নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিয় কন্যা আমার- ৮৩

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৯



ফারাজা তাবাসসুম খান-
প্রিয় কন্যা আমার! আজ তোমাকে তোমার মায়ের গল্প বলব। একবার তোমার মা আর আমি বান্দরবান যাই। সারারাত বাস চলেছে। চলন্ত বাসে অনেকে ঘুমিয়ে যায়। আমরা ঘুমুতে পারি না। ভোরবেলা সকালের আলো ফোটার আগেই বাস আমাদের বান্দরবান নামিয়ে দেয়। ভয়াবহ শীত। হোটেলের রিসিপশনে বসে আছি। হোটেলের সবাই ঘুমে। আমরা ঝিমুচ্ছি। একসময় সকালের আলো দেখা দেয়। ম্যানেজার এলো। ম্যানেজার হেসে বলল, আপনাদের যে রুম দেওয়ার কথা, সে রুম দিতে পারছি না। অন্য কোনো রুমও দিতে পারছি না। কোনো রুম খালি নেই। যারা রুম ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিলো- তারা বলছে আরো দুদিন থাকবে। আমি সুরভিকে বললাম, কোনো চিন্তা করো না। বান্দরবানের পুলিশ সুপার আমার পরিচিত। উনাকে বললেই উনি একটা রুমের ব্যবস্থা করে দিবেন।

আমাদের প্রচন্ড ক্ষুধা পেয়েছে।
আমরা হোটেলের ভাইরে এসে দাড়ালাম। এখনও কোনো রেস্টুরেন্ট খুলে নাই। এক কাপ চায়ের জন্য আমার গলা বুক শুকিয়ে গেছে। অনেক খুজেও একটা রেস্টুরেন্ট পেলাম। কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর দেখলাম- একটা রেস্টুরেন্ট মাত্রই খুলেছে। বাইরে হাঁটাহাঁটি না করে আমরা রেস্টুরেন্টা বসলাম। আমাদের দেখাদেখি অনেক মানুষ এসে রেস্টুরেন্টে বসলো। লোকজন আসতেই থাকলো। বসার জায়গা নেই। অনেকেই দাঁড়িয়ে আছে। এদিকে মাত্র চুলা জ্বালানো হলো। কখন রুটি বানাবে? কে জানে! প্রায় এক ঘন্টা বসে থাকলাম। রুটি তৈরি হলো। সাথে ডিম ভাজা। আমি আর সুরভি হাতা ধুয়ে এসে দেখি- আমাদের চেয়ারে অন্যরা বসে পড়েছে। লোকজন পাগলের মতো খাচ্ছে। পরোটা গুলো ঠিকঠাক ভাজা হয়নি। আমরা না খেয়েই রেস্টুরেন্ট থেকে বের হলাম।

প্রিয় কন্যা আমার-
শান্তিনিকেতনে কি হলো- সেটা শোনো। শান্তিনিকেতন যাবো শুনে তোমার শাড়ি পড়লো। আমরা সকালবেলা হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে গেলাম। বিশাল স্টেশন। প্রচুর মানুষের ভির। টিকিট কাটাও বিরাট দিকদারি। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে কাউন্টারের কাছে যাই, তখন বলা হয়- বোলপুরের টিকিট ডান পাশের কাউন্টারে। আবার সেখানে গেলে বলে, বাম পাশের কাউন্টারে। আমি রেগে গেলাম। সুরভি বলল, তুমি চা খাও। টিকিট আমি কাটছি। ফাজ্জা, আমি চা খেয়ে এসে দেখি, তোমার মা টিকিট কেটেছে। যাইহোক, গেলাম বোলপুর স্টেশন। স্টেশন থেকে বের হতেই আমাদের অসংখ্য মানুষ ঘিরে ধরলো। তারা আমাদের শান্তিনিকেতন ঘুরে দেখাবে। বিনিময়ে তাদের টাকা দিতে হবে। একজন আমাকে বুঝাচ্ছে, তাদের সাথে গেলে কি কি সুবিধা, না গেলে কি কি অসুবিধা। আরেকজন বুঝাচ্ছে সুরভিকে। এই সময় একজন অটোচালক বলল, আপনারা আমার অটো'তে বসে পড়ুন। নইলে এরা বিরক্ত করতেই থাকবে।

যাইহোক, বিকেল পর্যন্ত শান্তিনিকেতন ঘুরে বেড়ালাম।
দুপুরে টিকটক নামের এক রেস্টুরেন্টে খেলাম। ফেরার পথে টিকিট কাটতে গিয়ে দেখি- স্টেশনের মধ্যে একটা বড় গরু। বড় বড় দুটা শিং। যদি গুতা দেয়? এখানে সেখানে গোবর পড়ে আছে। টিকিট কাটলাম। আমাদের বলা হয়েছে, যে ট্রেন আগে আসবে সেটায় উঠে বসবেন। খবরদার দেরী করবেন না। ট্রেন কিন্তু দুই মিনিটের বেশি থামবে না। স্টেশনে বসে আছি। ট্রেন আর আসে না। এদিকে সন্ধ্যা হয়ে আসছে। এক বয়স্ক লোকের সাথে পরিচয় হলো। লোকটা যখন জানলো আমার বাড়ি বিক্রমপুর। সে খুশিতে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। দেশ ভাগের আগে তাদের বাড়ি ছিলো বিক্রমপুর। লোকটা অনুরোধ করলো, তাদের বাসায় দুদিন বেড়াই।

