নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এখনো কী

shapon

সেবার জন্য ধর্ম,ধর্মের জন্য সেবা নয়।

shapon › বিস্তারিত পোস্টঃ

আশুরাবিল জাতীয় উদ্যান এর অভিলম্বে বাস্তবায়ন চাই

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:১২

নবাবগন্জ থানার আয়তন ৩২৪.৬৮ বর্গ কিমি । এই উপজেলার উপড় দিয়ে বয়ে গেছে করতোয়া,যমুনেশ্বরী ও তুলশীগঙ্গা নদী। ১৯৭১ সালে নবাবগন্জ উপজেলার পুটিমারা ইউনিয়নের চড়ার হাটে পাক বাহিনীর হাতে নিরিহ বাঙ্গালী হত্যা হয় এবং গনকবর দেয়। এই উপজেলার মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল । বর্তমান এই উপজেলায় জনসংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ। দিনদিন জনসংখ্যা বাড়ছে কৃষির জমি বাড়ছেনা ফলে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে এই দরিদ্র মানুষগুলোর ছেলে মেয়ে এস.এস,সি পাশ করার পর ভালো কোন কলেজে ভর্তি হতে পারছেনা। তারা উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কর্মসংস্থান বলতে কেবল স্কুল,কলেজ এর শিক্ষক এবং উপজেলা পরিষদ ভিত্তিক কর্ম ছাড়া তেমন কোন উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি নেই। কিছু ব্যত্তি উদ্যোগে প্রতিষ্টান হলেও বঞ্চিত মানুষের জন্য কিছু নেই তেমন কোন কর্মসংস্থান হয়নাই।

