নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।
দেবিনগরের খেজুর, বালুশাই, আমিত্তি
রসে টইটুম্বুর রসগোল্লা এনে সামনে তুলে ধরে
ভাইয়েরা, বোনেরা, কুটুমেরা
বাবাকে মনে পড়ে
বাবাকে মনে পড়ে
মনে পড়ে আমার অন্তর্যামী প্রিয়তম বাবাকে
যিনি জানতেন তিনি আমার কলজের টুকরো
আর খেজুর, বালুশাই আমার প্রাণের খাবার
ছোটোবেলায় বাবাই ছিলেন আমার ভুবন
মাকে অনেক পেতাম ভয়
মায়ের শাসনে কুঞ্চিত, দমবন্ধ, অতীষ্ঠ জীবন
বাবা এলেই সাতখুন মাফ, উন্মুক্ত পাখা,
প্রভূত স্বাধীনতাময়।
এখনো আমার সেই ছোট্ট ‘আমি'টাকে দেখি-
সন্ধ্যা বয়ে যায়, থেমে যায় ঝিঁঝিদের ডাক
অথচ কুপিবাতিটা তখনো দাউ দাউ দিচ্ছে আলো
যেমন ছোট্ট ‘আমি’টার বুক টগবগ করে
ফুটছে অস্থিরতায়, হায়, বাবা আসছে না কেন?
এখনো কেন মেঘুলা বাজার থেকে ফিরতে
দেরি হচ্ছে বাবার! ঠিক তখনই, ঠিক তখনই
খাকারি কাশি, অমনি ‘আমি’টা প্রকাণ্ড লাফে দরজা
পার হয়ে দৌড়ে নেমে যেত বাইরের উঠোনে-
একঝাঁপে বাবার কোলে- বাবাও যেন
তাকে কোলে নিতেই এতটা অস্থির, এবং খুব দ্রুত
ঘরে এসে খুলে দেন ঝাঁপি। তারপর তুলে ধরেন
থরে থরে বালুশাই-
আমিত্তি-
খেজুর-
রসে টইটুম্বুর রসগোল্লা-
খাও বাজান, খাও- হাপুস হুপুস হাপুস হুপুস
খেতে খেতে
খেতে খেতে
মিষ্টি-পাগল তৃপ্ত 'আমি'টা নেশার ঘোরে
কখন ঘুমিয়ে যেত, টেরও পেত না!
জয়পাড়া, দোহারের বিশ্ববিখ্যাত খেজুর, বালুশাই,
আমিত্তি, রসে টইটুম্বুর রসগোল্লার প্যাকেট
সারে সারে সাজানো এখন আমার ডাইনিঙে
ওগুলো চোখে পড়ে, আর বাবাকে মনে পড়ে
বাবাকে আমার খুব মনে পড়ে
বাবাকে মনে পড়ে, আর নীরবে ভেঙে যেতে থাকে
নদীর দেয়াল –
ধপধপ ধপ্পাস
ধপধপ ধপ্পাস
ধপধপ ধপ্পাস।
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এক সময় একান্ত আপনজনেরা একে একে চলে যান রেখে যান স্মৃতি। সেই চলে যাওয়াদের মিছিলে একসময় নিজেই চলে আসি প্রথম ক্রমিকে। নিয়তির কী নিষ্ঠুর বিধান!!!
কবিতা পাঠ ও সুন্দর কমেন্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ইসিয়াক ভাই। শুভেচ্ছা।
২| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:১৯
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: খুব সুন্দর হইছে
আপনার বাবার জন্য দোয়া রইলো
দাও দাও হবে না মনে হয়
দাউ দাউ হবে
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হ্যাঁ আপু, ওটা দাউ দাউ হবে। কারেক্ট করে দিয়েছি। অনেক ধন্যবাদ এটা দেখিয়ে দেয়ার জন্য।
কবিতা পাঠ ও মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু। শুভেচ্ছা নিন।
৩| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৫৩
কালো যাদুকর বলেছেন: আপনার বাবা বেঁচে থাক আপনার মত করে হৃদয়ে সারা জীবন ৷ বাবারা এমনই হয় হয়ত ৷ কত কষ্ট করেন অথচ আমরা সঠিক সময়ে তাঁদের মূল্য বুঝি না!
