![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বইয়ের পাতা থেকেঃ
রাইখেনবাখের ঝরনার সামনে মুখোমুখি সংঘর্ষ শেষে মারা গিয়েছেন গোয়েন্দাদের গোয়েন্দা, শার্লক হোমস আর অপরাধ জগতের নেপোলিয়ন, প্রফেসর জেমস মরিয়ার্টি (ফাইনাল প্রবলেম- দ্রষ্টব্য)।
ঘটনার তদন্তে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড থেকে অকুস্থলে হাজির হল অ্যাথেলনি জোনস (দ্য সাইন অফ ফোর-এর সেই গোয়েন্দা!), দেখা হল পিঙ্কারটন ডিটেকটিভ এজেন্সি থেকে ছুটে আসা গোয়েন্দা ফ্রেডেরিক চেজ-এর সাথে। দুজনের মনে একই প্রশ্ন, আসলেই কি মারা গিয়েছেন হোমস? উদ্ধার করা লাশটা কি সত্যিই মরিয়ার্টির?
আমেরিকার অপরাধ জগত দখল করা শেষে মরিয়ার্টির সাথে হাত মিলিয়ে ইউরোপ-আমেরিকা জুড়ে এক সুবিশাল অপরাধ-সম্রাজ্য গড়ার আশায় আমেরিকা থেকে ইংল্যান্ডে এসে হাজির হয়েছে শয়তানী মস্তিষ্কের কারখানা, ভয়ঙ্কর অপরাধী ক্ল্যারেন্স ডেভেরো। কিন্তু, মরিয়ার্টি যখন মৃত, তখন ইংল্যান্ডের অপরাধ জগতের ফাঁকা সিংহাসনে বসতে বাঁধা আর রইলো কোথায়?
নিজের প্রিয় শিষ্যকে নৃশংসভাবে হত্যা করার প্রতিশোধ নিতে চায় ফ্রেডেরিক চেজ, ক্ল্যারেন্সকে নিজের করা প্রতিটা অপরাধের প্রাপ্য বুঝিয়ে দিতে চায়। কিন্তু, ক্ল্যারেন্স ডেভেরো যে এক অপচ্ছায়া, যার প্রকৃত চেহারা সকলের অজানা? কোথায় খুঁজবে ডেভেরোকে?
এককালের অপরাধী, এখন ভালোমানুষের মুখোশ পড়ে ব্যবসায়ী সেজে থাকা ক্ল্যারেন্সের সহকারী স্কচি লাভেল, এডগার আর লেলান্ড মর্টলেকের পিছু নিলো সে, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল অ্যাথেলনি জোনস, হোমসের তদন্ত-পদ্ধতির প্রতি আগ্রহ যাকে করে তুলেছে অসামান্য পর্যবেক্ষণ ও অনুমান-শক্তিসম্পন্ন গোয়েন্দা।
জিজ্ঞাসাবাদের আগেই সদলবলে খুন হয়ে গেল স্কচি ল্যাভেল - অন্তরাত্মা কেঁপে ঊঠল সবার। লন্ডনের রাস্তায় যেন আরেক 'জ্যাক দ্য রীপার' নেমে এসেছে, গোগ্রাসে গিলে নিচ্ছে অপরাধ দুনিয়াকে, পিছনে রেখে যাচ্ছে রক্তাক্ত পদচিহ্ন। কিভাবে তার সাথে টক্কর দেয়া সম্ভব?
ঐদিকে মাঠে নেমেছে আবারো জন ক্লে (দ্য রেড হেডেড লীগ-এর চালু দাগাবাজ)? কি সম্পর্ক তার সাথে ডেভেরোর? ফাঁদ পাতলো জোনস কিন্তু বৃথা চেষ্টা। খোদ স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডেই বোমা হামলা করে বুঝিয়ে দিল ডেভেরো, আমার সাথে লাগতে এসো না!
রোখ চেপে গেলো জোনস আর চেজের - হোমস আর ওয়াটসনের মত জুটি বেঁধে পিছু নিলো ক্ল্যারেন্স ডেভেরোর। পারবে তো এই রাহুগ্রাস থেকে লন্ডনকে বাঁচাতে?
