নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি অবশ্যই জানতে চাইবো, আমার বাংলাদেশের রিজার্ভ ফান্ড এর টাকা আমেরিকার ব্যাংক থেকে কীভাবে চুরি হয়??

১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:১৪

মাঝে মধ্যে আমার অফিসে একজন লোক আসেন। চুপচাপ বসে থাকেন তিনি। একসময় বউ বাচ্চা নিয়ে জাপানে থাকতেন। সেখান থেকে উপার্জিত অর্থ ঢাকার শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করলেন। দেশে কিছু জমিজমা ছিল, বিক্রি করলেন।

আত্মীয়-স্বজনদের কাছে থেকে ধার করে প্লেসমেন্ট শেয়ার ব্যবসায়ী নবী উল্যাহ নবীর মাধ্যমে একে একে ১৭ কোটি টাকা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করলেন।

২০১৩ সালের জুন মাসে মাফিয়া নবী উল্যাহ নবীর মরদেহ পাওয়া যায় মালিবাগ রেল লাইনের কাছে। মালিবাগ রেলগেটের ১০০গজ পূর্বে ঢাকাগামী একটি ট্রেনে কাটা পড়ে নবী মারা যান। কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারকের রহস্যময় মৃত্যু ঘটে। তার হাতিয়ে নেয়া টাকা কার বা কাদের হাতে গিয়েছে- সেটিও থেকে যায় রহস্যের অন্তারালে।

ভদ্রলোক তার পর থেকে নি:স্ব হয়ে অসহায়ের মতো ঘুরে বেড়াতে শুরু করেন। মাঝে মধ্যে নিজে নিজেই বলতে থাকেন, "অমুক জড়িত ছিল, তমুক জড়িত ছিল...খোদ অমুক জড়িত ছিল!" আমি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি।....অমুক তমুক জড়িত না থাকলে নবী উল্যাহ'র মতো লোক প্লেসমেন্ট শেয়ার ব্যবসায় এত বড় মাফিয়া হয়ে ওঠতে পারতেন না।

শেয়ার বাজার নিয়ে আমার কখনোই কোন আগ্রহ ছিল না। এর ওঠা নামায় আমার কোন অংশগ্রহণ কিংবা অবদান নেই। তাই কে বা কারা এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিল আমার সেই বিষয়ে কোন আগ্রহ নেই। নি:স্ব হয়ে যাওয়া মানুষগুলোর মুখের দিকে তাকালে বুকের গভীর থেকে হাড়কাঁপানো এক দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে আসে এই যা...।

কিন্তু বাংলাদেশের রিজার্ভ এর অর্থ চুরি নিয়ে আমার খানিক আগ্রহ রয়েছে। কারণ এ রিজার্ভ ফান্ড-এ অল্প বিস্তর আমার অমানবিক শ্রমও জড়িত...। আমার কয়েক বিন্দু ঘাম এ রিজার্ভ ফান্ড এর গায়ে লেগে আছে। ব্যবসা শুরুর পর থেকে গত চার বছরে রিজার্ভ ফান্ড-এ আমার যোগ করা অর্থের পরিমান প্রায় ৯০ লাখ মার্কিন ডলার। যার যতসামন্য এসেছে ইন্ডিয়া থেকে আর বাকি সবটুকুই এসেছে চীন থেকে। তাও আবার দেশীয় ফেলে দেওয়া আবর্জনা বিক্রি করে।

আমার কারখানায় বাহির থেকে কেউ ঢুকলে নাকে রুমাল বেঁধে প্রবেশ করেন। আমি সেই আবর্জনার ভেতর সারাদিন পরে থাকি। আবর্জনা হাতে নেড়েছেড়ে দেখি। তার ভেতর দিয়ে হেঁটে যাই। দেশীয় অর্থনীতিতে সামান্য অবদান রাখার আনন্দের কাছে ময়লা আবর্জনার গন্ধ আমার কাছে অতি তুচ্ছই মনে হয়।

...প্রায়ই সকাল আটটার নাস্তা বিকেল চারটা-পাঁচটায় পেটে ঢুকে আমার। অনেকের কাছেই মনে হবে অবিশ্বাস্য। পকেটে টাকা থাকে কিন্তু সময়ের অভাবে খাওয়া হয় না। আমার কষ্টাঅর্জিত বৈদশিক মুদ্রা ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে চুরি হয়ে যাবে- বিষয়টি মানা সত্যিই কষ্টকর।

এ দেশে কেন সকল বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও ৬ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে রপ্তানী লাইসেন্স করতে হয়? তা আমি জানতে চাইবো না।

কেন বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্ট এর অনুমতি নিতে বারো হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়? কেন ভ্যাট লাইসেন্স নিতে ১১/১২ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়? ...কেন ফায়ার লাইসেন্স করতে ১০/১২ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়? কেন পরিবেশ ছাড়পত্র নিতে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়?

কেন ইপিবিতে(রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো) একশত টাকার চায়না সিও কৃত্রিম সংকট তৈরীর ফলে ১ হাজার থেকে পনের হাজার টাকা দিয়ে কিনতে হয়?

শিপমেন্ট এর পর কেন একটি সিও, সাফটা, আপটা স্বাক্ষর করিয়ে আনতে টেবিলে টেবিলে স্পিডমানি দিতে হয়?....আমি জানতে চাইবো না।

বছরে কতো টাকা দেশ থেকে অবৈধভাবে পাচার হয়ে সুইস ব্যাংকে জমা হয়। ...আমার দেয়া ট্যাক্স ও ভ্যাট এর টাকা কীভাবে কোথায় খরচ হয়, আমি তার কিছুই জানতে চাইবো না।

....কিন্তু আমি অবশ্যই জানতে চাইবো, আমার বাংলাদেশের রিজার্ভ ফান্ড এর টাকা আমেরিকার ব্যাংক থেকে কীভাবে চুরি হয়?? এর সাথে জড়িত দেশীয় দোসর ও বেইমানদের চেহারা আমি দেখতে চাইবো। তাদের বিচার ও সাজা বাংলার মাটিতে হোক আমি তা দেখতে চাইবো।

শেয়ার বাজার হতে ডাকাতি করে কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া নাটের গুরুদের মতো আড়ালে আবডালে থেকে যাবে না আসল হোতারা সেই আশায় বুক বেঁধে রইলাম। কেন না আমি বড্ড আশাবাদী মানুষ...

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:০১

বিজন রয় বলেছেন: কে জানাবে?

সাংবাদিকরা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.