নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফজর আলির বেতনের হিসাব

০৩ রা অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৩৮

আজকে আমাদের ফজর আলির গল্পটা আপনাদের বলে ফেলি। কয়েকদিন ধরেই বলি বলি করছিলাম, কিন্তু মাঝখানে ফজর আলির কথা মন থেকে একেবারেই উবে গিয়েছিল, মনের কোনাকাঞ্চি, গলি-ঘুপচিতে অনেক খুঁজেছি- কার একটা কাহিনি যেন বলার কথা ছিল! কী যেন ছিল সেই গল্পটা! আজ দুপুরে পথ চলতে চলতে হঠাৎ ফজর আলির সাথে দেখা। ব্যস, গল্পটা মনে পড়ে গেল।

আমাদের ফজর আলি ঢাকা শহরের একটা বেসরকারি কোম্পানিতে পিওনের চাকরি করে। বাড়ি থেকে ঢাকার দূরত্ব খুব বেশি না, যাতায়াত খরচ সাধারণ মানুষের জন্য নগণ্য হলেও ফজর আলির জন্য সেটা বেশ বড়ো; সাপ্তাহিক ছুটি ১দিন; সেদিন আবার ওভার টাইমের সুযোগ থাকায় প্রতি ছুটির দিনেই সে ওভারটাইম করে কিছু বাড়তি আয় করে। ফলে প্রতি সপ্তাহে ‘উইক-এন্ড’ কাটানোর মতো বিলাসিতা ভোগ করা তার হয়ে ওঠে না। তবে, মাস শেষে বেতন পেয়ে ১দিনের 'উইক-এন্ড'সহ বাড়তি আরেকদিন ছুটি নিয়ে সে বাড়িতে আসে।

বেচারা ফজর আলি এ মাসেও বেতন পেয়ে বাড়িতে এলো এবং বেতনের টাকাটা স্ত্রী আমেনা বেগমের হাতে তুলে দিয়ে বাচ্চাদের খোঁজ-খবরাদি করে গোসলে গেল।
ফজর আলির কাছ থেকে টাকাটা পেয়ে আমেনা বেগম গুনে দেখলো আগের মাসের চাইতে ৭০০ টাকা কম। অমনি তার মেজাজটা চরমে উঠলো।

ঢাকা শহরে পিওন ফজর আলি একটা ব্যাচেলর মেসে থাকে। ঠিক ব্যাচেলর মেস না, সমগোত্রীয় কয়েকজন মিলে বস্তি এলাকায় একটা টিনের দোচালা ঘরের একটা খুপরি ভাড়া নিয়ে থাকে। বাসা ভাড়া ৩০০, খাওয়া খরচ ৯০০, এভাবে ১২০০ টাকা চলে যায় থাকা-খাওয়াতেই। মেস থেকে অফিসে আসতে যেতে ১০ টাকা করচ হয় প্রতিদিন। মড়ার উপর খরার ঘায়ের মতো।

দু’বেলা দু’কাপ চা, একটা কলা বা ২টুকরো বিস্কুট খায় ফজর আলি। এতে মাস শেষে সব মিলিয়ে ১৭০০ টাকা খরচ হয়ে যায়। পিওনের চাকরি, তা থেকে ১৭০০ চলে গেলে থাকেই বা কী।
‘চা খাইলে ঘুম হয় না, চা হইল বড়োলোকের খাবার, রোজ রোজ চা-কলা-বিস্কুট খাওয়ার কী দরকার? পেট ভইরা ভাত খাইলেই তো আর ঐগুলান লাগে না’ – আমেনা বেগমের এসব কথার পর ফজর আলি চা-বিস্কুট-কলা দু বেলা না খেয়ে এখন একবেলা খায়; মাঝে-মাঝে খায়ই না। যখন খিদেয় পেট কামড়াতে থাকে, কেবল তখনই অফিসের নীচে ক্যান্টিনে যেয়ে এক-কাপ চা, সাথে একটা বনরুটি খায়। তখন কী যে মজা লাগে, একেবারে বেহেশ্‌তের খাবারের মতো মনে হয়।
কোথায় কোথায় কী কী খরচ করা যাবে, কোন খরচটা করা যাবে না, কোথায় বাসে চড়তে হবে, আর কোন জায়গায় বাসে না যেয়ে হেঁটে যেতে হবে, এমনকি, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ওভারটাইম কয় ঘণ্টা করে কত টাকা অতিরিক্ত আয় করতে হবে, আমেনা বেগম একেবারে পই পই করে ফজর আলিকে বুঝিয়ে দিয়েছে। এবং প্রতিটা খাতের খরচ হিসাব করে ফজর আলিকে ফিক্স করে দিয়েছে আমেনা বেগম।
‘পিওন মানুষের বড়োলোকি চালে চললে বেতনের অর্ধেক কোন দিক দিয়া উইড়া যাইব, টেরও পাইবা না।’ ফজর আলি, আমেনা বেগমের সব কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলে, তাই তো, মাস শেষে তার খরচ এক্কেবারে কাঁটায় কাঁটায় ১৭০০ টাকাই হয়, ১টাকা বেশিও না, ১টাকা কমও না।