তুফানের মতো এক ট্রেন এলো।
সেটায় কোনো রকমে উঠলাম। উঠে বিরাট বিপদে পড়লাম। লোকে লোকারণ্য। পা রাখার জায়গা নেই। লোকজন মূরগী নিয়ে উঠেছে, কেউ ছাগল নিয়ে উঠেছে। গজব অবস্থা। আমার চরম বিরক্ত লাগছে। বেশি ভিড় আমি সহ্য করতে পারি না। আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। ফাজ্জা তুমি শুনলে অবাক হবে। তোমার মা মজা পাচ্ছে। যে হকার সামনে পাচ্ছে, তোমার মা বলছে, ঝালমুড়ি দাও। একলোক নারকেল বিক্রি করছে। পাপড় ভাজা, সন পাপড়ি- ইত্যাদি ফালতু খাবার তোমার মা আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছে। স্টেনের মধ্যে একেক লোক একের ভাষায় কথা বলছে। একসময় স্টেশন থেকে নামলাম। শিয়ালদহ স্টেশন। বিশাল স্টেশন। আমাদের কমলাপুর স্টেশনের চেয়ে ৫০ গুন বড় হবে। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে গেছি।

ফারাজা আরেকটা ঘটনা বলি-
কক্সবাজার গিয়েছি। তোমার মা আর আমি খুব ঘুরে বেড়াচ্ছি। জেলা শিক্ষা অফিসারের বাসায় দাওয়াত। সেখানে যাবো। খালি হাতে তো আর যেতে পারি না। মিষ্টি কেনার জন্য শহরের ভেতরে গিয়ে মিষ্টির দোকান খুজছি। দুপুরের সময় বলে, রাস্তায় লোকজন তেমন নেই। এমনকি দোকানপাট বন্ধ। দূরে একটা মিষ্টির দোকানের সাইনবোর্ড দেখা যাচ্ছে। সেখানে যাবো, এমন সময় একলোক এসে আমার হাত ধরলো। লোকটা আদিবাসী। বয়স ৫০ হবে। বেশ বলশালী চেহারা। এমন শক্ত করে আমার হাত ধরেছে, আমার রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। লোকটা ইংরেজিতে বলছে, তোমার নাম কি? কোথায় থাকো? সরকারি চাকরি করো, না প্রাইভেট জব? সুরভিকে দেখিয়ে বলল, তোমার বউ দেখতে সুন্দর। লোকটা আমার হাত ছেড়ে দিয়ে বলল- আমার বাসায় চলো। দুপুরে একসাথে খাওয়াদাওয়া করি। সুরভি বলল, যেতে পারিব না। আমাদের দাওয়াত আছে। লোকটা বলল, আচ্ছা ঠিক আছে। ভালো থাকো তোমরা।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১২

বিজন রয় বলেছেন: আদর রইল।

আর আপনার জন্য......././...//

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন।

২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫১

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:



ফারাজাকে অংক শেখান

৩| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৩

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:



বান্দরবনের কাহিনী অদ্ভুত লাগলো। শান্তিনিকেতনে বেড়ানোর ঘটনা আরও বড় হলে ভালো লাগতো।


৪| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৪

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:




আমার সারা জীবনে একজন মাত্র মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে যিনি শান্তিনিকেতনে পড়েছেন।

ছোটবেলায় মেল ট্রেনে একবার একটা ছেলের সাথে পরিচয় হয়। সেই ছেলেটার নামও ছিলো শাইয়্যান!!!

আমরা সিলেট যাচ্ছিলাম। ছেলেটা তার বাবামা'র সাথে আখাউড়া স্টেশনে নেমে যায়।

শাইয়্যান নামের সেই ছেলেটা শান্তিনিকেতনে ভর্তি হয়েছিলো। সেই অল্প সময়ে খুব বন্ধুত্ব হয়েছিলো আমার সাথে!

৫| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার মেয়েকে অবশ্য প্রয়োজনীয় সুরা কালাম শেখাবেন। ভাত খাওয়ার আগের দোয়া,পরের দোয়া, যানবাহনে চড়ার সময় দোয়া, রাস্তায় বের হওয়ার সময়ের দোয়া এসব শিখাবেন। আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি যাতে পরিপূর্ণ মুমিনা হতে পারে সে ভাবে ট্রেনিং দিবেন। :-B

৬| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৯

সামরিন হক বলেছেন: মা শা আল্লাহ ! বেশ বড় হয়ে গেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.