নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিয় সহেলিয়া, শোনো!

০৩ রা আগস্ট, ২০২৪ রাত ১২:০০

প্রিয় সহেলিয়া, গণ-সম্ভাষণে তোমাকে সেদিন খুব উদ্‌ভ্রান্তের মতো দেখালো,
অনেক ধকল গেছে মনে, দেহটাও কেমন বিধ্বস্ত যেন!
কতদিন কত কথা তোমাকে বলেছি, বলেছে আমার সতীর্থ বন্ধুগণ,
তুমি শোনো নি, কিংবা শুনেও বোঝো নি
হয়ত বোঝে নি তোমার চারপাশ পরিবেষ্টিত সভাসদবর্গও

কয়েক হাজার সুরম্য দুর্গের ভেতর সুরক্ষিত তুমি
কব্জায় সকল ক্ষমতা ধরে রেখে
সবচাইতে বড়ো দুর্নীতিটা করেছো তুমি নিজে - গণতন্ত্রকে দাফন করে।
তুমি যখন ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে
দেশের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, যথা গণতন্ত্রকে দুর্নীতিগ্রস্ত করে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকবে,
তোমার দুর্নীতিতে সহায়তাকারী ও সম্পৃক্ত প্রতিটা ব্যক্তি,
প্রতিটা পাখি কিংবা পিঁপড়াও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়বে। আর তুমি? ক্ষমতা ধরে রাখার লালসায়
সকলের দুর্নীতি বা দুর্বৃত্তায়নে নীরবে বা সরবে সায় দেবে।
অর্থাৎ, তোমরা সম্মিলিতভাবেই দুর্নীতিগ্রস্ত হতে থাকবে।

দেশের সব মানুষই মূর্খ নয়। কিছু সত্যান্বেষী মানুষ একদা দুর্নীতিগ্রস্ত সাঙ্গপাঙ্গদের দুর্নীতি
একদম সূঁতিকাগার থেকে তুলে এনে রাষ্ট্র করে দেবে।

তখন কেউ কেউ গলা ফাডাইয়া, কণ্ঠের স্বর টেনে টেনে হয়ত বলবেন -
আমরা কখনো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিই না।
তোমার নামে প্রশংসার খই ফুটিয়ে বলবে, সকল অপরাধীকেই
তার প্রাপ্য শাস্তি পেতে হবে - দুর্নীতিতে আমাদের নীতি হলো 'জিরো টলারেন্স'।

একজন চরিত্র-স্খলিত বাবা যেমন তার সন্তানকে
বয়ান দিতে পারেন না – সদা সত্য কথা বলবে, সৎ পথে চলবে, চরিত্রবান হও;
একজন বহুগামিনী নারীও যেমন তার কন্যাকে এ কথা বলার
অধিকার হারিয়ে ফেলেন – সতীত্ব হারাবে না, সতীত্বই তোমার অমূল্য সম্পদ;
তেমনি,
দুর্নীতির ভেতর দিয়ে ক্ষমতায় উঠে আসা কেউ
সাধুর বাণী প্রসব করতে পারেন না – ‘দুর্নীতিতে আমার জিরো টলারেন্স’।

প্রিয় সহেলিয়া, মানুষকে এত বোকা ভাবার কোনো কারণ দেখি না,
ম্যাঙ্গো মানুষ এসব শুনে মুখ টিপে হাসে আর মনে মনে কত কিছুই না ভাবে!

গল্প কিন্তু এখানেই শেষ নয়। তুমি যখন একজনের ঘাড়ে পা দিয়ে গাছে উঠবে,
- যাদের সাথে নিয়ে দুর্নীতিতে জড়ালে এবং ক্ষমতা কুক্ষীগত করলে, সুযোগ বুঝে
তাদের কাউকে দুর্নীতির দায়ে শূলে চড়াবে, আর খুব হাস্যকরভাবে
নিজেকে 'দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্সের' হিরো ভেবে অপ্রতুল আত্মপ্রসাদে ফুলে-ফেঁপে উঠবে
তুমি ভেবো না, তোমার এ অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত হেরিয়া বাকিরাও আগামী দিনগুলোতে তোমাকে
আগের মতোই দুর্নীতিতে ব্যাপক ও বিপুল সহায়তা ও সাহস দিয়ে গাছে চড়াবে

