নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু আঈমান বিন শাহাদাত

আবু আঈমান বিন শাহাদাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাযহাব নিয়ে কিছু প্রশ্নই যখন হতে পারে আপনার অনেক প্রশ্নের উত্তর (০৭)

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১:৪৬

বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় সালাফি আলেম শাইখ সালিহ আল উসাইমিন (রঃ) ‘আল উসুল মিন ইলমিল উসুল’ বই এ ‘তাকলীদ’ অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেনঃ
ﻭﺍﺻﻄﻼﺣﺎً : ﺍﺗﺒﺎﻉ ﻣﻦ ﻟﻴﺲ ﻗﻮﻟﻪ ﺣﺠﺔ .
ﻳﻜﻮﻥ ﺍﻟﺘﻘﻠﻴﺪ ﻓﻲ ﻣﻮﺿﻌﻴﻦ :
ﺍﻷﻭﻝ : ﺃﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﺍﻟﻤﻘﻠِّﺪ ﻋﺎﻣﻴًّﺎ ﻻ ﻳﺴﺘﻄﻴﻊ ﻣﻌﺮﻓﺔ ﺍﻟﺤﻜﻢ ﺑﻨﻔﺴﻪ ﻓﻔﺮﺿﻪ ﺍﻟﺘﻘﻠﻴﺪ؛ ﻟﻘﻮﻟﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ : ‏) ﻓَﺎﺳْﺄَﻟﻮﺍ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟﺬِّﻛْﺮِ ﺇِﻥْ ﻛُﻨْﺘُﻢْ ﻻ ﺗَﻌْﻠَﻤُﻮﻥَ ‏) ‏( ﺍﻟﻨﺤﻞ : ﺍﻵﻳﺔ 43 ‏) ، ﻭﻳﻘﻠﺪ ﺃﻓﻀﻞ ﻣﻦ ﻳﺠﺪﻩ ﻋﻠﻤﺎً ﻭﻭﺭﻋﺎً، ﻓﺈﻥ ﺗﺴﺎﻭﻯ ﻋﻨﺪﻩ ﺍﺛﻨﺎﻥ ﺧﻴﺮ ﺑﻴﻨﻬﻤﺎ .
ﺍﻟﺜﺎﻧﻲ : ﺃﻥ ﻳﻘﻊ ﻟﻠﻤﺠﺘﻬﺪ ﺣﺎﺩﺛﺔ ﺗﻘﺘﻀﻲ ﺍﻟﻔﻮﺭﻳﺔ، ﻭﻻ ﻳﺘﻤﻜﻦ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﻈﺮ ﻓﻴﻬﺎ ﻓﻴﺠﻮﺯ ﻟﻪ ﺍﻟﺘﻘﻠﻴﺪ ﺣﻴﻨﺌﺬ، ﻭﺍﺷﺘﺮﻁ ﺑﻌﻀﻬﻢ ﻟﺠﻮﺍﺯ ﺍﻟﺘﻘﻠﻴﺪ ﺃﻥ ﻻ ﺗﻜﻮﻥ ﺍﻟﻤﺴﺄﻟﺔ ﻣﻦ ﺃﺻﻮﻝ ﺍﻟﺪﻳﻦ ﺍﻟﺘﻲ ﻳﺠﺐ ﺍﻋﺘﻘﺎﺩﻫﺎ؛ ﻷﻥ ﺍﻟﻌﻘﺎﺋﺪ ﻳﺠﺐ ﺍﻟﺠﺰﻡ ﻓﻴﻬﺎ، ﻭﺍﻟﺘﻘﻠﻴﺪ ﺇﻧﻤﺎ ﻳﻔﻴﺪ ﺍﻟﻈﻦ ﻓﻘﻂ .
