নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাতের সে রঙ্গিন ফানুসতো উড়বেই

Every word, every thought, and every emotion come back to one core problem: life is meaningless.

মুহম্মদ ফজলুল করিম

সময় স্বল্প। জীবনটা সব বুঝে শুনে বলার জন্যে অনেক ছোট ... তবুও , আধবোজা চোখ নিয়ে লিখে যাই। মহাকালের খাতায় খুব সামান্য কিছু লিখে যাবার চেষ্টায় আছি। খুব সামান্য কিছু... অতি ক্ষুদ্র কিছু। ইমেইল- [email protected] / ফেসবুক- www.facebook.com/fkrocky

মুহম্মদ ফজলুল করিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাদক নিয়ে ভুল ধারণা ভেঙ্গে ফেলুন , মাদকের ক্ষতিকর দিকগুলো জেনে নিন।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০৩



অতন্দ্রীলা , জাফর ছেলেটাকে চিনো ?



- হ্যাঁ হ্যাঁ , চিনবো না কেন?



- জাফর ছেলেটার সাথে ওইদিন দেখা হইছিল। শুকিয়ে স্লিম স্লিম ফিগারে এসে গেছে। আগেতো মোটা ছিল।



- ভালই তো জিম টিম করে মনে হয়।



- আরে নাহ , বলল ইয়াবা আর গাঁজা খায় নিয়মিত। ইয়াবা আর গাঁজা খাইলে বলে মানুষ স্লিম হয় , এখন তো দেখি সত্য ঘটনা।



অতন্দ্রীলা হাসতে হাসতে পড়ে যাওয়ার দশা হল। আমি তো বিষম খেলাম। হাসির কি হল এখানে। হাসি থামিয়ে কোনমতে বলল ,



- আচ্ছা মানুষ এত্ত বোকা হয় কেন ? জানো ইয়াবা কিংবা গাঁজা খেলে মানুষের দেহের মেদ কমে না , উল্টো মাংসপেশী শুকিয়ে যেতে থাকে। কল্পনা করতে পারো , একটা মানুষের মেদ নষ্ট হচ্ছে না , উল্টো মাংসপেশি শুকিয়ে যাচ্ছে।



আমি কল্পনা করেই ধাক্কা খেলাম। তবুও মেয়ে মানুষের সাথে তর্কে হারা চলে না। এতক্ষণ মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে থাকলেও , অতন্দ্রীলার সাথে টক্কর দিতে , মাদকসেবীদের পক্ষে চলে গেলাম। মেয়ে মানুষ আমাকে হারাবে , কাভি নেহি।



- আচ্ছা , অতন্দ্রীলা গাঁজা খেলে নাকি মাথা সম্পূর্ণ ক্লিয়ার হয় , ইয়াবা খেলেও নাকি ঘুম আসে না। ভালই লাগে , একটু আধটু খেলে কিইবা হয়। খাচ্ছে খাক না। ওতো দেখলাম , মোটামুটি সুস্থই আছে !



- সুস্থ... হুহ। শুনো , গাঁজা কিংবা ইয়াবা খেলে ব্রেইনে রক্তক্ষরণ পর্যন্ত হয়। চিন্তা করতে পারো রক্তক্ষরণ। ইয়াবা খাইতে খাইতে ব্রেইনের রক্তনালী ছিড়ে গিয়ে মানুষ মারাও যায়। সাময়িক একটা ধাক্কার অথবা মজার জন্যে - কোন মানুষ নিজের ব্রেইনে রক্তক্ষরণ ঘটায় না , বুঝলা।



- তাইলে , পড়ালেখা তো জাফর ভালই করে। ব্রেইনে তো সমস্যা নাই।



- শুনো ব্রেইনে রক্তক্ষরণ হইতে হইতে একটা সময় ব্রেইন অকার্যকর হইয়া যায়। এরপর , তুমি শত পড়া লেখা করতে গেলেও কিচ্ছু করতে পারবা না। কিছু মনেই থাকবে না। পড়ালেখা তো দূরে থাকা , সাধারণ কিছুও মনে থাকবে না। তুমি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একবার ওপেন কথাবার্তায় যাইয়ো। দেখবা , এরকম কত কেইস , কতজন বলতেছে।



- তাইলে তো শুনছি , ইয়াবা খাইলে জাইগা থাকা যায় , ভালো পড়ালেখা করা যায়!



