নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"সাড়ে চুয়াত্তর" সিনেমায় শ্রদ্ধেয় তুলসী চক্রবর্তী তার স্ত্রী মলিনা দেবী কে আক্ষেপ করে বলেছিলেন," আগে তো চিঠি লিখতে, রাঙ্গা রাঙ্গা খামে গন্ধ লাগানো পত্র।
পেছনে আবার দিব্যি দেয়া থাকতো "সাড়ে চুয়াত্তর", কোথায় গেল সেই দিন!"
আজ কোথায় গেল সেই দিন! এখন কেউ আর চিঠি লিখে না, প্রযুক্তির ঝলকানিতে খুব দরকার হলে অনুভূতিহীন একখানা ই মেইল পাঠায় মাত্র....
চিঠির উপরে এখন থাকে না কোন দিব্যি, কিংবা চিঠির শেষে নিজ হাতে আঁকা ছবি! শুনেছি মির্জা গালিব হৃদয়ের আকুতি নিয়ে লিখেছিলেন -
"চিঠি শুরুতেই চোখের ছবি এঁকে দিয়েছি, যাতে তুমি বুঝতে পারো,তোমাকে দেখার জন্য ব্যাকুল।"
কন্যাকে উদ্দেশ্য করে পিতার চিঠির সংকলন নিয়ে বই বেরিয়ে গিয়েছে । রাজনৈতিক মতের ঊর্ধ্বে উঠে বলা যায় ওইসব চিঠিগুলো এক একটি জীবন দর্শন ---- 'Letters from a Father to His Daughter' জহরলাল নেহেরুর লেখা কন্যা ইন্দিরা গান্ধীর উদ্দেশ্যে চিঠিগুলো এক একটি Gold Mine . আগের যুগে বিখ্যাত মানুষদের প্রকাশিত এবং অপ্রকাশিত দুই পত্রাবলীর ছিল অপরিসীম সাহিত্য মূল্যের পাশাপাশি মানুষটিকে চেনার উপায়ও বটে ।
আগের যুগে কেন আমাদের ছাত্র জীবনেও প্রেম নিবেদনের ক্ষেত্রে চিঠির একটা বড় ভূমিকা ছিল । আমার বন্ধুদের ধারণা ছিল আমার নাকি বাংলা ভাষায় ভালো দখল রয়েছে , ফলে আমাকে দিয়ে কত প্রেমের চিঠি লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে । তবে সার্ভিস চার্জ ছিল । লেখানোর চার্জ ভেজিটেবিল চপ আর প্রেম নিবেদন সফল হলে এগ মটন রোল । কলেজে গিয়ে অবশ্য নগদে সার্ভিস চার্জ নিতাম । এতে করে বছরে দু একদিন বড় রেস্টুরেন্টে খাওয়ার খরচটা উঠে আসত । আবার শুনেছি আমাদের বাবা কাকাদের যুগে প্রেমের আগেই নাকি দাঁড়িয়ে থাকতো ঝড় বৃষ্টি মাথায় করে বিরহ । সেখানেও ছিল চিঠির ভূমিকা । এখন অবশ্য দেখছি বিরহ বলে কোনো বস্তু নেই । আজকাল সেই অর্থে প্রেমের কমিটমেন্টগুলোই বা কোথায় ?
তবে আমাদের সময় ব্রেকআপ গুলো বেশ নাটকীয় ছিল । আমরা যখন উচ্চ মাধ্যমিকে তখন সবে dial -up নেট এসেছে আর যখন মাস্টার্স করে বেড়িয়েছি তখনও অর্কুট আসে নি । তাই তখন ব্রেকআপগুলো বেশ নাটক করেই হতো । কত ব্রেকআপের ঘটনা এখনো স্মৃতি হয়ে রয়েছে ।
এখন অবশ্য সেই ঝামেলা নেই -- সম্পর্কের পরিবর্তন ঘটে গেল কিন্তু কেউ কিছু বুঝলো না । শুধু হোয়াটস্যাপে প্রোফাইল পিকচারটা বদল হয়ে গেল সঙ্গে স্টেটাস চেঞ্জ করে ' Single ready to mingle ' লিখে দিলেই হল ।
একখানা পত্র পাওয়ার বাসনায় মির্জা গালিব লিখে গিয়েছেন -
“খত লিখেঙ্গে গরচে মতলব কুছ না হো
হাম তো আশিক হ্যায় তুমহারে নাম কে”
"চিঠি লিখবো, কোনো উদ্দেশ্য নাই থাকুক
আমি তো তোমার নামেরই প্রেমিক ।"
গালিবের সুরে সুর মিলিয়ে আমিও তাই বলি --
"করুণা করে হলেও চিঠি দিও, ভুলে গিয়ে ভুল করে একখানি চিঠি দিও, দিও খামে..."
১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:১০
গেছো দাদা বলেছেন: "সাড়ে চুয়াত্তর" এর মানে না জানাই ভালো। এর আসল ইতিহাস জানলে আপনার খারাপ লাগতে পারে !!
