নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

এক নিরুদ্দেশ পথিক

সমাজের প্রতিটি ছোট বড় সমস্যার প্রকৃতি নির্ধারণ করা, আমাদের আচার ব্যবহার, সমাজের প্রচলিত কৃষ্টি কালচার, সৃষ্টিশীলতা, চারিত্রিক উদারতা এবং বক্রতা, অপরাধ প্রবৃত্তি, অপরাধ সঙ্ঘঠনের ধাঁচ ইত্যাদির স্থানীয় জ্ঞানের আলোকে সমাজের সমস্যার সমাধান বাতলে দেয়াই অগ্রসর নাগরিকের দায়িত্ব। বাংলাদেশে দুর্নীতি রোধ, প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং টেকনোলজির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় অপরাধের জ্ঞান কে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধান এর জন্য লিখা লিখি করি। আমার নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতা নেই বলেই মনে করি, চোর কে চোর বলার সৎ সাহস আমার আছে বলেই বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের অনৈতিক কাঠামোকে এবং দুর্নীতিবাজদের সবাইকে তীক্ষ্ণ ভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্র কে চ্যালেঞ্জ করতে চাই প্রতিটি অক্ষমতার আর অজ্ঞতার জন্য, তবে আঘাত নয়। ব্যক্তিগত ভাবে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন কে দেশের ঐক্যের ভিত্তিমূল মনে করি। ডাটাবেইজ এবং টেকনোলজি বেইজড পলিসি দিয়ে সমস্যা সমাধানের প্রোপজাল দেবার চেষ্টা করি। আমি মূলত সাস্টেইন এবল ডেভেলপমেন্ট (টেকসই উন্নয়ন) এর নিরিখে- অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজাইন ত্রুটি, কৃষি শিক্ষা খাতে কারিগরি ব্যবস্থাপনা ভিত্তিক সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, মাইক্রো ইকনমিক ব্যাপার গুলো, ফিনান্সিয়াল মাইগ্রেশন এইসব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে চোরকে চোর বলার জন্য দুর্নিতি নিয়ে লিখি। পেশাঃ প্রকৌশলী, টেকনিক্যাল আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন।

এক নিরুদ্দেশ পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

পদ্মায় প্রশ্নযুক্ত বাংলাদেশের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন সক্ষমতা

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২২

বাংলাদেশের নির্মাণ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রকল্প ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প’। বিশ্বব্যাংক বিতর্ক, নিজস্ব অর্থায়ন, নকশা ত্রুটি ও ইলিশ প্রজনন মৌসুমে কাজ বন্ধের মতো বহু আলোচনার জন্ম দেওয়া সেতুটি এতই রাজনৈতিক মর্যাদা পেয়েছে যে, একেকটি স্প্যান ওঠানোকে রীতিমতো উদ্যাপন করা হচ্ছে মহাসমারোহে।

