![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্ষ বরণে সেকাল একাল .......................
বেশি দিন নয় ১২/১৪ বছর আগেও দেখেছি গ্রামীণ পরিবেষে বৈশাখের এক অন্যরকম আমেজ। বৈশাখ মানেই হাট-বাজারের দোকান পাটে হালখাতার ধুমধাম। নতুন ফসল ঘরে তুলতে কৃষকের মুখে হাসি। কাঠের বাসক এবং আলমেরিতে তুলে রাখা কাতা কাপর সব রদে দিয়ে নতুন বছরের প্রলেপ লাগান। সবকিছুতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় নারীমনে প্রতিযোগিতা। মাসব্যাপী এখানে সেখনে বৈশাখী মেলা। নবান্নের আয়োজন আর মেলা উপলক্ষে কুটুমদের বাড়িতে মুই মুরখা এবং বড় মাছ পাঠান। এমনকি দাওয়াত করে বাড়িতে ভোজ অনুষ্ঠান।
মেলায় গিয়ে সার্কাস দেখা, ২ টাকায় ১০টা পানির মিষ্টি এবং আঁখের গুড়ের গরম জিলেপি খাওয়ার মজাই আলাদা ! বারি ফিরতে মেয়েরা কিনত মাটির তৈরি পুতুল,থালা বাসন,রঙ্গিন বেলুন, চুড়ি আর আমরা নিতাম কাঠের বন্দুক, পটকা, ঢোল ইত্যাদি। মুই মুরখি, জিলাপি, বড় বড় বরই, মিষ্টি আলু, বড় মাছ আর ১০/১২ কেজি ওজনের তরমুজ ঘারে করে হেঁটে চলা। গ্রামের রাস্তা ঘাঁট এবং যানবাহন সে সময় এতটা সুবিধার ছিলনা। ছিলনা প্রযুক্তির এত উৎকর্ষ। তারপরেও তাতে প্রাণ ছিল। ছিল আবেগ অনুভুতি আর এক অন্যরকম আকর্ষণ। দিন শেষে পরিশ্রান্ত কৃষক, কিষান কিষাণি, আবাল বৃদ্ধ সবাই মিলে মজমা দেয়া হত। বাড়ির উঠানে, রাস্তার ধারে খের বিছান জ্যোৎস্নার আলোর সে মজমা মজে উঠত নানান কিচ্ছা কাহিনী আর ভাটিয়ালি-বাউল গানের সুরে। নদি মাতৃক এদেশের দখিনা হাওয়া আর গানের সুরে তখন হৃদয় ছুঁয়ে যেত !
গ্রামের সে সুর এখনো কিছুটা বহমান হলেও শহুরে আয়োজন শুধুই লোক দেখান। নিজেদের ঐতিহ্যকে বিকিয়ে দিয়ে কি সব ধার করা অপসংস্কৃতিতে গাঁ ভাসিয়ে দিচ্ছি। বর্ষ বরণের নামে চলছে রঙ চং পোশাক আর অস্লিল দেহ প্রদর্শনী। পান্তা ইলিশের নামে তাচ্ছিল্ল করা হচ্চে গরিব কৃষকদের সাথে। আলপনা, আতশবাজি আর মঙ্গোল শোভাযাত্রার নামে একদিকে চরম অপচয় অন্যদিকে নিজেদের সংস্কৃতিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে এক গহীন অন্ধকারে। আনুষ্ঠানিকতার এখানেই শেষ নয় ! দলবেঁধে গাঁজা টানা, ডিজে পার্টি করা, এবং স্বাধীনতার সর্গরাজ্যে এসে কপত কপোতীদের মিলামিসা আর টানা হেঁচড়ায় কাপর ছিরা ছিরিও নাকি আজ নববর্ষের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ..................!
©somewhere in net ltd.