নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।
কুইক রেন্টাল ও আইপিপি মডেলে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনের যাত্রা শুরুর পর থেকে অস্বাভাবিক উচ্চ মূল্যে এই বিদ্যুৎ ক্রয়, ক্যাপাসিটি চার্জ এবং ওভার হোলিং চার্জ দিতে বাধ্যবাধক থাকায় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পিডীবি বিগত ২০০৯ থেকে দেনা ও লোকসানের ভারে নূয্য। ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৭-১৮ পর্যন্ত পাঁচ বছরে পিডিবিকে বেসরকারি খাতে পরিশোধ করতে হয় ৭৪ হাজার ৫৬৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা যার মধ্যে ক্যাপাসিটি চার্জ ছিল ২৬ হাজার ৭৬১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এই পাঁচ অর্থবছরে পিডিবি লোকসান গুনেছে ৩১ হাজার ৭১১ কোটি চার লাখ টাকা। উল্লেখ্য যে, দেশে মোট উৎপাদন সক্ষম ক্যাপাসিটি হচ্ছে আনুমানিক ১১.৬ গিগা ওয়াট, বিপিডীবি'র নিজিস্ব উৎপাদন ৪.৮ গিগা ওয়াট। পিডিবির নিয়ন্ত্রিত বা অন্যান্য স্বাসত্বশাসিত বিদ্যুৎ কোম্পানীর আছে ৫.৭ গিগা বাকি মাত্র আইপিপি'র ১.৫৪ গিগা বেসরকারি। এই বেসরকারি ১৫৪০ মেগা ওয়াট প্রকৃত উৎপাদনের বিপরীতে এর দ্বিগুণের বেশি ইন্সটল্ড ক্যাপাসিটি দেখানো হচ্ছে। অবাক করা বিষয়ে যে, আই পি পি'র এই ১০ শতাংশ বেসরকারি বিদ্যুৎই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বেপারোয়া লোকসানের (লুটের) খনি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বেসরকারি বিদ্যুৎ খাতে নিয়ন্ত্রণহীন লোকসানের যখন ঠিক এমন অবস্থা, তখনই কৌশলগত বিদ্যুৎ খাতে উৎপাদনের পাশাপাশি সঞ্চালন, বিতরণ ও সরবরাহ কার্যক্রম পরিচালনার জন্যও বেসরকারি খাতে লাইসেন্স দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এর সাথে আসচার্য জনকভাবে যোগ করা হয়েছে উৎপাদিত বিদ্যুৎ রফতানি এবং একই সঙ্গে বিদেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করার সুবিধাও। এমনকি আমদানি বা রফতানির জন্য বাংলাদেশের বিদ্যমান সঞ্চালন লাইন ব্যবহারের সুযোগও দেয়া হবে তাদের।
বিদ্যুৎ খাতের সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করছেন, প্রতিবেশী দেশের চাপে দেশের বিদ্যুৎ খাতের কৌশলগত সঞ্চালন নিরাপত্তা হাতিয়ে নিতে বাংলাদেশী ক্ষমতাবলয়ের কিছু ব্যবসায়ীকে সামনে রেখে উৎপাদনের পাশপাশি সঞ্চালন ও বিতরণ বেসরকারি করনের চাপ তৈরি করা হয়েছে বেশ কিছু বছর আগেই। পিডিবি এবং পিজিসিবি'র সংশ্লিষ্ট সিবিএ এবং সরকারলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ পিপিপি খাতে সঞ্চালন ছেড়ে দিবার এই অপচেষ্টাকে বিগত বছরগুলোতে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছে যেহেতু বিদ্যুৎ খাতের সাফল্যে তাঁদের বিশেষ অবদান রয়েছে। বর্তমানে অভিযোগ আছে যে, অন্তত চারটি স্কীম নিয়ে এগিয়েছে ভারতীয় লবিস্ট গ্রুপ-
