![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা কত বোকা। এত বছর কেটে গেল অথচ আমরা কোনো দিনই জানলাম না যে ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের লাহোরে ইসলামি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যান, তাঁর সফরসঙ্গীদের মধ্যে শাহ্ আজিজুর রহমান ছিলেন। শুধু আমরাই বোকা নই। সেই পাকিস্তান সরকারও বুঝতে পারল না, যখন জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানালেন যে ওই বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে শাহ্ আজিজও রয়েছেন। তাঁদের চোখ কীভাবে শাহ্ আজিজ এড়িয়ে গেলেন? এই শাহ্ আজিজই আড়াই বছর পূর্বে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে পাকিস্তানি দলের প্রধান হয়ে নিউইয়র্ক গিয়েছিলেন। সেই শাহ্ আজিজ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে লাহোরে অবতরণ করলেন, আর এই সত্যটি পাকিস্তানিরা বুঝতেই পারল না? এখন প্রশ্ন ওঠে যে স্বয়ং বঙ্গবন্ধু ও তাঁর দলে অন্যরা যাঁরা ছিলেন—কামাল হোসেন, তাহেরউদ্দিন ঠাকুর, তোফায়েল আহমেদ, তোয়াব খান—তাঁরাও বুঝলেন না যে তাঁদের সঙ্গে শাহ্ আজিজও রয়েছেন?
এত বোকা আমরা কী করে হলাম? সেদিন যদি বিএনপির সংস্কারবাদী নেতা নরসিংদীর সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল জাতিকে টেলিভিশনের মাধ্যমে না জানাতেন যে শাহ্ আজিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে জাতির জনক পাকিস্তানে গিয়েছিলেন, আমরা সবাই গভীর অন্ধকারে রয়ে যেতাম। তিনি পর পর দুই দিন চ্যানেল একাত্তরে এই তথ্যটি আমাদের জানিয়েছেন। প্রথম দিন যখন তিনি এই কথাটি বললেন তখন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা তোফায়েল আহমেদ তাঁর এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করলেন। এবং বকুল সাহেবকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মারলেন তাঁর এই তথ্যটি প্রমাণ করার জন্য। বকুল সাহেব একটু হকচকিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু পরক্ষণেই তিনি বিনীতভাবে চ্যালেঞ্জটি গ্রহণ করলেন। গত রোববার তিনি অনেক কাগজপত্র এবং কিছু ছবি নিয়ে আবার চ্যানেল একাত্তরে হাজির হলেন। ওই একই আলোচনায় আমাকেও ডাকা হয়। আরও ছিলেন আমার বন্ধু সাংবাদিক তৌফিক ইমরোজ খালিদী। ভিডিও সংযোগের মাধ্যমে তোফায়েল আহমেদও আলোচনায় উপস্থিত হন।