অর্থাৎ, “তাকলীদ হচ্ছে এমন কারো অনুসরণ করা যার কথা হুজ্জত নয়। …
তাকলীদ দুইটি ক্ষেত্রে করা হয়ঃ
১। যখন মুকাল্লিদ হচ্ছেন একজন আ’ম (সাধারণ) ব্যক্তি যার নিজে নিজে শরীয়াতের হুকুম-আহকাম জানার সামর্থ নেই। এই ব্যক্তির উপর তাক্বলীদ ফরজ। … তাই এই ব্যক্তি এমন এক ব্যক্তির তাক্বলীদ করবে যাকে সে ইলম ও তাকওয়ার অধিকারী বলে জানে। …
২। মুজতাহিদ, যখন নতুন কোন বিষয়ের সম্মুখীন হন এবং এই ব্যাপারে তার সুযোগ হয়নি ইজতিহাদ করার, এই ক্ষেত্রে তার জন্য অনুমতি আছে তাকলীদ করার। …”
একই বই এ শাইখ উসাইমিন (রঃ) তাকলীদের প্রকারভেদ উল্লেখ করতে গিয়েঃ সেটাকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। তিনি বলেনঃ
“প্রথম ভাগ হচ্ছেঃ সাধারণ তাক্বলিদ যা হচ্ছে দ্বীনের সকল ব্যাপারে যে কোন এক মাজহাবের সকল করণিয় ও বর্জনীয় মেনে চলা।
আলেমরা এই ব্যাপারে মতবিরোধ করেছেন। পরবর্তী যুগের আলেমদের কেউ কেউ এই ব্যক্তির উপর এটা ওয়াজিব বলেছেন কারণ সে ইজতিহাদ করতে অক্ষম (অনুবাদক নোটঃ এই ইজতিহাদ করতে যে কোন ইমাম কোন মাসয়ালায় উত্তম ফতোয়া দিয়েছেন)। অন্যরা এটা তার জন্য হারাম বলে উল্লেখ করেছেন কারণ এর মাধ্যমে রাসুল (সাঃ) ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তিকে সকল ক্ষেত্রে অনুসরণের জন্য নির্ধারিত করা হচ্ছে”।দেখা যাচ্ছেঃ শাইখ উসাইমিন (রঃ) সাধারণ মুসলমানদের জন্য তাকলীদ ওয়াজিব বলে উল্লেখ করেছেন।
শাইখ উসাইমিন (রঃ) এর উপরুক্ত কথার ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কি হবে? বিস্তারিত ভাবে জানাবেন।
দেখা যাচ্ছে, শাইখ উসাইমিন (রঃ) মাজহাবকে অস্বীকার করেন নি। এর প্রয়োজনীয়তাকে তিনি অস্বীকার করেন নি। বরং যে কোন এক মাজহাব সর্বদা মানার ক্ষেত্রে আলেমদের মতবিরোধ রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। তারপর তিনি এই দুই মতের মধ্যে তাঁর মতে যেটা সঠিক, সেই মতের পক্ষে কথা বলেছেন।
এই মতবিরোধের এক পক্ষে আছেনঃ ইমাম নববী (রঃ) এর মতো আলেম ও ফকীহ। অন্য দিকে আছেনঃ ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর মতো আলেম। ইমাম নববী (রঃ) বলেছেনঃ
