![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘটনাঃফেরাউন কন্যার চুল আঁচড়ানোর
কাজে নিয়োজিত ছিল মাশেতা
নামক একজন মহিলা। কোনো একদিন
ফেরাউন কন্যার চুল আঁচড়ানোর সময় সহসা
চিরুণি তার হাত থেকে মাটিতে
পড়ে গেল। তা ওঠাতে ওঠাতে আনমনে
তার মুখ থেকে বের হয়ে পড়ল, "হে
আল্লাহ! তোমাকে অমান্যকারী ধ্বংস
হোক"। এ কথায় ফেরাউনের কন্যার
সন্দেহ হলে জিজ্ঞেস করল, ফেরাউন
ছাড়াও কি তোমার কোনো আল্লাহ
আছে নাকি? দাসী জবাবে বলল,
"আমার আল্লাহ সেই আল্লাহ যে
ফেরাউনেরও আল্লাহ। শুধু ফেরাউন নয়
সে আকাশ জমিনেরও আল্লাহ। তিনি
একক তাঁর কোনো শরীক নেই। একথা
শুনে রাগে ফেরাউনের কন্যা
অগ্নিশর্মা হয়ে পিতারকাছে গিয়ে
বলল, আব্বা আমার চুল বিন্যাসকারিণী
বলে কি, আমার আল্লাহ সেইআল্লাহ
যে ফেরাউনেরও আল্লাহ, আসমান
জমিনেরও আল্লাহ। তার কোনো শরীক
নেই। ফেরাউন বলল, এক্ষুণি তাকে
হাজির কর'। সাথে সাথে তাকে
হাজির করা হলো। সেও নির্ভয়ে
হাজির হলো। আজ তার আল্লাহর প্রতি
ভালোবাসারঈমানী পরীক্ষার দিন।
এতে প্রাণ দিতে হলে দেবে। তারই
ভালোবাসায় যদি জীবন দেওয়া যায়
তবেই তো ধন্য। ফেরাউন জিজ্ঞেস করল,
তুমি আমাকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত
কর? মাশেতা বললেন,"হ্যাঁ"। ফেরাউন
বলল, সে আল্লাহকে ছেড়ে এখনই আমার
সামনে আমার আল্লাহয়ী স্বীকার কর'।
মাশেতা বললেন, "না কিয়ামতপর্যন্তও
তা আমার দ্বারা সম্ভব হবে না"।
নির্দেশ দেওয়া হলো তাকে পেরেক
মার। তৎক্ষণাৎ তাকে শুইয়ে তার হাতে
ও পায়ে পেরেক মারা হলো। তারপর
আল্লাহ ওয়ালাদেরকে কষ্ট দেওয়ার
জন্য যে বিষাক্ত সাপ, বিচ্ছু রাখা
হতো তাও এনে তার উপর ছেড়ে
দেওয়া হলো। বলা হলো, এখনো সময়
আছে তোমার আল্লাহকে ছাড় নতুবা ২
মাস পর্যন্ত তোমাকে লাগাতার এ
শাস্তি দেওয়া হবে'। মাশেতা
বললেন,"তুমি আমাকে দুই মাসের
শাস্তির ভয় দেখাও ৭০ মাস পর্যন্ত
আমাকে শাস্তি দিয়ে দেখ আল্লাহর
ভালোবাসা এক বিন্দুও কমবে না, বরং
বাড়বে"। বোখারি শরিফে আছে রূমের
এক বাদশাহর কথা। তিনি বলেন, এমনি
হলো ঈমানের অবস্থা যখন তার স্বাদ
কোনো অন্তরে প্রবেশ করে তখন তা আর
বের হয়না। হে ফেরাউন শুনে রাখ,
তুমিযদি বছরের পর বছর আমাকে
শাস্তিদিতে থাক তবুও আমি আমার
মহান প্রভুকে পরিহার করব না। এ নেক
মহিলার দুটি সন্তান ছিল একটি চার
পাঁচ বছরের, আরেকটি ছিল দুগ্ধপোষ্য।
ফেরাউন উভয় সন্তানকে তার মায়ের
সামনে এনে প্রথমে বড় সন্তানকে
মায়ের বুকের উপর রেখে জবাই করল।
তারপর বলল, 'এখনও সুযোগ আছে নতুবা
তোমার দুগ্ধপোষ্য এ শিশুটিকেও হত্যা
করা হবে। মাশেতা বললেন, "যদি
তুমিসমগ্র পৃথিবীকে আমার বুকের উপর
এনে জবাই কর তবুও আমি আমার
আল্লাহকে ছাড়ব না। একথা শুনে হুকুম
দেওয়া হলো এ শিশুটিকেও তার বুকের
উপর রেখে জবাই কর।ওই শিশু সন্তান যে
বুকের উপর চড়ে দুধ পান করত আজ
সেখানে রেখে তাকে জবাই করা
হবে এ অবস্থাদেখে মায়ের চোখে
পানি এলো। ৬ মাসের এ শিশুর মুখ
থেকে কথা বের হলো, বলল, মা কেন
কাঁদ? জান্নাত তোমার জন্য সুসজ্জিত
করা হচ্ছে। মা জান্নাতে পৌঁছে
আল্লাহর দীদার হাসিল হবে"। এখনো
কথা বলতে পারে না এমন শিশুর মুখ
থেকে এ কথা শুনে মা অবাক হলেন।
ঈমান আরও মজবুত হলো। জালিমরা
শিশুটিকে হত্যা করল। মা প্রভুর ডাকে
সাড়া দিয়ে চির জান্নাত বাসিনী
হলেন। তাফসিরে দুররে মানসুরে আছে,
রাসুল সাঃ যখন মেরাজে যাচ্ছিলেন,
বোরাক মিসরের কাছাকাছি এক
ময়দানে পৌঁছল, তখন জান্নাতের খুশবু
তিনি অনুভবকরলেন। বললেন, খুব সুন্দর
সুঘ্রাণ পাচ্ছি, মনে হয় এটা
জান্নাতের সুঘ্রাণ। জিবরাইল আঃ
বললেন, জান্নাত তোঅনেক দূরে, মনে
হয়, ফেরাউন কন্যার কেশ
বিন্যাসকারিণী মহিলা মাশেতার
কবর থেকেএ সুঘ্রাণ আসছে।
সুবহানাল্লাহ।মাআলিমুত-তানযিলগ্রন্থ
থেকে বর্ণিত।
©somewhere in net ltd.