দুই দশকের ছয় সরকার

২০০১ সালের ৪ জুলাই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ হিসেবে ষষ্ঠ মেয়াদের সরকার সেতুটি নিয়ে কাজ করছে! বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার পদ্মা সেতুতে নীরবতা পালন করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালে পদ্মা সেতুর খরচ সমীক্ষা করে এবং অর্থায়নের মডেল নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে অংশীদারিত্বে যায়। মহাজোট সরকার সেতুটির নির্মাণে অগ্রাধিকার ও গুরুত্বারোপ করে, কিন্তু শুরুতেই দুর্নীতির অপতৎপরতার অভিযোগে বিশ্বব্যাংক অতি সহজ সুদের অর্থায়ন থেকে সরে গেলে প্রকল্পে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বার সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। দ্বিতীয় ভিত্তিপ্রস্তরের পরে কেটেছে প্রায় ১২ বছর। আর প্রথম ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পরে ২০ বছর কেটে গেলেও বাংলাদেশের পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন মেয়াদের সরকার সেতুটি উদ্বোধন করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের মেগাপ্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রতায় পড়ছে, অতি দুর্নীতি, অপখরচ ও বর্ধিত খরচের লাগামহীন অনিশ্চয়তায় ভুগছে এবং একইসঙ্গে কাজের মান প্রশ্নযুক্ত থাকছে। মেগাপ্রকল্পগুলোর কোনোটাই বৈদেশিক ঋণের গ্রেস-পিরিয়ড শেষ হওয়ার আগে আলোর মুখ দেখছে না। বাংলাদেশের সামগ্রিক মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন সক্ষমতার ইতিহাসে এই ধারা একটা কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে উঠতে পারে। অথচ সাম্প্রতিক দশকে প্রতিবেশীরা মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের রেকর্ড তৈরি করেছে। গত এক দশকে চীন বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চতম বেইপানজিয়াং সেতু এবং বিশ্বের দীর্ঘতম (৫৫ কিমি, পিলার ব্রিজ ও ব্রিজ টানেল সংমিশ্রণ) হংকং-ম্যাক্যাও সেতু করেছে। শ্রীলঙ্কা হাম্বান্টোটা গভীর সমুদ্রবন্দর করেছে। পাকিস্তান করেছে গাদোয়ার গভীর সমুদ্রবন্দর। ভারত ২০১১ সালে কাজ শুরু করে আসামে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মাণ করেছে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দীর্ঘ (৯ দশমিক ১৫ কিমি) ভূপেন হাজারিকা সেতু বা ঢোলা-সাদিয়া সেতু, এতে আছে সাঁজোয়া গাড়ি যাতায়াতের পরিকাঠামোও।

নির্মাণকাল ও খরচ বাড়ছেই


২০০৭ সালে একনেক বৈঠকে ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ধরে শুরু হয় প্রকল্প, ২০১০ সালে নন-ইলেকট্রিক রেল ট্র্যাকশন যোগ করে নির্মাণব্যয় ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়। বিশ্বব্যাংক ঋণ প্রত্যাহারের পর ২০১৪ সালে নিজস্ব অর্থায়নে ২০ হাজার কোটি টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণেকাজ শুরু হয়, যা ২০১৬ সালের শেষ অর্ধেকে এসে আরেকটি একনেক বৈঠকে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি বাড়িয়ে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা করা হয়। দ্বিতীয় দফায় জমি অধিগ্রহণের জন্য বাড়তি যুক্ত হয়েছিল আরও এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এভাবে বিলিয়ন ডলার ইউনিটে বাড়তে বাড়াতে ২০১৮ সালের জুন নাগাদ খরচ ঠেকেছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকায়। এ বছর ২৬ আগস্ট সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে মূল সেতু ও নদীশাসন কাজ তদারকির জন্য পরামর্শক সংস্থার মেয়াদ আরও ৩৪ মাস বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এতে সরকারের বর্ধিত ব্যয় হবে ৩৪৮ কোটি এক লাখ ৩২ হাজার টাকা। এদিকে পদ্মা সেতুর আয়ুষ্কাল ১০০ বছর ধরা হলেও নির্মাণ শেষে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাত্র এক বছর রক্ষণাবেক্ষণ করবে, এরপর সেতুর দায়িত্ব বাংলাদেশের। অর্থাৎ যমুনা সেতুর নির্মাণ ত্রুটি (হেয়ারক্র্যাক), কিংবা দুই বছর অন্তর বিশেষ আঠা লাগানোর উচ্চ খরুচে রক্ষণাবেক্ষণ অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিইনি আমরা। ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। অতি উচ্চ নির্মাণব্যয় ও স্বল্পকালীন গ্যারান্টিজনিত রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বেশি হওয়ার আশঙ্কায় উচ্চহারে টোল আরোপের চিন্তা চলছে। ফলে জিডিপিতে এক দশমিক দুই শতাংশ অবদান এবং অর্থনৈতিক প্রাপ্তির প্রাক্কলনেও কিছুটা কমতি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিলিয়ন ডলারের মার্জিনে ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে প্রকল্পের শুরুতেই, মূল সেতু নির্মাণে প্রতিযোগিতাহীন একক দরপত্রের ঠিকাদার থাকায় মনোপলি খরচকে প্রভাবিত করে থাকতে পারে। জমিতে মিথ্যা স্থাপনা দেখিয়ে কিংবা অস্থায়ী স্থাপনা তৈরি করে অতি খরুচে করে ফেলা দলীয় প্রভাবিত ভূমি অধিগ্রহণ স্তরগুলো বেশ অস্বচ্ছ ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে নির্মাণের নতুন নতুন কারিগরি ও ব্যবস্থাপনাগত চ্যালেঞ্জ, বেড়েছে ব্যয়ও। নতুন করে যোগ হতে যাচ্ছে করোনাজনিত কাজ স্থগিতকরণ এবং নদীভাঙনজনিত খরচ। করোনার কারণে নির্মাণকাজ প্রায় স্থগিত হওয়ায় বোঝা যাচ্ছে বাংলাদেশ সেতু নির্মাণের কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা জ্ঞান স্থানীয় জনশক্তিতে সঞ্চার করতে পারেনি। সব মিলে নির্মাণকালের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে খরচও।


