নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

অহনাকে যে গানটি অহরহ শোনাতাম

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১:২৯

আমার ল্যাপটপ অন থাকা মানে অবিরাম গান বাজতে থাকা। গান বাজে ল্যাপটপে, গান ঝরে কণ্ঠে, একটা কনসার্টেড সুর-মূর্ছনার তালে তালে ল্যাপটপের বাটনগুলোর উপর অনবরত আমার আঙুলগুলো খেলতে থাকে।


অহনার সাথে যখন খুব বেশি বেশি কথা হতো, দীর্ঘ সময় ধরে, মাঝে মাঝে সে বলতো, তোর কাছে কে বড়ো, তোর গান, নাকি আমি?
‘তুইই বড়ো।’ আমি ইন্সট্যান্টলি বলতাম।
‘তাহলে তোর গান বন্ধ কর।’ একটুসখানি ঝিম মেরে বসে থেকে গম্ভীর স্বরে অহনা অনুজ্ঞা করতো।
কিন্তু আমি ভলিয়্যুম আরো বাড়িয়ে দিয়ে বলতাম, ‘তুই এই গানটা শোন। এমন মাধুর্যমাখা দরদিয়া গান তুই জীবনেও শুনিস নি।’ তারপর, মোবাইলটা পিসির স্পিকারের সামনে বসিয়ে রাখতাম, যতক্ষণ গানটা বাজতো। গান শেষ হলে কানের কাছে মোবাইল নিতে গিয়েই দেখতাম লাইন কেটে দিয়ে অহনা পগার পার।
এরপর অভিমান করে অহনা আর কল করতো না; যে মেয়ে প্রতিটি নিশ্বাসের সাথে মিস্‌ডকল দেয়, আর মিস্‌ডকল দিতে দিতে মোবাইলের বাটন ক্ষয় করে ফেলে, সেই মেয়েই একটানা দু-তিনদিন ধরে আর মোবাইলই অন করে না।


ওর সাথে গান আর কবিতা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা আর বিতণ্ডা হতো; মোবাইলেই। মোবাইল কোম্পানিগুলো প্রতি মিনিটে ২৫ পয়সা কলরেট করেছিল আমাদের কল্যাণের কথা ভেবে। হেন কোনো গান নেই যা ওর জানা নেই, কী সুর, কী তার অন্তরা। আমার পড়া হেন কোনো কবিতা নেই যা ওর আজও পড়া হয় নি; আর ও যেসব কবিতা পড়েছে আর আমি তা পড়ি নি, তার তালিকা অনেক অনেক দীর্ঘ। কথায় কথায় ও রেফারেন্স টেনে বলতো, ‘তুই কি ঐ বইটা পড়েছিস?’
‘কোনটা?’ আমি জিজ্ঞাসা করি।
‘মেমসাহেব?’ অহনা জিজ্ঞাসা করে, ‘তুই কি ‘মেমসাহেব’ পড়েছিস?’
‘না?’ আমি ঝটপট বলে দিই।
‘মেঘনাদবধ?’
‘না?’
‘বঙ্কিমচন্দ্রের সব বই পড়েছিস?’
‘না।‘
‘রবীন্দ্রনাথ? বিদ্যাসাগর? শরৎচন্দ্র?’ অহনা একটানা জিজ্ঞাসা করতে থাকে।
আমি বলি, ‘শরৎচন্দ্রের অর্ধেকের মতো পড়েছি।’
‘হুমম! এই পড়া নিয়েই তুই বই লেখা শুরু করেছিস?’ অহনার কণ্ঠে উপহাস উঠে আসে আমার প্রতি।
আমার নিজেরও সামান্য ভিত আছে, তা বোঝানোর জন্য আমি বলি, ‘আমি তো হুমায়ূন আহমেদের কোনো বই বাদ রাখি নি।’
অহনা ক্ষিপ্ত স্বরে বলে, ‘তুই একটা বাচ্চা পুলা। হুমায়ুন আজাদের বই পড়েছিস?’
‘অল্প কয়েকটা।’
তারপর অহনা আমাকে আদেশ শোনায়, ‘তুই এক কাজ কর, আগামী ১০ বছর তুই লেখালেখি বন্ধ রাখ। এই দশ বছরে এদের বইগুলো আগে পড়। পড়াশোনা না করে লিখিস বলে তোর লেখা মাকাল ফলের মতো।’
বড্ড অপমানজনক কথা। আমি ক্ষেপে গিয়ে বলি, ‘ঐ পণ্ডিতনি, তুই তো অনেক পড়েছিস, তাহলে আমার মাকাল ফলের মতো একটা ফল প্রডিউস করে দে।’
‘তখন তো তোর কপাল পুড়বে।’
এবার আমি অহনার পরীক্ষা নিতে শুরু করি, ‘আচ্ছা, আমাদের জাতীয় সঙ্গীত কার লেখা যেন?’
অহনা হেসে দিয়ে বলতো, ‘তুই কি আমার টেস্ট নিচ্ছিস?’
‘বল না, শুনি!’
‘কেন, রবীন্দ্রনাথের লেখা।’
‘তাহলে শূন্যস্থান পূরণ কর : ওমা ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে.... এর পরের লাইনটা কী?’
অহনা চুপ করে থাকে।
আমি একটু ধমকের সুরে বলি, ‘কী, পারিস না?’
‘স্যরি রে, জাতীয় সঙ্গীত আমার পুরোটা মুখস্থ নেই।’ অহনার কণ্ঠ খুব নরম হয়ে আসে, পরাজয়ে।
আমি সুযোগ পেয়ে বলি, ‘পণ্ডিতনি! খুব তো ঝাড়লি এতক্ষণ। তোর তো দেখি ‘ষোলো আনাই মিছে।’’
‘তোর কি পুরোটা মুখস্থ?’ অহনা এখন বিনয়ে অবনত।
আমি কণ্ঠে জোর এনে বলি, ‘শুধু মুখস্থই না, পুরোটা সুর করে গাইতেও পারি।’
‘আমাকে একটু শোনা না ভাই!’ আবেগে বিগলিত হয়ে অহনা আমাকে বলে।
আমি পুরোটা গাই : আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি....
অহনা খুব মুগ্ধ হয়ে শুনছে, ওর নীরবতা আমি টের পাই।
‘তুই কি এ গানটার ইতিহাস জানিস?’ আমি অহনাকে জিজ্ঞাসা করি।
‘নাহ, খুব বেশি কিছু জানি না।’ অহনা আগের চাইতেও নরম হয়ে বলে, ‘খুব অল্পই জানি এটা সম্পর্কে। এটা বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হয়েছে ১৯৭২ সালে। ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জহির রায়হানের ‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবিতে এটা গেয়েছেন অজিত রায় আর সাবিনা ইয়াসমিন। এটা বঙ্গবন্ধুর অনেক প্রিয় একটা গান ছিল। বিবিসির বাংলার জরিপে শ্রোতাদের সবচাইতে ভালোলাগা ২০টি গানের তালিকায় এটা এক নাম্বারে। এইতো! আর কী জানতে চাস তুই?’
‘বাহ!’ আমিও মুগ্ধ হয়ে যাই ওর উত্তরে, ‘তুই দেখি ‘আমার সোনার বাংলা’ সম্পর্কে ভালো জ্ঞানই রাখিস।’
ছোটোবেলায় স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, বিশেষ করে অ্যানোয়াল স্পোর্টসের দিন জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় যখন মাইকে এ গানটা বাজানো হতো, শরীরে কী একটা দোলা লেগে যেত, রক্ত গরম হয়ে ওঠা যাকে বলে। আমার কাছে এ গানের মতো মেলোডিয়াস গান খুব কমই আছে বলে মনে হয়। এ গানটার আছে একটা ম্যাজিক্যাল পাওয়ার, যা শোনামাত্র শরীরে একটা ঝড় সৃষ্টি হয়।
হঠাৎ আরেকটা প্রশ্ন করি অহনাকে। ‘বল তো, এ গানটার সুরকার কে?’
‘কেন, রবীন্দ্রনাথ? রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুরকার কি অন্য কেউ হবে?’ অহনা খুব জোরের সাথে বলে।
‘এই তো! এখানেই কবি নীরব। এতক্ষণ তো আমাকে কম ঝাড়ি দাও নাই। এবার ঝাড়ি খাবার পালা তোর।’


নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের কোনো এক অনুষ্ঠানে আমি প্রথম জানতে পারি যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটির সুরকার তিনি নিজে নন, গগন হরকরা নামক এক বাউল শিল্পীর লেখা ‘আমি কোথায় পাব তারে’ নামক এক গানের সুরে রবীন্দ্রনাথ তার ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি রচনা করেন। আমি প্রথমে অবাক হয়েছিলাম, রবীন্দ্রনাথ কেন অন্য এক সুরকারের সুরে নিজের গান গাইবেন, তার কি সুরের অভাব ছিল? পরে জেনেছি, তিনি লালনের সুরেও অনেক গান লিখেছেন। এমনকি, ভিনদেশী ইংরেজি গানের সুরেও তিনি নিজের গান রচনা করেছেন।
এখন তো জ্ঞান খুবই হাতের নাগালে চলে এসেছে। গুগল ঘেঁটে, উইকিপিডিয়া থেকে যতটুকু স্টাডি করেছি, তার আলোকে ‘আমার সোনার বাংলা’ গান সম্পর্কে মোটামুটি ভালোই জ্ঞান হয়েছে।


গগন হরকরা বা গগন চন্দ্র দাস নামে একজন বাংলা লোকসঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত রচয়িতা ও বিশিষ্ট বাউল গীতিকার ছিলেন। তিনি আনুমানিক ১৮৪৫ সালে শিলাইদহের কসবা নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা-মাতা সম্বন্ধে তেমন কোনো তথ্য জানা যায় না, তবে তার একটি ছেলের নাম কিরণ চন্দ্র বলে জানা যায়। গগন হরকরা প্রথমে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন, পাশাপাশি তৎকালীন শিলাইদহের ডাকঘরের ডাক হরকরার চাকরি করতেন।
‘আমি কোথায় পাব তারে’ গগন হরকরার একটা বিখ্যাত বাউল গান। ১৮৮৯-১৯০১ সময়কালে পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে জমিদারির কাজে ভ্রমণ ও বসবাসের সময় বাংলার লোকজ সুরের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের আত্মীয়তা ঘটে। তারই অভিপ্রকাশ তার স্বদেশী আন্দোলনের সমসাময়িক গানগুলি, বিশেষত ‘আমার সোনার বাংলা’। ঐ সময়ে রবীন্দ্রনাথের সাথে গগন হরকরার বিশেষ অন্তরঙ্গতা সৃষ্টি হয় এবং প্রায়ই দুজনে রসালাপ ও সঙ্গীত চর্চা করতেন। রবীন্দ্রনাথ তার গানের ভক্ত ছিলেনন। গগন হরকরার যথাক্রমে ‘ও মন অসাড় মায়ায় ভুলে রবে’ ও ‘আমি কোথায় পাব তারে’ গান দুটির সুর ভেঙে রবীন্দ্রনাথ ‘যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক’ ও ‘আমার সোনার বাংলা’ গান দুটি রচনা করেন।
গগন হরকরা কার কাছ থেকে গানের দীক্ষা নিয়েছিলেন তা জানা সম্ভব হয় নি, তবে তিনি লালন ফকিরের গানের খুব ভক্ত ছিলেন। লালন ফকিরও গগন হরকরার গান এবং গগনের সান্নিধ্য খুব পছন্দ করতেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘ডাকঘর’ নাটকটি গগন হরকরার জীবন থেকে প্রভাবিত হয়ে লিখেছিলেন; নাটকের গগেন্দ্রনাথ ঠাকুর চরিত্রটি তা প্রমাণ করে।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি রচিত হয়েছিল। এটি ২৫ লাইনের একটি দীর্ঘ গান। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ গঠিত হয় স্বাধীন বাংলার কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদ। পরে ৩ মার্চ তারিখে ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভা শেষে ঘোষিত স্বাধীনতার ইশতেহারে এই গানকে জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশের সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে এই গান প্রথম জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গাওয়া হয়।
১৩ জানুয়ারি ১৯৭২ তারিখে বাংলাদেশের মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে এ গানটির প্রথম দশ লাইন সদ্যগঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত হয়।
‘আমার সোনার বাংলা’ গানটির পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায় নি, তাই এর সঠিক রচনাকাল জানা যায় না। সত্যেন রায়ের রচনা থেকে জানা যায়, ১৯০৫ সালের ৭ আগস্ট কলকাতার টাউন হলে আয়োজিত একটি প্রতিবাদ সভায় এই গানটি প্রথম গীত হয়েছিল। এই বছরই ৭ সেপ্টেম্বর (১৩১২ বঙ্গাব্দের ২২ ভাদ্র) ‘সঞ্জীবনী’ পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের স্বাক্ষরে গানটি মুদ্রিত হয়। এই বছর ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকার আশ্বিন সংখ্যাতেও গানটি মুদ্রিত হয়েছিল। তবে ৭ আগস্ট উক্ত সভায় এই গানটি গীত হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। বিশিষ্ট রবীন্দ্রজীবনীকার প্রশান্তকুমার পালের মতে, ‘আমার সোনার বাংলা’ ১৯০৫ সালের ২৫ আগস্ট তারিখে কলকাতার টাউন হলে ‘অবস্থা ও ব্যবস্থা’ প্রবন্ধ পাঠের আসরে প্রথম গীত হয়েছিল।


আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥
ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,
মরি হায়, হায় রে—
ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥


কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো—
কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে।
মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো,
মরি হায়, হায় রে—
মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি॥


তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিলে রে,
তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি।
তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে,
মরি হায়, হায় রে—
তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি॥


ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে,
সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে,
তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে,
মরি হায়, হায় রে—
ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি॥


ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে—
দে গো তোর পায়ের ধুলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে।
ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে,
মরি হায়, হায় রে—
আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ ব'লে গলার ফাঁসি


সুযোগ বুঝে অহনার কাছে আমার এই আহরিত জ্ঞানসমগ্র প্রকাশ করি। আমি জানতাম, এতে সে নির্ঘাত কুপোকাত হবেই। হলো তাই-ই। ‘আমার সোনার বাংলা’, গগন হরকরার উপর এতসব শোনার পর সে উচ্ছ্বাসে অস্থির হয়ে বললো, ‘তুই এত্ত কিছু জানিস?’


অহনার মুগ্ধতা আমায় কী যে অনুপ্রেরণা দিত! যে জিনিসটা ওর জানা নেই, অথচ আমি জানি, তা ওকে জানিয়ে আমি দিগ্বিজয়ীর সুখ পেতাম, আর তাতে আমার প্রতি ওর মুগ্ধতা তরতর করে বেড়ে যেত। আমার ভাঙা আর কাঁচা কণ্ঠে ‘আমার সোনার বাংলা’ শুনে অহনা বললো, ‘গানটা এর আগে স্কুলের অ্যাসেম্বলিতে অনেক শুনেছি। রেকর্ডেও শুনেছি। কিন্তু এত ‘সুন্দর’ লাগে নি। তুই খুব চমৎকার গেয়েছিস।’


আমি অহনাকে অন্য একটা গানের কথা জিজ্ঞাসা করি, ‘ঐ গানটা শুনেছিস?’
‘কোনটা?’
‘যেটা সবসময় তোকে শোনাই?’
‘তুই তো কত গানই আমাকে শোনাস। কোনটার কথা বলবো?’
‘তুই একটা কালা।’ আমার রাগ উঠতে থাকে। কোনো কথা বা ইঙ্গিত যখন অহনা ধরতে পারে না, তখন খুব রাগ হয় আমার।
‘কেন? কেন বললি একথা?’ অহনা জানতে চায়।
‘কারণ, ইদানীং এই গানটা প্রায় রাতদিন ধরেই বাজিয়ে থাকি। এমনকি কথার ফাঁকে গুনগুন করে গেয়েও থাকি। কোনো কোনো সময় তো গলা ফাটিয়েও গেয়ে উঠি, আর এই গানটা তোর কানে ঢুকলো না?’
‘অসভ্যর মতো কথা বলছিস কেন?’ এবার অহনা রেগে যায়।
আমি স্বর নামি বলি, ‘স্যরি।’
অহনা এবার শান্ত গলায় বলে, ‘নে, গানটা আবার শোনা।’
আমি গানটা আবার শোনাই।


গান শুনে অহনা যথারীতি মুগ্ধ হয় আর অবাকও হয়। বলে, ‘এ গানটা আমি তোর কাছেই প্রথম শুনলাম। আরেকবার শোনা তো।’ আমি আরেকবার পিসিতে গানটা শোনাই, আর তৃপ্তিতে আপ্লুত হয়ে উঠি।


‘কার কণ্ঠ রে?’ অহনা জানতে চায়।
‘শিল্পীর নামটা জানা নেই।’
‘সন্দীপন?’
‘আমি তো সন্দীপনের কণ্ঠ চিনি না। ওর গান শোনা হয় নি।’
‘পবন দাশ বা পূর্ণ দাশ বাউলও হতে পারে।’
‘আমি তাঁদের গানও শুনি নি।’
‘তুই কার গান শুনেছিস?’ অহনার কণ্ঠে বিরক্তি ও ক্ষোভ।
‘এত ঝাড়ি মারিস কেন, কথায় কথায়? তুই কি ঝাড়ুদার?’ আমিও ক্ষেপে যাই।
অহনা একটু থেমে নরম হয়ে বলে, ‘গানটা আমার খুব খুব খুবই ভালো লাগলো। আরেকবার ছাড় তো।’


