নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মোদি ভক্ত ! এটা জেনে আপনি দুঃখ পেলে আমি আনন্দিত হব।

গেছো দাদা

গেছো দাদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

জয়তু ভারত: একটি কল্পবিজ্ঞান

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৮

এখন পর্যন্ত যত এলিয়েন বা স্পেসক্রাফট পৃথিবীতে এসেছে সবাই কোন অদ্ভুত কারনে (মুভিতে) মার্কিন দেশে নামে। ইদানিং 3i/ATLAS নামক এক ধূমকেতু (ভিন্নমতে স্পেস রক) নিয়ে সারা পৃথিবীর বৈজ্ঞানিকদের মধ্যে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। ম্যানহাটানের সাইজের এই ধূমকেতু নাকি একটি এলিয়েন স্পেস শিপ কারণ এটি নিজের মতন করে নাকি গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে।

ধরে নেওয়া গেল এটি একটি এলিয়েন স্পেস শিপ এবং এইবার এটি মার্কিন দেশকে পাত্তা না দিয়ে ভারতের রাজস্থানে থর মরুভূমিতে এসে ল্যান্ড করল।

তারপর..?

থর মরুভূমির অতিথি।

রাজস্থানের থর মরুভূমি—রাত তখন অন্ধকার, কেবল পূর্ণিমার চাঁদ বালির বুকে ছড়াচ্ছে সাদা আলো। হঠাৎ উত্তর দিগন্তে দেখা দিল অদ্ভুত এক জ্যোতিরেখা। যেন পুরো আকাশজুড়ে একটি অগ্নিদীপ্ত নদী বইছে।

গ্রামের মানুষ ভয়ে চিৎকার করে উঠল—“উল্কা পড়ছে!” কেউ বলল—“পৃথিবীর শেষ আসছে!”

ধীরে ধীরে সেই জ্যোতিপুঞ্জ নেমে এল বালির বুকের দিকে। শব্দ নেই, কেবল কাঁপছিল বালুর ঢিবি। কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশে ঝলমলে এক শঙ্খের মতো স্বচ্ছ মহাকাশযান স্থির হয়ে দাঁড়াল।

খবর পৌঁছে গেল সেনাশিবিরে। মুহূর্তে আসল জিপভর্তি সেনা, তাঁদের সঙ্গে বিজ্ঞানীরা। গ্রামের মানুষ দূর থেকে তাকিয়ে আছে ভয়ে আর বিস্ময়ে। কেউ মন্ত্র পড়তে লাগল, কেউ মাটিতে প্রণাম করল।

সেনারা বন্দুক তাক করল সেই অদ্ভুত জাহাজের দিকে। কিন্তু তাঁদের মনেও এক চাপা প্রশ্ন—“যদি যুদ্ধ হত, তবে এত নীরব আলো কেন?”

হঠাৎ মহাকাশযানের গায়ে খুলে গেল এক বিশাল দরজা। সেখান থেকে বেরিয়ে এল তিনটি অবয়ব। দেহ মানুষের মতো, কিন্তু লম্বা, চিকচিকে নীল-রূপালি রঙে ঢাকা। চোখের জায়গায় ছিল স্বচ্ছ লেন্স, মুখ নেই, আর শরীর জুড়ে রূপালি স্যুট।

কোনো শব্দ ছাড়াই হঠাৎ মানুষের মাথার ভেতর প্রতিধ্বনির মতো ভেসে এল স্পষ্ট স্বর— "আমরা প্রুকা জাতি। বহু দূরের নক্ষত্রলোক থেকে এসেছি। আমাদের গ্রহ যুদ্ধের আগুনে জ্বলছে। আমাদের অস্ত্র আছে, শক্তি আছে, কিন্তু নেই হৃদয়ের শান্তি। শুনেছি ভারতের সনাতন ধর্মে আছে করুণা, প্রেম আর ঐক্যের জ্ঞান। আমরা সেই আলোর খোঁজে এসেছি।"

সেনারা একে অপরের মুখের দিকে তাকালেন। কে উত্তর দেবে? তখনই এগিয়ে এলেন অরুণ চক্রবর্তী, যোধপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত পণ্ডিত।

তিনি বললেন "তোমরা সঠিক জায়গায় এসেছ। এই ভূমির শিরায় শিরায় প্রবাহিত হয়েছে ঋষিদের জ্ঞান। বেদে বলা আছে: ‘সর্বে ভবন্তু সুখিনঃ।’ সকলেই হোক সুখী।

প্রুকাদের চোখ সাদা থেকে সবুজে ঝিলিক দিল। তারা টেলিপ্যাথিতে উত্তর দিল— "এমন শিক্ষা তো আমাদের গ্রহে নেই। আমরা শুনতে চাই আরও।"

অরুণ মৃদু হাসলেন—
"উপনিষদে বলা আছে—ঈশাবাস্যমিদং সর্বম্। এই বিশ্বে যত কিছু আছে তার মধ্যে ঈশ্বর বিরাজমান। একে অপরকে আঘাত করলে আসলে নিজেদেরই আঘাত করি।"

তারপর তিনি গীতার বাণী উচ্চারণ করলেন— "অহিংসা, সত্য, ধৈর্য আর করুণাই জীবনের প্রকৃত শক্তি। অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ হয়তো জেতা যায়, কিন্তু ঘৃণার আগুন কখনও শান্ত হয় না। কেবল প্রীতি দিয়েই সমাধান আসে।"

প্রুকাদের চোখ থেকে ঝরে পড়ল আলোর ফোঁটা। তারা যেন কেঁদে ফেলল। তারপর সমবেত টেলিপ্যাথিতে সবাই শুনল—
"তোমাদের শিক্ষাই আমাদের নক্ষত্রের নতুন জীবন। আমরা প্রতিজ্ঞা করছি—অস্ত্র আমাদের শক্তি নয়, করুণা হবেই আমাদের ভবিষ্যৎ। ভারত আজ থেকে আমাদের গুরু।"

মরুভূমি আলোকিত হয়ে উঠল তাদের মহাকাশযানের জ্যোতিতে। ধীরে ধীরে শঙ্খসদৃশ যান আকাশে মিলিয়ে গেল।

সেই রাতে থরের আকাশে দেখা গেল অদ্ভুত দৃশ্য। প্রুকাদের মহাকাশযান আলো ছড়িয়ে যেন ভোরের সূর্য হয়ে উঠল। তাদের মনে ভরে গেল ভারতের বেদান্তের আলো।

তারা বিদায় নেওয়ার আগে আবার বার্তা পাঠাল—"আমরা দূর গ্যালাক্সির সন্তান। কিন্তু আজ থেকে আমরা তোমাদের আত্মীয়। ভারত আমাদের নতুন শিক্ষক।

বালির বুক জুড়ে নেমে এল নীরব শান্তি। মরুভূমির বাতাস যেন গেয়ে উঠল—"ধর্মো রক্ষতি রক্ষিতঃ"—ধর্ম যখন রক্ষা করি, তখন সে-ই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.