নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কারো কাছে নেই কোন অভিমানের দেনাপাওনা, নেই কোন কষ্টের হিসাব, তবুও লুকিয়ে থাকা হাহাকার পরম যতনে আগলে রাখি-- প্রথম পাওয়া চিঠির মত, আমি এই রকমই বন্ধু ।

জিএম হারুন -অর -রশিদ

আরেকটা জীবন যদি পেতাম আমি নির্ঘাত কবি হতাম

জিএম হারুন -অর -রশিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মধ্যবিত্ত জীবনের অঙ্ক

০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:১২


আজকাল কেউ আমাকে দেখলে বিশ্বাসই করবেনা
আমি মেট্রিকে অঙ্কে নিরানব্বই পেয়েছিলাম।
যেকোনো আড্ডায় তখন সবাইকে বলে বেড়াতাম
-“অঙ্কে একশই পেতাম,
শুধু হাতের লেখা খারাপ বলে জ্যামিতিতে হয়তো এক নম্বর কম পেয়েছি”।

অথচ কী আশ্চর্য!
সেই আমিই কিনা জীবনের অঙ্কে
দুই যোগ দুই সমান তিন লিখে ফেলি হররোজ।

কোনোমতেই জীবনের হিসাব মিলাতে পারছিনা আজকাল!
এখন যদি আবার অঙ্ক পরীক্ষা দেই
নির্ঘাত শূন্য ধরিয়ে দিবে পরীক্ষক,
প্রতিদিন শুধু কমে যায় আমার জীবনের যোগফল।

প্রতিদিন দুই যোগ দুই সমান তিন লিখি,
আর একটা করে শখ বাদ দেই।
যেমন ধরুন-
সকালে চায়ের সাথে দুধ বাদ,
ছুটা কাজের বূয়া বাদ,
নাস্তায় তিনটার বদলে দুইটা রুটি- এই সব।

অফিস আমার কাছেই
তাই ঘর থেকে একটু আগে বেড়িয়ে পড়ি;
মাত্র একঘন্টার মতো লাগে হেঁটে যেতে,
শরীরটাও ভালো থাকে আর কিছু টাকাও বেঁচে যায়।

হাই প্রেসারের ওষুধ বাদ-
পত্রিকায় পড়েছি প্রেসারের ওষুধ প্রতিদিন না খেলেও এমন কিছুই হয়না।

দুপুর রাতে এখন এক তরকারিতেই চলে যায় আমাদের।
ছোট মেয়েটা অযথাই প্রতিবেলা মুরগির মাংসের জন্য আবদার করে,
আমার বুক ছিঁড়ে যায় তীব্র অসহায়ত্বে-
কেন দুই যোগ দুই সমান চার হয়না আজকাল আমার জীবনের যোগফলে?

পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়া কিন্তু একেবারেই বাদ আপাতত,
যেদিন দুই যোগ দুই সমান চার হবে সেদিন চিন্তা করা যাবে ঘোরাঘুরির কথা।

জলের বিল বেড়ে যাওয়ায় গোসলেও আগের চেয়ে ‌অর্ধেক জল খরচ করি,
ফ্যান লাইট বন্ধ করে একটু তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ি বিদুৎ বিল কমাতে।
হাতপাখাতে ইদানিং শরীর ভালোই ঠান্ডা হয়, আবার হাতের ব্যায়ামও হয়।

কমতে কমতে প্রায় ‌অনেক কিছুই কমে গেছে জীবন থেকে-
এই ধরুন প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় আনন্দ, কার্বোহাইড্রেট, সুখ, প্রোটিন, ভিটামিন, মানসম্মান, মিনারেলস,
আর বেঁচে থাকার অহং সবটুকু।

এখন সময় পেলেই সারাদিন শুধু বারবার জীবনের খরচের অঙ্ক করি,
দুই যোগ দুই সমান তিনই হয় প্রতিবার,
কম হয়-হিসাব মিলেনা!

আবার জীবনের জন্য মায়ার হিসাব করলেই বেড়ে যায় মায়া-
দুই যোগ দুই সমান পাঁচ হয়ে যায়!
বেড়ে যায় মায়া- হিসাব মিলেনা!
কোনভাবেই মিলাতে পারিনা জীবনের বেঁচে থাকার অঙ্ক।

পাঠকগণ, বিশ্বাস করুন
জীবনের অঙ্কে ভুল হতে পারে আমার,
কিন্তু আমি মেট্রিকে অঙ্কে নিরানব্বই পেয়েছিলাম,
প্রমাণস্বরূপ আমার মেট্রিক পরীক্ষার মার্কশীট এখানে সংযুক্ত করা হলো।
————————
র শি দ হা রু ন
০৩/০৯/২০২২
কাব্যগ্রন্থ -বিছানায় পোড়ে আমার মধ্যবিত্ত মুখোশ

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:১৪

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: লেখনী কিন্তু সাংঘাতিক সুন্দর হয়েছে। আর এসএসসিতে আপনি নিরানব্বই পেয়েছিলেন ! অভিনন্দন কবি আপনাকে। শুধু এক নম্বরটা একটু ছুটে গিয়েছে এই আর কি।
আপনার সুস্থ জীবন কামনা করছি।

০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ২:১৬

জিএম হারুন -অর -রশিদ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.