত্যাশিত আকস্মিক মৃত্যু! মানুষের জীবনের মর্মান্তিক বাস্তবতা চমৎকাভাবে তুলে ধরেছেন। এ ধরনের মৃত্যুগুলো শুধু একজনের জীবনকেই চিনিয়ে নেয় না, বিপর্যস্ত করে দেয় আরো অনেকগুলো জীবন।

২৪ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:২৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এ ধরনের মৃত্যুগুলো শুধু একজনের জীবনকে ছিনিয়ে নেয় না, বিপর্যস্ত করে দেয় আরো অনেকগুলো জীবন। খুবই বাস্তব একটা কথা বলেছেন জোবাইর ভাই। একটা মৃত্যু কেবল এক ব্যক্তিরই পৃথিবী থেকে বিদায় নয়। তার জীবনের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত থাকে আরো অনেকগুলো মানুষের বেঁচে থাকা, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে। মানসিক ভাবে তছনছ করে দেয় সন্তানহারা মা-বাবা বা স্বামী-স্ত্রীর জীবন।

মৃত্যুর স্বাদ প্রতিটা বস্তুকেই বরণ করতে হবে। তবে তা যেন হয় স্বাভাবিক মৃত্যু - আমাদের কামনা এটাই।

গল্প পাঠ ও মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জোবাইর ভাই। শুভেচ্ছা রইল।

৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৮:২৭

মনিরা সুলতানা বলেছেন: কী কঠিন বাস্তবতা !

২৪ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:২৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: গল্প পাঠ ও কমেন্টের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু। শুভেচ্ছা রইল।

৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:৪৬

জিয়াউর রহমান ফয়সাল বলেছেন: মৃত্যু এত্ত সহজ কেনো? একটি মৃত্য কত্ত বড় একটা কষ্ট, মানুষ চলে যায় না ফেরার দেশে। যারা মারা যায় তাদের কে আর সারাজীবনেও দেখা যাবে না। পরকালে কি দেখা হবে? নাকি পরকালে গেলে আমার সব বন্ধু বান্ধব আত্মীয় দের ভুলে যাবো, কোনো স্মৃতিও মনে থাকবে না।

২৪ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:৪৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর আমার জানা নাই, নিশ্চয়ই কামেল মানুষদের কাছে এর উত্তর জানা আছে। তবে, প্রশ্নগুলো খুব ভাবায় আমাকেও, এবং এ ধরনের প্রশ্ন নিয়ে আমিও ভেবেছি অনেক।

গল্প পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইল।

৫| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:০২

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: অপ্রত্যাশিত মৃত্যু এটাই হয়তো মানুষের জীবনের চরম বাস্তবতা!

২৪ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৪০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হ্যাঁ, অপ্রত্যাশিত হলেও জীবনের বাস্তবতা এটাই। গল্প পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ মশিউর রহমান ভাই। শুভেচ্ছা রইল।

৬| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:৪৬

জুল ভার্ন বলেছেন: তিনটি অপ্রত্যাশিত মৃত্যু খুবই কষ্ট দায়ক!

২৪ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৪৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: মৃত্যু মাত্রই কষ্টদায়ক। অপ্রত্যাশিত মৃত্যুগুলো মেনে নেয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়ে।

গল্প পাঠের জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় জুল ভার্ন ভাই। শুভেচ্ছা রইল।

৭| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:১৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: যে কোন মৃত্যুই বেদনার তবে চরম বাস্তবতাও ।

যদিও চাইলেই মৃত্যুকে এড়ানো যায়না কারন প্রত্যেকটি জীবিত প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে তারপরেও উপরের ৩ টি মৃত্যুর একটাকেও মেনে নিতে কষ্ট হচছে।

২৪ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৪৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সুন্দর কথা বলেছেন কামরুজ্জামান ভাই। অনেক ধন্যবাদ গল্প পাঠ ও কমেন্টের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।

৮| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:১০

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


হঠাৎ মৃত্যু নিয়ে ভাবতে ভালোলাগে আপনার?

২৪ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:৪৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বিষয়টা ভালো লাগার না আসলে। এটা মানুষের অভ্যাস বা প্রবৃত্তি যে তার মনে মৃত্যুভাবনা জাগ্রত হবে, পরকাল নিয়ে ভাববে। অপমৃত্যু বা হঠাৎ মৃত্যুগুলো তাকে আতঙ্কিত বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করবে। তবে, মোটের উপর মানুষ মৃত্যুর কথা কদাচিৎ মনে করে।

আপনাকে ধন্যবাদ প্রশ্নের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।

৯| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৪

পোড়া বেগুন বলেছেন:
তিনটাই করুণ মৃত্যু!

২৪ শে আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ পোড়া বেগুন।

নিকের বানান দেখি শুদ্ধ হয়ে গেছে!!! :) ভালো লাগলো দেখে।

শুভেচ্ছা রইল।

১০| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই,




অনাকাঙ্খিত তিনটি মৃত্যু। তিনটি গল্পই যে ভাবে সাজিয়েছেন অক্ষরে অক্ষরে তা বাস্তবতারই প্রতিধ্বনি। আপনার লেখার কারিশমা এখানেই।

২৪ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ৯:৪৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: তিনটি গল্পই যে ভাবে সাজিয়েছেন অক্ষরে অক্ষরে তা বাস্তবতারই প্রতিধ্বনি। আপনার লেখার কারিশমা এখানেই। ছোট্ট কমেন্টে অনেক গভীর ভাব প্রকাশসহ লেখকের কারিশমা উল্লেখ করায় খুবই আপ্লুত ও উৎসাহিত বোধ করছি প্রিয় আহমেদ জী এস ভাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। শুভেচ্ছা রইল।

১১| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:৫৪

কামাল৮০ বলেছেন: দুঃখ বেদনার চুড়ান্ত রূপ দিয়েছেন তিনটি গল্পে।মানুষে আশা এভাবেই মৃত্যুর কাছে পরাজিত হয়।তার পরও মানুষ আশা নিয়েই বেঁচে থাকে।

২৪ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:০০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: মানুষে আশা এভাবেই মৃত্যুর কাছে পরাজিত হয়। তার পরও মানুষ আশা নিয়েই বেঁচে থাকে। পরম সত্য হলো - মৃত্যু অবধারিত, প্রত্যেকটি প্রাণীকেই মৃত্যুর কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে। এটা মেনে নিতে হবে। তবে, অপমৃত্যু বা দুর্ঘটনাকবলিত মৃত্যুগুলো খুবই বেদনাদায়ক ও মর্মান্তিক, যা মেনে নেয়া দুঃসাধ্য।

সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্য ধন্যবাদ প্রিয় কামাল ভাই। শুভেচ্ছা নিন।

১২| ২৬ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১২:৫১

জটিল ভাই বলেছেন:
জন্মিলে মরিতে হবে, এইতো নিয়ম খোদার দুনিয়ায়......
তাই মৃত্যু কষ্টের হলেও মেনে নিতে হয়.......

২৬ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৫:৩২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ঠিক বলেছেন, চিরন্তন সত্য কথা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.