সাখাওয়াত হোসেন বকুল অনেকক্ষণ উইকিপিডিয়া থেকে পড়ে গেলেন এবং অন্য কাউকে কথা বলতে দিচ্ছিলেন না। তিনি বারবার বলে গেলেন শাহ্ আজিজ যে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে লাহোরে ছিলেন, সেই বিষয়টি তিনি প্রমাণ করবেন। গোটা অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেল, কিন্তু বকুল সাহেব কিছুই প্রমাণ করতে পারেননি। পারবেন কী করে? যে ঘটনা আদৌ ঘটেনি, সেটা সত্যি প্রমাণ করা যাবে কীভাবে। তিনি অনেক কিছু পড়ে গেলেন যার কোনোই অর্থ ছিল না। তিনি তোফায়েল সাহেবের প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যর্থ হলেন। তিনি একটুও ভাবলেন না যে তিনি এমন এক ব্যক্তির সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েছেন, যাঁর স্মৃতিশক্তি নিয়ে গোটা বাঙালি জাতি গর্ববোধ করে। তার চেয়ে বড় কথা, বকুল সাহেব ভুলে গেলেন যে এই তোফায়েল সাহেব নিজে ইসলামি সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে ছিলেন। যখন তোয়াব খান তাঁর বক্তব্য খণ্ডন করলেন, তখনো তিনি তাঁর ভুল তথ্য দিয়েই গেলেন। তাঁর কথা থামছিল না। তিনি বলেই চলেন যে তিনি তাঁর কথার প্রমাণ দেবেন। দিতে পারলেন না। কেন দিতে পারলেন না? হয়তো তিনি নিজেও ততক্ষণে বুঝে ফেলেছেন যে তিনি নিজেকে বেকায়দা অবস্থায় ঠেলে দিয়েছেন। তবু তিনি পরাজয় মেনে নিতে রাজি ছিলেন না। ভুলটা স্বীকার করে নিলে তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা বেড়ে যেত। তিনি ভুলের পক্ষেই কথা বলে গেলেন—কোনো প্রমাণ ছাড়া।
উঠে এল ছবির প্রসঙ্গ। তিনি দু-একবার বললেন তিনি জানেন শাহ্ আজিজ দেখতে কেমন ছিলেন। সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তিনি যে দুটো ছবি দেখালেন, প্রথমে তিনি সেগুলো দেখাতেই চাইলেন না সবার বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও—যেখানে কোনো শাহ্ আজিজ নেই। তিনি সে কথা মানতে রাজি নন। একটি ছবিতে একজন স্যুট পরিহিত মাথায় জিন্নাহ টুপি লাগানো এক ব্যক্তিকে দেখিয়ে বললেন, ‘এই যে শাহ্ আজিজ।’ অবাক হয়ে গেলাম। এই যদি মানুষের ইতিহাসবোধ হয়, এই যদি একজন রাজনীতিকের ইতিহাস বিশ্লেষণ হয়, তাহলে এই দেশের ভবিষ্যৎ কী হবে? বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে বিশ্বাস রাখলেই কি ঐতিহাসিক সত্যকে পরিহার করতে হবে? বকুল সাহেব তো ১৯৭৪ সালে আমাদের বয়সেরই ছিলেন। তবে তিনি কেন ওই ভুলটি করলেন। অথবা তিনি কেন বঙ্গবন্ধুকে ও বাংলাদেশের মানুষকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করলেন? জাতির পিতাকে তো ১৫ আগস্টের পর ওই বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদীরা বিভিন্নভাবে আক্রমণ করেছেন, কটাক্ষ করেছেন, তাঁর খুনিদের বিচার অনুষ্ঠিত হতে দেননি। কী কারণে এবং কিসের ভিত্তিতে বকুল সাহেব সেদিন একটি অসত্যকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছিলেন? ওই চ্যানেল একাত্তরের উত্তেজনাকর আলোচনায় প্রমাণ হয় কেন বকুল সাহেব ভুল জায়গায় ঢিল মেরেছেন। দুঃখ হয় তাঁদের জন্য যাঁরা এত গবেষণা করে তাঁকে এসব ভুল তথ্য এনে দিয়েছেন। এই যদি গবেষণা হয়, তাহলে দেশের ইতিহাস কীভাবে আমরা নিরাপদ জায়গায় রাখব?