১। বাংলাদেশে ভারতের একটি বড় বিদ্যুৎ বাজার তৈরি করা অর্থাৎ ক্রস বর্ডার ট্রেইডের কাঠামো বানানো। ভারত সরকার ভূটানের সাথে ২৪-২৮ গিগা ওয়াটের জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের চুক্তি করে রেখেছে, এর বাইরে অরুণাচলে তাদের রয়েছে আরো ৬৫ থেকে ৮০ গিগাওয়াট সম্ভাবনা। ফলে বিদ্যুৎ বিক্রির জন্য তাদের নতুন বাজার দরকার। এর বাইরেও ভারতের বেসরকারি কয়লা চালিত কেন্দ্রের বিদ্যুৎ বিক্রয়ে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী গ্রুপের চাপ বাড়ছে তাই তারা নতুন বাজার খুঁজছে, বাংলাদেশের তাদের সম্ভাব্য বিকল্প বাজার। এর জন্য দরকার সঞ্চালন কাঠামো।
তাই সঞ্চালন সক্ষমতা এমনভাবে তারা তৈরি করতে চাচ্ছে যাতে খুব সহজে বাংলদেশ-ভারত সীমান্তের ওপাড়ে অবস্থিত পুরানো কিংবা পরিকল্পিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলোকে তা স্বল্প দূরত্বে রেখে সহজেই সংযুক্ত করতে পারে।
২। বাংলদেশের বিদ্যুৎ চাহিদায় ভারত নির্ভরতা তৈরি করা। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা PSMP-২০১৬'য় দেশের "দীর্ঘ মেয়াদী জ্বালানী নিরাপত্তা" রক্ষায় ১৫% বেশি বিদ্যুৎ প্রতিবেশী দেশ থেকে না কিনার কথা বলা হয়েছিল। বিদ্যুৎ খাতের সংশ্লিষ্টরা সবাই PSMP-২০১৬'র নীতি পদ্ধতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। ফলে ভারত থেকে ক্রস বর্ডার বিদ্যুৎ ক্রয়ে এবং তার অনুকূলে বিদ্যুৎ সঞ্চালন "ট্রান্সমিশন গ্রীড" অবকাঠামো তৈরিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগ গুলো কৌশলী ও দেশপ্রেমিক ভূমিকা নিয়েছে। আমরা এক্ষেত্রে বিগত সময়ে "নেপাল পাওয়ার ক্রাইসিস" এর ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর বিবেচনায় নিতে পারি।
৩। প্রাইভেটাইজেশন এবং মালিকান প্রতিষ্ঠা করা। বেসরকারিকরণের নামে প্রথম দিকে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সামনে রেখে "বিডার ফিন্যান্সিং" ও "আইপিপি" প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক লাইসেন্স নেয়া হবে যা পরে বেহাত করা হবে। ধীরে ধীরে বাংলদেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালন কাঠামোর শীর্ষস্থানীয় ওউনার হয়ে উঠবে, এমতাবস্থায় উৎপাদনের সিংহ ভাগ সরকারের হাতে থাকলেও পাওয়ার গ্রীডের নিয়ন্ত্রণ হীনতায় তা চূড়ান্ত ভাবে নিরাপত্তাহীন হয়ে উঠবে।
৪। পিজিসিবি'র সমান্তরালে আরেকোটা জাতীয় লোড ডিস্প্যাচ সেন্টার অবকাঠামো (NLDC) তৈরি করা, NLDC কে পিজিসিবি থেকে ডিসিন্টিগ্রেইট করে ISO (Independent system operator) করে গড়ে তোলা। এতে করে ধীরে ধীরে পিজিসিবিকে অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা। পিজিসি অকার্যকর হয়ে গেলে NLDC, ভারতের পাওয়ার সিস্টেম অপারেশন কর্পোরেশন POSOCO'র স্থানীয় ডিসপ্যাচ সেন্টার RLDC (Regional Load Dispatch Center) হয়ে উঠতে আর কোন বাঁধা থাকবে না। এমতাবস্থায় একদিকে কৌশলগত বিদ্যুৎ নিরাপত্তা ভারতের করতলগত হবে অন্য দিকে ক্রসবর্ডার ব্যবসাও ত্বরান্বিত হবে।