এভাবে অনেক অনেক বার, অনেক অনেকদিন শিল্পীর নাম না-জানা এ গানটা আমরা মুগ্ধ হয়ে শুনেছি। একদিন অহনা জিজ্ঞাসা করে, ‘তোর মনে কি খুব দুঃখ?’
‘কেন?’
‘এই গানটা যে এত শুনিস, তাই বললাম। আমার মনে হয় জীবনে কেউ তোকে ঠকিয়েছে, বা ঠকাচ্ছে। যাই হোক, মনে কোনো দুঃখ রাখবি না, বুঝলি?’
‘হুম!’
পিসিতে গানটা ছেড়ে দিই, সুরের ভুবনে হারিয়ে যেতে যেতে কাউকে-না-বলা দুঃখটা ভুলে যেতে চেষ্টা করি।


একদিন জানতে পারি, অসাধারণ এ শিল্পীর নাম স্বাগত দে। তার আরো অনেক গান আমি শুনতে থাকি। তার কণ্ঠনিঃসৃত গানগুলো গান-পাগল মানুষের হৃদয়-মনকে উন্মন ও উন্মাতাল করেছে। আর অহনা আর আমার প্রগাঢ় আবেগের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে ‘তোরে রাং দিল কী সোনা দিল’ নামের হৃদয়ক্ষয়ী গানটি। অহনাকে আমি ভুলে যেতে চাই। অহনাকে আমি ভুলে যেতে চাই। কিন্তু ‘রাং দিল কি সোনা দিল’ আমাকে ভুলে যেতে দেয় না। তবু আমি তাকে ভুলে যেতে চাই। ভুলে যেতে যেতে একদিন এ গানটা নিজেই আমার সমস্তটকু উজাড় করে দিয়ে গেয়ে পৃথিবীর বাতাসে ভাসিয়ে দিলাম - তোরে রাং দিল কী সোনা দিল :


তোরে রাং দিল কি সোনা দিল, তুই পরখ কইরে দেখলি না
গুরু তোরে কী ধন দিল চিনলি না মনা


গুরু দিল খাঁটি সোনা
রাং বইলে তোর জ্ঞান হইল না, ওরে দিনকানা
ওরে উপাসনা বিনে কি তোর মিলিবে রে রুপাসোনা
গুরু তোরে কী ধন দিল চিনলি না মনা
তোরে রাং দিল কি সোনা দিল


চণ্ডীদাস আর রজকিনী
তারা প্রেমের শিরোমণি, রাং কইরাছে সোনা
তারা এক প্রেমেতে দুইজন মইলো, এমন মরে কয়জনা
গুরু তোরে কী ধন দিল চিনলি না মনা
তোরে রাং দিল কি সোনা দিল, তুই পরখ কইরে দেখলি না
গুরু তোরে কী ধন দিল চিনলি না মনা


৭ জুলাই ২০০৯







আমি কোথায় পাব তারে






মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৪:১৪

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: অনেক বড় লেখা
..............................................
শুভ কামনা , পরে এসে মন্তব্য করব ।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৩৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: জি, অনেক বড়ো লেখা। অবশ্য, আমার গদ্যগুলো বড়োই হয়ে থাকে, এবং অনেক বড়ো :)

২| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৬:৪৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




আপনার এই বড় মাপের লেখাটির মাঝখানে আমার সোনার বাংলা গান নিয়ে অহনার সাথে আপনার
কথোপকথনের প্রতি আমার দৃষ্টি বিশেষ ভাবে আকৃষ্ট হয়েছে । সেখানে এই গানটির ইতিহাস ও পুর্ব
কথা বলতে গিয়ে গগন হরকরার প্রসঙ্গটি সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন দেখে ভাল লাগল ।

এখানে কথা হলো আমার সোনার বাংলা গানটি রচিত হয়েছিল শিলাইদহের ডাকপিয়ন গগন হরকরা
রচিত আমি কোথায় পাব তারে আমার মনের মানুষ যে রে গানটির সুরের অণুষঙ্গে। আমরা আমাদের
জাতীয় সঙ্গিত আমার সোনার বাংলার রচয়িতা বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরকে পরম শ্রদ্ধার সহিত স্মরণ
করি সব খানেই তাঁর কীর্তন করি । আমরা কি কখনো আমাদের জাতীয় সঙ্গিত আমার সোনার বাংলা
গানটির পিছনের কুশীলব গগন হরকরার কথা একটিবারের এর জন্য স্বরণ করি । গগন হরকরা বা
গগন চন্দ্র দাস বাংলা লোক সঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত রচয়িতা ও বিশিষ্ট বাউল গীতিকার। রবীন্দ্রনাথ তার
গুণমুগ্ধ ছিলেন।আমরা কি হতে পারিনা এই বাঙালি বাউল সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীত রচয়িতা গগন হরকরার
গুণমুদ্ধ হতে । গগন হরকরার লেখা আমি কোথায় পাব তারে বাউল গানটি নীচে তুলে দিলাম।

আমি কোথায় পাব তারে,
আমার মনের মানুষ যে রে।
হারায়ে সেই মানুষে, তার উদ্দেশে দেশ-বিদেশে-
আমি দেশ-বিদেশে বেড়াই ঘুরে;
কোথায় পাব তারে, আমার মনের মানুষ যে রে।।

লাগি সেই হৃদয় শশী, সদা প্রাণ হয় উদাসী,
পেলে মন হতো খুশি, দিবা-নিশি দেখিতাম নয়ন ভরে।
আমি প্রেমানলে মরছি জ্বলে, নিভাই কেমন করে-
মরি হায়, হায় রে-
ও তার বিচ্ছেদে প্রাণ কেমন করে
(ও রে) দেখনা তোরা হৃদয় চিরে
কোথায় পাব তারে, আমার মনের মানুষ যে রে।।