এই উপজেলা ১৮৯৯ সালে থানা সৃষ্টি হয় এবং ১৯৮৩ সালে উপজেলা সৃষ্টি হয় । ১১২ বছর পরে নবাবগনজ প্রোপারে একটি থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা পরিষদ, সেটেলমেন্ট অফিস, সমবায় অফিস, শিক্ষা, সমাজকল্যান, থানা ও সরকারী কয়েকটি ব্যাংক ছাড়া উল্লেখ্য কিছু নেই। উন্নয়ন ও সৃষ্টির ধারা নিয়ে একদল যুবক ২০০৩ সালে নবাবগনজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে নর্থগ্লিন্ট এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন নামক একটি বে-সরকারী প্রতিষ্টান সৃষ্টি করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এবং কোন প্রকারের সহযোগীতা ছাড়াও গুটি গুটি করে এগিয়ে চলছে বঞ্চিত মানুষের দোড়গোড়ায়। নবাবগন্জ প্রোপারের অবস্থান ও উন্নয়নের কথা ভাবলে মনে পড়ে নবাবগন্জ পাইলট বহুমুখি বিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরীতে রাখা মানবের একটি কঙ্কাল । এই কঙ্কাল যাদুঘরে রাখারই মতো তাছাড়া আর কি হতে পারে যা ১১২ বছরেও কোন উন্নয়ন নেই অথচ্য স্বল্প উন্নত এবং ইউনিয়ন থেকে থানায় পরিনত হয়ে পরিকল্পনা, দক্ষতা এবং রাজনৈতিকভাবে নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নই নয় বরং দেশের মডেল হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। থানা শহর তিনটি ইউনিয়নের মধ্যে কিছু অংশ ২ নং বিনোদ নগর ইউনিয়ন , ৩ নং গোলাপগন্জ ইউনিয়ন এবং ৪ নং দাউদপুর ইউনিয়ন সমস্বয়ে গঠিত। এই থানার শিক্ষার হার ৫২ %। থানা প্রোপারে একটি ডিগ্রী কলেজ, একটি মহিলা কলেজ, কারিগরি মহাবিদ্যালয়, গার্লস হাইস্কুল, বয়েজ হাইস্কুল, মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্ডেন স্কুল প্রতিষ্ঠিত। করোতোয়া নদীর উপড় নবাবগন্জ থানা অবস্থিত। নদীর ও পাড়ে সাপ্তাহে দুইদিন হাট বসে। এই হাটে হাট করার জন্য রংপুর জেলার পীরগন্জ খানা ও মিঠাপুকুর থানার মানুষ আসে। এই থানা শস্য শ্যামলে ভরা প্রধান ফসল ধান, গম, বিভিন্ন ধরনের ডাল, সরিষা, আলু, পিয়াজ ও আখ। এই শহরের ইন্ডাষ্ট্রি বলতে ক্ষুদ্রাকারে সরিষা মারার / ভাঙ্গার মেশিন , ধান ভাঙ্গার মেশিন,গম ভাঙ্গার মেশিন, এক-দুইটি বিস্কুট তৈরীর ফ্যাক্টরী। বিনোদন বলতে নবাবগন্জ থানার গ্রামগন্জ এ কিছু গ্রাম্য যাত্রা বা বিটিবি বর্তমান স্যাটেলাইট পেৌছে গেছে তাই বিভিন্ন চ্যানেলে চোখ পরতে শুরু করেছি। জনগনের মেৌলিক চাহিদার মধ্যে বিনোদন একটি অন্যতম কিন্তু জাতীয় মানের অসংখ্যা স্থান থাকলেও তা অবহেলায় পড়ে আছে। কখনও পদক্ষেপ নিয়ে হঠাৎ থেমে গিয়ে জনগনকে হতাশ করেছে। নবাবগন্জ উপজেলা প্রোপার থেকে মাত্র দুই কিমি দুরে অতিপ্রচীন বুদ্ধবিহার যাহা স্থানীয় ভাবে সীতার কোট নামে পরিচিত। কথিত আছে বা সেইখানের হিন্দু সম্প্রদায়গন মনে প্রানে বিশ্বাস করে ত্রেতাযুগে রাজা যশরথ জৈষ্টপুত্র শ্রীরামের পত্নী সীতাকে বনবাস পাঠিয়েছিলেন এই পঞ্চবট্টি বনে । বনবাসের পরে সীতা আশ্রায় পেয়েছিলেন বাল্মিকি মনির কাছে। সেই সময় বাল্মিকি মনি তপস্যা করতেন । এই গহীন বনে রামের স্ত্রী বসবাস করতেন। সীতা থাকতেন এই সীতাকুটুরিতে বাল্মিকি থাকতেন আশুরাবিলের মধ্যেই মনিথান নামক স্থানে । এই লোকো কথা যদি সত্য হয় তাহলে হিন্দুদের জন্য বা শরনার্থীদের কাছে বিশ্বের একটি চমকপ্রদ স্থান হবে এবং এই এলাকার মানুষ বানিজ্যিকভাবে লাভবান হবেন । এই সেই বন নবাবগঞ্জ সদরের ১ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে শালবন। শালবনের উত্তর পাশ ঘেঁষেই বিশাল আশুরার বিলের অবস্থান। বিলের আয়তন-২৫১.৭৮ হেক্টর। এই বিলের চারপাশ থেকে ৮০টি দার বা নালা চতুর্দিকে ছড়িয়ে গেছে বলে এর নাম হয়েছে আশুরার বিল। বিশাল এই বিলের গভীরতা ও কাদার তলানি এবং এর চারপাশ বেষ্টিত শালবন এক সময় নানা কিংবদন্তির জন্ম দেয়। বিলের মাঝে কিছু স্থান_ পাতিলদহ, বুড়িদহ, পীরদহ, মুনির আইল, কাজলাদহ, পালাদহ, মুনির থান ইত্যাদি নামে পরিচিত। এক সময় এ বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। এ বিলের বোয়াল এবং পাবদা মাছ খুবই সুস্বাদু। এ ছাড়াও বিলে টেংরা, কই, মাগুর, পুঁটি, চিংড়ি, আইড়মাছ, শোল, গজার, বাইম ইত্যাদি মাছ পাওয়া যায়। বর্ষা মৌসুম এলে এ বিলে লাল, সাদা শাপলা ফুল বিলের সৌন্দর্যকে আরও বাড়ীয়ে দেয়। বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণপিপাসু মানুষ আশুড়ার বিলের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়। বোরো মৌসুমে এ বিলে স্থানীয় কৃষকরা বোরো ধান চাষ করে এবং প্রচুর ফলন পায়। আশুরার বিল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিল ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে। বিলটিতে মৎস্য অধিদফতর থেকে প্রতিবছর সরকারি অর্থে পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়। এ সমিতি নিজ ব্যয়ে বিলটিতে ২০ একরের অভয়াশ্রম স্থাপন করেছে। অভয়াশ্রমটি বিপন্ন প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ ও প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মৎস্য অধিদফতরের অনুমতি সাপেক্ষে অর্ধেকাংশে প্রতি দুই বছর পরপর রাক্ষুসে প্রজাতির মাছ ধরা হয়। ফলে বাকি অংশে মাছ বড় হওয়া ও প্রজনন করার সুযোগ পায়। বর্তমানে বিলটি ভরাট হওয়ায় মৎস্যজীবীরা বছরে ৪-৫ মাসের বেশি সময় মাছ ধরার সুযোগ পায় না। সরকারি ব্যবস্থাপনায় মৎস্য চাষে উন্নয়নমূলক প্রকল্প হাতে নেয়া হলে একদিকে উপজেলার শিক্ষিত নারী-পুরুষদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে ও উত্তর অঞ্চলের বেশির ভাগ মাছের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে বলে মৎস্য গবেষকরা মন্তব্য করেছেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় কারিতাস এনজিওর মাধ্যমে বিলটি রক্ষণাবেক্ষণের পরিচালিত হচ্ছে।