যেভাবে বিদ্যুৎ খাতে ঢুকার চেষ্টা করছে বেসরকারি ব্যবসায়ীরা-
এখন পর্যন্ত তিনবার বাংলাদেশের সঞ্চালনে বেসরকারিকরণের চেষ্টা ও পরিকল্পনা হয়েছে-
প্রথমে দু দফায় দুটি ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন পিপিপি'তে দেয়ার চাপ এসেছে। কিন্তু পলিসি ডকুমেন্ট তৈরী করতে না পারায় দুইবারই এই অপচেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং সংশ্লিষ্ট লাইন দুটির নির্মান বিলম্বিত হয়। পরবর্তিতে সরকারকে নিজস্ব অর্থায়নে লাইন দুটির কাজ আরম্ভ করতে হয়। এই দুইটি লাইনের মধ্যে একটি লাইন পায়রা BCPCL (Bangladesh-China Power Company (Pvt.) Limited) এর ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যাকফিড পাওয়ার দেয়া এবং ইভাকুয়েশনের জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এই লাইনটির পিপিপি ডকুমেন্ট তৈরীর জন্য এক ভারতীয় কনসালটেন্টকে পিজিসিবির কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্তৃক পিজিসিবির বোর্ডকে মিসগাইড করে টাকা দেয়ার পর সে কাজ না করে টাকা আত্মসাত করে বলে অভিযোগ আছে। সেই টাকা পিজিসিবি এখনও উদ্ধার করতে পারে নাই। আলোচ্য ৪০০ কেভি লাইনটির নির্মান কাজ পিছিয়ে যাওয়ায় ব্যকফিড পাওয়ার দেয়ার জন্য তড়িঘড়ি করে আরেকটি ২৩০কেভি লাইন তৈরির কাজ হাতে নেয়া হয়, ফলে খরচের বোঝা আরও বৃদ্ধি পায়।
বর্তমানে তৃতীয় চেষ্টায় তারা কক্সবাজারের বাঁশখালী তাপ বিদ্যুৎ হাবে জড়াতে চাচ্ছে, মহেশখালী থেকে মদুনাঘাট এবং চট্টগ্রামের রাউজান থেকে মিরসরাই পর্যন্ত বেসরকারি খাতে দুটি সঞ্চালন লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে অকার্যকর একটি "ইন্ডীয়ান পিপিপি"র সঞ্চালন লাইনের টেন্ডার ডকুমেন্টের কপি-পেস্ট করে জমা দেয়ার চেষ্টা হয়েছে, অভিযোগ আছে এই কাজে পাওয়ার সেলের কিছু স্বার্থান্বেষী মহল জড়িত ছিল। কিন্তু সম্ভবত সেই চেষ্টায় সফল না হওয়ায় বর্তমানে তারা আই এফ সি'কে দিয়ে ডকুমেন্ট তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সঞ্চালনে বেসরকারিকরণ অপ্রয়োজনীয় কেন?
পিপিপি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ গণ বলছেন, নিন্মোক্ত কারণে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালন খাতে বেসরকারিকরণ গ্রহণযোগ্যতা রাখে না-
১। সাধারণ যেসব প্রকল্প ফাইনান্সিং সমস্যায় ভোগে তা পিপিপিতে যায়। কিন্তু পিজিসিবি প্রকল্পের ফান্ডীং এ তেমন কোন বড় সমস্যা আজ পর্যন্ত তৈরি হয়নি যেহেতু প্রতিষ্ঠানটি খুব সক্ষম এবং কাজের উতকর্ষতায় দেশীয় অ আন্তর্জাতিক সনদধারী। এমনকি PGCB প্রকল্পে ফাইনান্স করতে ডোনারদের প্রতিযোগীতাও দেখা যায় নিয়মিত।
২। ২০০৯ এর পরে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনে অতি উচ্চ হারে দ্রুত মানি মেকিং এর খাত হয়ে উঠায় আইপিপি গুলা বেশ কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে একসাথে হাজির হয়। এতে সেই সময় সঞ্চালন সক্ষমতায় কিছুটা পিছিয়ে ছিল পিজিসিবি।
