নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোন মনোবিজ্ঞানি পরামর্শ ও সহযোগিতায় এগিয়ে আসলে উপকৃত হবো.....

০৫ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:২৮

ইন্টার প্রথম বর্ষে ভর্তি হবার পর মেয়েটির মাঝে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়। একসময় স্কুলে ভালো ছাত্রী ছিল। পড়াশুনায় নাম-ডাক ছিল। কিন্তু আশানুরূপ রেজাল্ট হয় নি। ফলে এক ধরণের অসন্তোষ নিয়ে সে কলেজে ভর্তি হয়। কলেজে থাকা অবস্থায়ই মনের প্রশান্তির জন্য দ্বিতীয়বারের মতো এস এস সি পরীক্ষা দেয়। সে পরীক্ষায়ও ভালো ফল করতে পারে নি সে।

এরই মাঝে একটি অসম প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যায় মেয়েটি। একটি ছেলেকে প্রচণ্ডভাবে ভালোবাসতে শুরু করে। স্বপ্ন দেখতে শুরু করে ঘর বাঁধার। বাস্তবে যেটি কখনই সম্ভব নয়। ছেলেটিকে নিয়ে সে কল্পনার একটি জগৎ তৈরী করে। ছেলেটি তার কল্প-জগতের কথা শুনে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।

একটি বিশেষ দিক হচ্ছে, মেয়েটি যখনই কথা বলে, তখনই ছেলেটির কাছ থেকে আবেদনময় কথা-বার্তা শুনার বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে। ছেলেটিও স্বাভাবিকভাবেই তার সাথে কথা বলে।

একটা সময় মেয়েটি তার ভুল বুঝতে পারে। কিংবা বড় ধরণের ভয় থেকে নিজেকে সে আড়াল করে নেয়। তারপর অনেকদিন আর তাদের কোন যোগাযোগ নেই। ছেলেটি দুয়েকবার যোগযোগ করে সাড়া না পেয়ে চুপ হয়ে যায়।

ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষে উঠার পর মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিছুদিন পরপর শ্বাসকষ্ট, হঠাৎ করে বড়-বড় করে শ্বাস ওঠা- নামা এবং দম নিতে পারে না। কেউ ই তার রোগ ধরতে পারে না। এই অবস্থায় ই সে ইন্টার পরীক্ষা দেয়। এবারও তার আশানুরূপ ফলাফল হয় নি।

এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এ পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে ভর্তি হয়। তারপর থেকেই সে মাঝে মধ্যে কাঁপুনি দিয়ে পরে যেতে শুরু করে। কিছুদিন যেতেই তা মারাত্মক আকার ধারণ করে।

কেউ কেউ বলতে শুরু করে মেয়েটিকে জ্বিনে ধরেছে। এবং সে অনুযায়ী কিছুদিন চিকিৎসাও চলতে থাকে। মেয়েটির পরিবার বলে, দীর্ঘদিন ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া না করাতে পুষ্টির অভাবে তার এই অবস্থা।

মেয়েটির পরিবার কঠোর ধর্মীয় এবং পর্দা প্রথায় বিশ্বাসী।

ঘটনাটি শোনার পর আমি দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম। কারণ মেয়েটি আমার কাছের আত্মীয় হয়।

আমি মনোবিজ্ঞানের ছাত্র নই। তারপরও যেটুকু পড়াশুনা আছে সে অভিজ্ঞতা থেকে বললাম, এ রোগের নাম হিস্টেরিয়া। সমস্যা হলো ধর্মীয় ও পর্দা প্রথার কারণে কেউ মেয়েটিকে আমার সাথে কথা বলতে দিচ্ছে না। আমি সিউর মেয়েটির সাথে কথা বলতে পারলে আরও অনেক কিছুই জানা যেত। এ ছাড়াও নিশ্চিত বড় কোন ঘটনা সে আড়াল করে যাচ্ছে সবার কাছে।

হিস্টেরিয়ার কারণ কি:
১. ব্যক্তিত্বের দুর্বলতা, একসময় যেটি ধরা পড়লে সে নিজের কাছে নিজে সঙ্কুচিত হয়ে যায়।
২. সামাজিক, পারিবারিক, অর্থনৈতিক, বিবাহ অথবা সেক্স সংক্রান্ত মানসিক চাপ, যখন না পারে সহ্য করতে না পারে ম্যানেজ করতে, তখনই মনের দ্বন্দ্ব, দুঃখ যন্ত্রণা, হতাশা ক্ষোভ শরীরে লক্ষণ হিসাবে প্রকাশ পায়।

এ ধরণের রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে একটা ভুল বিশ্বাস জন্মে যে, জ্বিনে পেয়েছে অথবা বাতাস লেগেছে, আলগা দোষ ইত্যাদি।
এর ফলে ফকির, কবিরাজ, ওঝাবিদ্যা ও মাজারে নিয়ে অপচিকিৎসা করা হয় এবং প্রতিদিন কু-চিকিৎসা ও অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছে হাজার হাজার রোগী।

সাইকোলোজি আমার খুব প্রিয় একটা বিষয়। তাই এর সাথে সংশ্লিষ্ট কোন রোগির সন্ধান পেলে খুব আগ্রহ নিয়ে তাকে স্টাডি করার চেষ্টা করি। সেই আগ্রহ থেকেই উপরের জটিল বিষয়টি জানতে পারি।

আর মেয়েটির প্রেমের সম্পর্কটি জানতে পারি সেই ছেলেটির কাছ থেকে। হয়তো অনেক কিছুই সে আমার কাছে লুকিয়েছে। তবুও যেটুকু জেনেছি, তা বর্ণনা করতে হলে বিশাল উপন্যাস হয়ে যাবে। আশা করি একটা সুরাহা করতে পারবো।.....

কোন মনোবিজ্ঞানি পরামর্শ ও সহযোগিতায় এগিয়ে আসলে উপকৃত হবো.....।






মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.