![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষ হিসেবে একটু ভাবুক টাইপের , যেসব ভাবনার সমাধান আগে হয়নি আর সামনেও হওয়ার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই ।
কিভাবে ভোরের কুয়াশা দেখবেন ?
+++++++++++++++++++++++
ফেরদৌস আলম
হয়তো শিরোনাম দেখে ভাবছেন , ভোরে উঠলেই তো ভোরবেলা কুয়াশা দেখা যায় ! কিন্তু সারারাত নেট ঘাটাঘাটি করে খুব ভোরে পাখির ডাক শোনার অভ্যাস আমাদের কয়জনেরই বা আছে ? যাইহোক, কাল রাতে যে পোস্টটি করেছিলাম তা ছিল এরকম - “ মানুষের জন্য দুটি কাজ ভয়ংকরভাবে কঠিন ।১. কোন ভালো অভ্যাস স্থায়ীভাবে গড়ে তোলা । ২. কোন মন্দ অভ্যাসকে চিরস্থায়ীভাবে ত্যাগ করা ।” এই দুটিকেই আমরা ‘ এক ঢিলে দুই পাখি মারা’র কৌশলে সমাধান করতে পারি । তাহল “ প্রতিটি খারাপ অভ্যাসের জায়গায় একটি করে ভাল অভ্যাস গড়ে তুলা ।” আনা ফ্রাংক তার ডায়েরীতে বলেছে “ প্রতিনিয়ত ভাল হওয়ার চেষ্টা করি ।” আর চীনা প্রবাদে আছে- “ মানুষ আসলে যা জানে সে আসলে তা নয়; মানুষ যা চিন্তা করে এবং যে সকল কাজ করে সে আসলে তাই । ” সুতরাং ভালো হওয়ার পথ শুধু ভালো কাজ করার মাধ্যমেই পাড়ি দেয়া যায় আর সেটা মানুষের কাজের এই ধারাবাহিকতার মধ্যে বিরাজমান । ধারাবাহিকতা বা অভ্যাসে পরিণত করা ছাড়া কোন বড় কাজে সফলতা পাওয়া যায়না । একটা বিষয় খেয়াল করবেন, আমরা সবসময় অনেক বড় বড় অপরাধীদেরকে প্রচণ্ড ঘৃণা করি । কিন্তু একবারও কি ভাবি, তার এই নিকৃষ্ট অর্জনগুলোর পেছনেও তার দীর্ঘদিনের অমানুষিক পরিশ্রম, ঝুঁকি, জীবনের স্বাভাবিক সুখগুলোর বিসর্জনসহ কত ত্যাগ আছে । দিনের পর দিনে তাকে কষ্ট করে নেতৃত্ব দেয়ার বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে হয়েছে । হয়তো পালিয়ে থাকতে হয়েছে দিনের পর দিন , যেখানে সেখানে রাত কাটাতে হয়েছে, মন থেকে দয়া মায়ার মত জিনিস ঝেড়ে ফেলতে হয়েছে । এই খারাপ কাজগুলোর ভয়ানক অভ্যাসই তাকে ভয়ানক এক জগতের অধিপতি বানিয়ে দিয়েছে; এমনি এমনি হয়নি তো বটেই ।
যাইহোক, মূল প্রসঙ্গে আসি । ভাল ভাল কাজ করলেই খারাপ কাজগুলো পালাবে আমাদের কাছ থেকে এবং তখনই আমাদের অভ্যাসগুলো ভালো অভ্যাসে রুপান্তরিত হবে । আমার কাছে এর দুটো পথ আছে । প্রথমটা কোয়ান্টাম মেথড থেকে পাওয়া । তাই তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা রইলো । উপায়টি এরকম – যে ভাল কাজটি করবেন তার জন্য নিজেকে নিজেই পুরস্কৃত করা । সে পুরস্কারটা ছোট হলেও সমস্যা নেই । ধরুণ, অনেক বিখ্যাত একটি উপন্যাস আপনি পড়তে চাচ্ছেন । কিন্তু একটানা পড়তে বা শেষ করতে আপনার বিরক্তি লাগছে । আপনি নিজেকে বলতে পারেন – এই বইটি শেষ করতে পারলে আরেকটি নতুন বই নিজেকে উপহার দিব । এখানে পুরস্কার হিসেবে বইয়ের বদলে আপনার অন্য প্রিয় কোন জিনিসও দিতে পারেন । দেখবেন আপনি বইটি শেষ করার পর ঐ পুরস্কারটি পেয়ে আপনার কি অসীম আনন্দ হচ্ছে ! এরপরে দ্বিতীয় কোন কাজের জন্যও ঐ রকম আরেকটি পুরস্কার রাখুন ।পুরস্কারের আশায় আশায় একসময় কাজগুলো আপনার অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় উপায় – ‘প্রনোদনো টেকনিক’ । এটি পেয়েছি ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করে । এটি টাইমার সিস্টেমের মত । এটি সাধারণত পড়ার ক্ষেত্রে ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে । ধরুণ , আপনি পাঠ্যবইয়ের কঠিন একটি অধ্যায় শেষ করতে চাচ্ছেন । মোবাইল বা কোন টাইমার মেশিনে ৩০ মিনিট টাইম ফিক্সড করলেন । এই সময় আপনি মোবাইল বা অন্য কোন কাজে হাত দিবেন না , বাহিরের কোন বিষয় নিয়ে চিন্তা করবেন না , নিজের নাক , কান বা শরীর চুলকাবেন না । আপনি শুধু ভাববেন যেকোন মূল্যে আপনাকে এই ৩০ মিনিটের মধ্যে অধ্যায়টি শেষ করতে হবে । আর একবার শেষ করতে পারলেই দেখবেন আপনার আত্মবিশ্বাস কতগুণ বেড়ে গেছে ! এই টেকনিকটা আমরা বড় কোন লক্ষ্য অর্জনেও অবশ্যই ব্যবহার করতে পারি । তা এভাবে – ১. লক্ষ্যের জন্য সময় নির্ধারণ । ২. এই সময়ের মধ্যে অন্যকোন অপ্রয়োজনীয় বিষয়ের প্রতি খেয়াল না করা এবং হাল ছেড়ে না দেয়া এবং ৩. প্রতিদিনই সেই লক্ষ্যের জন্য পর্যাপ্ত সময় কাজ করা । এই দুটো পন্থায় আমরা খারাপ বা মন্দ অভ্যাসের জায়গায় প্রতিদিন ভালো অভ্যাসে পরিণত করতে পারি এবং সঠিক লক্ষ্যে পৌছতে পারি । তবে এর বাইরেও একটি পন্থা আছে – তা হল, নিজের কাজকে ভালোবাসা । তবে ভালোকাজকে প্রথম প্রথম ভালোবাসাও বেশ কঠিন যেমন তেঁতো জিনিসকে পছন্দ করা । তবে প্রত্যেক তেঁতো জিনিসই সবচেয়ে বেশী কাজে লাগে কিন্তু আমরা বুঝি সময় চলে যাওয়ার পরে । তখন হয়তো লালন সাইজির গানটাই মনে পড়ে “ সময় গেলে সাধন হবেনা, তুমি দিন থাকিতে দিনের সাধন কেন করলে না ?”
©somewhere in net ltd.