নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময় স্বল্প। জীবনটা সব বুঝে শুনে বলার জন্যে অনেক ছোট ... তবুও , আধবোজা চোখ নিয়ে লিখে যাই। মহাকালের খাতায় খুব সামান্য কিছু লিখে যাবার চেষ্টায় আছি। খুব সামান্য কিছু... অতি ক্ষুদ্র কিছু। ইমেইল- [email protected] / ফেসবুক- www.facebook.com/fkrocky
খাঁ খাঁ রৌদ্র
গাছের পাতাটাও নড়ছে না
পৃথিবী নিশ্চুপ অপেক্ষায়
একটা নাটক মঞ্চস্থ হবে – সবাই প্রস্তুত
নদীর পানি , তার স্রোতকে বেঁধে রেখেছে
আকাশের মেঘ খেলা বন্ধ করে তাকিয়ে ,
সবাই তাকিয়ে , নিথর অপেক্ষায়।
একটা উত্থিত , উদ্ধত রাইফেল
টগবগ করে ফুটতে থাকা
রক্তমাংসের পিছমোড়া কিশোর দাঁড়িয়ে।
কটকটে রঙের হলুদ দানবীয় উর্দি
সবুজের বুকে বড় বেমানান , বড় অপাংক্তেয়,
একটা গুলি চির অবিনাশী , সর্বগ্রাসী মৃত্যুক্ষুধা নিয়ে অপেক্ষায়,
কখন সে ছুটে যাবে – এফোঁড় ওফোঁড় করবে ।
মাথার প্রতিটা শিরা দপদপ করছে ,
সব মনে – পড়ছে , সব।
সাহানা – আর সেই নির্ঘুম রজনী
কুতকুতের ঢেলা নিয়ে সারাগ্রাম অস্থির দৌড়াদৌড়ি
দোলনার পিছে ... পুকুর পারে – কাঠফাটা রৌদ্রে গাছের উপরে –
আরো কত কি...
বুবুর জলপাই , মায়ের কত আনা যে চুরি করেছি
বাবার হুঁকায় কত লুকানো টান ,
রফিকের সাথে নতুন শেখা- বলাকার ধোঁয়ায় কত যে কেশেছি
কোথায় এখন তারা ...
দেশমাতৃকার ঋণ কি শোধ হতে চলেছে
শ্বাপদের নখর , ট্রিগার টেনে ধরেছে
ছুটে চলেছে – সর্বগ্রাসী ক্ষুধা নিয়ে – ছুটে চলেছে ,
ঠিক হৃদপিণ্ডের মাঝে ----- একটা ঝাঁকুনি।
চিনচিনে ব্যথা – সব পরিষ্কার।
ঐ-তো দূরের পাখিটা উড়ছে – দিগ্বিদিক কিছুই না বুঝে
অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে , পৃথিবী বিস্ময়ে
স্রস্টা কিভাবে সইলেন এই নিষ্ঠুরতা!
আবার একটা ঝাঁকুনি
সব স্থির , শব্দহীন হতে চলেছে
হাহাকার করে ছুটে ফিরছে – বুলেটের প্রতিধ্বনি
একোণ – থেকে ওকোণে – আর্জি নিয়ে,
কিন্তু কে শুনবে , কে বিচার করবে ।
একটা স্বপ্নের অবসান – কিংবা উত্থান ।
নদীর পানিতে ছুফ ছুফ শব্দ ,
চির-দুখিনী বাংলা মা আবার তার চিরদুখী সন্তানকে বুকে টেনে নিচ্ছে
চির-দুখিনীর তেরশো কান্নাধারার – যেকোনো একটিতে
আগলে নিচ্ছে – পরম মমতায় – পরম স্নেহে , একটুও যেন ব্যথা না পায়।
ছোট্ট একটা ঢেউ ,
লাল-রঙা পানি আরও লাল হল – তারপর ,
---- তারপর , আবার সব আগের মত।
দূরে হয়ত আরেকটি নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে।
পৃথিবী নীরব হয়ে অপেক্ষায় আছে – কেউ শব্দ করো না ...
_____________ *** __________
####একটা দশ পনেরো বছরের কিশোর যখন , দেশের জন্যে জীবন বিপন্ন করে ছুটে চলেছে – শত্রুর হাতে ধরা পড়ে – উত্থিত রাইফেলের সামনে গলা ফাটিয়ে স্লোগান দিয়েছে – কীজন্যে?
