![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষ হিসেবে একটু ভাবুক টাইপের , যেসব ভাবনার সমাধান আগে হয়নি আর সামনেও হওয়ার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই ।
জটলা পাকা মানুষগুলির মধ্যমনি চুলে জটপাকা ঐ তেজস্বী বৃদ্ধটার জন্য পিশাচের মত রক্ত-ক্ষুধা ছাড়া আপাতত মস্তিস্ক আর কিছুই বিবেচনা করতে পারছেনা । খুনটা হবেই; মানে করতে হবেই ! বিকল্প নেই, হবেও না আর । যে অপরাধ তাতে মৃত্যুদণ্ডই তার প্রাপ্য এবং তা পুরোপুরি ন্যায্য । কী হবে এই খুনটা হলে ? পাল্টা মৃতুদণ্ড ! হাসি পায় এই নিস্তব্ধ রাতে । সে হাসির প্রতিধ্বনি কেমন ভুতুরে হয়ে উড়িয়ে দেয় নিশাচর কিছু বাঁদরকে ! পাল্টা মৃতুদণ্ড তো তার অনেক আগেই হয়ে গেছে । এখন সেই আমি জীবন্মৃত ! শুধু মাত্র ঐ গণকটার জন্যেই । যার গোঁফের কারণে ঠোট দুটোই ঠিকমত দেখা যায়না সে আবার অন্যের ভবিষ্যত কীভাবে দেখে এটাও একটা রহস্য । ওর বোঝা উচিত ছিল এই হাতটা দেখে তার বিদ্যের বাহাদুরি দেখানো খানিক সময়ের জন্য চেপে যাওয়াই ভাল হবে-অন্তত একটা অপমৃত্যুর হাত থেকে বাচতে । বাড়িতে কে কে থাকতে পারে ওর ? তাদের অসহায়ত্ব কি খুব চরম ? বুড়োর নিজেরই এটা মাথায় রাখা উচিত ছিল যে তার অবর্তমানে এরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে । অন্তত আমার হাত দেখার পরে ভবিষ্যদ্বাণী করার আগ মুহুর্তে বিশেষভাবে আরেকবার ভাবাই ছিল বুদ্ধিমানের কাজ । ওর পরিবার নিয়ে চিন্তা করে লাভটা কী-পৃথিবী কারো জন্যেই তো কখনোই থেমে থাকেনি আর থাকবেও না । গতি একটা হবে ।
যখন মাধ্যমিকের ছাত্র ছিলাম, তখনই তো একবার সেই তো বলেছিল – বালক, তুমি স্ট্যান্ড তো করবেই ! আমার মেধা-তরবারির ঝলকানি মনে হয় একটা খোপ থেকে বেরিয়ে এসে এমনভাবে তাকে শাসিয়ে দিয়েছিল যে, সে নিমিষেই বুঝে গিয়েছিল । সেই কল্পিত তরবারিটাই আজ তার মৃত্য পরোয়ানা জারি করা দেবদূত ! আমি স্ট্যান্ড করলামই বটে ! প্রায়ই তার জটপাকা চুলগুলো ভেসে আসতো মনের চিত্রাকাশে । যে এতকিছুর খবর বলে দিতে পারে সে তার ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেনা কেন । অন্তত চুলের জটতো ছাড়াতে তো পারবে ! নাকি করেনা ইচ্ছা করেই । সেই ইচ্ছাটা জন্মেই বা কোথা থেকে ? নিজেকে সুন্দর দেখতে কে না চায় ? আর স্বেচ্ছায় অবয়বে কালিমা লেপন ! অবাককরা কাণ্ড ! ছেড়া কাপড়, তালি দেয়া ঝুলি, জটাচুল, অনবরত উদোম রাখা বিশ্রী রকমের নোংরা পা, দিনের পর দিনের গোসল না করা আরো ..... ওয়াক থু ! না, খুনটা করলেই কেবল এর একটা বিহিত হবে ।
প্রায় বছর তিনেক পরে আবারও দেখা ! হাত দেখালাম । ও বলেছিল, আমি নাকি সীমা ছাড়িয়ে যাব অবাধ্যতায় ; বাবা আর মাকে অসম্মান আর অপমান করার ক্ষেত্রে ! সবগুলো লোম একসাথে খাঁড়া হয়ে গেল, চোখদুটো বেশ বড় বড় হয়ে গেল ! কপালের চামড়া কুঁচকেও গেল আমার ! বলে কী ! অসম্ভব ! মিথ্যা এ সবকিছু । প্রতিদিন বাহির থেকে এসে ধুলি-মাখা ঠোটে যে মাকে চুম্বন করে আদরের পরশ পাই, তার সাথে গলা উঁচিয়ে কখনো আমিই নাকি ........ ! ধুত্তুরি, ভুয়া গনক ! তাহলে স্ট্যান্ড করার ব্যাপারটা ? আরে ওটা আন্দাজে ঢিল মারছে ! মনকে প্রবোধ দিই ! কিন্তু অবচেতন মন যেন দিনের পর দিন ঐ শয়তান গণকটার কথায় সায় দিতে লাগলো । ও কি আসলে গণক নাকি ....... শয়তান ! আরও ভাবলাম, রাতে রুমের লাইট নিভিয়ে দিয়ে, শশ্মানে অমাবস্যায় একা একা বসে । কেন জানি আমার কাছে ধরা দিল – সে আসলে মানুষ নয় , কোনভাবেই নয় । এবং সে আমাকেও রুপান্তরিত করছে একটা আস্ত শয়তানেরই সাগরেদে । কারণে অকারণে মা’র সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করলাম ! তার চাইতে তীক্ষ্ণ তীরের মত বাণ । পক্ষাগাত-গ্রস্ত মা বিছানায় থাকল প্রায় বারটা বছর । অভাবের তাড়নায় নিজে খেয়েও মার কোন খোঁজ নেইনি । আইসক্রিমের ফ্যাক্টরির আয়ে এক হালি সন্তান আর সংসার কলকাতায় কী যে বীভৎস জীবন ! মা’র পেটের চামড়া পিঠের সাথে লেগেই গিয়েছিল শেষ দিকে । প্রথম দিকে একটু একটু খোঁজ নিতাম কিন্তু দেখতাম মনটা তখনও আবেগহীন । মায়ের সাথে কথা বলার সময় দীর্ঘ হলেই আবারো তা মাকে আঘাত করত পাহাড় থেকে বেয়ে আসার মত পাথরের মত ! মাকে ছেড়ে আসলেই ঐ বুড়োটার ভবিষ্যদ্বাণী মনে পরে ! নাকি অবচেতন মন বা বৃদ্ধ তা মায়ের সাথে সাক্ষাতের সময়, কথাবার্তার সময় ঐ ভবিষ্যদ্বাণীটা আমায় দিয়ে প্রতিফলিত করে । শেষে মা যখন ইহলৌকিক জীবন আর ছেলের কুৎসিত আচরণ উভয় থেকে বিদায় নিল তখনই সিদ্ধান্তে আসলাম – জ্যোতিষীর মৃত্যুদণ্ড পাওয়াই উচিত ! ঘন জঙ্গলের যে কুটিরে ওর বসবাস ছিল সাধনার জন্য, ওটাতে যেদিন গেলাম খুন করার জন্য সেদিনও অমাবস্যা ! ভয় ডর নেই যেমন তেমন নিজেই তো অমাবস্যা আমিও তখন ! আমাকে দেখে বুড়ো বলল, তুমিই আমার স্থলাভিষিক্ত !
- মানে ?
- আমিও আমার মাকে এমন করে পৃথিবী থেকে নরপশুর আচরণ করেই বিদায় দিয়েছি !
- আমাকে দিয়ে কেন তা করালে ?
- শয়তানী খায়েশ আমার ! ইচ্ছে পূরণ !
- মরতে যাচ্ছ , জানো ?
- হুম, এভাবে মেরেওছি এক শয়তানকে !
একবার এক খুনি গাড়িতে পাশে বসে গল্প করছিল । চাকুটা গলার নিচ দিয়ে বাম পাশে একটু চাপ দিয়ে চালালেই মৃত্যু নিশ্চিত ! আমিও চালালাম !
পরের দিন মায়ের কবরের পাশে দাড়ালাম । কাঁদলাম , বৃষ্টি নামলো অঝোরে ! মায়ের হাতের শেষ চিঠিতে লেখা পেলাম, “ বাবা, তোর সুস্থতা কামনা করছি, নিজের মৃত্যুর বিনিময়ে হলেও ! তুই সুস্থ হবিই ! আমার দোয়া ও আশীর্বাদ থাকলো ।” আমি কি তাহলে অসুস্থ ছিলাম ? কতদিন ?
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:২৯
ফেরদৌস প্রামানিক বলেছেন: ওকে'র জন্যও আপনাকে থ্যাংকসসহ ওকে !
২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৩৬
বিজন রয় বলেছেন: জ্যোতিষী না ভন্ড?
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৫৮
ফেরদৌস প্রামানিক বলেছেন: ভণ্ড অবশ্যই !
৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৭:০৭
কালনী নদী বলেছেন: ভন্ড বলেন আর যাই বলেন গল্পটা কিন্তু ভয়ঙ্কর আর মায়ের সাথে ঘটে যাওয়া ব্যাপারটা সত্যি দুঃখজনক। কেউ অসুস্থ্য হয়েও যেন এমনটি না করেন।
সংগ্রহে নিলাম অদ্ভুত এই গল্পটি।
১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৩৭
ফেরদৌস প্রামানিক বলেছেন: আপনার এই দারুণ মন্তব্যটি পড়ে সত্যি অসম্ভব ভালো লাগলো! কেননা গল্পের ম্যাসেজটা আপনি পুরোটাই ধরতে পেরেছেন! অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা রইলো!
৪| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:৪২
মহা সমন্বয় বলেছেন: প্রতিটি জ্যোতিষীই আস্ত একটা ভন্ড এ ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নাই।
যদিও তারা পেটের দায়েই জ্যোতিষীগিরী করে আর জ্যোতিষীগিরী করাটা খুব একটা সহজ কাজও না সবাই তা পারবে না।
কিছু ক্ষেত্রে জ্যোতিষীদের আমি সাপোর্ট করি মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টি কোন থেকেই।
২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৪:১১
ফেরদৌস প্রামানিক বলেছেন: এ ব্যাপারে আমিও আপনার সাথে একমত।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:২৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
যাক, কিছু একটা লিখেছেন, ওকে