- বাজারের গুজব। যারা বেঁচে তারাই এইগুলি ছড়ায়। এতক্ষণ কি বললাম। তুমি একজন ডাক্তারের কাছে যাও , উনি যদি এইটা বলে কিংবা কোন বইপত্র নেট থেকে পাওয়া তথ্য সার্টিফাই করে। আমি নিজে এখন থেকে মাদক নেয়া শুরু করবো। এমনটা হইলে , সবার আব্বা আম্মা জোর কইরা ছেলে পেলে দের ইয়াবা খাওয়াইতো। বলতো , "বাবা , একটু কষ্ট করে খেয়ে নে। আমি এলমোনিয়াম ফয়েল ধরছি , তোর আব্বা লাইটার ধরছে। এটা খাওয়ার পর , তোর বড় বোনে সুন্দর করে গাঁজা বানায়া আনতেছে , ওইটা টেনে পড়তে বয়!"

ডাক্তার বলবে না সিওর থাকো। অবশ্য , ডাক্তাররে তো আবাল মাদকসেবীরা বাপ জনমের শত্রু মনে করে। মনে হয় যে , ইয়াবা-গাঁজার সাথে ডাক্তারের জমি-জমা নিয়া বিরোধ।



- তাইলে জাফরের কি হবে?



- জাফরের মৃত্যু হবে। হয় আত্মহত্যা করে নয় অন্যভাবে। ইয়াবা গাঁজা বেশি করে খেলে আত্মহত্যা প্রবণতা বাড়ে। মানসিক ভারসম্য হারিয়ে যাইতে থাকে , শ্বাসকষ্টে পর্যন্ত মারা যাবে। হাত পায়ের পেশিগুলা আস্তে আস্তে অবশ হয়ে যাইতে থাকবে। ফুসফুসে ক্যান্সার হইবো। তোমরা পুরুষেরা যেটা নিয়া বেশি চিন্তিত , সেক্সুয়াল ক্ষমতা এক্কেবারে নষ্ট হইয়া যাবে। এখন তো বয়স কম , ইয়াবা নিয়া লিটনের ফ্ল্যাটে যাইতেছো। কয়েকবছর হইয়া গেলে টের পাইবা। ৮/১০ বছর হইলে তো ,পুরাপুরিই গন।



-ধুর , অতনি , এইডা বাদে কও। তোমার সাথে সেক্সুয়াল আলাপ করতে লজ্জা লাগে। এইটা করে প্রেমিক-প্রেমিকারা।



- তাই নাকি ! খেমটা খুলে নাচবা , আবার ঘোমটাও দিবা! আচ্ছা , বাদ দাও। যেটা বলতেছিলাম , একটা সময় হ্যালুসিনেশন হবে। উলটা পালটা দেখবে , শুনবে। প্যারানয়াও হবে। এটা হইলে , জাফর মনে করবে সবাই তাঁর সাথে শত্রুতা করতেছে। দুনিয়াতে তার কেউ নাই। মারামারি- কাটাকাটি-ভাংচুর এইসব শুরু করবে। ফ্যামিলিতে অশান্তি। বাপে বলবে ঘর থেকে বাইর হ , পোলায় নোপ! উলটা আর বিয়া কইরা একটা নিষ্পাপ মেয়ের জীবনের বারোটা বাজাবে। বয়সের শেষদিকে আইসা , পুরাপুরি মানসিক ভারসম্য হারাইয়া ফেলবে। আর একটা মূল কথাইতো বলা হয়নি - এরা অল্টাইম ডিপ্রেশনে ভুগবে। হতাশা , তীব্র হতাশা নিয়ে জীবন পার করবে।



- বুঝছি , এতকিছু বোঝানোর পরও তো ছাড়তে পারবে না। বলে আর কি লাভ , বলো। মধ্য দিয়া যারা খায় নাই জীবনে , যেমন আমি উপকার পাইলাম। ওরাতো ডুমড , জাস্ট ফাকড!



