নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানা ও জানানোর জন্যই বেচে থাকা। জীবন তো শুধুই কিছু মুহূর্তের সমষ্টি।

জিএমফাহিম

জানা ও জানানোর জন্যই বেচে থাকা। জীবন তো শুধুই কিছু মুহূর্তের সমষ্টি।

জিএমফাহিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোন বিদেশির ঠ্যাকা পরে নাই আমাদের জানার। আমাদের তাদের জানাতে হবে এই সুন্দর দেশ সম্পর্কে। এটা আমাদের দায়িত্ব, এটা "আমার " দায়িত্ব।

২৭ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৮



(১)
ভারত ভ্রমণের মাত্র কয়েকদিন আগে। সেমেস্টার ফাইনাল পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে ক্যাম্পাসে এসেছি। দুপুরের খাবারের জন্য ফুডকোর্টে ঢুকলাম, দেখি বেশি কিছু বিদেশি বসে আছে। আমি আমার অর্ডার নিয়ে একটা খালি জায়গা পেয়ে বসলাম। পাশে ছিল একজন। নিজে থেকেই আমার সাথে কথা বললো। ইথেন, এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। সঙ্গীতে পড়াশুনা করছে। কিছুক্ষণ আলোচনা করে জানতে পারলাম বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য তাকে মুগ্ধ করেছিল যখন যে এই দেশের ব্যাপারে একদিন গুগল করে দেখেছে। তাই সুযোগ পেয়ে চলে আসলো দেশ ঘুরতে। বাংলাদেশের প্রায় সবকিছুর তার কাছে খুবই বিচিত্র মনে হচ্ছে, সবই ভাল লেগেছে তবে আমাদের খাবারে নাকি মশলা বেশি তাই বাইরে খেতে নাকি একটু সমস্যা হয়। আমিও আমার টেক্সাস সফর আর আমেরিকার কম-মসলার বোরিং খারাপের গল্প তার কাছে করলাম। একটা জিনিস বুঝলাম দূর দেশের মানুষ যারা বাংলাদেশ সম্পর্কে একটু জানার চেষ্টা করেছে তাদের একটা আগ্রহ জাগবেই জীবনে একবার হলেই এই দেশটা ঘুরে দেখার।


(২)
কলকাতার ফেয়ারলি প্যালেস থেকে বিদেশি কোঠায় ভারতের আন্তঃনগরের টিকেট কাটার জন্য গেলাম। সেখানে পরিচয় হল, পিটারের সাথে। সে এসেছে চেক প্রজাতন্ত্র থেকে। ভারতে তার এই নিয়ে তৃতীয় ভ্রমণ। এশিয়ার অনেক দেশই তার ঘুরা হয়েছে। বুঝলাম সে একজন হিপি ট্রাভেলার। তো বাংলাদেশের কথা জিজ্ঞেস করায় সে বললো "মনে কিছু করবেন না, তবে আমার কাছে মনে হয় বাংলাদেশের মধ্যে কোন নতুনত্ব পাব না যেটা ভারতে পেয়েছি।"। তার কথায় রীতিমত আমি আকাশ থেকে পড়লাম। পরে আমি দেশের বেশ কিছু উৎসব, রীতিনীতি, খাবার ও কিছু ঐতিহাসিক স্থাপত্যের কথা বললাম। দেখলাম সে খুব মনযোগ দিয়ে শুনছে যেন বড় একটা ভুল ভাঙলো তার। টিকেট পেয়ে আমি আমার মত চলে গেলাম। যাওয়ার সময় একটা মুচকি হাসি দিল আমার দিকে তাকিয়ে। জানি না আমার কথায় কতটা ভুল ভাঙ্গলো তার। তবে এটা উপলব্দি করে ভাল লাগছিল যে আমাদের দেশের এমন অনেক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছে যা এমন কথার পাল্টা যুক্তি হিসেবে পেশ করার সময় যুক্তির অভাব পড়বে না।


(৩)
টেক্সাস (হিউস্টন সিটি) থেকে দেশে ফিরে আসার সময় বিমানবন্দর যেতে ট্যাক্সি নিয়েছি। চালাচ্ছি এক ভদ্রমহিলা। বাংলাদেশি জানার পর একটু কৌতূহলী হলেন সে। জানতে চাইলেন দেশ সম্পর্কে, আমাদের কালচার সম্পর্কে। কথায় কথায় কিভাবে চলে এসেছিল আমাদের ভাষা আন্দোলনের কথা। এখন হয়তো চিন্তা করলে ভাল লাগে যে দূর দেশের একজন ভবিষ্যতে যখনই বাংলাদেশের নাম শুনবে তখনই তার মনে পড়বে, এই দেশের মানুষ তো মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিল, এমন নজির কয়টা আছে

(৪)
The Great British Bake Off এর বিজয়ী বাংলাদেশি বংশভুত নাদিয়া হোসেন বলেছে "Bangladeshi cuisine has no dessert"। বিগত কতদিনে এর প্রতিক্রিয়া দেখে এমন এমন বাংলাদেশি Dessert সম্পর্কে জানলাম যা জীবনেও জানতাম না। আশা করি নাদিয়া হোসেনও প্রতিক্রিয়াগুলো দেখেছে। বিদেশি সংবাদমাধ্যমেও এসেছে, দিন শেষে নাদিয়া আপা খাইলো পচানি আর দেশের dessert সম্পর্কে জানলো বিশ্ববাসী।


* * *

প্রায় ২০০টার দেশের একটা দেশ বাংলাদেশ। সাইজে ছোটো। অত ধনীও না। তবে পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশগুলোর একটি। আছে নিজেদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, উৎসব, খাবার, রীতিনীতি। এত দেশের ক্লাটারের মাঝে কোন বিদেশির ঠ্যাকা পরে নাই আমাদের জানার। আমাদের তাদের জানাতে হবে এই সুন্দর দেশ সম্পর্কে। এটা আমাদের দায়িত্ব, এটা "আমার " দায়িত্ব।

* * *

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৫

আব্দুল্লাহ্ আল আসিফ বলেছেন: নাদিয়া ভুল বলেনি, সুন্দর লেখা এনিওয়ে।

২| ২৮ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৪৫

অশ্রুকারিগর বলেছেন: সুন্দর লেখা ছিল শেষে নাদিয়াকে টেনে আমেজটাই নষ্ট করে দিলেন বলে প্লাস দিতে পারলাম না।

তবে আপনার বাকিটুকুর সাথে একমত। আমরা যখন বাইরে যাই তখন আমরাই এম্ব্যাসাডর বা রিপ্রেজেন্টেটিভ হয়ে যাই আমাদের দেশের। আমাদেরই উচিত সবার কাছে সুন্দরভাবে নিজের দেশকে তুলে ধরা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.