কিন্তু পরবর্তিতে PSMP'2010, প্রস্তাবিত প্রায় ১০০টি সম্ভাব্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল SEPZ এর লোড সেন্টার, রামপাল, পায়রা, খুলনা, আশুগঞ্জ, মহেশখালী ইত্যাদি নির্মিতব্য সকল বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও সম্ভাব্য নতুন লোড সেন্টার গুলোকে ফোরকাস্টের আওতায় নিয়ে PSMP'2016 আলোকে পিজিসিবি এক বৃহৎ ও দুরদর্শী মাষ্টার প্ল্যান তৈরি করে বাস্তাবয়ন শুরু করে। এখানে বলা চলে ভারতীয় লবিস্ট বলয় নিয়ন্ত্রিত বেসরকারি প্রভাবকে অগ্রায্য ও পরাস্ত করার সৎ ও কৌশলগত চেষ্টাও ছিল নেতৃত্বের একাংশের মধ্যে। অতি উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছর গুলোতে পিজিসিবি প্রায় ২৭ টা প্রকল্প শেষ করেছে, ২৬টি প্রকল্প চলছে এবং ১২টি নতুন প্রকল্প নকশাধীন রয়েছে।
ফলে বর্তমানে পিজিসিবি'র গ্রীড ডিচপ্যাচ সঞ্চালন সক্ষমতা ( উৎপাদন কেন্দ্রের সাথে লোড সেন্টার ও বিতরণ ইউটিলিটি গুলোর সংযোগের সঞ্চালন সক্ষমতা) প্রায় ২০ গিগাওয়াট হতে চলেছে। ২০২৩ সালে এই সক্ষমতা হতে যাচ্ছে দ্বিগুণ অর্থাৎ ৪৪,৫ গিগা ওয়াট। দেখা যাচ্ছে এই সক্ষমতা পিএস এমপি ২০১৬ 'র প্রস্তাবিত ও নির্মিতব্য বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং প্রাক্কলিত লোডের চাহিদা থেকেও অনেক অনেক বেশি, অর্থাৎ হাই সেইফটি মার্জিন ইতিমধ্যেই সুরক্ষিত করা হয়েছে।
এই ধরণের কারিগরি সক্ষমতার অবস্থায় কৌশলগত এবং জ্বালানী নিরাপত্তাগত বিদ্যুৎ সঞ্চালনকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক, অপ্রয়োজনীয় এবং দেশ বিরোধী।
ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, ২০২৩ এ বাংলদেশের প্রাক্কলিত বিদ্যুৎ চাহিদা যেখানে মাত্র ২০ হাজার মেগাওয়াট, সেখানে এই পরিমাণ বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করা কোনো যৌক্তিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না। এটা হলে রেন্টাল মডেলে উৎপাদন খাতের মতো সঞ্চালন খাতও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেয়া হবে, এখানেও ক্যাপাসিটি চার্জ রাখা হবে, যা পুরোপুরি জনস্বার্থবিরোধী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৪৭ মেগাওয়াট হলেও বিদ্যুতের সঞ্চালন ব্যবস্থা বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার নজির নেই পার্শ্ববর্তী দেশে ভারতেও। ‘ওয়ান ন্যাশন, ওয়ান গ্রিড’ নামে বিদ্যুৎ সঞ্চালন হয় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জাতীয় সঞ্চালন কোম্পানির মাধ্যমে। রাষ্ট্রীয় সঞ্চালন কোম্পানি পাওয়ার গ্রিড করপোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেডের (পিজিসিআই) পাশাপাশি প্রতিটি রাজ্যে রয়েছে আলাদা সঞ্চালন প্রতিষ্ঠান, সেগুলোও পিজিসিআই নিয়ন্ত্রণ করে।
জ্বলানি ও বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারিকরণ কোথায় কোথায় প্রাসঙ্গিক হতে পারে?