কেমন লাগলোঃ
স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের পর অনেকেই শার্লক হোমসকে নিয়ে লিখেছেন, তবে একমাত্র হরউইৎজকেই অনুমতি দেয়া হয়েছিলো খোদ 'কোনান ডয়েল এস্টেট' থেকে। সিরিজের প্রথম বই ভূমিপ্রকাশ থেকে বের হয়েছিলো শোভন নবীর অনুবাদে, 'দ্য হাউজ অব সিল্ক।' কিন্তু, মরিয়ার্টি হাতে তুলে নেয়ার আগে দ্বিধা-দ্বন্দে ভুগছিলাম, যেই বইয়ে খোদ শার্লক হোমস কিংবা ওয়াটসন নেই সেই বই পড়ে কি আর খাঁটি শার্লকের স্বাদ পাওয়া যাবে? নিঃসন্দেহে!
হোমসের বদলে জোনস আর ওয়াটসনের বদলে চেজ - নিজেদের ভূমিকায় শতভাগ সফল। নতুন চরিত্র, নতুন রহস্য, ভিন্ন দৃষ্টিতে লন্ডনের অপরাধ জগত - অসাধারণ দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। পুরানো পাপীদের মধ্যে 'লাল-চুলো সংঘের' জন ক্লে কিংবা 'মরিয়ার্টির ডান হাত' কর্ণেল সেবাস্টিয়ান মোরানের দেখা পেয়ে ভালো লেগেছে। অতীতের কেসগুলোর বর্ণনা টেনে এনে শার্লকের দুনিয়ার সাথে পাঠকদের সংযুক্ত করে রেখেছেন হরউইৎজ। এছাড়াও আছে হোমসের আসল বইয়ের মতই মাথা গুলিয়ে দেয়া সাংকেতিক চিঠি, আছে এমন হত্যাকান্ড যা সমাধানের কোনো উপায়ই দেখা যাচ্ছে না, আছে জালের মতন বিছিয়ে রাখা রেড হেরিং রহস্য, আছে ছদ্মবেশ, ফাঁদ আর শেষ পর্যন্ত পাঠককে ধোঁয়াশায় রাখা তদন্ত-পদ্ধতি।
অন্যদিকে হোমসের প্রথাগত কাহিনীতে অনুপস্থিত এক নৃশংস, খুনে অপরাধীও আছে; আছে মাফিয়ার মতন সংগঠিত এক অপরাধী দল নিজেদের কাজে বাঁধা আসলে যারা প্রাকাশ্য দিবালোকে গলায় ছুড়ি চালাতে ভাবে না। মেফেয়ারের ক্লাব থেকে লন্ডনের ডকইয়ার্ডে - মারদাঙ্গা একশন আপনাকে রবার্ট ডাউনি জুনিয়র অভিনীত শার্লকের কথা মনে করাবে। সমাপ্তির টুইস্টটা হয়তো অনেক পাঠক আগেই বুঝতে পারবেন, কিন্তু তাতেও তার আকর্ষণ কমে না। নিঁখুত কাহিনী বিন্যাসে ভিক্টোরিয়ান ইংল্যান্ডের পটভূমিতে হোমসের ছায়াকে সাথে করে হোমস-ওয়াটসন-বিহীন অসাধারন একটি বই, 'মরিয়ার্টি।'
বইয়ের বিস্তারিতঃ
বইঃ মরিয়ার্টি
লেখকঃ অ্যান্টনি হরউইৎজ
অনুবাদকঃ মোঃ ফুয়াদ আল ফিদাহ
প্রকাশনীঃ ভূমিপ্রকাশ
প্রচ্ছদঃ সজল চৌধুরী
মূল্যঃ তিনশত চল্লিশ টাকা
২০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৪২
ঘরহীন বলেছেন: ঠিক। আমি আসলে একই সাথে একাধিক বই পড়ী, তাই একঘেয়েমিটা লাগে না। এখন যেমন একটা মিলিটারি নন-ফিকশন পড়ছি, থ্রিলার পড়ছি, সাই-ফাই পড়ছি, আত্মজীবনিও। ধনুবাদ।
আপডেট হলো - 'ভালা করি ঘর বানাইয়া, কয়দিন থাকমু আর/ আয়না দিয়া চাইয়া দেখি, পাকনা চুল আমার/ লোকে বলে, বলে রে, ঘর-বাড়ির বালা নাই আমার।' - হাসন রাজা ওস্তাদ যা বলেছেন তাই!