- কে বলছে তোমারে। এটা জানো , গাঁজা কোন ক্যামিক্যাল এডিক্টিভ জিনিস না। এটা অভ্যাসের আর মানসিক এডিক্টিভ। সিগারেটের মত। যে কেউ , জীবনের যেকোন পর্যায়ে নিজে নিজেই গাঁজা ছাইড়া দিতে পারবে। এটা ক্যামিক্যাল এডিক্টিভ না , মানে না খাইলে মইরা যাবা এই টাইপ না। মানসিক ব্যাপার সম্পূর্ণ - আর এটা মনে রাইখো , বুড়া হইলে তওবা পড়ুম স্টাইলে আবার ছাড়া যাইবো না। তওবাও সব গুনাহ মাফ করে , মাগার গাঞ্জায় মাফ করে না। অলরেডি , লাইফরে টুট কইরা দিবে।



- আর , ইয়াবা!



- এইডা অবশ্য ক্যামিক্যাল এডিক্টিভ। এটা জন্যে, মাদক নিরাময় কেন্দ্র ছাড়া আর উপায় নাই। সব মাদক নিয়া উম দেয়া রানীক্ষেত মুরগির মত সবাই ঝুরে , বাট এইটা খাইলে ঘুমায় না। ব্যাপারটা , সিরিয়াস ! এইটার জন্যে , ডাক্তারের কাছে যাইতেই হবে। না গেলে খুব দ্রুত , পৃথিবীতে থাইকাই নরকের টিকিট কাটতে হবে।



- বুঝছি। হ্যাঁরে কইলে , হ্যাঁয় বুঝবো তো।



- অবশ্যই বুঝবো। তুমি হ্যাঁরে জিগ্যেস করো , সে কি জানতো আসলে চিকন না মাংসপেশি শুকাচ্ছে। আনন্দের বিনিময়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হইতেছে , রক্তনালী পর্যন্ত ছিড়ে যাইতে পারে ব্লাহ ব্লাহ ব্লা!



- আচ্ছা , দেখি বইলা।



- বইলো। আর এখন এক কাপ চা খাও। খেয়ে বিদায় হও। মাথা ধরে গেছে , বকবক করতে করতে ...

-----------------------------

-----------------------------



এর চাইতে আর কোন সহজ উপায় ছিল না আমার বোঝানোর। জাফর এবং অতন্দ্রীলা এখানে কাল্পনিক চরিত্র। কটমটে রেফারেন্স দেয়া লেখা আসলে কেউ পড়ে না। পড়লেও খুব কম , তাই তথ্য নির্ভর লেখা লিখলাম না। বেশিরভাগই পূর্বে পড়া , পত্রিকা , নেট থেকে নেয়া তথ্য। বড় তথ্যনির্ভর লিখাতে সোজাসুজি কমেন্টে গিয়ে অসাধারণ ঠুকে দিয়ে আসে। গত ছয় বছরে ইয়াবার ব্যবহার বাংলাদেশে ৬৬ গুন বেড়ে গিয়েছে , এই প্রাসঙ্গিক ভয়াবহ তথ্যটা তাও দিয়তে দিলাম। সো , আমি যা লিখেছি , সহজভাবেই লিখেছি। কেউ ছাড়লে কিংবা কেউ যদি এই লেখা পড়ে জীবনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হন , মাদক আর নিবেন না। তাহলেই লেখাটা হয়ত সার্থকতা ফিরে পাবে।