নকশার মান প্রশ্নবিদ্ধ

পদ্মা সেতুর প্রাথমিক নকশায় ভয়ংকর ত্রুটি ছিল। পাইলিংয়ের সঙ্গে মাটির গুণাগুণের মিল পাওয়া যায়নি। ফলে নকশায় অন্তত দুবার বড় আকারে সংশোধন আনতে হয়েছে। এর ফলে সেতুটির কাজের ক্রমপর্যায় ওলট-পালট হয়ে গেছে। পাইল, পিয়ার, নদীশাসন ও সংযোগ সড়ক নির্মাণের মূল কাজগুলোয় আন্তর্জাতিকভাবে বিধিবদ্ধ ধারাবাহিকতা মানা হয়নি বা নকশা জটিলতায় করা যায়নি। ২০২৩ সালের আগে সেতুর উদ্বোধনের সম্ভাবনা ক্ষীণ হলেও ১৯৩ কোটি টাকার টোলপ্লাজার কাজ শেষ হয়েছে ২০১৯ সালেই। সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা না হলে এই অবকাঠামোটি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

সাম্প্রতিক নদীভাঙন দেখিয়ে দিচ্ছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদীভাঙনের নকশা বা ইরোশন ম্যাপ এবং নদীশাসনের পরের প্রাক্কলিত ভাঙনের মডেল ভুল ছিল। নদীভাঙনে পড়েছে খোদ নির্মাণের ইয়ার্ড। অভিযোগ আছে, নদীশাসনে অনুমোদনহীন জিও টেক্সটাইল উপকরণ ব্যবহার করেছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। এজন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে সনদ সংগ্রহের সুপারিশ করেছে পদ্মা সেতুর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে কনসোর্টিয়াম। যুক্তরাষ্ট্রের সনদমতে যদি জিও টেক্সটাইল উপকরণের গুণাবলি যথাযথ না পাওয়া যায়, তাহলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নদীশাসনে আবার ক্ষতিপূরণমূলক বাড়তি কাজ করতে পরামর্শ দেওয়া আছে। প্রশ্ন হচ্ছে তা কি মানা হবে?

পদ্মা সেতুতে পিলার মোট ৪২টি। তবে নকশা প্রণয়নে প্রতিটি পিলারের তলদেশে মাটির গুণাগুণ পরীক্ষা করা হয়নি। ৩১ পিলারের মাটি পরীক্ষা না করেই, অর্থাৎ মাত্র ১১টি পিলারের তলদেশের মাটি পরীক্ষা করেই তার অনুমান ভিত্তিতে প্রণয়ন করা হয় ৪২টি পিলারের নকশা। এতে নকশায় বর্ণিত মাটির গুণাগুণের সঙ্গে পদ্মার তলদেশের মাটির প্রকৃত অবস্থা মেলেনি। ডিজাইন চূড়ান্ত হওয়ার পর পদ্মার গভীরে অন্তত ২২টি পিলারের নিচে ৩৫০ থেকে ৪০০ ফুট কাদার স্তর পাওয়া গেছে। এতে এডিবি থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে প্রণীত নকশার ২২টি পিলারের ডিজাইন সংশোধন করতে হয়েছিল। এছাড়া বিভিন্ন পিলারের তলদেশে মাটির গুণাগুণ পুনঃপরীক্ষাও করতে হয়েছিল। অর্থাৎ এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, একটি প্রশ্নযুক্ত নকশায় এবং মানের সঙ্গে আপস করা পদ্ধতিতেই পদ্মা সেতুর কাজ চলেছে।

