নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানা ও জানানোর জন্যই বেচে থাকা। জীবন তো শুধুই কিছু মুহূর্তের সমষ্টি।

জিএমফাহিম

জানা ও জানানোর জন্যই বেচে থাকা। জীবন তো শুধুই কিছু মুহূর্তের সমষ্টি।

জিএমফাহিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডেমোক্লিস, ফিনিক্স, হাইড্রা। আর আপনি।

১০ ই জুন, ২০২১ রাত ১:০৪



ডেমোক্লিস ছিল রোমান শাসন দ্বিতীয় ডায়নেসিয়াস এর উপদেষ্টা। প্রকাশ্যেই সে রাজার সিদ্ধান্তের কটাক্ষ করতো। তো একদিন ডায়নেসিয়াস তাকে রাজার স্থান ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব দিলো। অহংকারে বুদ ডেমোক্লিস তাই করলো। চারিদিকে শত্রু থাকায় রাজা ডায়নেসিয়াস এর সিংহাসনের উপর সবসময় একটা তলোয়ার ঘোড়ার লেজের চুল দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা থাকতো। সিংহাসনে বসার পরেই ডেমোক্লিস প্রতিক্ষণে মৃত্যু ভয়ে কাতর হয়ে গেল। আতংকে পাগলপ্রায় হয়ে নিজের ভুল বুঝতে পেরে রাজা ডায়নেসিয়াস পায়ে লুটিয়ে পরে সে। ডেমোক্লিস ছিল Fragile.

Fragile এর বিপরীত হচ্ছে Strong.

গ্রিক পুরানের ফিনিক্স পাখির নাম আমরা অনেকেই শুনেছি। এই অতিপ্রাকৃত পাখি প্রায় ৫০০ বছর বাঁচে। তারপর বিস্ফোরিত হয়ে ছাই হয়ে যায়। সেই ছাই থেকে আবার পুনর্জন্ম হয়। প্রবল শক্তিধর কেউ আঘাত করলে এটার নিয়তি সেই ছাই হয়ে যাওয়া আর আবার জন্ম নেয়া পর্যন্তই। যদিও প্রতিহত করার ক্ষমতা ফিনিক্স এর সীমিত তবুও ফিনিক্স একটা "Strong" চরিত্র।

গ্রিক পুরানে আরেকটা অতিদানব প্রাণী হচ্ছে হাইড্রা। এই প্রাণীটা মাথা দিয়ে শত্রুকে আঘাত করে। কেউ যদি হাইড্রার শিরচ্ছেদ করতে যায় তাহলে আরও নতুন মাথা বাড়তে থাকে। অর্থাৎ নতুন আঘাতে সে হয়ে উঠে আরও শক্তিশালী। ফিনিক্স এর Strong চরিত্রের ঊর্ধ্বে গিয়ে হাইড্রা হয়ে উঠে অজেয়, অবিনাশী। একটা সময় কঠিন শত্রুও হয়ে উঠে ঠুনকো।

এটাকে বলা যায় Antifragile.

গ্রিক পুরাণ আর রাজদরবারের গল্পগুলো অনেকাংশে নিরন্তন বাস্তবতারই নানা রূপক আর নজিরের মাধ্যমে প্রকাশমাত্র। যারা জীবনসংগ্রামে ব্যস্ত তাদের প্রতিহত করার জন্য হাজারটা অপশক্তি কাজ করেই চলে। সেটার প্রতিক্রিয়া তিনটাই হতে পারে।

হয় আপনি Fragile। মানে নিজের জায়গা থেকে সরে গিয়ে সাফল্যের সিঁড়ির নিচের দিকে তাঁবু গাঁথা লোক আপনি। ইতিহাস দূরে থাকা নিজের সন্তানরা আপনার ভাল নজির দিবে না। আপনার গতি শুধুই করুণাব্যবসা।

নাহলে আপনি Strong। অপশক্তি প্রতিহত করার চেষ্টা না করলেও আপনি নিজের জায়গায় অটুট । হতে পারে সেটায় সফল হবেন। কিন্তু এই আদর্শের নিয়তি শুধুই ক্ষতবিক্ষত জীবন। একটা সময় শুধু সংগ্রামের কিচ্ছাই দিয়ে যাবে পরে প্রজন্মকে; সমাধান না।

নাহলে আপনি Antifragile। অপশক্তিকে চেনার চেষ্টা করেন আপনি। আঘাতকে ইতিবাচকভাবে দেখবেন। একটা সময় শক্তি জমিয়ে প্রতিহত করেন। এভাবেই জীবনসংগ্রামে হয়ে উঠে অজেয়।

আমাদের সমাজে জখম পাওয়া Strong চরিত্রকে এপ্রিসিয়েট করা হয়। Fragile রা হয়ে উঠে করুণার পাত্র। কিন্তু Antifragile রা যতই পরিবর্তন আনুক না কেন তাদের খল চরিত্রেই দেখানো হয়। অপসক্তি প্রতিহতও যেন আমাদের চোখে হয় সন্দেহজনক; অনৈতিক!

মজার ব্যাপার হচ্ছে Antifragile রা এটার তোয়াক্কা করে না। তাইতো তারা Antifragile।

এরা দশ লোকের চক্ষুশূল হলেও, বিশ লোকের দুআতেও তাদের নাম চলে আসে।

আমরা Fragile না হই, Strong এর খ্রান্ত না হই; আর যাই হোক কারো জন্য অপশক্তি যেন না হয়ে উঠি। Antifragie চরিত্রকে সমাজ সেলেব্রেট করবে এমন কালচার কামনা করি।

[ ছবিঃ দ্য সোর্ড অফ ডেমোক্লিস, ১৮১২, রিসার্চ ওয়েস্টল ]

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুন, ২০২১ সকাল ৯:৪৩

কল্পদ্রুম বলেছেন: STRONG VS ANTIFRAGILE এর প্রতি সমাজের এরকম পর্যবেক্ষণ ভেবে দেখিনি। এন্টিফ্রাজাইলদের খল চরিত্র হিসেবে দেখার ব্যাপারটি কি আরো ব্যাখ্যা করা যাবে? বাংলা সিনেমার সব সৎ আদর্শবান নায়কই মনে হয় এন্টিফ্রাজাইল!

১০ ই জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩২

জিএমফাহিম বলেছেন: বাস্তবতা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভিন্ন। বাস্তবে এন্টিফ্রেজাইলরা ফাস্ট ইম্প্রেশনে বা দূর থেকে নেতিবাচক ধারনার সম্মুখীন হয়।

২| ১০ ই জুন, ২০২১ দুপুর ২:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: এগুলো কি বাস্তব না রুপকথা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.