নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম
বালক বেলায় একবার মাছরাঙা পাখি ধরবো বলে
দাদুর বাড়ির পুকুর পাড়ে ফাঁদ পেতে চুপচাপ বসে ছিলাম সারাদিন
একটাও মাছরাঙা ধরা দেয়নি সেদিন;
শুধু আমগাছের ডালে বসে এক মাছরাঙা আমার দিকে একনজরে অনেকক্ষণ তাকিয়েছিল,
কাউকে বলতে পারিনি।
আমার মনে হয়েছিল সেই তাকানোতে ছিল বিদ্রুপ আর ঘৃণার হাসি।
তারপর থেকে লজ্জায় আর অপমানে আমি সারাজীবন আর কোনো পাখির চোখেই চোখ রাখতে পারিনি ।
কিশোর বয়সে পাশের বাসার এক বালিকা
সন্ধ্যার নির্জলা আলোতে আনাড়ি হাতে আমার হাতে একটা চিঠি ধরিয়ে দিয়েছিল,
বুকে ধড়ফড় নিয়ে সে চিঠি কোনোমতে প্যান্টের পকেটে লুকাতো পেরেছিলাম।
গভীর রাতে পকেট থেকে বের করে সে চিঠি পড়তে গিয়ে আবিস্কার করলাম,
কাঁপা কাঁপা হাতে ইংলিশে লেখা
“ লাভ ইউ”
চিঠির উত্তর দেবার ভয়ে সেই বালিকার কাছ থেকে আমি সারাজীবন পালিয়ে বেড়িয়েছি,
তাইতো উত্তর না দেওয়া এক চিঠির অভিশাপে আমি একজীবন ভালোবাসাহীনই থেকে গেলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিনিয়র আপুর সাথে রাতের বেলায় রিকশায় ফিরতে গিয়ে আচমকা দুজনেই চন্দ্রাহত হয়ে ভালোবাসাহীন চুম্বনের স্বাদ পেয়েছিলাম,
সেই চুম্বন ছিলো আমার জীবনের প্রথম চুম্বন
যা ছিলো দীর্ঘ আর গন্তব্যহীন
আমার বুকে বিদ্যুত-চমকে দিয়ে সেই আপু দৌড়ে হলে ঢুকে গিয়েছিলেন অচেনা মানুষের মতো।
এক নারীর ভালোবাসাহীন চুম্বনের স্বাদে বাকিজীবন আমার ঠোঁট আর কোন নারীর চুম্বনের স্বাদ পায়নি।
যুবক বয়সে জ্যৈষ্ঠের জল পান করতে গিয়ে এক নারী আমাকে অজগরের মতো জড়িয়ে ধরে বলেছিলে
‘ চলো পালিয়ে বিয়ে করি!”
আমি সেই নারীর জন্যই ঢাকা শহরে পালিয়ে এসেছিলাম
আর তার অপেক্ষায় ছিলাম কমলাপুর রেল স্টেশনে,
আমি পঁচিশ বছর রেল স্টেশনে বসে আছি সেই নারীর জন্য
এই পঁচিশ বছর আমি গোসল করিনি, চুল দাড়ি কাটিনি,
সেই নারীকে আর কখনোই দেখিনি,
আমাকেও হারিয়েছি সেদিনই।
সেদিন থেকেই আমার ঢাকা শহর আটকে আছে পঁচিশ বছর যাবত কমলাপুর রেল স্টেশনে।
এখন সন্ন্যাসির মতো চেহারা নিয়ে পড়ন্ত বয়সে সারাদিনই জীবনের পাপের কথা ভাবি-
একটা মাছরাঙা পাখির বিদ্রুপ আর ঘৃণার হাসি,
এক বালিকার ভালোবাসার চিঠির উত্তর না দেওয়ার অভিশাপ,
এক নারীর ভালোবাসাহীন চুম্বনের স্বাদের পাপে আমার ঠোঁট পুড়ে গিয়েছিল বাকি জীবনের জন্য,
এক নারীর জ্যৈষ্ঠের জল পান করে জীবন আমার অজগরের মতোই শীত ঘুমে পার করলো পঁচিশ বছর।
জন্মের সময় যে মানচিত্রটা আমার বুকে ছিল
সেটা বোধহয় আমি কখনো বুঝতে পারিনি
তা না হলে এত পাপে মানুষের শরীর মনে সব জায়গায় পুড়ে!
————-
র শি দ হা রু ন
০৯/০৩/২০২৩
১০ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ২:০১
জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: Thanks
২| ১০ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ১:৫৪
কামাল১৮ বলেছেন: ভালোবাসার গল্প।বিরহের গল্প ।জীবনের গল্প ।পড়ে ভালো লাগলো।
১০ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ২:০১
জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: Thanks
৩| ১০ ই মার্চ, ২০২৩ ভোর ৪:১৫
স্মৃতিভুক বলেছেন: আপনার কবিতা পড়তে বেশ লাগে আমার, কিন্তু কখনো বলা হয়নি। প্রতিটা কবিতাতেই একটু নির্মোহ ভাব আছে, নিষ্পৃহতাও বেশ লক্ষণীয়। মাপা আবেগে যতটুকু বলেন (আসলে লেখেন), তার চেয়েও বেশি বুঝিয়ে দেন অনুল্লেখ্য রেখে। হয়তো এজন্যই আরো বেশি ভালো লাগে পড়তে।
অনেক অনেক শুভাশীষ রইলো। আশাকরি এরকম আরো অনেক সুখপাঠ্য কবিতা আপনি আমাদের উপহার দেবেন।
** কবিতাটি দুইবার এসেছে।
১০ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৯
জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ১২:২২
জগতারন বলেছেন:
দারুন সব পাপের গল্প পড়িয়া ভালো লাগিলো ।