২| ২০ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৫
অজ্ঞ বালক বলেছেন: ভুল জায়গায়, ভুল পোস্ট দিছ। থ্রিলার গ্রুপে দাও।
২০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৩৮
ঘরহীন বলেছেন: ভাই, আমি চাই ব্লগেও এসব গল্পের প্রচার ও প্রসার হোক। গ্রুপে লেখার জন্য অনেকে তো আছেই।
৩| ২০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: ধর্মের আলোচনার চেয়ে বইয়ের আলোচনা ভালো।
অনুবাদ বই আমার খুব কম পড়া হয়েছে।
২০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৩৯
ঘরহীন বলেছেন: দুটাই জরুরী। তবে যে যেটায় ভালো, সেটা নিয়েই লেখুক। সমস্যা হলো ধর্ম নিয়ে পোস্ট দিলে সেটা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে না দেয়াই উত্তম। এটা খুব একটা কষ্টকর কিছু না। পড়ুন বেশি করে। এখন তো অনুবাদের জোয়ার চলে আমাদের দেশে।
৪| ২১ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:০২
দারাশিকো বলেছেন: বেশ আগ্রহোদ্দীপক করে লিখেছেন। পড়তে ইচ্ছে হচ্ছে। কিন্তু সে সুযোগ বোধহয় হবে না।
২১ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৩৬
ঘরহীন বলেছেন: দেশের বাইরে আছেন মনে হয় এখন। দেশে আসলে পড়বেন, সমস্যা কোথায়? বা ইংরেজি বইটাও পড়ে দেখতে পারেন। ইংরেজী লেখার ধরণের সাথে পরিচিত থাকলে বুঝবেন হরউইৎজ পুরোপুরি আদ্যিকালের ইংরেজী ভাষার ধরণ ফলো করে, ঠিক যেন কোনান ডয়েল। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
৫| ০৫ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:১৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: একটি পরিপাটি আলোচনা। ভালো লেগেছে।
পোস্টে ৩য় প্লাস। + +
আপনি অনুবাদ রচনাবলী পড়তে আগ্রহী, সেটা কবিতাই হোক আর গল্প কিংবা প্রবন্ধ, তার কিছুটা পরিচয় আগে পেয়েছিলাম। গতকাল আমি একটা অনুবাদ কবিতা ব্লগে প্রকাশ করেছি। পাঠের আমন্ত্রণ রইলো।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হোমসের ফেইক ডেথ নিয়েও একটা গল্প আছে। আবার, জেমস বন্ডের ফেইক ডেথ নিয়েও একটা জেমস বন্ড সিরিজ আছে (You Only Live Twice)। এ কথাগুলো বলার উদ্দেশ্য হলো, থ্রিলার, ডিটেক্টিভ এ ধরনের বই একনাগাড়ে না পড়ে একটা দুটা করে পড়ে আবার গ্যাপ দেয়া ভালো, মজা পাওয়া যায়। শার্লক হোমস পড়া শুরু করে এরকম হয়েছিল, পরের গুলো আগেই বুঝে যাই, অথবা একঘেঁয়েমি লাগে। রিসেন্টলি জেমস বন্ড সিরিজ নতুন করে দেখা শুরু করেছিলাম। প্রতিদিন ২/৩/৪টা করে। ১২টা শেষ করার পর বিরক্তি ধরে গেল। এখন গ্যাপে আছি
আপনার রিভিউ ভালো লেগেছে।
ঘর বানানোর আপডেট প্লিজ