১। স্বচ্চ ও উন্মুক্ত প্রতিযোগীতা এবং সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ এর প্রাইমারি জ্বালানী নিশ্চিত করতে বিপিসি'র দুর্নীতি গ্রস্ত মনোপলি ভেঙে দিয়ে তেল ব্যবসায় বেসরকারি প্রতিযোগীতা শুরু করা হোক। বিপিসি একদিকে তেলের উচ্চ মূল্য ধরে রেখে (ক্রয় ও পরিবহণে দুর্নীতি এবং তেল চুরি) বিদ্যুৎ উৎপাদন, কৃষি ও শিল্প পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়াচ্ছে অন্যদিকে উচ্চ দাম জাত মুনাফা জালিয়াতি করছে! উচ্চ দামে বিপিসির তেল এবং বেসরকারি বিদ্যুৎ কিনে পিডিবির ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা।
২। জাতীয় নিরাপত্তা ও মূল্য নির্ধারণের সাথে জড়িত বিধায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সঞ্চালনকে সরকারী খাতে রেখে শুধু বিতরণকে বেসরকারি প্রতিযোগীতা মূলক বাজারে ছেড়ে দেয়া। এটাই আন্তর্জাতিক, বিশেষ করে ইউরোপীয় মডেল। এমনকি ভারতেও এই মডেল অনুসরণ করা হয়।
বিদ্যুৎ বিতরণ খাত বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিলে সেখানে ব্যক্তি পর্যায়ে এবং উদ্যোক্তা পর্যায়ে গ্রীড সংযুক্ত সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন মডেল উন্মুক্ত হবে। বিদ্যুৎ প্রতিযোগীতা মূলক বাজারে বিক্রয় করতে পারলে নাগরিক বিনিয়োগেই গ্রীন এনার্জি বিকাশ পাবে। এতে সোলার হোম, সৌর ছাদ, সৌর দেয়ালের মত ছোট ও মাঝারি প্রকল্প ব্যাপক প্রসার লাভ করবে।
যেহেতু বর্তমানে বিদ্যুৎ বিতরণ খাত ভয়বহ ক্যাপাসিটি সংকটে ভুগছে, প্রায় ২৬ থেকে ৩০ হাজার ট্রান্সফর্মার গরমের সময়ের পিক আওয়ারে ওভার লোডেড থাকে, তাই সেখানে বেসরকারি ফাইনান্সিং একটা স্টান্ডার্ড মডেলে ঢুকানো যেতে পারে। এখানে একই এলাকায় একাধিক বিতরণ কারী সংস্থা বিপিডীবি পিজিসিবি থেকে, ক্যাপটিভ জেনারেশন থেকে এবং সোলার খাত থেকে সুবিধামত বিদ্যুৎ কিনে একটা নির্দিস্ট প্রফিট রেঞ্জে থেকে প্রতিযোগীতা মূলক বাজারে ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুৎ ক্রয়- বিক্রয় করবে।
অর্থাৎ বিদ্যুৎ ও জ্বালনী খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সরকারের ভিতরের একটি অংশ সেদিকে না হেঁটে দীর্ঘ মেয়াদে দেশের কৌশলগত নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার নাজুক দিকে হাঁটছে।
অপকৌশলগত পরিকল্পনার বাইরেও দেশীয় বিদ্যুৎ বাজারে "বেসরকারি সঞ্চালন" কিছু বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে-
১। একচেটিয়া মূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কাঃ
বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করে বিদ্যুতের ব্যয় সাঁই সাঁই করে বেড়েছে, সঞ্চালন লাইন বেসরকারি করণে পড়লে বিদ্যুৎ এ নাগরিকের ব্যয়ের মাত্রা বল্গাহীন ভাবে বেড়ে যাবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট সবাই।
২। সিণ্ডিকেটঃ
উৎপাদন ও সঞ্চালন দুটোই বেসরকারি খাতে গেলে সেখানে অপরাপর খাতের মত সিণ্ডিকেট তৈরি হয়ে চরম নৈরাজ্যকর অর্থনৈতিক জালিয়াতির পরিস্থিতি তৈরি হবে এবং শিল্প উৎপাদন ব্যাপক হারে বিদ্যুৎ নিরাপত্তাহীন হবে।
৩। দুর্নীতিঃ
২০০৯ এর দিকে আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী দলীয় কিছু ব্যাব্যসায়ীকে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের লাইসেন্স দেয়া হয় যেখানে তিন ধরনের দুর্নীতি ও অন্যায্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ক। উচ্চ মূল্যঃ উৎপাদিত বিদ্যুতের অতি উচ্চ মূল্য, কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে পিডীবির বিদ্যুতের গড় মূল্য ৫ টাকার কিছু নিচে ছিল, সেখানে বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানি ও প্রাইমারি জ্বালানী ভেদে প্রায় ৩-৫ গুণেরও কিছু বেশি (১৭ থেক ২৬ টাকা) ধরা হয়েছিল। এর ফলে উতদূত লোকসান থামাতে বছরে একাধিকবার সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে।
