নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জানা ও জানানোর জন্যই বেচে থাকা। জীবন তো শুধুই কিছু মুহূর্তের সমষ্টি।
গত পর্বে বলেছিলাম কীভাবে বিতর্কের সময় এক পক্ষ অন্যের পক্ষের যুক্তি বুঝে বা না বুঝে অন্য এমন জিনিসকে খণ্ডন করে যেটা আদৌ যুক্তি উত্থাপনকারি বলেনি বা বুঝাতে চায়নি। যেটাকে স্ট্র-ম্যান ফ্যালেসি বলে। [ যদি সেটা দেখে না থাকেন তাহলে এই লিঙ্ক এ প্রবেশ করুন। আজকে আরেকটি বহুত প্রচলিত ফ্যালেসি নিয়ে আলোচনা করবো। যেটার নাম Ad Hominem Fallacy.
AD Hominem Fallacy হচ্ছে যখন কেউ কোন উত্থাপিত যুক্তি বা স্টেটমেন্ট খণ্ডন না করে উত্থাপনকারীর বা সম্পৃক্ত কোন ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা বা হামলা করে। ফ্যালাসিকারি এক্ষেত্রে মনে করে স্টেটমেন্টকারির ব্যাক্তিগত বৈশিষ্ট্য বা ত্রুটি দেখিয়ে দেয়ার মাধ্যমে যে উত্থাপিত যুক্তিকে খণ্ডন করেছে। অথচ টেন্টমেন্টকারির মুলভাব অটুট থেকে যায়
উদাহরনে আসি।
শুভ আর তমা দুইজন সহপাঠী। একদিন ক্লাসে তারা নৈতিকতা নিয়ে কথা বলছিল।
শুভঃ “তমা, পরীক্ষার সময় নকল করা নৈতিকতা বহির্ভূত”
তমাঃ “কিন্তু তুই নিজেই তো তো গত সেমেস্টারের এক পরীক্ষায় নকল করলি !”
এখানে তমা একটি Ad Hominem Fallacy বলেছে। শুভর স্টেটমেন্ট ছিল “পরীক্ষায় নকল করা অনৈতিক”। তমা সেটার বিপরীতে কোন যুক্তি পেশ করেনি। বরং সে শুভর ব্যাক্তিগত বৈশিষ্ট্যের দিকে আঙ্গুল তুলেছে। শুভ কি কাজ করেছে সেটার সাথে “পরীক্ষায় নকল করা”র নৈতিকতার প্রশ্ন প্রাসঙ্গিক না। সেটা স্টেটমেন্ট থেকে নিরপেক্ষ ও টেন্টপেন্টকে ভুল প্রমাণ করে না। তমা এখানে এটা চিন্তা করেছে যে সে শুভর দিকে আঙ্গুল তুললে তার স্টেটমেন্টটা দুর্বল হয়ে যাবে। কিন্তু শুভর ব্যাক্তিগত বৈশিষ্ট্যের জন্য এই স্টেটমেন্ট এর কোন আসে যায় না।
উল্লেখ্য যে, যখন যুক্তি বা স্টেটমেন্ট উত্থাপনকারির ব্যাক্তিগত বৈশিষ্ট্য সরাসরি স্টেটমেন্ট বা যুক্তির সাথে সঠিক বা বেঠিক হওয়ার পিছনে জড়িত হবে, তখন আবার তার ব্যাক্তিগত যুক্তির দিকে আঙ্গুল তোলা যথার্থ হবে। তখন আর সেটা Ad Hominem Fallacy হবে না।
উদাহরনে আবার শুভ ও আর তমার আরেকটি ঘটনায় যাই।
শুভ আর তমা ছুটির পর রাস্তা দিয়ে হাটছে। শুভ হঠাৎ করে বলে,
“প্রিন্স ক্লাসে সব সময় চুপ থাকে।”
তমা শুভর কথায় অবাক হয়ে বললো,
“আরে না! আমি প্রিন্সকে আজকেই ক্লাসে কথা বলতে দেখেছি।”
যদিও এখানে “স্টেটমেন্ট এর সাথে সম্পৃক্ত একজনের (প্রিন্স) ব্যাক্তিগত বৈশিষ্ট্য দিয়ে খণ্ডন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এখানে উত্থাপিত স্টেটমেন্ট এর সঠিক বা বেঠিক হওয়ার পিছনে ব্যাক্তিগত বৈশিষ্ট্য সরাসরি জড়িত। যেমন এখানে স্টেটমেন্ট ছিল “প্রিন্স ক্লাসে ‘সবসময়’ চুপ থাকে ”। তমার যুক্তি থেকে বুঝা যায় না যে এই স্টেটমেন্ট ভুল। কারণ সে যেহেতু ক্লাসে কথা বলে সেহেতু তারপক্ষে ‘সব সময়’ চুপ থাকা সম্ভব না, সেটা শুভ স্টেটমেন্ট দিয়েছে।
কীভাবে Ad Hominem Fallacy থেকে বিরত থাকা যায়
চেষ্টা করতে হবে স্টেটমেন্টকারি কি বুঝাতে চেয়েছে। যদি স্টেটমেন্টকারির কোন ব্যাক্তিগত সমস্যা থেকে থাকে ( যেটা মুল যুক্তি খণ্ডনের ক্ষেত্রে অপ্রাসঙ্গিক ও অপ্রভাবক ) সেটা যুক্তি খণ্ডন করার সময় বিরত থাকা।
প্রথম উদাহরনের একটা আদর্শ বিকল্প এখানে বলছি, যদি তমা Ad Hominem Fallacy বুঝতো আর বিরত থাকত তাহলে ঘটনাটা এইরূপ হতে পারতোঃ
শুভঃ “তমা, পরীক্ষার সময় নকল করবি না। এটা নৈতিকতা বহির্ভূত”
তমাঃ “আমি তোর সাথে একমত। তবে তোকে একটা কথা বলি। আমি তোকে গত সেমেস্টারে নকল করতে দেখেছি। তুই যেহেতু জানিস যে এটা নৈতিকতা বহির্ভূত, তুইও এটা থেকে বিরত থাকিস । কেমন ?”
২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৯
জিএমফাহিম বলেছেন: খারাপ বলেন নাই।
২| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৩
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: বাপরে। কথার মারপ্যাঁচ...
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:২২
চাঁদগাজী বলেছেন:
বাংগালীদের তর্কে প্রথমত: কোন লজিক নেই; কারণ, তাদের শিক্ষাগত যোগতা লজিক ব্যবহারের স্তরে নয়। Ad Hominem Fallacy বাংগালী চরিত্রের অন্যতম অংশ