আমেনা বেগম হিসাব-নিকাশে খুব পাকা। বেতনের টাকা হাতে পেয়েই সে পুরা মাসের খরচের বাজেট করে ফেলে সে। কত কেজি চাল, ডাল, তেল, লবণ লাগবে, কয়দিন ব্রয়লার, কয়দিন পাঙ্গাস, গ্রাসকার্ব, কয়দিন সোনালি কক-মুরগি খাবে, প্রতিটা খাতে তার হিসাব একদম সুনির্দিষ্ট। ছেলেমেয়েরা সরকারি প্রাইমারিতে পড়ে। পায়ে হেঁটে স্কুলে যাতায়াত। ওদেরকে আবার মাঝেমধ্যে বাদাম, আইস্ক্রিম খাওয়ার জন্য কিছু পকেট খরচ দিতে হয়। টায় টায় ইলিশ মাছের খবর রাখে আমেনা বেগম। ইলিশের দর একটু কমলে সে দুটো ইলিশ কিনে, একটা মাকে দিয়ে আসে, আরেকটা নিজের ঘরে রাখে। ফজর আলি যেদিন বেতন নিয়ে বাড়ি আসে, ইলিশটা ঐদিনই রান্না হয়। ইলিশ কিনতে না পারলে একটা দেশি মুরগি কিনে, পোলাও-মাংস দিয়ে একদিন আনন্দ করে খায়। সেদিন মা-বাবাকেও ডেকে নিয়ে আসে। তারা তো আর দূরে থাকে না, গ্রামের এই মাথা আর ঐ মাথা।

আমেনা বেগম বার বার টাকাটা গুনতে লাগলো। হ্যাঁ, তার গোনা ঠিকই আছে, গত মাসের চাইতে ৭০০ টাকা কম। এতগুলো টাকা গেল কোথায়? কী করেছে সে? ‘দুইবেলার জায়গায় তিনবেলা চা-কলা খাইলেও তো এত বেশি খরচ হইব না’ - আমেনা বেগম মনে মনে বলে। হ্যাঁ, সে যা সন্দেহ করছে, ফজর আলি টাকা দিয়ে নির্ঘাত তাই করেছে। ‘ফজর আলির বুকের পাটা খুব বাইড়া গেছে। ওর বাড়াবাড়ি ছুটাইতে হইব।’ আমেনা বেগম দাঁতে দাঁত পিষতে লাগলো। রাগে তার শরীর কাঁপছে।