খ। ক্যাপাসিটি চার্জঃ দীর্ঘমেয়াদে অপরীক্ষিত "ইন্সটল্ড ক্যাপাসিটি" ডিক্লারেশনের সুযোগ। দুর্নীতি সহায়ক অডিট করে প্রশ্নযুক্ত সক্ষমতার সনদ দিয়ে, এই অস্বাভাবিক ক্যাপাসিটি থেকে উৎপাদন হোক বা না হোক সেখানে অতি উচ্চ (মেগাওয়াট প্রতি দৈনিক ৭০০ ডলার) ক্যাপাসিটি চার্জ দিবার গ্যারান্টি দেয়া হয়েছে।
গ। ওভারহোলিং চার্জঃ উৎপাদন হোক বা না হোক, শুধু ইন্সটলেশন দেখানোর ঘুষ দুর্নীতি প্রসেস সাপেক্ষেই যখন কাঁড়ি কাঁড়ি কাঁচা টাকা উপার্জনের কাট শর্ট পথ তৈরি হল তখন অতি স্বল্প সময়ে অনেক গুলো কোম্পানি বিদেশ থেকে মানহীন পুরানো বিদ্যুৎ কেন্দ্র কিনে এনে এর ম্যানুফ্যাকচারিং সার্টিফিকেইট প্লেইট টেম্পার করে নতুন সন দেখিয়ে শুল্ক মুক্ত ভাবে আমদানী করে (৫ বছরের কম মেয়াদি বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট শুল্ক মুক্ত) ইন্সটল্ড ক্যাপাসিটি দেখিয়ে বছর বছর হাজার হাজার কোটি টাকা লূটে নেয়ার আয়োজন করেছে। বাস্তবে এই ইন্সটল্ড ক্যাপাসিটির অর্ধেকের বেশি উৎপাদনেই অক্ষম। অথচ এখানে আরেকটি লূটেরা সুযোগ দেয়া হয়েছে "ওভার হোয়েলিং চার্জ"। অর্থাৎ পুরানো ও জোড়াতালি দেয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের "প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর" (টানা লম্বা সময় কেন্দ্র চালু রাখা) খুবই কম হয়, তাই এদের ঘন ঘন বন্ধ রাখতে হয়। এই বন্ধ রাখার সময়েও ক্রেতা পিডিবিকে দিতে হয় "ওভার হোলিং চার্জ"।
তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য লোকসান গুনতে হবে ৮ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা যা পিডিবির মোট লোকসানের ৯৪,৭৮ শতাংশ।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের এই ব্যবসায়ীরাই বর্তমানে সঞ্চালন খাতে অনুপ্রবেশ চায়। ধারনা করা হচ্ছে, সেখানেও দুরুত্ব ও ক্যাপাসিটির বিপরীতে "ক্যাপাসিটি চার্জ" এবং মেইন্টেনেন্সের সময়ে "ওভার হোলিং চার্জের" দুর্নীতির ধারণা যুক্ত করা হবে।
দুর্নীতি সহযোগে অপ্রয়োজনীয় সঞ্চালন লাইন টেনে বিভিন্ন চার্জ ও সভ্রেন গ্যারান্টি মানি পাবার উদাহরণ সৃষ্টি হবে।
অন্যদিকে পিজিসিবি’র লোককে ঘুষ দিয়ে তার পরিকল্পনা ও ফাংশনালিটিকে নষ্ট করার একটা চেষ্টা থাকবে যেহেতু পিজিসিবি তাদের ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বী।
৪। সক্ষমতাঃ
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যত ট্রান্সমিশন লাইন আছে, তার সবটাই স্থাপন করেছে পিজিসিবি। ২০০৯ এর পুর্ব পর্যন্ত উৎপাদনের সাথে সঞ্চালনের সক্ষমতা সমন্বিত ছিল। ২০০৯ এর পরে কাঁচা টাকা আয়ের খাত হিসেবে আবির্ভূত হলে বেসরকারি খাতে অনেক বেশি বিদ্যুৎ কেন্দ্র একসাথে আনা হয়। এতে সঞ্চালন সক্ষমতা কিছুটা পিছিয়ে পড়ে। কিন্তু ২০১৬-১৭ এর দিকে পিডীবি'র নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র আসার সাথে সাথে জাতীয় সঞ্চালন সক্ষমতাও ক্যাচ আপ করে। ফলে দেশে বর্তমানে পিজিসিবির কোন সঞ্চালন ঘাটতি নেই বরং
৫। কর্মসংস্থানঃ
বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন কাঠামো চলে গেলে সেখানে বিদেশী কর্মসংস্থানের পথ উন্মুক্ত হবে এবং দেশীয় প্রকৌশলী, ব্যবস্থাপক এমনকি কর্মচারীদের অনেকেই কৌশলগত কারণে এবং আউটসোর্সিং এর জন্য চাকুরিচ্যুত হবেন।
৬। রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরিঃ আঞ্চলিক ও ভারতীয় প্রভাব-বিনিয়োগের কথা বাদ দিলেও দেশীয় বিনিয়োগকারীদের উপরও কৌশলগত বিদ্যুৎ নিরাপত্তার ঝুঁকি থেকে যায়। দেশীয় ব্যবসায়ীরা যেহেতু রাজনৈতিক দল্গুলোর সাথে আতত করে চলে তাই তারা সময়ে অসময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা নিতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, ২০০৬ সালের সামারে বিরোধী দলীয় আন্দোলন বেগবান করতে গ্লোবেলেক তৎকালীন বিএনপি-জামাত সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও মেঘনাঘাট বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে রাখে, এতে এমনিতেই নাজুক থাকা বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নতুন লোড শেডীং এ আরো বিরূপ পরিস্থিতিতে রূপ নেয়।