অতিরিক্ত নদীশাসনের ঝুঁকি এবং নদীভাঙনের নকশায়ও সমস্যা

ঠিকাদার ৩০ জুলাই ওই এলাকায় নদীর তলদেশ জরিপ করেও ভাঙনের কোনো পূর্বাভাস পায়নি। আকস্মিকভাবে নাকি ভেঙে গেছে কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড। বলা হচ্ছে এ বছর বন্যার পানির মাত্রা অন্যান্য বছরের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির ফলে নদীর গতিবেগ ও তলদেশের মাটি সরে যাওয়ার (স্কাওয়ার) মাত্রা বেশি! যদিও বার্ষিক পানি প্রবাহের রেকর্ড তেমনটা বলছে না।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সরকারি বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নদীর ভূগঠন সম্পর্কে এখনও পুরোপুরি অবহিত নন। নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট, সিইজিআইএস, ওয়াটার মডেলিং ও ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট এবং পানিসম্পদ উন্নয়নে আলাদা বিভাগ ও প্রতিষ্ঠান থাকলেও তারা বাংলাদেশের নদীগর্ভের প্রকৃত ভূগঠন এবং ইরোশন ম্যাপের ব্যাপারে ভালোভাবে জানে না বলেই প্রতীয়মান হয়। নাসা আর্থ অবজারভেটরি ২০১৮ সালে গঙ্গা নদীর ইরোশন ম্যাপ তৈরি করেছে। নাসার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পদ্মার ভাঙনে ১৯৬৭ সালের পরে ৬৬ হাজার হেক্টরের বেশি জমি বিলীন হয়েছে। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবির ভিত্তিতে নাসা পদ্মার প্রবাহপথ এবং ইরোশন ম্যাপ (সম্ভাব্য নদীভাঙন এলাকার ধারণা) তৈরি করে দিয়েছে। স্বাধীনতার অর্ধ শতক হতে চললেও আমরা নিজেরা অন্তত বৃহৎ নদীগুলোর জন্য এমন উদ্যোগ নিতে পারিনি।

এখন একদিকে দরকার পদ্মার প্রবাহপথ এবং ইরোশন ম্যাপ হালনাগাদ করা। অন্যদিকে পলি অববাহিকাময় নদীর এক ক্ষুদ্রাংশে অতিরিক্ত শাসনের পরে সেতু থেকে ভাটির দিকে কোথায় ও কী গতিতে নতুন করে নদীভাঙন হবে, তার ইরোশন ম্যাপও তৈরি করা অতি জরুরি। যমুনা নদীতে সেতু নির্মাণের সময় অতিরিক্ত নদীশাসনের ঝুঁকির অভিজ্ঞতা থেকে মনে হচ্ছে, পদ্মা সেতুর ভাঙন প্রভাব প্রবলই হবে। কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড ভেঙে পড়ার পর একদিকে বলা হচ্ছে, ইয়ার্ডটির বিমা করা ছিল। পাশাপাশি প্রকল্প পরিচালক বলেছেন, এটির কারণে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হয়ে গেল, যা সেতুর নির্মাণব্যয়ের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

অবহেলিত থাকছে রেল

২০০৭-০৮ থেকে ২০০৯-১০ অর্থবছরের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বাড়ানোর পরও ব্যয় হ্রাসের যুক্তিতে নকশা প্রণয়নের সময় সিঙ্গেল লাইন রেলপথ নির্মাণের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। রেলওয়ের পক্ষ থেকে সে সময় এর বিরোধিতা করে ডাবল লাইন নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। অথচ ১০৫ বছর আগে পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত হার্ডিঞ্জ ব্রিজটি ছিল ডাবল লাইনের। সেক্ষেত্রে ২০২৩ সালে গিয়ে পদ্মা সেতুতে করা হচ্ছে সিঙ্গেল লাইন নন ইলেকট্রিক রেলপথ। যমুনা নদীতে সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে যে সিঙ্গেল লাইন রেলপথ ছিল, তা বহু সমস্যার জন্ম দিয়েছে। মাত্র দুই দশকের মাথায় পৃথক রেলসেতু নির্মাণের প্রকল্প নিতে হয়েছে। এদিকে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের ভায়াডাক্টের (উড়ালপথ) সঙ্গে পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়কের কয়েকটি স্থানে রয়েছে উচ্চতাজনিত সাংঘর্ষিক অবস্থা, যা সংযোগ সড়কে যান চলাচলে বাধার সৃষ্টি করতে পারে।

