নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাদের কথা একটু ভেবে দেখবেন, যাদের শিক্ষা অর্জনের ক্ষমতা আছে কিন্তু তা ক্রয়ের সামর্থ্য নেই.....।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১০

একদিন আমার গাড়িচালক আনোয়ারকে খুব চিন্তিত দেখে জানতে চাইলাম, কারণ কি?

উত্তরে জানালো, এবার তার ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী। আগামী কয়েকদিনে মধ্যে ফরম পূরণ করতে হবে। কিন্তু অত টাকা তার কাছে নেই। তাই ছেলেকে আর পড়াশোনা করাতে চায় না সে।

জানতে চাইলাম, কতো টাকা লাগে? বলল- বারো হাজার। শুনে অবাক হলাম। ফরম পূরণে এত টাকা নিচ্ছে স্কুলগুলো! "ঠিক আছে আমি দেখবো বিষয়টা" বলে আনোয়ারকে আস্বস্ত ও চিন্তামুক্ত করলাম। দু'দিন পর আনোয়ারের ছেলে স্কুলের ফি দিয়ে ফরম পূরণ করলো।

এবার সে এসএসসি পরীক্ষা দিবে।

ক'দিন আগে আমার ফ্যাক্টরি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা সোলায়মান চাচা এসে কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন, তার ছেলেটা এইবার এইচ এসসি পরীক্ষা দিবে। কলেজে জমা দেয়ার জন্য প্রায় বারো-তের হাজার টাকার দরকার। সে নিয়ে তিনি বেশ চিন্তিত। জানতে পারলাম, তার ছেলে ঢাকার নামকরা একটি কলেজে পড়ে। বললাম, "ঠিক আছে আমি দেখবো। তাকে ভালো মতো পড়াশোনা করতে বলেন।"

গত তিন দিন আগে আমার একজন ম্যানেজার এসে বললেন, তার ছেলে এবং মেয়েকে ফ্যাক্টরির কাছাকাছি হাফেজি মাদ্রাসায় ভর্তি করাতে চান। তার ইচ্ছা দু'জন কোরান-এ হাফেজ হোক। কিন্তু দুজনের ভর্তির জন্য দশ বারো হাজার টকা দরকার। বললাম, "আমি দেখতেছি। আপনি ভর্তি করাবার ব্যবস্থা করেন। আর তাদের দুজনকে আমার কাছে নিয়ে আসবেন একদিন। আমি তাদের সুরেলা কণ্ঠের তেলওয়াত শুনবো।"

উপরের তিনজনের ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব আমি নিয়েছি। আমার চাকরি না করলেও তাদের পুত্র-কণ্যাদের পড়াশোনার খরচ আমি চালিয়ে যাবো বলে কথা দিয়েছি।

এ তিনজনের বক্তব্য আমি শুনেছি এবং দায়িত্ব নিয়েছি। হয়তো আমি বেঁচে থাকলে তাদের ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা নিয়ে তেমন বেগ পেতে হবে না।

কিন্তু যাদের বক্তব্য শোনার কিংবা দায়িত্ব নেবার কেউ নেই? কী হবে তাদের ছেলে মেয়ের পড়াশোনার? শিক্ষাকে দিনের পর দিন বাণিজ্যিকীকরণ করা হচ্ছে। ....এটা যে আগে ছিল না তা নয়, সেই কবে ১০ টাকার যোগান দিতে না পারায় প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারে নি। টানা দুই বছর শিশু শ্রেণিতে থাকতে হয়েছে। সরকারের বিনামূল্যে দেয়া নতুন বই নিতেও স্যারদের ১০ টাকা দিতে হতো। যেই টাকা পরিচালনা কমিটির কর্তাদের পেটে যেত। তাই পাঁচ টাকায় পুরান বই কিনে পড়তে হয়েছে...।

আজ দেখলাম, দেশের সব জায়গায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিক ভর্তি ফিসহ নানা অযৌক্তিক ফি আদায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে।

এডুকেশন ব্যবসায়ীদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, আপনারা অবশ্যই ব্যবসা করবেন। ব্যবসা না করলে আপনার প্রতিষ্ঠান টিকে থাকবে না। তবে তার মাত্রাটা একটু ভেবে দেখবেন। বিশেষ করে তাদের কথা একটু ভেবে দেখবেন, যাদের শিক্ষা অর্জনের ক্ষমতা আছে কিন্তু তা ক্রয়ের সামর্থ্য নেই.....।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.