৭। জাতীয় ভোক্তা শিল্প অর্থনৈতিক নিরাপত্তাঃ
বাংলদেশের কৌশলগত সম্পদ ব্যবস্থাপনার জ্ঞানগত চর্চা জারি রাখা উচ্চমান পত্রিকা "দৈনিক বণিক বার্তা"র নভেম্বর ১৮, ২০১৮ সংখ্যার সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে-
"বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই বিদ্যুৎ-জ্বালানির মতো সেবা খাতে সরকারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ রাখা হয়। এগুলোকে বলা হয় মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষায় সরকারের প্রচেষ্টা। উৎপাদন থেকে অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে খ্যাত বিদ্যুৎ খাতকে কখনই পুরোপুরি বেসরকারি খাতনির্ভর করে তোলা হয় না। কারণ এর সঙ্গে মানুষের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি রয়েছে ব্যয়ের প্রশ্ন। সাধারণ অর্থনীতির ভাষায়, প্রতিযোগিতামূলক বাজারকে দক্ষ ও একচেটিয়া বাজারকে অদক্ষ ও মুনাফাতাড়িত হিসেবে অভিহিত করা হলেও বিদ্যুৎ খাত এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। অর্থনীতির সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে বিদ্যুৎ খাতে সরকারের একচেটিয়া অধিকার এ খাতকে সবচেয়ে বেশি দক্ষ ও ব্যয়সাশ্রয়ী হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। অধিকাংশ দেশে যেহেতু বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পরিচালনাসহ বিতরণ ব্যবস্থা সরকারের নিয়ন্ত্রণে, সেহেতু বাংলাদেশে তেমনটি হওয়াই বাঞ্ছনীয়। বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় বেসরকারি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করা হলে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।"
বহুবিধ বিষয়ের যৌক্তিক বিবেচনায় আমরা মনে করছি, বিদ্যুৎ খাতের সঞ্চালন বেসরকারি করনের সরকারি সিদ্ধান্তে হুমকির মুখে পড়বে জাতীয় বিদ্যুৎ নিরাপত্তা। সর্বোতভাবে আমরা মনে করি কৌশলগত "বিদ্যুৎ" অবকাঠামো রাষ্ট্রীয় খাতে থাকা বাধ্যতামূলক!
বিদ্যুৎ ও জালানি ব্যবস্থাপনা দুরদর্শী হোক।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!
২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১:২৮
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: দিনে দিনে দেনা বাড়িতেছে বহু!
২| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১৭
হাবিব বলেছেন: খুব ভলো টপিক নিয়ে লিখেছেন
২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১:২৯
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
৩| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২৮
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট
২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১:২৯
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
৪| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০৮
পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: এই রেন্টাল মেন্টাল কমিয়ে বড় প্ল্যান্ট করতে হবে। কয়লা ভিত্তিক ও রিনিউঅ্যাবল এনার্জির দিকে নজর দিতে হবে।
২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৩৭
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সরকার জরুরি আইন করেছে, চার বছর কার্যকর থাকার পর সরকার এর মেয়াদ আরও চার বছর বাড়িয়েছে।
এর চার বছর আর থামছে না। ১০ বছর চলছে, তাঅ কুইক বিদ্যুৎ আর দীর্ঘমেয়াদী হচ্ছে না।
বর্তমান উৎপাদনে আইপিপি'র ভূমিকা ১০% অথচ এইটুকুই ৯৫% লোকসান ঘটাচ্ছে, এই মালিকানা প্রভাবশালীদের।
৫| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: বউকে তার স্বামী প্রতিদিনই মারে। গালাগালি করে। একদিন বউ বলল, এতোই যখন মারো তাইলে কও তুমি কি আমারে রাখতে চাও না?