চার লেন সেতু দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নয়

১০০ বছরের লাইফ সাইকেলে চার লেন সেতু বাংলাদেশের উচ্চ অর্থনৈতিক ও যান চলাচল প্রবৃদ্ধিকে ধারণ করে না। তদুপরি গ্রামীণ অর্থনীতির এলিমেন্টগুলো, হাঁটা, সাইক্লিং, ভারে ও ঠেলায় পণ্য পরিবহন, ধীরগতির যানবাহনে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন, সেতুর মাঝ বরাবর মেইনটেন্যান্স স্পট, ট্রাফিক ও স্পিড অ্যালার্ম সেন্টার (ডিজিটাল অ্যালার্ম), স্পিড ডিসপ্লে পোল, ইমারজেন্সি প্যানেলসহ ন্যূনতম ছয় লেনবিশিষ্ট সেতু প্রয়োজন ছিল। একেবারে বাইরের লেনটি গ্রামীণ অর্থনীতিকে ধারণ করার অনুষঙ্গ হিসেবে রাখা যেত, কিংবা ব্যস্ত যানজটের সময় শুধু ট্রাক চলাচলের হার্ডশোল্ডার লেন কিংবা দুর্ঘটনার সময়ে ইমারর্জেন্সি হিসেবেও ব্যবহার করা যেত। ভবিষ্যতে সড়কে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের গ্রোথ এবং রেলপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের প্রবৃদ্ধিকে বিবেচনায় রেখে এক লেনের রেল এবং চার লেনের সড়ক ডাইমেনশনিং ঠিক হয়েছে কি না, তা নিয়ে বিস্তর সন্দেহ রয়ে গেছে।

এছাড়া মেঘনা ও গোমতী সেতু দুটির দুই লেন, লোড বা মাস পার ভেহিকল, সড়ক ও নৌযান চলাচলের প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন, পিলারের নিচের ভূমিক্ষয়, স্কোয়ারিং রেট, ভূমিকম্প সহনশীলতা এবং রক্ষণাবেক্ষণ মান প্রভৃতি প্রতি ক্ষেত্রেই ভুল ছিল। পদ্মা সেতুতে এ শিক্ষাগুলো নেওয়া হয়েছে কি না, সময়ই বলে দেবে।

মিহিপলি ও কাদার স্তর থাকা নদীগর্ভে টানেল না করে পিলার ব্রিজ কেন?

পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়ায় একটি বড় প্রশ্ন বিশেষজ্ঞরা কখনোই ওঠাননি, সেটা হচ্ছে মিহিপলিবাহিত এত বৃহৎ নদীতে টানেল না করে পিলার ব্রিজ করার যৌক্তিকতা। ভূমির এত গভীরে বড় ধরনের কাদার স্তরে গভীরতম পিলার ব্রিজ করার যৌক্তিকতা আসলে কোথায়? আমাদের বিশেষজ্ঞরা পদ্মার তলদেশের ভূগঠন সম্পর্কে ওয়াকিফহাল ছিলেন কি? চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও নেদারল্যান্ডসের বাস্তবতা বলেছে, এ ধরনের ভূ-গঠনে পিলার ব্রিজের পরিবর্তে ব্রিজ ট্রানেল বা টিউব ব্রিজ হওয়াটাই বেশি যুক্তিযুক্ত ছিল এবং পদ্মার প্রাথমিক খরচের সমীক্ষাগুলোতেও টানেল ব্রিজের সম্ভাব্য অপশন রাখা ছিল। ২০০৭ সালে বেশি খরচ হবে বলে (আনুমানিক ২৮ হাজার কোটি টাকা) টানেল ব্রিজের প্রস্তাব বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞরা বিবেচনায় আনেননি, অথচ সেতুর মোট কাজের তিন-চতুর্থাংশ শেষে আমরা দেখছি খরচ প্রায় সাড়ে ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়াতে যাচ্ছে। তথাপি নিখুঁত ও টেকসই অবকাঠামো নির্মাণের জ্ঞানগত ও ব্যবস্থাপনাগত ব্যর্থতাগুলো থেকে আমরা কি আমাদের ভবিষ্যৎ অবকাঠামো নির্মাণে পর্যাপ্ত শিক্ষা নেব?

‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও বাংলাদেশ’ গ্রন্থের রচয়িতা
টেকসই উন্নয়নবিষয়ক লেখক
[email protected]

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৮

আমি সাজিদ বলেছেন: অনেক কিছু জানতে পারলাম। আসলে আমাদের মিডিয়াও পদ্মা সেতু নিয়ে এই প্রশ্নগুলো করে নাই৷ স্প্যান বসানোকে রাজনৈতিক উৎসব বানিয়ে ফেলার পেছনে মিডিয়ারও দায় কিছুটা৷ অনেক স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন আপনি। আপনাকে ধন্যবাদ৷ আপনার বইটি সংগ্রহ করার ইচ্ছে রইলো।

২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৩৫

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: তথ্যবহুল পোষ্ট।
শুভেচ্ছা রইল।

৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩০

আহমেদ জী এস বলেছেন: এক নিরুদ্দেশ পথিক ,





নির্মান সংক্রান্ত যে সব তথ্য তুলে ধরেছেন এবং সঠিক-বেঠিকের যে প্রশ্ন তুলেছেন তা নিঃসন্দেহে ভয়ঙ্কর। আমাদের বিশেষজ্ঞরা আসলেই কিছু জানেন বা বোঝেন কিনা কিম্বা নির্মান প্রকল্পগুলির সুদূর প্রসারী উপযোগিতার লক্ষ্য নির্ণয়ে জ্ঞান রাখেন কিনা , আপনার এই লেখার পরে আতঙ্কিত ভাবে তা নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবতেই হচ্ছে।

লেখায় +++++

১৩ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:০৪

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আতঙ্ক ছড়াতে চাই না। চাই ভবিষ্যতের প্রকল্পে যাতে শিক্ষা নেয়া হয়। নতুন অবকাঠামো যাতে টেকসই হয়, সেটাই মূল কামনা।

৪| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: আমি আশাবাদী।

আসলে আমাদের অবস্থা হয়েছে এমন- কানা চায় দুই চক্ষু দান।

৫| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:০০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: অনেকগুলো মেগা প্রকল্প এখন সরকারের হাতে।পদ্মা সেতু সুরুতেই একটা হোঁচট খায়,সেই থেকে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে।ঢাকা মেট্রোরের সময়ের আগেই শেষ হবে শুনলাম।

৬| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৫৮

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: পদ্মার আরেক নাম কীর্তিনাশা!! পিলারের নিচে কাদামাটির স্তর পাওয়া গেছে--বড় ধরনের দূর্ঘটনার শিকারে পরিণত হলেও প্রকল্পের বোদ্ধারা চেয়ারে বাউন্স খাবে নতুন আশায়। এক্ষেত্রে ট্যানল বা টিউব পদ্ধতিই হয়তো যুক্তিযুক্ত হতো।

---তথ্য উপাত্তে আতঙ্কি।

৭| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:২৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: তথ্যবহুল লেখা তবে চিন্তার কারণ খুবই ভয়ংকর । সবাই বলছে সুন্দর বনের পাশে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করলে বনের ক্ষতি হবে সরকার বলছে কিছু হবে না এমন আর কি । সময় বলে দিবে সত্য মিথ্যা।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:০৮

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আতঙ্ক ছড়াতে চাই না। চাই ভবিষ্যতের প্রকল্পে যাতে শিক্ষা নেয়া হয়। নতুন অবকাঠামো যাতে টেকসই হয়, সেটাই মূল কামনা।