প্রিয় সহেলিয়া, গত কয়েকদিন ধরে মিডিয়ায় কীভাবে খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তা থেকে তুমি কি কোনো
ইঙ্গিত পাচ্ছ না? তুমি যদি বুদ্ধিমতী হয়ে থাকো,
এ থেকেই তোমার শিক্ষা নেয়া উচিত - ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে পৃথিবী তোমা থেকে। কে জানে, একদিন
পেছনে তাকিয়ে হয়ত দেখবে, তোমার সাথের সকলেই চলে গেছে তোমাকে সংকটে ফেলে।
আর ঐ যে কিছু লোক কিছু গাল-ভরা বুলি আওড়ায় - তোমার নাকি
কোনো বিকল্পই নাই - ঐ তৈলবাজ বোকচোদগুলো কতখানি বোকচোদ তা ওদের ঘিলুহীন মাথায় ঢুকবে না।
তোমার বোঝা উচিত, আদতে তোমার কোনো ক্ষমতাই নেই - ক্ষমতাধরেরা তোমাকে ক্ষমতাময় করেছে।
আমি কিবা আবুল ওরকম ক্ষমতা পেলে আমরা আরো বেশি কারিশমা দেখাতে পারতাম, হলফ করেই বললাম।

প্রিয় সহেলিয়া, শোনো, তোমার এখন বড্ড বিশ্রামের প্রয়োজন
তোমার প্রতিটা কথায় এখন জনগণ ফুঁসছে
তোমার কান্নাকে আর কান্না মনে হয় না - হাস্যকর মায়াকান্না যেন
দিগ্‌ভ্রান্ত অবস্থায় প্রতিটা পদক্ষেপে ভুল হতে থাকে, যেমন ভুল হচ্ছে তোমার এখন

তোমার চারপাশের তৈলবাজ, ধান্ধাবাজ আর ভয়ঙ্কর স্বার্থলোভীদের কি এতদিনেও চিনতে পারো নি?
শীঘ্র বেরিয়ে পড়ো ওদের বন্ধন-বেড়ি হতে
জনগণ রগে রগে চিনে ফেলেছে ঐসব ধূরন্ধরগুলোকে
তোমার চারপাশে আজ নব্য রাজাকার, যারা জাতির সাথে করছে বিশ্বাসঘাতকতা
জনগণ রগে রগে চিনে ফেলেছে ঐসব রাজাকারের বাচ্চাদেরকে।

আসছে সর্বাত্মক অসহযোগ, কী করবে এখন তুমি
৯০-এর গণ-অভ্যূত্থানে এরশাদ খেয়েছিল নূর হোসেন, মিলনের প্রাণসহ স্বল্প কয়েকটা
আর জুলাই-২০২৪-এ তুমি খেলে ২৫০-এরও অধিক!!
বাংলার ইতিহাসে সবচাইতে কলঙ্কিত অধ্যায় রচনা করলে তুমি!

জেগেছে ছাত্ররা, তাদের পেছনে ছুটে এসেছে তাদের শিক্ষক, মা-বাবা, আত্মীয়-পরিজন
জেগেছে শিল্পীরা, জেগেছে সাংবাদিক
প্রতিটা সেক্টর থেকে ছুটে আসছে পাবলিক

কী হবে এখন? কী করবে তুমি?

প্রিয় সহেলিয়া শোনো, এ দেশ তোমার, এ দেশ আমারও
১৮ কোটি বাঙালির দেশ বঙ্গবন্ধুর এ সোনার বাংলা
মন থেকে তুমি ঝেড়ে ফেলো বিদ্বেষ; মানুষকে তুমি ভালোবাসতে শেখো
শপথ করে বলছি, চিরকাল তোমারই জুটবে বিজয়মাল্য।

১৭ জুলাই ২০২৪


প্রিয় সহেলিয়া, শোনো
আয়নাতে আজ দাঁড়িয়ে বলো তো-
ছায়াটাকে তুমি চেনো?

ঐ চোখ, ঐ চেহারা-সুরত
মানুষের তবে নয়?
মানুষের ছল ধরে তুমি করো
মানুষের অভিনয়?

অনেক কথাই বলবার ছিল
বলতে তা পারি না যে
তোমার দু চোখে খুনের নেশা
সাক্ষ্য তোমার কাজে

রক্তে কিনেছি প্রিয় স্বাধীনতা
আমার সোনার স্বদেশ -
রক্তাক্ত আজ সারা দেহখানি
কী করুণ তার বেশ!

অনেক কিছুই বুঝবার আছে
সংকেত তার খোঁজো
পায়ের তলা যে হচ্ছে ফাঁকা
কিছু তার তুমি বোঝো?

১৭ জুলাই ২০২৪

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১:৫৩

জটিল ভাই বলেছেন:
আপনার পোস্ট লাইক-কমেন্ট ছাড়া খারাপ লাগে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.