গোসল সেরে এসে ভাত খেতে বসলো ফজর আলি। প্রথম লোকমা মুখে দেয়ার সময়ই আমেনা বেগম বলে বসলো, ‘তোমার মায়রে কি আবারও টাকা দিছাও?’
উদ্যত লোকমা মুখের সামনে ধরে ভীরু চোখে ফজর আলি স্ত্রীর দিকে তাকায়। কিন্তু কিছু না বলেই লোকমাটা মুখে পুরে ফেললো।
আমেনা বেগম, ফজর আলির দিকে উত্তরের আশায় তাকিয়ে আছে। রাগে তার শরীর টগবগ করে ফুটছে। তার শরীর থরথর করে কাঁপছে। কী সাহসের সাহস ফজর আলির! তার সামনে সে গপ গপ করে ভাত গিলছে, অথচ আমেনা বেগমের কথার জবাব দিচ্ছে না!
‘কানে যায় না কতা? তোমার মায়রে কি আবারো টাকা দিছাও?’ আমেনা বেগম চিৎকার করে উঠলো।
কিন্তু ফজর আলির কোনো জবাব নাই। শুরুতে তাকে একটু নড়বড়ে, সংকুচিত ও ভীরুমনা দেখালেও সে যেন ক্রমশ শক্ত হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যে ছেলেমেয়ে দুটো মায়ের উচ্চস্বর শুনে ছুটে এসে শংকিত অবস্থায় দরজা ধরে দাঁড়িয়ে আছে।
জীবনে প্রতিবাদী হতে হবে। সবসময় সব অন্যায় নীরবে মাথা পেতে সহ্য করাটাও অন্যায়। একটা মাত্র মা। দুই ভাই আর দুই বোন মিলে তার ভরণপোষণ করতে হয়। সে থাকে ছোটো ভাইয়ের সাথেই। কারো অবস্থাই এত ভালো না যে, একাই মায়ের দেখভাল করবে। মা কি শুধু ওদের একা? আমি কি মায়ের গর্ভে ছিলাম না? মাকে টানার দায়িত্ব কি আমার একটুও নাই? আগেও সে মাকে প্রতিমাসে টাকা দিত। মাকে নিয়েই একবার আমেনা বেগমের সাথে তার কথা কাটাকাটি, তারপর বিরাট ঝগড়া হয়। ঝগড়ার কারণটা খুবই মামুলি। একটা ইলিশ আনা হয়েছিল। ফজর আলি তার মাকে ডেকে নিয়ে এসেছিল। সেবার আস্ত ইলিশ কিনে মায়ের কাছে পাঠাতে পারে নি আমেনা বেগম; তার মা-বাবাকে সে আগেই ডেকে এনেছিল ইলিশ উপলক্ষে। হিসাবের ইলিশ। ফজর আলির মা বাড়তি চলে আসায় একটুকরো ইলিশ কম পড়ে যায়। আমেনার মা-বাবার পাতে ইলিশ পড়লেও ফজর আলির মায়ের জন্য আমেনা বেগমের পাতে আর ইলিশ পড়ে নি। এ খবর সেদিন জানা যায় নি। জানা গিয়েছিল পরের দিন। সারারাত রাগে ছটফট করেছিল আমেনা বেগম। পরের দিন সে বিস্ফারিত হয়েছিল- ‘আখাইক্যার বাচ্চা আখাইক্যা, মায়রে ইলিশ খাওয়াইলা, নিজের উদর ভরলা, আর কেউ ইলিশ খাইল কিনা তা দেকবার আইবো কেডা?’ ফজর আলি প্রথমে বুঝতে না পারলেও ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে এটা জানতে পারে। সে একটু ভর্ৎসনাও করেছিল স্ত্রীকে- সময়মতো বললে সে নিজেই ইলিশ মাছ খেত না, ওটা আমেনা বেগমকে দিয়ে দিত। অথবা, দুজনে ভাগ করেও খাওয়া যেত। কিন্তু সে তো মুখ ফুটে কিছু বলেই নি। এক কথা দুই কথা করতে করতে আগুন লেগে যাওয়ার মতো ভয়াবহ ঝগড়া হয় দুজনে। শেষ পর্যন্ত ফজর আলিকেই পরাজয় বরণ করতে হয়েছিল এই শর্তে যে, সে আর তার মাকে টাকা দিতে পারবে না। সংসারে শান্তি রক্ষার জন্য ফজর আলিকে এ শর্ত মেনে নিয়ে গর্ভধারিণী মাকে ভরণপোষণের টাকা দেয়া থেকে বিরত থাকতে হয়। এতে তার ভাইবোনেরা ক্ষিপ্ত ও মনক্ষুণ্ণ হলেও ফজর আলি তাদেরকে সন্তুষ্ট করার মতো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে নিজের ঘরে আগুন দিতে চায় নি।