ন্যাশনাল পার্ক ঘোষনা

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ বনবিট প্রায় ১৩৮৪.৯১ একর সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চল নিয়ে গঠিত। গত ২৪ অক্টেবর ২০১০ সালে নবাবগঞ্জ বনবিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর আয়তন ৫১৭.৬১ হেক্টর বা ১২৭৮.৫০ একর। নবাবগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে জগন্নাথপুর, হরিল্যাখুর, বড় জালালপুর, আলোকধুতি, তর্পনঘাট, রসুলপুর ও খটখটিয়া কৃষ্টপুর মৌজা নিয়ে এ শালবন অবস্থিত, যা পঞ্চবটীর বন নামেও স্থানীয়ভাবে পরিচিত। মুরুবি্বদের মুখে শোনা যায়, কুশদহ, পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী, বিরামপুর ও ঘোড়াঘাট পর্যন্ত এ বনের ৫টি শাখা বা বাট প্রলম্বিত ছিল বলে এর নাম পঞ্চবটী হয়েছে। জনশ্রুতিতে শোনা যায়, শিবের কৈলাশ বাস, সীতার বনবাস এ বনেই হয়েছিল। তা ছাড়াও দস্যু রত্নাকর সিদ্ধি লাভ করে বাল্মিকী মুনিরূপে খ্যাতি লাভ করেন এ শালবনেই। জাতীয় উদ্যান এ শালবনের প্রধান উদ্ভিদ শাল ও সেগুন গাছ। জাম, গামার, ইউক্যালিপটাস, আকাশমনি ঔষধি গাছ, বিভিন্ন শ্রেণীর অর্কিড ও ক্যাকটাসসহ নানা প্রজাতির গাছগাছড়া এ বনে বিদ্যমান। প্রাণীর মধ্যে শিয়াল, বনবিড়াল, উদবিড়াল, বিভিন্ন প্রজাতির সাপ, টিয়া, মাছরাঙ্গা, ডাহুকসহ অনেক প্রজাতির পাখি বিদ্যমান। সমপ্রতি রাষ্ট্রপতির নির্দেশক্রমে ড. মিহির কান্তি রায়ের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নবাবগনজ ন্যাশনাল পার্ক ঘোষণা করা হলেও এখনও পার্কের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম শুরু হয়নি।



আমরা যারা নবাবগন্জ থানার বাসিন্দা সকলকে ভাবতে হবে কেন এই বাস্তবায়ন হচ্ছেনা।১৯৯১ সালে বাংলাদেশে পুনরায় গনতন্ত্র প্রতিষ্টার পর বি.এন.পির নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠিত হয়। সরকার গঠিত হওয়ার পর বি.এন.পি নেতা অধ্যাক্ষ আতিউর রহমান পর্যটন কেন্দ্রের প্রয়োজন অনুভব করেন এবং সাধারন মানুষের আশার আলো জ্বালানোর জন্য মোমে আগুন দেন। এই বুঝি নবাবগন্জ পর্যটন বা জাতীয় উদ্যান হচ্ছে। মানুষের কর্মসংস্থান হবে এখানের ছেলে মেয়ে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠবে। বাংলার মানুষের ইচ্ছার ফলসুত্যির ফলে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার এলো। স্থানীয় এম.পি জনাব মোস্তাফিজুর রহমান ফিজু পাচ বছর ক্ষমতায় থেকে গেলেও কোন শব্দ পেলোনা নবাবগন্জ এর মানুষ। ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার এলো স্থানীয় এম.পি হলো জামাতে ইসলামী অধ্যক্ষ আজিজুল চেৌধুরী কোন খবর নেই। দীর্ঘ ৭ বছর পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বধীন মহাজোট ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ এম.পি হলেন জনাব আজিজুর রহমান চেৌধুরী আবার জাতীয় উদ্যানের বিষয় এলো । সরকারী ভাবে ঘোষনাও এলো । ঘোষনার ১ বছর পাড় হয়ে গেল। বাস্তবায়নের কোন লক্ষণ নেই। নবাবগনজ এর মানুষ কি বার বার রাজনৈতিক বা অন্যকোন গোলক ধাধায় ঘুরবে। নবাবগন্জ বাসী আশুরাবিল জাতীয় উদ্যানের বাস্তবায়ন চায়।



লেখক :- জিসিবি স্বপন-০১৭১২-৯১১৯৯৯

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.