৮| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩২

নতুন বলেছেন: সমস্যা যেমন আছে সমাধানও আছে।

বড় কোন প্রকল্পই নিখুদ ভাবে হয়নি। চাদে এপযন্ত যতগুলি মিশন হয়েছে তার ৪০% প্রজেক্ট ফেল করেছে।

আমি আশাকরি পদ্মাসেতু অবশ্যই সফল হবে বর্তমানের সমস্যা কাটিয়ে উঠবে।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:০৫

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আমি আশাকরি পদ্মাসেতু অবশ্যই সফল হবে বর্তমানের সমস্যা কাটিয়ে উঠবে।

৯| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:১৪

করুণাধারা বলেছেন:  "পর্বতের মূষিক প্রসব!" বিশাল ব্যয় করে বিরাট প্রকল্প হাতে নেয়া হলো, অথচ নকশা প্রণয়নের সময় অজস্র ত্রুটি রেখে দেয়া হলো! এসব ভুল ক্রমাগত  সংশোধন করতে করতে হয়তো একসময় সেতু তৈরি হবে, কিন্তু তার কার্যকারিতা বজায় রাখতে শ্রম, সময় আর অর্থব্যয় বেড়েই চলবে!!! এত বড়ো প্রকল্পের নির্মাণ কাজ এত অপরিকল্পিত ভাবে হচ্ছে, কোন ধারনাই ছিল না। আপনার তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। খুবই অবাক লাগছে, ৪২ টা পিলারের মধ্যে মাত্র ১১টার সয়েল টেস্টিং করা হয়েছে!!! এর ফলে ৩১টা পিলারের যে ডিজাইন করা হয়েছে তা ত্রুটি যুক্ত, সন্দেহ নেই। এখন যদি একটা পিলারও মাত্র দুই ইঞ্চি রিভার বেডে দেবে যায়, তাহলে সেতুর অবস্থা কী হবে? এই ধরনের অবকাঠামো নির্মাণের প্রতিটি স্তরেই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নিরীক্ষা করা দরকার, আপনার পোস্ট পড়ে বোঝা গেল তা করা হয়নি।

আরেকটা কথা মনে হচ্ছে, আমাদের দেশের প্রকৌশলীদের কাজ কি কেবল বিদেশি পরামর্শকদের কথা শুনে চলা? এত বছরেও কি এদেশের প্রকৌশলীরা কি নিজেদের কর্মক্ষেত্রে কোনরকম দক্ষতা অর্জন করতে পেরেছেন!! দেশে কত অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে, নির্মাণ কাজে তাদের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস দিনে দিনে বাড়ার কথা, অথচ তা যেন কমেই চলেছে!! অথচ তিস্তা ব্যারেজের মত বিশাল প্রকল্পের নকশা এবং নির্মাণ পুরোটাই দেশের প্রকৌশলীরা করেছেন, নির্ধারিত সময় এবং অর্থ ব্যয়ে... পোস্টের বিষয়ের সাথে কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক হলেও একথা মনে এলো দেখে বললাম

 আশির দশকে যখন পদ্মা সেতুর ফিজিবিলিটি স্টাডি হচ্ছিল তখন ডা. আইনুন নিশাত বলেছিলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সহজ হবে না কারণ পদ্মার পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ যেহেতু আমাদের হাতে নেই ( ফারাক্কা বাঁধের জন্য) তাই সেডিমেন্টের পরিমাণ নির্ধারণ করে ইরোশন মাপার উপায়ও নেই । সেতুর নকশা প্রণয়নের সময় কি এই বিষয়টা বিবেচনা করা হয়নি! ইনস্টিটিউট অফ ওয়াটার মডেলিঙ নামের প্রতিষ্ঠানের কাজ হচ্ছে নদীর বিভিন্ন জায়গায় তলদেশের পরিবর্তনের গাণিতিক মডেল তৈরি করা!! তারা কি করেছিলেন? নদী ভাঙ্গনের পূর্বাভাস তাদের দেবার কথা।

পিলারের নিচে ইরোশন হলে আবারও জোড়াতালি দিয়ে সেতুর রক্ষণকাজ চালাতে হবে। আজ থেকে বিশ বছর পর হয়ত দেখা যাবে, মাঝে মাঝেই "সেতু মেইনটেনেন্স এর কাজ চলছে" নোটিশ দিয়ে সেতু বন্ধ করে রাখা হয়েছে!!

