![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ধরে নিন, আমরা হানাফী মাজহাবের অনুসারী। আমরা বর্তমানে বিতর নামাজ সেইভাবে আদায় করি যেভাবে হানাফী মাজহাবে উল্লেখ আছে। এখন যদি আমরা হটাৎ একদিন নীচের এই দুইটা হাদিস কোন সাধারণ শিক্ষিত মুসলমান ভাই এর মুখ থেকে শুনিঃ
রসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিতরের প্রথম দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন না।’ আরেকটি বর্ণনায় আছে: ‘তিনি তিন রাকাত বিতর পড়তেন আর শুধু শেষ রাকাতে বসতেন।” [আন-নাসাঈ ৩:২৩৪, আল বায়হাকী ৩:৩১হাদিস শুনিয়ে আমাদের ঐ ভাই আমাদেরকে বললেন, বিতরের নামাজ হানাফী নিয়মে পড়লে হবে না। বরং হয় তিন রাকাত পড়লে হয় মাঝখানে না বসে সরাসরি ৩য় রাকাতে উঠে দাঁড়াতে হবে। অথবা ২ রাকাত পর সালাম ফিরিয়ে আলাদা এক রাকাত পড়তে হবে।
এখন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ অনুসরণের মানে কি এটাই যেঃ
আমরা আর কোন যাচাই-বাছাই না করে, এই সাধারণ শিক্ষিত ভাই এর কথায় আমাদের বিতরের নামাজ পরিবর্তন করে ফেলবো? অথচ তিনি এখনো আমাদেরকে জানাতে পারছেন না যেঃ
– বিতরের নামাজের ব্যাপারে অন্য আর কি কি হাদিস আছে, সেগুলির সাথে এই হাদিসের সম্পর্ক কি?
– অন্য কোন হাদিসের মাধ্যমে এই হাদিস কি মানসুখ হয়ে গেছে কিনা?
– অন্য কোন হাদিস এই হাদিসের অর্থকে খাস করে দিচ্ছে কিনা?
– এই হাদিসে ব্যবহৃত শব্দগুলোর অর্থ কি জাহির (সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট) নাকি এর শব্দগুলো থেকে বিভিন্ন অর্থ নেয়ার সুযোগ আছে?
– এই হাদিস যদি অন্যান্য সনদে বর্ণিত হয়ে থাকে – তাহলে এই সনদ থেকে শক্তিশালী অন্য কোন সনদের হাদিসের মতনের সাথে
এর তারতম্য আছে কিনা?
– এই হাদিসের রাবীরা নিজেরা এই হাদিসের উপর আমল করছেন কিনা?
– এই হাদিস ফেলী হলে একই ব্যাপারে ক্বাওলী কোন হাদিসের সাথে এর বিরোধ আছে কিনা?
– এই হাদিসে ব্যবহৃত শব্দের অর্থ কোন স্তর থেকে নেয়া উচিত হবেঃ ইবারাহ, দ্বলালাহ, ইকতিদা, নাকি ইশারাহ স্তর থেকে?
– এই হাদিসের উপর ভিত্তি করে সাহাবা, তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীনগণ (রাদিয়াল্লাহুম আলাইহিম আজমাঈন) কিভাবে আমল
করেছেন?
– সাহাবাগণের (রঃ) আমলে এই হাদিসের পক্ষে-বিপক্ষে আমল পাওয়া যায় কিনা?
– এই হাদিসের ব্যাখ্যায় তাবেয়ীন ও তাবে-তাবেয়ীনগণ কি বলেছেন? তাঁদের মাঝে এর ব্যাখ্যায় দ্বিমত ছিলো কিনা?
– এই হাদিসের সাথে অন্য হাদিসের বিরোধ থাকলে এই হাদিসগুলোর মধ্যে সমন্বয় হবে কিনা? নাকি একটির উপর আরেকটি তারজীহ (প্রাধান্য) পাবে, নাকি দুইটার উপরই আমল স্থগিত থাকবে?
– আবার সমন্বয় হলে কিভাবে হবে? এই হাদিসগুলোর ব্যাপারে কোন আলেমের সমন্বয় উত্তম?
– তারজীহ দেয়া হলে কিসের ভিত্তিতে তারজীহ দেয়া হবে? কোন মুজতাহিদের তারজীহ দেয়া এই ব্যাপারে উত্তম হয়েছে?
– সার্বিকভাবে এই হাদিসের অর্থ ও ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অমুক ইমামের ইজতিহাদ সঠিক নাকি অন্য কোন মুজতাহিদ ইমামের ইজতিহাদ সঠিক?
– যদি দুইজন মুজতাহিদ ইমামের ইজতিহাদে, এই হাদিসের ব্যাখ্যা ও প্রয়োগে পার্থক্য হয়ে থাকে, তাহলে দুই মুজতাহিদ ইমামের মাঝে এই হাদিস থেকে মাসয়ালা ইস্তেমবাতের ক্ষেত্রে কার ফিকহের উসুল (দলীল থেকে হুকুম বের করার মূলনীতি) অধিক শক্তিশালী ও অধিক উপযোগী ছিলো?
– এই দুই ইমামের ইজতিহাদগত মতপার্থক্যের ব্যাপারে হাদিসের ও ফিকহের অন্যান্য ইমামরা কি কি বক্তব্য দিয়েছেন, যার মাধ্যমে বুঝা যায়, এই মাসয়ালায় কোন ইমামের ইজতিহাদ সঠিক?
– যদি পরবর্তী ইমামরাও এই মাসয়ালায় দ্বিধা-বিভক্ত থাকেন, তাহলে কোন পক্ষের উসুল এই ক্ষেত্রে শক্তিশালী ছিলো? আর আমরা কোন কোন ভিত্তির উপর এই দুই উসুলের মাঝে যে কোন একটিকে শক্তিশালী মনে করে সেই পক্ষের মতকে অধিক গ্রহণযোগ্য মনে করছি? ইত্যাদি
উপরুক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর না শুনে / না জেনে উপরুক্ত হাদিস দুটো শুনা মাত্রই কি সাথে সাথে আমাদের জন্য আমল পরিবর্তন করে ফেলা উচিত হবে?
©somewhere in net ltd.