![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রয়োজনে মেইল করুন [email protected] । অথবা ফেসবুকে আসুন https://www.facebook.com/projonmo.chiyashi আমি একজন দর্শক মাত্র।কিছু দেখলে বাকি সবাই কে দেখাতে ইচ্ছে জাগে তাই ব্লগ লেখার ইচ্ছা
ইদানিং অদ্ভুদ একটা ট্রেন্ড চালু হইছে।
জাতীয় পত্রিকাগুলাতে ভাষাগত ক্লাসিফিকেশন আরম্ভ হইছে। মানে শ্রেণীভেদে মানুষের ভাষা বদলে যাচ্ছে! যেমন, পত্রিকার বিভিন্ন অনুসন্ধানী রিপোর্টে কর্মকর্তা বা বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাতকারের অংশটুকু লেখা হয় শুদ্ধ প্রমিত ভাষায় আর শ্রমিক শ্রেনী'র অংশটুকু লেখা হয় অশুদ্ধ ভাষায়।
------
আজকের প্রথম আলো থেকে উদাহরন দেই, বিলবোর্ড সরানোর প্রতিবেদনে, "বাংলাদেশ বিলবোর্ড মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বিলবোর্ড সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। আমরা জানতাম, তারা সরাবে। কারণ, অধিকাংশ জায়গায় অবৈধভাবে এই বিলবোর্ড দেওয়া হয়েছে।’
আর,
পান্থকুঞ্জে বিলবোর্ডের ব্যানার সরানোর দায়িত্বে থাকা কয়েকজন কর্মী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাগো মালিকরা কইছে বিলবোর্ড সরাইতে। আমরা কাজ করতাছি।’
------
জনাব সাধারন সম্পাদক প্রতিবেদনের মত একদম হুবহু কথা বলেছেন বলে মনে হয় না, বাংলাদেশের অত্যন্ত শীর্ষ পর্যায়ের ব্যাক্তিত্ব থেকে শুরু করে বেশীরভাগ মানুষেরই উচ্চারনে আঞ্চলিক টান আছে, বিশেষ করে সম্পাদক সাহেবের বক্তব্যের শেষ অংশটাতে আমি প্রায় নিশ্চিত, প্রতিবেদকই এই ভাষা বসাইছে।
আর বিলবোর্ড সরানোর কর্মী'র মুখে 'বলেছে' না লিখে 'কইছে' এবং আমরা'র জায়গায় 'আমগো' রেখে দিছে!
এক্ষেত্রে সমস্যাটা হলো ৫টা,
প্রথমত এই বাচনভঙ্গী প্রকৃত নয়। মানে যে যেভাবে বক্তব্য দিচ্ছে সেটা হুবহু সেভাবেই তুলে দেয়া হচ্ছে না। ফলে বক্তব্যে অর্থ ইনট্যাক্ট থাকছে না এবং এটা সাংবাদিকতার মূল দর্শনের সাথে যায় কি না তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।
২য় সমস্যা, প্রতিবেদক যদি সাক্ষাৎকারদাতাদের শব্দ চয়নে পরিবর্তন আনে সেক্ষেত্রে, কর্মকর্তা'র জন্য বিশুদ্ধ আর কর্মী'র জন্য অশুদ্ধ ভাষা নির্বাচন কেন? তা স্পষ্ট নয়!
৩য় সমস্যা, খেটে খাওয়া মানুষ মাত্রই অশিক্ষিত ও অশুদ্ধ ভাষা ব্যাবহার করে বলে পাঠকের অবচেতন মনে ঢুকিয়ে দেয়া। যা এক প্রকারের ডিসক্রিমিনেশন।
৪র্থ সমস্যা, প্রতিবেদনের সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্যই যদি বক্তা'র বক্তব্যের উপর কলম চালানো হয় তাহলে কেন সবার ক্ষেত্রে একই মান ফলো করা হচ্ছে না। শুদ্ধ ভাষা দিয়ে একজনের বক্তব্য প্রতিষ্ঠিত করা হলেও অপরজনের বক্তব্য'কে অশুদ্ধ করার মাধ্যমে অগুরুত্বপূর্ণ করে দেয়া হচ্ছে।
ফাইনালী, এই বিভাজন এবং পার্থক্যটা আমাদের সমাজের অনেক গভীর কিন্তু সুক্ষ্ণ বিভাজনের দিকে ইঙ্গিত করে।
----
পত্রিকাওয়ালারা যদি সিদ্ধান্ত নেন যে সকলের ভাষ্য হুবহু তুলে ধরবেন তাহলে সচিব যদি "আমি কি করেছি" বুঝাতে যেয়ে "আই কিচ্চি" বলে সেটাই লিখবেন। আর যদি প্রতিবেদনের স্বার্থে সম্পাদনা করেন, তবে ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গের সাথে সাথে আর্থ-সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় না নিয়ে দয়া করে সবার ক্ষেত্রে একই মান অনুসরন করবেন।
আশা করি সচেতন পাঠকরা খেয়াল করছেন বা করবেন বিষয়টা।
১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৩৮
প্রজন্ম৮৬ বলেছেন:
২| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৪
তিক্তভাষী বলেছেন: ঠিক বলেছেন। কথায় আছে - অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী। আমাদের তথাকথিত সুশীল সমাজ পদে পদে এর প্রমান দিচ্ছে।
১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৪২
প্রজন্ম৮৬ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
সেই সাথে একধরনের তাচ্ছিল্য এবং বৈষম্যেরও সুক্ষ্ণ দাগ পড়ছে!
৩| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:২৫
মনোজ মুকুট বলেছেন: হুম। নিজেদের শ্রেণী সম্পর্কে সুশীলরা খুব সচেতন। পত্রিকার মালিক-সম্পাদক-রিপর্টোররা নিজেদেরকে সুশীল জাত বলেই মনে করে। এটা অনেকটা আধৃনিকতা থেকে উত্তরাধুনিকতায় উত্তরণের মতো মদধ্যবিত্তীয় মানসিকতা থেকে সুশীলতায় উত্তরণ, আর কি। তো এরা বেশ কউকেটা মনে করে নিজেদের । আগের মধ্যবিত্ত চেতনা থেকে আরো একটু উচ্চতর শ্রেনীবোধ ওদের মধ্যে জন্ম নিয়েছে। নিজেদের শ্রেনী অস্তিত্ব রক্ষার্থে নিজেদেরকেই নানা কৌশলের আশ্রয় নিতে হচ্ছে। প্রথম আলো বা অন্য মেইন স্ট্রিমের পত্রিকারা মুলত সেই শ্রেনীটির জন্যই লড়ছে যারা নিজেরা বদলায় না কিন্তু অপরকে বদলাতে বলে।
১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৪৩
প্রজন্ম৮৬ বলেছেন: যথার্থ বলেছেন। অনেক ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৮
তাসনুভা সাখাওয়াত বীথি বলেছেন: এই অংশটুকু পড়ে মজা পেলামঃ
পত্রিকাওয়ালারা যদি সিদ্ধান্ত নেন যে সকলের ভাষ্য হুবহু তুলে ধরবেন তাহলে সচিব যদি "আমি কি করেছি" বুঝাতে যেয়ে "আই কিচ্চি" বলে সেটাই লিখবেন।