কবিতা ভাল লেগেছে ৷
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৫০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বাবারা এমনই হয় হয়ত ৷ কত কষ্ট করেন অথচ আমরা সঠিক সময়ে তাঁদের মূল্য বুঝি না! খুবই সত্য কথা বলেছেন। বাবাদের কষ্ট আসলে পরিবারের কেউই তেমন একটা বোঝে না। বাবা একটা টাকা রোজগারের মেশিন মাত্র, তা ভোগ করার ব্যক্তি নন তিনি। আমাদের বেশিরভাগ বাবার চিত্রটা এমনই।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ কবিতা পাঠ ও কমেন্টের জন্য।
৪| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:২৫
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: বাবা ত বাবাই কার তুলনা নয়
বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই-------------
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৫৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হ্যাঁ, ঠিকই। বাবা কারো সাথে তুল্য নয়। ধন্যবাদ কবিতাটি পড়ার জন্য। শুভেচ্ছা।
৫| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৩৬
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় সোনাবীজ ভাই,
দেবিনগরের খেজুর বালুশাই আমিত্তি এখনও আছে। হয়তো শৈশবের সেই স্বাদ পরিনত বয়সে এসেও কিছুটা পাওয়া সম্ভব। কিন্তু সম্ভব নয় বাবার হাত ধরে পাওয়া সেই শৈশবের আকুলতা। স্মৃতিবাহী অতীত যখন স্মৃতিকাতরতা বহন করে তখন তা আমাদেরকে ভারাক্রান্ত করে।
আপনি সময় পেলেই দেবিনগরে মান। শরীর পারমিট করলে যতখুশি খেজুর বালুশাই,আমিত্তি খান। আমাদের দিকেও কয়েকটি দিয়েন।আর বেশি বেশি আঙ্কেলকে স্মরণ করুন। ধপাস ধপাস নয় বরং বলীয়ান করে তুলুন নিজের আত্মবিশ্বাসকে। কিছুটা হলেও ফিরে পান শৈশবের স্মৃতি।
পোস্টে ভালোলাগা রইলো।
শুভেচ্ছা আপনাকে।
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:১৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ঘুমোতে যাওয়ার আগেই আপনার কমেন্টটা পড়ে গিয়েছিলাম। আমার কবিতাকে আপনার কমেন্ট আরো মহিমান্বিত করেছে।
দেবিনগরের খেজুর বালুশাই আমিত্তি এখনও আছে। হয়তো শৈশবের সেই স্বাদ পরিনত বয়সে এসেও কিছুটা পাওয়া সম্ভব। কিন্তু সম্ভব নয় বাবার হাত ধরে পাওয়া সেই শৈশবের আকুলতা। ঠিক বলেছেন। ওগুলো সবই আছে। আমার জিহ্ববার স্বাদ হয়ত আর আগের মতো নাই। কিন্তু আমার পরিবারের মানুষেরা, আত্মীয়রা, সবাই জানে খেজুর বালুশাই আমার কত প্রিয়। তাই বাসায় এলে সবাই আমার এই প্রিয় খাবারগুলো নিয়ে আসে। অথচ ডায়াবেটিসের জন্য ওগুলো এখন আর মুখে তোলা হয় না, হলেও খুবই কম পরিমাণে। কিন্তু যখনই এ মিষ্টিগুলো দেখি, বাবার কথা মনে পড়ে। আমাকে এসব মিষ্টি খাওয়ানোর জন্য বাবা কত যে অন্তপ্রাণ ছিলেন। সেই বাবা এখন নাই। শুধু মনে হয়, বাবার জন্য আরো কত কী করতে পারতাম!!
চমৎকার কমেন্টটির জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় পদাতিক ভাই। শুভেচ্ছা।
৬| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: দেবিনগর কোথায়?
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:১৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এটা ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। বর্তমান নাম জয়পাড়া। ধন্যবাদ জলদস্যু ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:০২
ইসিয়াক বলেছেন: এক সময় একান্ত আপনজনেরা একে একে চলে যান রেখে যান স্মৃতি। মন ভার হয়,চোখ ভিজে যায় তবু ভাবতে ভালো লাগে তাদের সাথে কাটানো সে সব দিনগুলোর কথা । মন চায় যেখানেই থাকুক তিনি ভালো থাকুন।
আপনার বাবার জন্য দোয়া রইলো প্রিয় ব্লগার।
শুভকামনা সতত।