ﻭﻭﺟﻬﻪ ﺍﻧﻪ ﻟﻮ ﺟﺎﺯ ﺍﺗﺒﺎﻉ ﺃﻱ ﻣﺬﻫﺐ ﺷﺎﺀ ﻻ ﻓﻀﻰ ﺇﻟﻰ ﺍﻥ ﻳﻠﺘﻘﻂ ﺭﺧﺺ ﺍﻟﻤﺬﺍﻫﺐ ﻣﺘﺒﻌﺎ ﻫﻮﺍﻩ ﻭﻳﺘﺨﻴﺮ ﺑﻴﻦ ﺍﻟﺘﺤﻠﻴﻞ ﻭﺍﻟﺘﺤﺮﻳﻢ ﻭﺍﻟﻮﺟﻮﺏ ﻭﺍﻟﺠﻮﺍﺯ ﻭﺫﻟﻚ ﻳﺆﺩﻯ ﺇﻟﻰ ﺍﻧﺤﻼﻝ ﺭﺑﻘﺔ ﺍﻟﺘﻜﻠﻴﻒ ﺑﺨﻼﻑ ﺍﻟﻌﺼﺮ ﺍﻻﻭﻝ ﻓﺎﻧﻪ ﻟﻢ ﺗﻜﻦ ﺍﻟﻤﺬﺍﻫﺐ ﺍﻟﻮﺍﻓﻴﺔ ﺑﺄﺣﻜﺎﻡ ﺍﻟﺤﻮﺍﺩﺙ ﻣﻬﺬﺑﺔ ﻭﻋﺮﻓﺖ : ﻓﻌﻠﻰ ﻫﺬﺍ ﻳﻠﺰﻣﻪ ﺍﻥ ﻳﺠﺘﻬﺪ ﻓﻲ ﺍﺧﺘﻴﺎﺭ ﻣﺬﻫﺐ ﻳﻘﻠﺪﻩ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺘﻌﻴﻴﻦ
“ব্যক্তি তাকলীদের অপরিহার্যতার কারণ এই যে, মুক্ত তাকলীদের অনুমতি দেয়া হলে প্রবৃত্তি তাড়িত মানুষ সকল মাজহাবের অনুকূল বিষয়গুলোই শুধু বেছে নিবে। ফলে হালাল-হারাম ও বৈধ-অবৈধ নির্ধারণের এখতিয়ার এসে যাবে তার হাতে। প্রথম যুগে অবশ্য ব্যক্তি তাকলীদ সম্ভব ছিলো না। কেননা ফিকাহ বিষয়ক মাজহাবগুলো যেমন সুবিন্নস্ত ও পূর্ণাংগ ছিলো না তেমনি সর্বত্র সহজলভ্যও ছিলো না। কিন্তু এখন তা সুবিন্যস্ত ও পূর্ণাংগ আকারে সর্বত্র সহজলভ্য। সুতরাং যে কোন একটি মাজহাব বেছে নিয়ে একনিষ্টভাবে তা অনুসরণ করাই এখন অপরিহার্য”। (আল মাজমু শরহুল মুহায্যাব, ১/১৯)
অপরদিকে ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) সর্বদা একই মাজহাব মানা জরুরী এই মতের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেনঃ
ﻭﻗﺎﻝ : ﻣﻦ ﺍﻟﺘﺰﻡ ﻣﺬﻫﺒﺎً ﻣﻌﻴﻨﺎً، ﺛﻢ ﻓﻌﻞ ﺧﻼﻓﻪ ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺗﻘﻠﻴﺪ ﻟﻌﺎﻟﻢ ﺁﺧﺮ ﺃﻓﺘﺎﻩ، ﻭﻻ ﺍﺳﺘﺪﻻﻝ ﺑﺪﻟﻴﻞ ﻳﻘﺘﻀﻲ ﺧﻼﻑ ﺫﻟﻚ، ﻭﻻ ﻋﺬﺭ ﺷﺮﻋﻲ ﻳﻘﺘﻀﻲ ﺣﻞ ﻣﺎ ﻓﻌﻠﻪ، ﻓﻬﻮ ﻣﺘﺒﻊ ﻟﻬﻮﺍﻩ ﻓﺎﻋﻞ ﻟﻠﻤﺤﺮﻡ ﺑﻐﻴﺮ ﻋﺬﺭ ﺷﺮﻋﻲ، ﻭﻫﺬﺍ ﻣﻨﻜﺮ، ﻭﺃﻣﺎ ﺇﺫﺍ ﺗﺒﻴﻦ ﻟﻪ ﻣﺎ ﻳﻮﺟﺐ ﺭﺟﺤﺎﻥ ﻗﻮﻝ ﻋﻠﻰ ﻗﻮﻝ ﺇﻣﺎ ﺑﺎﻷﺩﻟﺔ ﺍﻟﻤﻔﺼﻠﺔ ﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻳﻌﺮﻓﻬﺎ ﻭﻳﻔﻬﻤﻬﺎ، ﻭﺇﻣﺎ ﺑﺄﻥ ﻳﺮﻯ ﺃﺣﺪ ﺍﻟﺮﺟﻠﻴﻦ ﺃﻋﻠﻢ ﺑﺘﻠﻚ ﺍﻟﻤﺴﺄﻟﺔ ﻣﻦ ﺍﻵﺧﺮ، ﻭﻫﻮ ﺃﺗﻘﻰ ﻟﻠﻪ ﻓﻴﻤﺎ ﻳﻘﻮﻟﻪ، ﻓﻴﺮﺟﻊ ﻋﻦ ﻗﻮﻝ ﺇﻟﻰ ﻗﻮﻝ ﻟﻤﺜﻞ ﻫﺬﺍ، ﻓﻬﺬﺍ ﻳﺠﻮﺯ ﺑﻞ ﻳﺠﺐ، ﻭﻗﺪ ﻧﺺ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺃﺣﻤﺪ ﻋﻠﻰ ﺫﻟﻚ . ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻱ ﺍﻟﻜﺒﺮﻯ ‏( 4/625 ) .