মাদকসেবী ভাইরা , পৃথিবীতে বসেই না জেনে , ভুল বুঝে নরকের টিকিট কেটেছেন , দ্রুতও স্টেশনে গিয়ে টিকিট ক্যান্সেলের ব্যবস্থা করুন। আপনি ভেবেছেন , ট্রেন বেশিদূর যাবে না।



আসলে , ট্রেনটা যে কতদূর যাবে কল্পনাও করতে পারছেন না।



পূর্বে ফেসবুকে প্রকাশিত।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:০২

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন:
সুন্দর উপস্থাপন এবং ভালো পোষ্ট।

ইয়াবা একবার খাওয়ার ইচ্ছা ছিলো। প্রতিদিন দেখি হাজার হাজার ধরা পরে, ১ পিস ফ্রি দিলেও মন্দ হইতোনা। কিইনা খাওয়ার খায়েস নাই। কিইনা শওকতের চাপ, হাজীর বিরিয়ানী খাওয়া যাইতে পারে। অতিরিক্ত একটু চর্বির কারনে পেটে চর্বি জমার ভয় ছাড়া আর কোন সাইড এফেক্ট নাই।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:১৪

মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: এতকিছু শুইনাও যদি খাইবার , ইচ্ছা থাকে , তাইলে বলবো - ভাই খান। নিজের গলায় ছুরি চালালে , বাঁধা দেয়ার কেউ নেই। এখানে ব্যাপারটা হবে এমন , ছুরি কেউ কিইন্না দিলে আপনি নিজেই ওর ছুরি দিয়া গলা কাটবেন।

যাই হোক , //খাওয়ার ইচ্ছা ছিলো// এখন তো নাই। সো , চিয়ার্স । :)

২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:৩২

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন:
না ভাই, এইডা করুম ক্যান? বলবো, "ছুরি কিইনা আইনা দিতে পারি, ইচ্ছা হইলে গলা তুমিই কাটো, তোমারই লাইফ। আমার কি??"

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:০৫

মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: এইতো ...

দরকার কি ছুরি টুরই নিয়া। কিনুমো না , দেখুমও না , খাবোও না!

৩| ০১ লা মে, ২০১৫ রাত ৩:০২

ছায়েদ শাহ বলেছেন: খাওয়া তো দুরের কথা, কখনো চোখেই দেখিনাই। সুন্দর পোষ্ট দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

০৩ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১:১৮

মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই। সবাই , আমাদের ের থেকে দূরে রাখুক।

৪| ০১ লা মে, ২০১৫ দুপুর ২:০৮

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

একটি চমৎকার ও দরকারি ব্লগ পোস্ট। পোস্টদাতাকে ধন্যবাদ!

০৩ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১:৫৩

মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। আপনার জন্যে ভোট দিয়ে রেখেছিলাম , খবর কি কানলামো না। ব্লগেও ঢুকতে পারি না সময়মত :(

৫| ০১ লা মে, ২০১৫ দুপুর ২:১০

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

আওয়াজ দিয়ে রাখলাম।

০৩ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১:১৯

মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: আওয়াজ দিয়ে রাখবার জন্যে অসংখ্য কৃতজ্ঞতা।

৬| ০২ রা মে, ২০১৫ সকাল ৮:১১

রিয়াসাত মোর্শেদ খান বলেছেন: উপস্থাপনগত সৌন্দর্যে লেখাটা আসলেই বিশিষ্টতা পাওয়ার যোগ্য!

অসাধারণ পোস্ট!

০৩ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১:২১

মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: থ্যাঙ্ক ইউ , ভাই - উপস্থাপনটা করেছি , মানুষে পড়বার জন্যে। মানুষ যদি পড়ে তাহলেই সার্থক। বরাবরই দেখেছি , মানুষকে উপদেশ দিতে গেলে , মানুষ নাক বাঁকিয়ে ফেলে!

তাই , কৌশলে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.