নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....
ট্রাফিক পুশিল/সার্জন-১: একটি পিকআপ আটকালেন। ড্রাইভার ডান হাত দিয়ে তার হাতে পঞ্চাশটি টাকা গুঁজে দিয়ে ফিক করে পানের পিক ফেলে পিকআপটি নিয়ে চলে গেলেন। অপরাধ- গাড়িতে ওভারলোডিং।
"তো মামলা দিলেন না কেন? আজ পঞ্চাশ নিয়ে ছেড়ে দিলেন। কাল আবার সে পঞ্চাশ দিয়ে ছাড়া পাবে। সমস্যা তো সমাধান হবে না।"
ট্রাফিক ভাইটি চোখ গরম করে তাকালেন।
ট্রাফিক পুশিল/সার্জন-২: একটি পিকআপ আটকালেন। ড্রাইভার ডান হাত দিয়ে তার হাতে একশটি টাকা গুঁজে দিয়ে নাক দিয়ে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে পিকআপটি নিয়ে চলে গেলেন। অপরাধ- এক্সেস মডিফাইড বডি। মাপের অতিরিক্ত পেছন ও উপরের রেলিং বাড়ানো হয়েছে।
"তো মামলা দিলেই তো পারতেন। আজ একশ নিয়ে ছেড়ে দিলেন। কালও একশ দিয়ে ছাড়া পাবে। সমাধান তো হলো নাহ বস।
ফলাফল: চোখ রাঙানি।
ট্রাফিক পুশিল/সার্জন-৩: একটি পিকআপ আটকালেন। কাগজ ডেট ফেল। বৈধ লাইসেন্স নাই। চল্লিশ টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়ে গেলেন। সমস্যার সমাধান নাই।
ট্রাফিক পুশিল/সার্জন-৪: রাত আটটায় একটি কাভার্ড ভ্যান আটকালেন। অপরাধ: রাত দশটার আগে শহরে কাভার্ড ভ্যান প্রবেশ নিষেধ। দুইজন দুই পাশ দিয়ে কায়দা করে উঠলেন। একশ টাকা নিয়ে ছেড়ে দিরেন। পরের দিনও তিনি একশ টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে গেলেন। তার পরের দিন। তার পরের দিনও...। সমাধান নেই।
ট্রাফিক পুশিল/সার্জন-৫: একটি প্রাইভেটকার আটকালেন। অপরাধ: আদেশ অমান্য, সিগনাল ব্রেক, সিটবেল্ট বাঁধেন নাই, ড্রাইভিং অবস্থায় মোবাইলে কথা বলা। কিছু মামলা দিলেন। আর কিছু এক-দেড় শ' নিয়ে ছেড়ে দিলেন। ঐ ছেড়ে দেয়াজন পরের দিন একই অপরাধ করলেন। সমাধান হলো না।
ট্রাফিক পুশিল/সার্জন-৬: একটি মটর সাইকেল আটকালেন। অপরাধ: বৈধ কাগজ নেই। ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। হেলমেট নেই। ঘাড় কাৎ করে মোবাইলে কথা বলছিলেন। নাম্বার প্লেট এ অনটেস্ট লেখা। নাহ এবার টাকা নয়, পরিচয় পেয়ে ছেড়ে দিলেন, আরোহী এজন সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতার ভাই-ভাতিজা-ভাগিনা কিংবা নিজে রাজনৈতিক নেতা-পাতি নেতা-কুতি নেতা।
ট্রাফিক পুশিল/সার্জন-৭: একটি পাবলি সার্ভিস বাস আটকালেন। অপরাধ: ফিটনেস নাই। ডেটফেল কাগজ। খুব বীরের মতো যাত্রীসহ সাইট করালেন। হেলপার নেমে দফা করে এলেন। ৫০/৬০ টাকায় সুরাহা হলো। টাকা কটা নিয়ে ছেড়ে দিলেন। যাত্রীরা তার সাক্ষী হয়ে রইলো। কিছুক্ষণ কানাঘুষা করলো। পারলে কেউ মোবাইলে গোপনে দুয়েকটি ছবি তুলে রাখালো। সমস্যার সমাধান হলো না।
ট্রাফিক পুশিল/সার্জন-৮: দুপুর বেলা একটি তিনটনি পিকআপ আটকালেন। অপরাধ: দিনে চলা নিষেধ। ড্রাইভার দাঁত কেলানো হাসি দিয়ে বললেন, "ছা....র অমুক টিআই ছারের লগে মানতি করা।" .... "মানতি" মানে মাসে মাসে টিআই সাহেবদের নির্দিষ্ট পরিমানে গাড়ি প্রতি টাকা দেওয়া।
"ও আচ্ছা আচ্ছা তয় আগে কবি না ব্যাটা। যা যা..।" বলে ছেড়ে দিলেন। সমস্যার আর সমাধান হলো নাহ।
আমরা প্রায়ই লক্ষ্য করলে দেখি, কোন একটি পিকআপ, কভার্ড ভ্যান মোড়ে এলে সব কজন ট্রাফিক দৌড়ে ছুটে যান সেটিকে ধরার জন্য। রাস্তার সিগনালের প্রতি তাদের খেয়াল থাকে না।....
আশা করি লেখাটি পড়ার পর কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো নিয়ে ভাববেন।
২| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৭
আমি উম্মাদ বলেছেন: এ বিষয়ের উপর ভারতের একটা প্রতিবেদন দেখছিলাম।
ভারতের এক প্রদেশে(নাম খেয়াল নেই) ট্রাফিক পুলিশ ট্রান্সফার নেওয়ার জন্য CM'দের ১০/২০/৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দিত। শুধু ঐ প্রদেশে ট্রান্সফার।
কারণ???
কারণ ঐ একটাই চুংগি খাওয়া ওভারলোডেড ট্রাক থেকে ঘুষ নিত। আর এ থেকে নাকি একেক জন ট্রাফিক পুলিশের বাৎসরিক আয় ৫০লক্ষ টাকার উপরে। তাহলে বুঝেন উপর লেভেলের মন্ত্রী সচিবেরা কত পায়।
পরে এ বিষয়টি মন্ত্রীসভায় বারবার চর্চা হতে থাকলে এটি নিরসনের খুব সহজ একটা উপায় বের করে তারা। ট্রাক চালক/মালিকদের যে পরিমাণ পণ্য বোঝাইয়ের অনুমতি ছিলো তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এবং এর জন্য নতুন করে লাইসেন্স করতে বলা হয়।
পরের বছর গুলোতে দেখা যায়, ঐ প্রদেশ/অঞ্চলের ট্রাফিক ঘুষ খাওয়া অনেক অনেক পরিমানে কমে গেছে। আর তারপর থেকে কেউ ট্রান্সফারের জন্য সুপারিশ, ঘুষ কিছুই চায় না
৩| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৮
আমি উম্মাদ বলেছেন: আমার মনেহয় আমাদের দেশেও এমন কিছু বিকল্প পদ্ধতি বের করা উচিত।
৪| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২১
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আপনার এফএমরেডিও নিয়ে চমৎকার একটা লেখা পড়লাম। কমেন্ট করতে গিয়ে দেখি পোস্ট নেই। ডিলিট করলেন কেন?
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৮
বিজন রয় বলেছেন: হুম।