শেষ প্যারায় যা বলেছেন, সীমিত জ্ঞানের জন্য তার অনেক কিছু বুঝতে পারিনি। তবে নিবন্ধের বাকিটুকু পড়ে যা বুঝলাম, নানারকম ত্রুটি নিয়েই আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু তৈরি হচ্ছে!

এমন তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট পড়ে পদ্মা সেতু সম্পর্কে অজানা অনেক কিছু জানা হল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:০৬

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: আরেকটা কথা মনে হচ্ছে, আমাদের দেশের প্রকৌশলীদের কাজ কি কেবল বিদেশি পরামর্শকদের কথা শুনে চলা? এত বছরেও কি এদেশের প্রকৌশলীরা কি নিজেদের কর্মক্ষেত্রে কোনরকম দক্ষতা অর্জন করতে পেরেছেন!! দেশে কত অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে, নির্মাণ কাজে তাদের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস দিনে দিনে বাড়ার কথা, অথচ তা যেন কমেই চলেছে!! অথচ তিস্তা ব্যারেজের মত বিশাল প্রকল্পের নকশা এবং নির্মাণ পুরোটাই দেশের প্রকৌশলীরা করেছেন, নির্ধারিত সময় এবং অর্থ ব্যয়ে... পোস্টের বিষয়ের সাথে কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক হলেও একথা মনে এলো দেখে বললাম।

আশির দশকে যখন পদ্মা সেতুর ফিজিবিলিটি স্টাডি হচ্ছিল তখন ডা. আইনুন নিশাত বলেছিলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সহজ হবে না কারণ পদ্মার পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ যেহেতু আমাদের হাতে নেই ( ফারাক্কা বাঁধের জন্য) তাই সেডিমেন্টের পরিমাণ নির্ধারণ করে ইরোশন মাপার উপায়ও নেই । সেতুর নকশা প্রণয়নের সময় কি এই বিষয়টা বিবেচনা করা হয়নি! ইনস্টিটিউট অফ ওয়াটার মডেলিঙ নামের প্রতিষ্ঠানের কাজ হচ্ছে নদীর বিভিন্ন জায়গায় তলদেশের পরিবর্তনের গাণিতিক মডেল তৈরি করা!! তারা কি করেছিলেন? নদী ভাঙ্গনের পূর্বাভাস তাদের দেবার কথা।

এই বিষয়গুলোতে আলোচনা হওয়া দরকার, দরকার বুঝাপড়া।

১০| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৫৫

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ! খুবই ভাল লিখেছেন।
রেললাইন বসানোর কাজ দ্রুত চলছে।
ত্রুটিপূর্ণ নকশার কারণেই সময় যেমন বেশি লাগলো তেমনি ব্যয়ও বেড়েছে অনেক।
আমাদের এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বিশাল ব্যয় আমাদের শিক্ষা ও চিকিৎসাখাতে প্রভাব ফেলেছে।
যদি ছয় লাইনের হতো তাহলে আরো ব্যয়ই বৃদ্ধি পেতো।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:০৭

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: ত্রুটিপূর্ণ নকশার কারণেই সময় যেমন বেশি লাগলো তেমনি ব্যয়ও বেড়েছে অনেক।

১১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এমন আত্মঘাতি পথে বুঝি বাঙালী ছাড়া আর কেউ হাটে না!

তথ্যবহুল যুক্তিপূর্ণ পোষ্টে+++

আমাদের দেশপ্রেম কি কেবলই চেতনায় ঘোরাচ্ছন্ন?
প্রকৃত দেশপ্রেম কি জাগবে না?
এত এত ভুল নিয়ে এতবড় মেগা প্রোজেক্ট কিভাবে বাস্তবায়িত হয়!!!
ভবিষ্যতের যে কাল।পনিক দৃশ্য অনুভবে আসে- তা আতংকজনক বৈকি!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.