দিবো তার তুলনা কি, যার প্রেমে জগত সুখী!
হেরিলে জুড়ায় আঁখি, সামান্যে কি দেখিতে পারে তারে!
তারে যে দেখেছে সেই মজেছে ছাই দিয়ে সংসারে।
মরি হায়, হায় রে-
(ও সে) না জানি কুহক জানে
অলক্ষ্যে মন চুরি করে, কটাক্ষে মন চুরি করে;
কোথায় পাব তারে, আমার মনের মানুষ যে রে।।

কুল-মান সব গেলো রে! তবু না পেলাম তারে
প্রেমের লেশ নাই অন্তরে, তাইতে মরি দেয় না দেখা সে রে;
ও তার বসত কোথায় না জেনে তাই গগন ভেবে মরে-
মরি হায়, হায় রে-
(ও সে) মানুষের দিশ যদি জানিস
কৃপা করে বলে দে রে, আমার সুহৃদ হয়ে বলে দে রে,
ব্যথার ব্যথি হয়ে বলে দে রে;
কোথায় পাব তারে, আমার মনের মানুষ যে রে।।

হারায়ে সেই মানুষে, তার উদ্দেশে দেশ-বিদেশে
আমি দেশ-বিদেশে বেড়াই ঘুরে;
কোথায় পাব তারে, আমার মনের মানুষ যে রে।

এই গানেরই সুর অনুসারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর আমার সোনার বাংলা গানটি রচনা করেন, এটাই বর্তমানে
বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃত।

যাহোক আপনার এই পোষ্টটির কল্যানে গগন হরকরার প্রতি জানাই শ্রদ্ধাঞ্জরী।

পোষ্টটির পরের অংশ চন্ডীদাস রজকিনী প্রসঙ্গে কিছু কথা বলার জন্য পরে সময় সুযোগ পেলে আসব ফিরে ।

আপনার প্রতি রইল শুভ কামনা ।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৩২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:


আমরা আমাদের জাতীয় সঙ্গিত আমার সোনার বাংলার রচয়িতা বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরকে পরম শ্রদ্ধার সহিত স্মরণ
করি সব খানেই তাঁর কীর্তন করি । আমরা কি কখনো আমাদের জাতীয় সঙ্গিত আমার সোনার বাংলা
গানটির পিছনের কুশীলব গগন হরকরার কথা একটিবারের এর জন্য স্বরণ করি ।


প্রিয় আলী ভাই, আপনার পয়েন্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কমেন্ট পড়ার পর আমি ইউটিউবে বেশকিছু খোঁজাখুঁজি করলাম। আমার সোনার বাংলা গানের সুরকার হিসাবে কোথাও গগন হরকরার নাম উল্লেখ নেই। তবে, আমিও এ গানটা আমার চ্যানেলে আপলোড করেছি, সেখানে সুরকার হিসাবে গগন হরকরার নামই লিখেছি।

আমি কোথায় পাব তারে গানটা আমিও গেয়েছি। গানটা অনেক লম্বা এবং গাওয়া খুব কঠিন। মূল পোস্টে গানটা দেয়া আছে। আপনার সৌজন্যে নীচেও দিলাম।


আমি কোথায় পাব তারে, আমার সোনার বাংলা


৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৬:৫৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



আমি এখানে এই গানটি শুনছি মন্ত্র মুগ্ধ হয়ে।
সুরের মুর্ছনায় আমি সত্যিই যেন কোথায় হারিয়ে
গিয়েছিলাম তাই এই মুগ্ধতার কথা উপরে
মন্তব্যের ঘরে লিখতে ভুলেই গিয়েছিলাম ।
গানটি শুনছিলাম আর উপরের মন্তব্যের
ঘরে লিখছিলাম কথাগুলি ।
সুন্দর এই গানটি এখানে পরিবেশনার
জন্য রইল বিশেষ ধন্যবাদ ।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ২০০২/৩/৪ সালের দিকে আইডিএ ভবন থেকে এমপি-থ্রি গানের একটা সিডি কিনেছিলাম। তার আগে তো এক সিডিতে ১০/১২টা গান থাকতো, কিন্তু ঐ সিডিতে শত শত গান দেখে পাগল হয়ে গেলাম। বাসায় এসে ল্যাপটপে বাজানো শুরু করলাম। প্রথম দিন অবশ্য অন্য একটা গান শুনেছিলাম - অজানা কোনো শিল্পীর কণ্ঠে গাওয়া অনন্যসাধারণ এক গায়কীতে গান - বহুদিনকার পিরিত গো বন্ধু, যার বিবরণ এই পোস্টে আছে - ভুলে যাওয়া গান - বহুদিনকার পিরিত গো বন্ধু। এরপরই সন্ধান পাই এই গানটার - তোরে রাং দিল কী সোনা দিল গানটাসহ স্বাগত দে'র গাওয়া আরো অনেকগুলো গান। কিন্তু তখনো আমি শিল্পীর নাম জানি না, জেনেছি পরে। গানটা আমার খুবই ভালো লাগে। আমি অনেকদিন খুঁজেছি শিল্পীর নাম, একদিন বাংলাদেশে চ্যানেল নাইন-এ শুনলাম সফি মন্ডল, না পারভেজ কার কণ্ঠে যেন, কিন্তু স্বাগত দে'র ফ্লেভার পেলাম না মোটেও। পরে ব্লগে কোনো এক পোস্টে জানতে পেরেছিলাম শিল্পীর নাম স্বাগত দে।

গানটা ভালো লাগে খুব। তাই নিজেও গাওয়ার চেষ্টা করলাম।

আপনার কমেন্ট মানেই বিশেষ কিছু, বিশেষ অনুপ্রেরণা। আমি প্রাণবন্ত হলাম আপনার কমেন্টে। অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় আলী ভাই। শুভেচ্ছা।

৪| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৭:১৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

বড়ই সৌন্দর্য।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
















.