“যে ব্যক্তি কোন একটি নির্দিষ্ট মাজহাব অনুসরণ করে এবং এরপর অপর কোন আলেমের তাকলীদ না করেই যিনি তাকে আরেকটি ফতোয়া দিয়েছেন কিংবা এমন কোন দলীলের ভিত্তি ছাড়াই যা তার মাজহাবের ফতোয়ার বাইরে তাকে আমল করতে বাধ্য করে কিংবা শরীয়াতের কোন রুখসত ছাড়াই যদি সেই মাজহাবের বিরোধি কোন ফতোয়া অনুযায়ী আমল করে, তাহলে সে ব্যক্তি নিজের নফসের অনুসরণ করছে, এমন হারাম কাজ করছে, যে ব্যাপারে শরীয়াতের কোন ছাড় নেই। এটা অন্যায় ও গুনাহর কাজ।
কিন্তু যদি তার কাছে বিস্তারিত দলীল-প্রমাণের কারণে কিংবা দুইজনের মধ্যে একজনকে এই মাসয়ালায় অধিক ইলমের অধিকারী মনে হওয়ায় এবং এই ব্যাপারে তিনি যা বলেছেন তা তাকওয়ার অধিক নিকটবর্তী মনে হওয়ায় তার কাছে এটা পরিস্কার হয়ে যায় যে, এক ইমামের কথার চেয়ে এই ব্যাপারে অন্য এক ইমামের কথা অধিক নির্ভরযোগ্য এবং এই কারণে তিনি একজনের ফতোয়ার বদলে অন্যজনের ফতোয়াকে ছেড়ে দেন, তাহলে সেটা জায়েজ, বরং সেটা ওয়াজিব। এ ব্যাপারে ইমাম আহমেদের একটি উক্তি রয়েছে”। (ফাতওয়া আল কুবরা, ৪/৬২৫)
ইমাম নববী (রঃ) এর কথাতো সুস্পষ্ট। তিনি বর্তমান যুগে সবার জন্য যে কোন এক মাজহাব মানার ব্যাপারে মত দিয়েছেন। ইচ্ছেমতো বিভিন্ন মাজহাবের বিভিন্ন ফতোয়া অনুসরণ উচিত নয় বলে উল্লেখ করেছেন।
আর ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর মত থেকে তো এতটুকু নিশ্চিত যে তাঁর মতেঃ
– যে কোন একটা মাজহাব মানার সুযোগ আছে। এটাকে তিনি হারাম বলে উল্লেখ করেন নি।
– বরং অন্য কোন ইমামের ফতোয়া কিংবা পর্যাপ্ত দলীল-প্রমাণ ছাড়া নিজ মাজহাবের ফতোয়াকে ছেড়ে দেয়াকে তিনি নফসের খায়েশাত বলে উল্লেখ করেছেন।
– শুধুমাত্র কোন মাসয়ালায় নিশ্চিত জ্ঞানের অধিকারী হলেঃ নিজ মাজহাবের ফতোয়াকে ত্যাগ করে অপর ইমামের ফতোয়াকে গ্রহণ করাকে তিনি জায়েজ এবং ওয়াজিব বলেছেন।
কিন্তু আশ্চর্য হতে হয়ঃ আমাদের দেশে আহলে হাদিস কোন কোন আলেম পুরো মাজহাবকেই অস্বীকার করেন। অনেকে বলেনঃ
– মাজহাব বলতে কিছু নেই।
– কারো তাকলীদ করা যাবে না।
– তাকলীদ সর্বাবস্থায় হারাম। ইত্যাদি।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর ঐ কথার ব্যাপারে আপনার অভিমত কি যেখানে তিনি অন্য কোন আলেমের তাক্বলীদ ব্যতীত কিংবা অন্য শক্তিশালী কোন দলীল ছাড়াই নিজ মাজহাবের বিপরীত আমল করাকে নফসের খায়েশাত বলে উল্লেখ করেছেন?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.