দেশকে ভালবেসে , ধর্ষিতা মা’দের পতাকা দিয়ে ঢেকে দেবার জন্যে , দেশের মানুষ দু’বেলা পেট ভরে খেয়ে – হাসিমুখে চলবে বলে... – অকাতরে কবিতার কিশোরটি যে কিনা প্রথম বলাকা ব্রান্ডের সিগারেটে টান দিতে শিখেছে – আর কিছু নয় – সে রাইফেল হাতে কচুরিপানায় মাথা ডুবিয়ে শত্রুকে শেষ করতে শিখেছে...শুধু মাত্র – একটা স্বপ্ন নিয়ে।আমি জানি স্রস্টা তাকে অনেক অনেক সুখে রেখেছে – কিন্তু সে এখনো কাঁদে – তার স্বপ্নকে এভাবে ভাঙতে – দেখে ।চুরমার হয়ে যেতে দেখে।লাখ লাখ মানুষ এখনো না খেয়ে ঘুমাতে দেখে।ক্ষমতার দণ্ডে – পশু হয়ে যেতেও ভ্রুক্ষেপ না করা দেখে।তাকে যারা মেরেছে – তারাই রীতিমত পতাকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখে।সে এখন কাঁদে – বৃষ্টি হয়ে যা ঝরে পড়ে আমাদের এই প্রাঙ্গণে।
তার সে স্লোগান এখনো – আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে ছুটে বেড়ায়।একটু কান পাতলেই শোনা যায়।কিন্তু , কে শোনে।
শুনলে কি আজকে – রাজপথে নেমে যুদ্ধে লিপ্ত হতে পারতো...
ঘাতকের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে পারতো...
ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে যেতে পারতো...
দেশকে বিকিয়ে দিতে পারতো ...
উৎসর্গঃ যারা এখন কান পাতলে সেই কিশোরের বুক ভেদ করা বুলেটের প্রতিধ্বনি শুনতে পান – এখনো সেই কিশোরের স্বপ্নকে অনুভব করেন।
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৮
মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই...
২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৩
মোঃ নাহিদ শামস্ বলেছেন: অসাধারণ একটি কবিতা।
এবং একইসাথে, খুব কষ্টেরও বটে।
৭১-এর নির্মমতাকে ফুটিয়ে তুলেছেন নিপুণ দক্ষতায়। পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের হাতে নিষ্ঠুরভাবে নিহত হয়েছে এরকম অসংখ্য কিশোর, ধর্ষিত হয়েছেন অগণিত মা-বোন।
আপনার লেখাটি পড়ে পুরো দৃশ্যটি যেনো চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছিলাম। তবে আপনার লেখার এই দৃশ্যপটটি কিছুটা জাফর ইকবালের 'আমার বন্ধু রাশেদ' গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র রাশেদের মৃত্যদৃশ্যের কাছাকাছি।
ভালো লাগলো। আরো লিখবেন।
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৭
মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: আসলে বিষয়টা এতোটাই হৃদয়গ্রাহী যে - সমস্ত চেতনা কেড়ে নেয় - চোখে পানি আনে -
আমি সেই ভাবটা ফুটানোর চেষ্টা করেছি - তবে পুরোপুরি পারি নি।
একটা কিশোর দেশের জন্যে অকাতরে জীবন দিয়ে দিচ্ছে - সে দেশে আজ আমরা কি করছি - ভাবতেও লজ্জা হয়।
আর ,হ্যাঁ ছাপটা আছে - জাফর ইকবাল তাঁর অসাধারণ লেখনী দিয়ে রাশেদের কথা আমাদের মনে করে দিয়েছিলেন ... শুধু রাশেদ বললে ভুল হবে - রাশেদদের
ধন্যবাদ।
৩| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯
মামুন রশিদ বলেছেন: অসাধারণ লিখেছেন ফজলুল করিম ভাই । লেখাটা পড়ে চোখ ভিজে গেল ।
ভালোলাগা ++
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৮
মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ মামুন ভাই...
আপনাদের মত মহৎ ব্লগারদের কাছে পেয়েই তো , এই ভার্চুয়াল হলুদ সামুর দেশে ফিরে ফিরে আসি...