৫| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:১২

শার্দূল ২২ বলেছেন: তবে যাই বলো ভাইয়া অহনা কিন্তু তোমার থেকে আপডেট ছিলো, যদিও আমি সিওর না এই অহনা কোন বাস্তব চরিত্র নাকি তোমার কল্পনা। তোমরা লেখক কবিদের বিশ্বাস নেই, গল্প কবিতার স্বার্থে তোমরা কত কি যে কল্পণা করতে পারো।প্রেমের সাগরে ২৪ ঘন্টা ডুবে থেকে শুকনো কাপড়ে পাড়ে উঠা এই তোমরাই জানো। কেউ একজন আমাকে বলেছিলো গুছিয়ে কথা বলা মিথ্যার সমান। হাহাহাহ যাষ্ট কিডিং, টেক ইট ইজি ভাইয়া

অন্তত তোমার যৌবন সময়ের যেখানে পুরুষরা হুমায়ুন আজাদকে পড়তোনা ভয়ে সেখানে নারী হয়ে অহনা হুমায়ুন আজাদকে পড়েছে সেটাই প্রমাণ করে অহনা অবস্থান কত মজবুত সাহিত্যে। আমিও আমার ছাত্র জীবনে হুমায়ুন আহমেদের চরম ভক্ত ছিলাম, শ'খানেক বই পড়ে আমি যখন খালিয়ে পায়ে হেটে মন পা দুটো এক সাথে পুড়ছি তপ্ত রোদে তখন ছোট মামা এসে হাজির। আমার রুমে হুমায়ুন আহমেদের সংগ্রহ দেখে আমম্মুকে ডেকে বলে তোমার ছেলে মাথায় ঘুন পোকা ঢুকে গেছে । ছোট মামা বললো তোর মনে যা ঢুকেছে তা টেনে আনার ক্ষমতা আমার নেই, তবে এটা করতে পারি যে হুমায়ুন থাক, শুধু আহমেদকে আযাদ করে দেই আপাতত। আমার হাতে যেই বইটি প্রথম ধরিয়েছেন সেটা ছিলো হুময়ুন আজাদের ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল,এটা পড়ে আমি ধাক্কা খেলাম প্রথম। সেই প্রথম জানলাম সাহিত্য মানে তো শুধু লুতুপুতু কিংবা খামখেয়ালিপনা নয়, সাহিত্য মানে সমাজ, পরিবার, বউ, প্রেমিকা ,পাপ ,পুন্য ,নেতা ,দেশ ,টং দোকানের চা সব কিছু। নিজের প্রতি নিজের প্রচন্ড রাগ হলো। মন গড়ার কি গুরুত্বপুর্ন সময় গুলো আমি হেলায় ফেলে দিলাম। সেই যে ছেড়েছি হয়মায়ুন আহমেদ বেটাকে আর ধরিনি। এরপর এক এক করে হুয়মায়ুন আযাদের প্রায় সব গুলো বই শেষ করে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশিদের ধরলাম।

হুমায়ুন আযাদের একটা বই আছে যারনাম- নারী। নারী বইটির একদম প্রথম লাইন ছিলো - কেউ নারী হয়ে জন্মায়না, ক্রমশ নারী হয়ে উঠে। জিয়াউর রহমান নাকি এই বই নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলো, নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আশক্তার ফলে এই বই গোপনে এত বিক্রি বেড়ে গেলো যে, বই ছাপাখানা থেকে মলাট ছাড়াই মানুষ কিনে নিচ্ছে।যদিও এমন পাঠক হয়ময়ুন আযাদ আশা করেনি, কারণ পাঠকের বেশির ভাগ এই বইকে চটি বই হিসেবে কিনে নিচ্ছে, এতে হুময়ুন আযাদ খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। এমনকি এক মুহুর্তে হুমায়ুন আযাদ কে সাংবাদিক প্রশ্ন করলো- কি এমন লিখেছেন বইতে যা পাঠক মলাট ছাড়া কিনে নিচ্ছে- একটু চুপ থেকে হুমায়ুন আযাদ জবাব দিলেন - নারী তো মলাট ছাড়াই জনপ্রিয়।

আমি জানি হুমায়ুন আহমেদ ভক্তরা আমার কথা পছন্দ করবেননা তবুও আমি বলবো- হুমায়ুন আহমেদ হলো গ্রামকে তুলে এনে শহরের ফুটপাথে বিক্রি করে পেট চালানো একজন হকার। অতি মা্ত্রায় স্বার্থপর লেখক এবং ব্যবসায়ীক। আমাদের মনের রিমোট তার হাতে ছিলো ,সে চাইলে আমাদের সাহিত্যের ভিতরে জীবনের জন্য কিছু বাস্তব রসদ দিতে পারতো। এই সেই হুমায়ুন আহমেদ যে কিনা যুব সমাজকে হিমু বানিয়ে খালি পায়ে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছিলো।

সে যাইহোক জবাবে কিন্তু অহনা আপুর কথা বিস্তারিত বলবা।

গল্পে গল্পে কিছু জানা হলো আজ

শুভ কামনা

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:




তবে যাই বলো ভাইয়া অহনা কিন্তু তোমার থেকে আপডেট ছিলো

:)

হ্যাঁ, অহনা মেন্টালি অনেক আপডেটেড একজন প্রেমিকা :)


প্রেমের সাগরে ২৪ ঘন্টা ডুবে থেকে শুকনো কাপড়ে পাড়ে উঠা। জাস্ট ওয়াও স্ট্যান্ডার্ডের একটা উপমা। আমি মুগ্ধ ও বিস্মিত।