বেচারা স্বামী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলল, মাইর দেইখ্যা বুঝোস না...?
২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৯
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: মাইর দেইখ্য.।.।।।
৬| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১:১৭
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: সরকারী দ্বায়িত্বে যারা আছেন ,
আশা করি তাদের বোধদয় হবে ।
২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৭
এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: বিদ্যুৎ খাতে জড়িত সরকারের একাশং এটা চায় না, কিন্তু অন্য অংশকে ঘুষ দিয়ে, লোভনীয় ব্যবসার অফার দিয়ে এটা করা হচ্ছে।
৭| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩২
আকতার আর হোসাইন বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। ধন্যবাদ আপনাকে।
৮| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩২
আখেনাটেন বলেছেন: চমৎকার পোস্ট বললেও অতুক্তি হবে। একেবারে খুঁটিনাটি তুলে ধরেছেন।
বাস্তবতা হচ্ছে সরকারের এনার্জি সিকিউরিটি নিয়ে লং টার্ম চিন্তাভাবনায় বিশাল গলদ আছে। চিন্তাটা শুরুতে ভালো ছিল। কুইক রেন্টালের মাধ্যমে বিএনপি আমলের স্ট্যাগন্যান্ট হয়ে যাওয়া বিদ্যুত খাতকে সক্রিয় করা। সেটা দু-তিন বছরের জন্য ঠিক ছিল। কিন্তু কিছু অসাধু আমলা ও অসৎ নেতা-ব্যবসায়ীর কারণে এই কুইক রেন্টাল কিছু খারাপ মানুষের কুইক টাকা কামানোর মেশিন হয়ে গেছে।
এই গ্রুপটাই এখন চাচ্ছে জাতীয় নিরাপত্তার লুপহোল রেখে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনকেও বেসরকারীখাতে নিতে। এতে কিছু ঐ অসৎ আমলা ও নেতা জড়িয়ে আছে কুইক কিছু পকেটে ভরার জন্য।
একটি কোল-বেইজড বড় (১৩২০মেগাওয়াট) পাওয়ার প্লান্ট করতে সর্বোচ্চ চার বছর লাগার কথা। সেখানে দশ বছরেও একটি প্লান্টও অালোর মুখ দেখছে। ডিলে আর ডিলে। কুচক্রি দল এই সময়ে হাজারও কোটি টাকা হজম করে ফেলেছে। একজন তো দেশ থেকে গিয়ে সিঙ্গাপুরের বিলিয়নিয়ার হওয়ার পথে রয়েছে।
এখন শুরু হয়েছে অন্য ধান্ধা। লুটপাটের রাজ্যে সবকিছুই এখন কাব্যময়।
৯| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৯
পলাতক মুর্গ বলেছেন: কুইক রেন্টাল মাঝে মাঝে দরকার হতে পারে, তবে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনকে বেসরকারি করার মানে লুটপাটের সুযোগ দেয়া।
১০| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৩
পদ্মপুকুর বলেছেন: হতাশার বিষয় হচ্ছে, এই ধরণের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে আমাদের মুলধারার গণমাধ্যম একদমই চুপ।
১১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৮
আল ইফরান বলেছেন: তথ্য ও উপাত্তের মাধ্যমে সমর্থিত অত্যন্ত যুগোপযোগী ও সাহসী লেখা। আমি আপনার মত এত ডিটেইলড ট্যাকনিক্যাল জ্ঞানের অধিকারী না, কিন্তু এইটা বুঝতে সক্ষম হয়েছি যে পাওয়ার সেক্টরে একটা অপ্রতিরোধ্য দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে যার দরুন আমাদের মত সাধারন জনগণ দীর্ঘমেয়াদে ভুগবে।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩০
আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: যেভাবে বিল বৃৃদ্ধি পাচ্ছে। এইটাও কি কোন পলিসি নাকি? হতেও পারে