নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেঁচে থাকা, শেখা।

বিক্ষিপ্ত মস্তিষ্ক

আমি অনেক কিছু ভাবি,ভাবতে ভাবতে মাথা গুলিয়ে যায়। আমি জানি আমার এই অকারণে ভাবা,অহেতুক কোন কিছু নিয়ে চিন্তা করার মাঝে কি আনন্দ!

বিক্ষিপ্ত মস্তিষ্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

করোনায় কর্পোরেট মানবিকতা

১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৩০

১.
কয়েকদিন আগে সাবান আর হ্যান্ডওয়াশ কিনতে গেছিলাম। লাইফবয় যেহেতু ব্যবহার করা হয়, সেটাই দিতে বললাম দোকানদার ভাইকে, সাথে লাইফবয়ের হ্যান্ডওয়াশ রিফিলও। ১০০ গ্রামের এই সাবান আর হ্যান্ডওয়াশ রিফিলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে এই কর্পেোরেট প্রতিষ্ঠানটি। আগে সাবানের দাম ছিল ৩০ টাকা, এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩২ টকায়। হ্যান্ডওয়াশ রিফিল আগে বিক্রি হতো ৫৫ টাকায়, এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টকায়। দোকানিকে বললাম, ভাই দাম বেড়ে গেলো? সে জানালো, দুইদিন আগেও দাম ঠিক ছিল। করোনার প্রভাবে কোম্পনিগুলো এসব পণ্যের দাম বাড়ায় দিছে। অথচ এই দুইদিনে কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদনে করোনার কোনো প্রভাব পড়ার কথা না। কেননা তখনো সেভাবে দেশে অবরুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। পণ্যের দাম বাড়ানোর মূল কারণ চাহিদা বৃদ্ধিও।
২.
মন খারাপ করে বাসায় ফিরলাম। সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি না হতেই নিত্য দ্রব্যাদির দাম বাড়ছে! সামনে কী হবে, এমন অনিশ্চয়তা নিয়ে ফেসবুকে প্রবেশ করে আমি থ! লাইফবয় করোনার সচেতনতা তৈরিতে প্রচারণা চালাচ্ছে। আমার টাইমলাইনে তাদের এমন একটি ভিডিও আসলো। প্রথম আলো আর বিডিনিউজের ওয়েবসাইটে নিউজ পড়তে গেলাম, সেখানেও লাইফবয়ের করোনা সচেতনতার বিজ্ঞাপন! টিভি খুলে ইউটিউব দেখতে বসলাম। সেখানে লাইফবয়, স্যাভলন এই কোম্পানিগুলোর জীবাণু ধ্বংসের বিজ্ঞাপন! এগুলো দেখে মনটা আরও খারাপ হয়ে গেলো। বিজ্ঞাপনে তারা টাকা খরচ করছে, মানুষকে জ্ঞান দিচ্ছে- হাত ধোয়ার, কিভাবে হাত ধুইতে হয় তা শেখাচ্ছে। উল্টাদিকে মানুওষের পকেট ফাঁকা করতে দাম বাড়ায় দিচ্ছে।
৩.
অনেক প্রতিষ্ঠানের খবরও দেখতে শুরু করলাম, কেউ হাসপাতাল বানাচ্ছে, কেউ সরকারকে পিপিই দিচ্ছে। এরকম পরিস্থিতির দিনকয়েক পর কিছু প্রতিবেদন রীতিমতো মন খারাপ করায় দিলো। অনাহারী মানুষদের আহাজারি, কান্নাজড়িত মুখ দেখে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো। দেশের অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে দিনের রোজগারের ওপর নির্ভরেশীল মানুষদের হাহাকার বাড়ছে। কেননা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তারা। যারা ভিক্ষা করতেন, ফুটপাতে শুয়ে থাকতেন- তারা আরও অসহায় হয়ে গেছেন। দেশের সাধারণ মানুষ নানাভাবে তাদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসছেন, এমন খবরও দেখা গেলো। কিন্তু বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণ মানুষকে সাহায্যের জন্যে, সেবা মান উন্নয়নের জন্য এগিয়ে এসেছে-এমন কোনো খবর দেখলাম না, কোনো ঘটনাও জানতে পেলাম না। অথচ ঠিকই এই দুঃসময়ে সাধারণ মানুষের পকেট ফাঁকা করে নিজেদের ব্যবসার পুঁজি ঠিকই বাড়িয়ে নিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, প্রচলিত গণমাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে অনেক টাকা বিনিয়োগ করছে। মানুষকে সচেতন করা দরকার। এটা অবশ্যই ঠিক। কিন্তু এটা তো তাদের বৈপরীত্য আচরণ। সংকটে পণ্যের দাম বাড়িয়ে ‘মানুষকে সচেতন করার নামে ব্র্যান্ডিংয়ে’ অর্থ বিনিয়োগ।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:২১

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। হাত যেকোন সাবান দিয়েই 20 সেকেন্ড ধুলে চলবে। ভালো থাকুন

২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:৩৬

বিক্ষিপ্ত মস্তিষ্ক বলেছেন: ধন্যবাদ। হাত যে কোস সাবান দিয়ে ধুলেই চলবে, তা জানি। আমার প্রশ্ন, লাইফবয় কেনো দাম বাড়াবে?

২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৩৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: Good post

৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:০৭

কহেন কবি কালীদাস বলেছেন: যদি আপনার টার্গেট ত্থাকে হাত ধোঁয়া, তাইলে যেকোনো সাবান কিনতে পারেন। হ্যান্ডওয়াশ দরকার নাই(যেহেতু দাম বাড়ায় দিসে)।
কিন্তু যদি আপনার উদ্দেশ্য থাকে করোনার হাত থেকে বাঁচা, তাইলে চোখ বুজে কাপড় কাচার বল সাবান (যেমন চাকা,তিব্বত ইত্যাদি) কিনে নেন। বিশ্বাস করেন, এটার উপরে কিছু নাই। তবে বেশি ব্যাবহার করবেন না, চামড়ার ক্ষতি হবে।
শুধুমাত্র বাহির থেকে এসে এই বল সাবান গুলি দিয়ে হাত-পা ভালো করে ধুয়ে ফেলেন, তাতেই কাজ হবে।
আমি জানি না কেন টিভিতে বিজ্ঞাপনে বল সাবানের কথা বলে না ? লাক্স, ডেটল , লাইফবয় এর চেয়ে অনেক কার্যকরী এটা।

২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:৩৮

বিক্ষিপ্ত মস্তিষ্ক বলেছেন: ধন্যবাদ। যে কোন সাবান কার্যকরী তা জানি। কিন্তু লাইফবয়ের এই মুনাফাখোরী ব্যবসায়িক কৌশলে আমার সমস্যা।

৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: আমার সংসারের বাজার আমাকেই করতে হয়। কোন জিনিসের কি দাম তা আমি ভালো করেই জানি।

৫| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:২৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: দোকানদার নিজেই দাম বাড়ায় নাই তো?
কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান সরকারের কাছে হাত পাতার ধান্ধায় আছে। তাই সে যদি সাহায্যের হাত বাড়ায় তবে সবাই ভাববে সে সচ্ছল। তাই এখন গরীব সাজার চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশে অনেক কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে অসম্ভব রকম সচ্ছল। এর মধ্যে অনেক গার্মেন্টস রপ্তানিকারকও আছে । তারা চুপচাপ আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.