এরপর হুমায়ূন আহমেদ ও হুমায়ুন আজাদ সম্পর্কে যা বলেছেন, অনেক ভালো বলেছেন। এদের দুজনের কারো প্রতিই আমার Overwhelming কোনো আবেগ ছিল না। নজরুল, রবীন্দ্র, শরৎ, সুনীল - আমি মূলত এদের মধ্যেই বেশি আচ্ছন্ন ছিলাম। তবে, হুমায়ূন আহমেদ আর হুমায়ুন আজাদ দুজনই বাংলাদেশের দুজন অতি গুরুত্বপূর্ণ লেখক ছিলেন, সাহিত্যে যাদের অবদান চিরঅম্লান। পাঠকরা এ দুজনকে নিয়ে বাক-বিতণ্ডাও কম করেন না।

নারী বের হয়েছে ১৯৯২-এ। জিয়াউর রহমান ৩০ মে ১৯৮০ সালে নিহত হন। উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায় যে, ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত 'নারী' নিষিদ্ধ ছিল।

কমেন্টের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৬| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:০৭

বাকপ্রবাস বলেছেন: বঙ্গভঙ্গ হওয়ার প্রতিবাদে লেখা গান, এই গানের সফলতা আসে বঙ্গভঙ্গ রদ হবার মধ্য দিয়ে। বাংলাকে ভাগ না করার যে গান, বাংলা উপকৃত হবে ভাগ হলে, সেটার বিরোধীতার গান উল্টোপথে হেঁটে বাংলারই জাতীয় সঙ্গিত হয়ে উঠল। এটা একটা দারুণ মিথ।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: 'আমার সোনার বাংলা' একটা অসাধারণ গান। এর সুরের মধ্যে একটা ম্যাজিক আছে, যা শ্রোতাকে আলোড়িত করে। কিন্তু, এ গান রচনার পটভূমিকা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশীদেরকে মর্মাহত করবে।

কমেন্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ছড়াকার।

৭| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:১৫

হাসান রাজু বলেছেন: @শার্দূল ২২ /sb]
বয়স ১৫ঃ - বিঙ্কিম পড়েছ?
- পড়েছি?
- বুঝেছ?
- হ্যাঁ, বুঝেছি তো ।
বয়স ২৫ঃ - বিঙ্কিম পড়েছ?
- পড়েছি?
- বুঝেছ?
- বুঝেছি (মনে হয়)।
বয়স ৪০ - বিঙ্কিম পড়েছ?
- পড়েছি?
- বুঝেছ?
- খুব একটা না, তারপরও বলা যায়, বুঝেছি?
বয়স ৬৫ঃ - বিঙ্কিম পড়েছ?
- পড়েছি?
- বুঝেছ?
- না?
বঙ্কিম বুঝেনি, সেটা বুঝতে ও ৫০ বছর লেগে গেছে।

আহমেদ সাহেব, দুর্বল মানুষটার হৃদয়ে কল্পনার এক সবল হিমু ঢুকিয়ে দিয়ে মানসিক একটা দৃঢ়তা তৈরি করে দিয়েছেন। আত্মবিশ্বাস হলাে মানসিক সুস্থতা। হয়ত ৫০ বছর পর একটা হিমুপনা আপনাকে তৃপ্তি দেবে। সেদিন সেই তুচ্ছ আহমেদকে অনেক উপরে মনে হবে।

আজাদ সাহেবকে চিনতে এদেশের আরও ১০০ বছর লাগবে। এখনো উনাকে মানুষ চিনে মোল্লাদের দেয়া সার্টিফিকেটে ।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ভালো বলেছেন। তবে, বোঝা ব্যাপারটা মনে হয় বয়সের সাথে অতটা সম্পর্কিত না, এটা ব্যক্তির ইন্টেলেক্টের সাথেও সম্পর্কিত। অন্যদিকে, বুঝতে না পারলেই সেটা সেরা বা উন্নত সাহিত্য না। পাঠক যদি কিছু বুঝতে না পারেন, তাহলে সেই লেখার ভাষা আর পাখি বা পশুদের ভাষার মধ্যে কোনো তফাত থাকে না।

মূল্যবান কমেন্টটির জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ হাসান রাজু ভাই। শুভেচ্ছা রইল।

৮| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:০৩

কল্পদ্রুম বলেছেন: আপনার পুরনো লেখার ভিতরে এই লেখাটা আগেও পড়েছিলাম বলে মনে হচ্ছে। আবারো পড়লাম। সাথে গান শুনেও মুগ্ধ হলাম। বিশেষত 'তোরে রাং দিলো না সোনা দিলো' এটা আপনার কন্ঠে ভালো স্যুট করেছে।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হ্যাঁ, আমার লেখাগুলো কিছুকাল পর পরই রিপোস্ট পড়ি। আগের বার হয়ত পড়েছিলেন। গানটা শুনে ভালো লেগেছে জেনে আমি আনন্দিত। তার চাইতেও বেশি আনন্দিত এতদিন পর আপনাকে ব্লগে দেখে। আশা করি ভালো ছিলেন এবং ভালো আছেন।

কমেন্টের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় কল্পদ্রুম।

৯| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:১৫

মিরোরডডল বলেছেন:




রাজুর সাথে সহমত।
লেখার গুণে ও মেধায় দুজনেই বাংলাদেশের রত্ন কিন্তু আজাদ আর আহমেদ, দুজনের লেখা এবং পাঠক ভিন্ন।

আজাদের পাঠক একটা নির্দিষ্ট শ্রেণীর।
আর আহমেদের পাঠক সকল শ্রেণীর।

আহমেদ একটা লেখায় একই সাথে পাঠককে হাসায়, আবার কাঁদায়।
মানুষের হৃদয়ের কাছে এসে হৃদয় স্পর্শ করেছে।
তার তুলনা শুধুই সে।

আজাদের মতো মেধাবী লেখক ছিলো আছে এবং থাকবে, কিন্তু জিনিয়াস হুমায়ূন আহমেদ বাংলায় একজনই ছিলো, যার বিকল্প নেই।

লাভ ইউ এন্ড মিস ইউ ম্যান!


২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক সুন্দর বলেছেন। ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য।

১০| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:২১

মিরোরডডল বলেছেন:




'তোরে রাং দিলো না সোনা দিলো'
এই গান ধুলোর কাছ থেকে প্রথম শুনি ২০২০ করোনার সময়।
গানটা অসাধারণ!