ওই দুটি ছবির দিকে আমরা ফিরে যাই, যেগুলো বকুল সাহেব আলোচনার উপস্থাপন করেন। কিন্তু সবার অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি সেগুলো চ্যানেলের দর্শকদের দেখাতে অস্বীকার করলেন। আমাকে তিনি প্রথমে দেখাতে চাইছিলেন না। কেন ছবির ব্যাপারে তাঁর এত সতর্কতা অবলম্বন, তা তিনি নিজেই জানেন। নাকি তিনি বুঝে গিয়েছিলেন যে দর্শকেরাও সঙ্গে সঙ্গে ওই ছবিগুলো নাকচ করে দেবে? এবং সেটা করার যথেষ্ট কারণ ছিল। প্রথম ছবিতে ওই স্যুট আর জিন্নাহ টুপি পরিহিত ব্যক্তি হচ্ছেন পাকিস্তানের সেই সময়কার প্রেসিডেন্ট চৌধুরী ফজলে এলাহি। একজন প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদ হয়ে এই সত্যটি কেন বকুল সাহেব জানলেন না? আমি জানি, আপনি জানেন, আমরা সবাই জানি—বকুল সাহেব জানলেন না। তাঁর গবেষক দল যে কত কাঁচা কাজ করেছে এবং তাঁর কতটা ক্ষতি করেছে, এই বাস্তবতা হয়তো তিনি এতক্ষণে অনুধাবন করতে পেরেছেন। একই কথা ওই দ্বিতীয় ছবির বিষয়ে, যেখানে একজন হূষ্টপুষ্ট পাকিস্তানি প্রটোকল কর্মকর্তা, যিনি বঙ্গবন্ধুর ডান পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁকেও বকুল সাহেব শাহ্ আজিজুর রহমান বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। দুই ছবিতে দুই ব্যক্তি, একজন বয়স্ক অন্যজন মাঝারি বয়সের। একজন পাতলা অন্যজন বেশ স্বাস্থ্যবান। এই দুজনই নাকি শাহ্ আজিজুর রহমান। বললেন সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল।
পরিশেষে শুধু একটি কথা—আমি আনন্দিত যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এক নতুন ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হওয়ার আগেই আমরা সেই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিয়েছি। আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ শ্রদ্ধেয় তোফায়েল আহমেদের কাছে। আমি কৃতজ্ঞ তৌফিক ইমরোজ খালিদী ও চ্যানেল একাত্তর কর্তৃপক্ষের কাছে। অসত্যকে সঙ্গে সঙ্গে বিতাড়িত করতে হয়, তাঁরা তা-ই প্রমাণ করে দিয়েছেন।
আজ এই পর্যন্তই। ভবিষ্যতে আবার যদি কেউ ইতিহাস বিকৃত করার কাজে জড়িয়ে পড়ে, তখন আবার লিখব। বাংলাদেশের ইতিহাস কেউ বিনষ্ট করুক—এমন কাজ আমরা হতে দেব না। যে জয়বাংলা ধ্বনি ১৯৭১-এ তুলেছিলাম, সেই জয়বাংলা স্লোগানে, গানে, কবিতায়, অনুভূতিকে—আমাদের জীবন সমুন্নত থাকবে।
সৈয়দ বদরুল আহ্সান: সাংবাদিক।
২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৫:১১
নীল_সুপ্ত বলেছেন: Click This Link
রেফারেন্স সহ উল্লেখ আছে !
২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:২৬
াহো বলেছেন: দয়া করে ভুল রেফারেন্স দিতে না. বই সামনে পাতা জানাবেন. আমরা ক্রয় এবং চেক করবে.
৩| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৬:১৮
পিয়ার আহসান বলেছেন: prothom alo'r link disen! Ekhono prothom alo ke biswas koren, vai? Hehehehehe... Ora itihas lipiboddho kore na, ora itihas banay.
Sotto ke mittha bananor odvut dokkhota ache prothom alo ebong apnader!
৪| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৬:৪২
বহুরুপি জীবন বলেছেন:
আজ কাল এই ছবিটা নিয়ে বিতর্ক ।
৫| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৮:৫৫
জানপরী বলেছেন: Organisation of Islamic Cooperation
Main article: OIC
In 1974, then Prime minister Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, as an unanticipatable surprise, freed anti-liberation person Shah Azizur Rahman [4] and lead a Bangladeshi 7 member delegation team consisting Kamal Hossain,Enayet Karim,Ataur Rahman Khan,Taher Uddin Thakur,Tofail Ahmed and Shah Azizur Rahman under him [5], to the international meeting of the Organisation of the Islamic Conference (OIC, now the Organisation of Islamic Cooperation) held in Lahore. Following this participation Bangladesh was admitted as a member of OIC.
Source: Wikipedia
২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:২৭
াহো বলেছেন: any body can write and delete wiki . wiki also said this reference is controversial.
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৩:২৯
াহো বলেছেন:
প্রথম আলো
Click This Link