৪| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৬
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: অসাধারণ
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৯
মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।
৫| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৩
স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:
দুর্দান্ত লিখেছেন ভ্রাতা।
অনেক অনেক ভাল লাগা জানবেন।
++++++++++
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১২
মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই ...
আপনার অন্তরঙ্গ আলাপন যেন বন্ধ না হয়...চলতেই থাকে।
৬| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০২
বোকামন বলেছেন:
হ্যাঁ ! এখন কান পাতলে সেই কিশোরের বুক ভেদ করা বুলেটের প্রতিধ্বনি শুনতে পাই – এখনো সেই কিশোরের স্বপ্নকে অনুভব করি প্রতিটিদিন ....
কবিতাটিতে ভালোলাগা নয় স্যালুট রইলো ।
এভাবেই লিখে যান এবং কিশোরের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখুন ।।
শুভকামনা ।।
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৭
মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: হ্যাঁ ভাই , সেই কিশোরের স্লোগান , বুলেটের শব্দ হারিয়ে যায় নাই - মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে নিলে - সেই শব্দ এখনো শোনা যায় ...
আসুন , আমরা সবাই মিলে সেই কিশোরের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখি...যে যে অবস্থান থেকে পারি।
৭| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৮
নেক্সাস বলেছেন: ভাল লিখা
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৮
মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: আপনাকে অনেক থ্যাঙ্ক ইয়ু...
৮| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৭
শিকদার ওয়ালিউজ্জামান বলেছেন: দূরে হয়ত আরেকটি নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে
পৃথিবী নীরব অপেক্ষায় আছে- কেউ শব্দ করো না...
স্মৃতিময় চিত্রকল্পের নিপূণ ব্যবহার!
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২২
মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: এই একটু - আধটু চেষ্টা করেছি ,
তবে যাই হোক , মুক্তি যুদ্ধ নিয়ে লিখবই ...
যেমনই হোক...
শুভেচ্ছা নিরন্তর ...
৯| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ঐ-তো দূরের পাখিটা উড়ছে – দিগ্বিদিক কিছুই না বুঝে
অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে , পৃথিবী বিস্ময়ে
স্রস্টা কিভাবে সইলেন এই নিষ্ঠুরতা!
আমরা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি কিন্তু আপনার লেখায় অনেকটা যেন প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলাম।
৩০ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২২
মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ... চেষ্টা করেছি...
আপনার উৎসাহ পেয়ে ভালো লাগছে...
১০| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৪
ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: ঠিক হৃদপিণ্ডের মাঝে ----- একটা ঝাঁকুনি।
চিনচিনে ব্যথা – সব পরিষ্কার।
ঐ-তো দূরের পাখিটা উড়ছে – দিগ্বিদিক কিছুই না বুঝে
অসাধারণ লিখেছেন ভাই, সালাম নেন! আপনার কবিতা পড়তে পড়তে আমিও চলে গিয়েছিলাম ওই কিশোরের সাথে!
আমরা তোমাদের ভুলি নাই, আমরা তোমাদের ভুলবো না!
৩০ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৩
মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: আসলেই আমরা তাদের কখনও ভুলবো না - তারা চিরকাল বেঁচে রইবে আমাদের এই বাংলার সবুজ প্রান্তরে ...
শুভেচ্ছা নিবেন ...
১১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০১
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
সাবিনা ইয়াসমিনের "রেল ঐ লাইনের মেঠো পথটার পাশে দাঁড়িয়ে" গানটা মনে পড়ছিল। ভাল হয়েছে লেখা।
৩০ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৪
মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই...
১২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১৭
আমিনুর রহমান বলেছেন:
... এবং অসাধারণ ফজলু ভাই। আগেই পড়েছিলাম কিন্তু কমেন্টস করতে এক্ট দেরী করে ফেললাম।
৩০ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৬
মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ...
অনেকদিন পরে ব্লগে ঢুকলাম তো , তাই কমেন্ট দিতে দেরী হয়ে গেলো
১৩| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৮
শায়মা বলেছেন: মন খারাপের লেখা।
ভাইয়া কেমন আছো?
১৪| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:৫৭
আরজু পনি বলেছেন:
নব্য দাস প্রথা ... আর আমাদের চিরনির্লজ্জ সর্বংসহা চোখের পাতা ......লেখাটাতে মন্তব্য করতে পারলাম না !
মন্তব্য করার সুযোগ বন্ধ !
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:২৭
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুব চমৎকার একটা লেখা!!