আমেনা বেগমের রাগ বেড়েই চলছে। কত্ত বড়ো সাহস, সে তার মাকে আবার টাকা দেয়া শুরু করছে!
‘কও না, তোমার মায়রে টাকা দিছাও নি?’
হাত ধুয়ে মুখ মুছে গামছাটা উরুর উপর রাখলো ফজর আলি। তার চোখ শক্ত, চোয়াল শক্ত। স্ত্রীর দিকে তাকালো।
‘তুমি কি কোনোদিন শাশুড়ি হইবা না? তোমার পুলায় যদি তোমার খাওন দাওন না দেয়, কী করবা? ভিক্ষা করবা, নাকি পরের বাইত্তে মাতারির কাম কইরা খাইবা? আমি না পাললে আমার মায়রে পালবো কেডা?’
আমেনা বেগম বেশ অবাক হলো। ফজর আলি এভাবে উলটা ফণা তুলবে সে ভাবে নি। তার জ্বলুনি আরো বেড়ে গেল, কিন্তু কিছু বলতে পারলো না।
'আগে বোন দুইডা মাসে মাসে ভালোই দিত। ওদের সংসারে টানাটানি। ওরা টাকা কমাইয়া দিছে। ছোডো ভাইডা একা আর কত করবো? ওর ও তো ছেলেমেয়ে আছে। সবাইরে কষ্ট দিয়া আমি একবিন্দু শান্তিতে থাকতে পারতেছি না। আমি তো কসাই না। আমারও মায়াদয়া আছে মায়ের জন্য, ভাইয়ের জন্য। তোমার ভাইয়েরা যদি তোমার মায়রে এইভাবে ফালাইয়া দেয়, তুমি পারবা সহ্য করতে?' শেষ প্রশ্নটা আমেনা বেগমের দিকে ছুঁড়ে দিয়ে ফজর আলি তার দিকে তাকিয়ে রইল। তার কথাগুলো ঘরের ভিতরে বার বার প্রতিধ্বনিত হতে থাকলো, আমেনা বেগমের মনে হতে লাগলো তার মাথায় কে যেন মুগুর দিয়ে জোরসে বাড়ি দিচ্ছে, সে তাতে কাতর হয়ে পড়ছে।

দুনিয়াটা হলো শক্তের ভক্ত, নরমের যম। ফজর আলি এতকাল খুব নরম থেকেছে, আমেনা বেগমও যেভাবে খুশি সেভাবে তাকে চালিয়েছে। চাকরি করে ফজর আলি, আর বেতনের হিসাব করে তার স্ত্রী, সে এক কাপ চা খাবে, নাকি দুই কাপ খাবে, কলা খাবে, নাকি টোস্ট, তাও বলে দিবে তার স্ত্রী? আর না। যা সইবার তা সইছি। আমার শরীর, আমার চাকরি। বেতনও আমার। মাও আমারই। প্রতিজ্ঞায় দৃঢ় হতে থাকে ফজর আলির মন।

ফজর আলি চা-নাস্তা এ মাসে একেবারেই কম খেয়েছে। তা থেকে যা বেঁচেছে, তা সহ সে মাকে দিয়েছে ৭০০ টাকা। তার মা খুবই খুশি হয়েছে এতে।

সারারাত এ-পাশ ও-পাশ করে কাটালো আমেনা বেগম। তার মনে অনেক যন্ত্রণা। এ যন্ত্রণার উপশম চায় সে।

সকালবেলা মায়ের ডাকে ফজর আলির ঘুম ভাঙলো। সিঁথানের এক পাশে মা, অন্য পাশে আমেনা বেগম।
‘অহন থেকে আম্মায় আমাগো সাথেই থাকবো।’ খুব নরম করে বিগলিত স্বরে আমেনা বেগম বলে।

আমেনা বেগম তার ভুল বুঝতে পেরেছে। শাশুড়ির সাথে সে যে-আচরণ করেছে, তা খুবই অন্যায় আচরণ হয়েছে। তার মা-বাবাকে তার ভাইয়েরাই দেখাশুনা করছে। তার ভাইয়েরা যদি এরকম তার মা-বাবাকে খাওয়ানো বন্ধ করে দেয়, তাইলে তারা তখন কোথায় যাবে? তাছাড়া, ফজর আলি লোকটা তো খুবই ভালো। যে-চোখে মাকে দেখে, সেই চোখেই দেখে শ্বশুর-শাশুড়িকে। আমেনা বেগম এই যে কিছুদিন পর পর তার মা-বাবাকে এটা-সেটা পাঠায়, ইলিশ পাঠায়, বাড়িতে ডেকে ভালো-মন্দ খাওয়ায়, ফজর আলি তো তাতে কোনোদিন মন খারাপ করে নি। বরং, তার উৎসাহেই আমেনা বেগম নিজের মা-বাবার প্রতি এতটা খেয়াল রাখে। তার নিজেরও তো এমনভাবেই শাশুড়ির খেদমত করা উচিত ছিল।
ফজর আলির ঐ গতকালের প্রতিবাদে যদিও শুরুতে আমেনা বেগম স্তম্ভিত হয়েছিল, কিন্তু পরে তার বিবেক তাকে দংশন করতে থাকে। এর একটা সমাধানের আশায় সে সারারাত অস্থিরভাবে কাটিয়েছে, ভালো ঘুম হয় নি। খুব সকালে উঠেই সে শাশুড়িকে ডেকে নিয়ে এসেছে।
ফজর আলির বুকটা ভরে গেল, মাকে দেখে নয়, স্ত্রীকে দেখে। তার স্ত্রী আমেনা বেগম যে এতদিনে সত্যিকারেই তার মায়ের পুত্রবধূর মতোই কাজটা করেছে, তা দেখে আনন্দে সে উদ্বেলিত হয়ে উঠলো।

৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৫৮

ভুয়া মফিজ বলেছেন: কয়েকদিন আগে কোন এক নিউজ চ্যানেলের একটা ভিডিও দেখলাম। এক বউ তার বুড়ি শ্বাশুড়িকে বাড়ির সামনের খোলা জায়গায় দিনের বেলা মাটিতে ফেলে সমানে কিল-ঘুষি-লাথি মারছে। দেখে খুব খারাপ লাগলো। প্রতিবেশীরা প্রতিবেদককে জানালো, এই বউ নাকি সাংঘাতিক ঝগড়াটে। তার কথার চোটে ঘরের চালে নাকি কাকও বসে না।

যা হোক, বিভিন্ন কারনেই বউ-শ্বাশুড়ির একটা দ্বন্ধ আমাদের সমাজে সব সময়ে চলে আসছে। এর বিভিন্ন ব্যাখ্যা আছে, সেটাতে যাচ্ছি না। আমেনা বেগমের মতো বুঝদার বউ, আর ফজর আলীর মতো ছেলে হলে সংসারের অনেক আশান্তিরই অবসান হয়।

এমনিভাবেই সবার সুমতি আসুক।

০৩ রা অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ২:১০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
এক বউ তার বুড়ি শ্বাশুড়িকে বাড়ির সামনের খোলা জায়গায় দিনের বেলা মাটিতে ফেলে সমানে কিল-ঘুষি-লাথি মারছে। খুবই মর্মান্তিক, হতাশাজনক ও অনভিপ্রেত ঘটনা। একজন নারী কীভাবে তার শাশুড়িকে এভাবে পেটাতে পারে? মানুষের মনে কি দয়ামায়া বলে কিচ্ছুটুকুন নাই? অবশ্য এর বিপরীত চিত্রও আছে- শাশুরি, ননদ মিলে পুত্রবধূকে বেদম মার মেরেছে, এমন নজিরও প্রচুর আছে। কিন্তু প্রশ্নটা হলো, এমন হবে কেন? আমাদের সংসারে একজন নারী, আরেকজন নারীকে সহ্য করতে পারে না। এর খেসারত দিতে হয় স্বামী বেচারাকেই। অথচ, বউ-শাশুড়ির মধ্যে মধুর সমঝোতা সংসারকে করতে পারে আরো সুখী ও প্রাণবন্ত। দুই পক্ষকেই শুধুমাত্র সামান্য ছাড় দিতে হবে আর কী।

বাস্তব জীবনে গল্পের মতো পরিসমাপ্তি খুঁজে পাওয়া ভার। তবুও আশায় থাকি, আমাদের বউ-শাশুড়িরা এমনই হোক। সংসারে আনন্দের বন্যা বয়ে যাক।

প্রথম প্লাস ও অসাধারণ কমেন্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভুইয়া ভাই। শুভেচ্ছা।

২| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৫৯

জুল ভার্ন বলেছেন: ফজর আলী এখন আর ব্যক্তি বিশেষ কোনো নাম নয়। বাস্তবতা হচ্ছে- বর্তমানে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের নাম "ফজর আলী"

০৩ রা অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ২:১৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বাস্তবতা হচ্ছে- বর্তমানে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের নাম "ফজর আলী"। সুন্দর একটা কথা বলেছেন জুল ভার্ন ভাই।


বর্তমানে 'আলি' বানানে ই-কার ব্যবহারের আধিক্য দেখা যায়। উচ্চারণেও ই-কারই যথার্থ মনে হয় আমার কাছে। তাই 'আলি'ই দিলাম।

অনেক ধন্যবাদ প্রিয় জুল ভার্ন ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.