২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:২৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: তারপরও বলেন। যেহেতু সিনেমার নাম এবং আমার নিক 'সাড়ে চুয়াত্তর'। আমার খারাপ লাগার কিছু নাই।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:২৮
গেছো দাদা বলেছেন: ১৫৬৭ সালের ২৩ শে অক্টোবর আকবর চিতোর অবরোধ করে। ভিষন যুদ্ধ হয়। তারপর ?
কর্নেল জেমস টড লিখে গেছেন, — “Akbar measured his success by the quantity of cordons (Janeu) taken from the necks of the slain Hindus. And 74 and a half “Muns” is the amount recorded. A “Mun” is 40 kilos. So 2,980 kilos was the weight of the threads of Janeus on the Hindus killed on that dark day.
To eternalise the memory of this disaster, to date these numerals, 74½ are accursed.
Marked on a banker’s letter in Rajasthan, it is the strongest of seals, for ‘the sin of the slaughter of Chittor’ is thereby invoked on all who violate a letter under the safeguard of this mysterious number. So long as ‘74½’ shall remain recorded, some good will result from the calamity, and may survive when the event which caused it is buried in oblivion.”
রক্তের নেশায় উন্মত্ত আকবর সেদিন নিজের সাফল্য মাপতে গিয়ে মৃতদেহ গোনার সময় পায়নি। কজন হিন্দু বীরগতিপ্রাপ্ত হয়েছিল জানার জন্য মৃতদেহের থেকে কেবল পৈতে এনে ওজন করার আদেশ দেয় ' মহান ' সম্রাট। ওজন হয়েছিল সাড়ে চুয়াত্তর মণ। এক মণ মানে চল্লিশ কিলো। আজকের হিসেবে মৃতদেহ থেকে আহরণ করা পৈতের মোট ওজন ছিল ২৯৮০ কিলো। সেই সময়ের হিসেবে আড়াই আউন্স করে প্রতিটি পৈতে তৈরি হতো। আড়াই আউন্স মানে ৭০.৮৭ গ্রাম। মোট ৪২০০০ পৈতে ধারীকে হত্যা করা হয় সেই কালোদিনে এই হিসেব ধরলে। সেই কালো দিনে তাহলে সান্দার প্রার্থনা মোতাবেক হিন্দুর যোগ্য সদগতি কি হয়েছিল ৪২০০০ হিন্দুর শবের? তাঁদের দ্বিজ হওয়ার পর থেকে সঙ্গী পৈতেই যখন অসম্মান করে খুলে নেওয়া হয়েছিল, তখন বলাই যায় তাঁদের কাঙ্ক্ষিত গতি হয় নি। রাজপুতানার মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেন ১৫৬৮ সালের ২৫ শে ফেব্রুয়ারি আকবর যখন চিতোর দখল করে মুঘল পতাকা চিতোরেশ্বরীর চিতোরে উড়িয়ে দেয় চিতোরের আকাশে বাতাসে আট হাজার রাজপুত সেনা ও চল্লিশ হাজার চিতোরবাসীর, যাদের মধ্যে মোটামুটিভাবে দশ হাজার নারী ও শিশু ছিল, তাদের দীর্ঘ নিশ্বাসে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। আত্মসমর্পন করতে চাওয়ার পরেও এই অহেতুক গণ হত্যার পাপের কি হবে?
সাড়ে চুয়াত্তর মণ পৈতে ধারকের গণহত্যার পাপ যেন হিন্দুরা ভুলে না যায় সেই জন্য চিঠির উপর সাড়ে চুয়াত্তর লেখা শুরু হয়। প্রাপক ছাড়া অন্য কেউ চিঠি খুললে যেন সেই ভয়ানক পাপের দায় তার ঘাড়ে চাপে।
৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৫৬
কামাল১৮ বলেছেন: রবি ঠাকুরের ছিন্নপত্র যে সাহিত্য এ বিষয়ে করো দ্বিমত নাই।যদিএ সেখানে কোন প্রেম পত্র নাই।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৩০
গেছো দাদা বলেছেন: একমত।
৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৫৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: https://irabotee.com/ovisapsarechuyattor/
১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৩০
গেছো দাদা বলেছেন: ভালো কালেকশন।
৫| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: সাড়ে চুয়াত্তর সিনেমাটি আমি দেখেছি। সাদাকালো সিনেমা। সিনেমাটি ভালো লেগেছে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:০৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: প্রেমপত্রও মনে হয় সাহিত্যের একটা শাখা। ঢাকা জাদুঘরে একটা আলাদা জায়গা থাকা উচিত আদি যুগের প্রেমপত্র সংরক্ষণের জন্য। প্রেমপত্র নিয়ে কত যে গান আর কবিতা আছে তার ইয়ত্তা নাই।
সাড়ে চুয়াত্তর সিনেমা তো কয়েকবার দেখেছি। কিন্তু এই সাড়ে চুয়াত্তর মানেটা কি বলেন তো দাদা। যদিও আমার মুখে এই প্রশ্ন শোভা পায় না। কারণ আমার নিজের নিক হল সাড়ে চুয়াত্তর ঐ সিনেমার নামানুসারে।