তখন থেকে আমার প্রিয় লিষ্টে, যেটা প্রায়ই শুনি।
থ্যাংক ইউ সো মাচ ধুলো এই গান শেয়ার করার জন্য।


২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ গানটা শোনার জন্য। শুভেচ্ছা রইল।

১১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: অহনা নামটা সুন্দর।

১২| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:২৫

পবন সরকার বলেছেন: অহনা অনেক এ্যাডভান্স, মজাই লাগল

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:০০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ পবন সরকার। শুভেচ্ছা রইল।

১৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:১৫

সৈয়দ মোজাদ্দাদ আল হাসানাত বলেছেন: অনেক বড় লেখা হলেও পড়তে ভালো লেগেছে, অনেক কিছুই জানতে পারলাম (যদিও আমার কোন তথ্য কিছু বেশিক্ষন মনে রাখতে পারি না) ।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:০৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক বড়ো লেখা হলেও আপনি যে পড়েছেন, তাতে আমি খুবই সন্তুষ্ট হলাম। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ হাসানাত ভাই। শুভেচ্ছা।

১৪| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬

গেঁয়ো ভূত বলেছেন: শার্দূল, হুমায়ুন আযাদের একটা বই আছে যারনাম- নারী।..........জিয়াউর রহমান নাকি এই বই নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলো,

হুমায়ুন আজাদের নারী সর্বপ্রথম ১৯৯২ সালে ঢাকার একুশে বইমেলাতে প্রকাশিত হয়, তাহলে জিয়াউর রহমান এই বই নিষিদ্ধ করে কিভাবে? তখন তো জিয়াউর রহমান ওপারে চলে গিয়েছেন। তৎকালীন খালেদা জিয়ার সরকার জামাতিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বইটি নিষিদ্ধ করেছিলো।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:০৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বিষয়টা আমিও হাইলাইট করেছি। কমেন্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় মল্লিক ভাই। শুভেচ্ছা।

১৫| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:০৭

শেরজা তপন বলেছেন: একটু বিশেষ ঝামেলায় আছি- এক লেখায় মনোযোগ দিতে পারছি না এখন। সময় করে পড়ব।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:৩৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ঝামেলা শেষ হোক। বাবনিক ভাইয়ের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রহিল।

১৬| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৭:৪৩

শার্দূল ২২ বলেছেন: প্রথমত সরি ফর রং ইনফরমেশান । এটা খালেদামতি হবে, জিয়াউর রহমান না।

@রাজু ভাই লজিক টা খুব বেশি ভালো লাগেনি, দুর্বোধ্যে সাহিত্যর জামানা শেষ। এখন সাহিত্যকে মানুষের মনের আঙ্গিনায় পৌছে দেয়ার প্রতিযোগিতা চলছে। জম্বুকুন্জুছায়ান্ধাকার এই শব্দ এখন লিখলে নতুন প্রজন্ম মারবে কম দৌড়ের উপর রাখবে বেশি। সাহিত্য বুঝতে যদি জীবন চলে যায় তাও বুঝা না হয় তাহলে সেই সাহিত্য কি কোরানের মত পড়ে প্রতি অক্ষরে ১০ নেকি আসবে?
তাছাড়া বন্কিম এর যেই কয়টা বই পড়েছি এতটা দূর্বোধ্যে তো লাগেনি।হতে পারে আপনার কথাই সত্য না বুঝেই বুঝে পেলার মত । তার লেখা কল্পকাহীনি এবং ধর্ম দুটো বিষয়ে আমার পড়া হয়েছে। সেই যাইহোক তবুও আপনার মতামতকে মুল্যায়ন করে চুপ থাকলাম।

@মিরোর নিজেকে ১৭ বছর পিছনে নিয়ে আপনার আবেগের সমর্থণ করলাম। আর আপনার মন্তব্যের সমর্থণ করার ইচ্ছে আমার সব সময় থাকে কিন্তু আপনি এত সরল যে চলতে চলতে চোখ ঝাপশা হয়ে আসে, রেললাইনে দাড়ালে যেমন সরল দুরত্বের ধোয়াশা ঠিক তেমন। জীবন একটু আঁকা বাঁকা না হলে কি ভালো লাগে বলেন? সামুতে হুমায়ুন আহমেদ এর বিপক্ষে যাওয়া আর মৌচাকে ঢিল মারার মতই বিপদজনক।সেই অভিজ্ঞতা আমার আছে অনেক আগেই। কারন যেখানে হুমায়ুন আহমেদ সেখানেই আবেগ । আপাতত আগে আর না যাই। ভাবছি হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে একটা পোষ্ট দেবো কিনা।

শুভ কামনা মিরোর

১৭| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:৪২

মিরোরডডল বলেছেন:




জীবন একটু আঁকা বাঁকা না হলে কি ভালো লাগে বলেন?

জীবন আঁকা বাঁকা বলেই ভালো লাগে শার্দুল।
বৈচিত্রহীন জীবন কার ভালো লাগে!

হুমায়ূনের সব কাজ যে ব্লাইন্ডলি ভালো লাগে, তা কিন্তু না।
ভালো লেখা বেশি বলেই, অন্যলেখা মনপুত না হলেও ইগ্নোর করি।

আমি এখনো সুযোগ পেলে হুমায়ূন পড়ি, খুব ভালো সময় কাটে।
মজার গল্প ওগুলো জাস্ট টাইম পাস।
কিন্তু মধ্যবিত্তদের জীবন নিয়ে হুমায়ূনের এতো এতো সুন্দর লেখা আছে যেগুলো পরে চোখের পানি ধরে রাখা কঠিন।

ভাবছি হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে একটা পোষ্ট দেবো কিনা।

please go ahead.
তাহলে ফাইন্যালি একটা শার্দুলের লেখা পড়তে যাচ্ছি :)


১৮| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.