নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি ৫০০ টাকা নোটের গল্প

১৮ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৬

আমার একাউন্ট সেকশানের সালাম সাহেব একটি পাঁচশত টাকার নোট আমার চোখের সামনে মেলে ধরে বললেন, "স্যার, এই টাকাটা আমি আমার পরিবারের অনেককে দিতে চেয়েছি, কিন্তু প্রথমে হাত বাড়ালেও পরে আর কেউ নিতে চায় নি।"

আমি একটু নড়েচড়ে বসলাম। ঘটনা বেশ ইন্টারেস্টিং বলেই মনে হচ্ছে। এই জামানায় টাকা সাধলে কেউ নিতে চায় না এতো বড় অস্বাভাবিক ঘটনা!

তবে কী রহস্য এই নোটটির?

বলতে লাগলেন সালাম সাহেব, "স্যার, রাতে যখন বাসায় গেলাম। আমার স্ত্রী বলল- তার কিছু টাকা দরকার। যেভাবেই হোক যেন তাকে অন্তত পাঁচশত টাকার ব্যবস্থা করে দেই।... আমি পকেট থেকে বের করে টাকাটা তার হাতে দিলাম। সে বেশ আগ্রহভরে হাত বাড়ালো। এরপরই আমি এই সুন্দর নোটটির পেছনের একটি অসুন্দর গল্প তাকে বললাম। এবং একটি অতি সহজ শর্তজুড়ে দিলাম।"

"তারপর?"

"আমার স্ত্রী দ্রুততার সাথে নোটটি আমার হাতে ফেরত দিয়ে দিলো। আমি খানিক মুচকি হেসে বউকে বুকে জড়িয়ে ধরলাম।"

"এরপর কী হলো?"

আমি আমার ছেলে-মেয়েকে দিতে চাইলাম। ভাই-বোনকে দিতে চাইলাম। আত্মীয়-স্বজন অনেককে দিতে চাইলাম। এবং একই শর্তজুড়ে দিলাম।..... এরা কেউই নিতে রাজি হলো না। সব শেষে একজন ভিক্ষুককে দিতে চাইলাম। শর্তযুক্ত কথাটি বলার পর ভিক্ষুকও টাকাটা ফিরিয়ে দিলো।

কিছুটা অধৈর্য হয়ে বললাম, "বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে। তো কী সেই নোটের ইতিহাস এবং কী সেই শর্ত?"

সালাম সাহেব দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, "স্যার এই টাকাটি আপনার। আপনি আমাকে একটি কাজ দিয়েছিলেন। সেখানে পাঁচ শ' টাকা কম খরচ হয়েছে। কিন্তু আমি এটি আপনাকে ফেরত দেই নি। আমি না বললে আপনি কোনদিনও ধরতে পারতেন না। আমি এটি আপনার প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধভাবে নিয়েছি স্যার।"

"আহ হা ঠিক আছে। সমস্যা নেই। কিন্তু শর্তটি কী ছিল যে কেউ এটি নিতে চাইলো না?"

"ভেরি সিম্পল স্যার, শুধু বলেছিলাম- আমার এই টাকাটি অবৈধভাবে এককথায় চুরি করে পকেটে ভরা। আমি এটি তোমাকে দিতে চাই। এটুকু শোনার পর কেউ কেউ নিতে চাইলো। কিন্তু শর্তটি শোনার পর তা ফিরিয়ে দিলো।"

"শর্তটি কী?"

"শর্তটি ছিল এরূপ, এই টাকাটা যে নিবে এটি অর্জন করতে গিয়ে আমার যে পরিমাণ গুনাহ হয়েছে তার দায়ভার তাকে নিতে হবে এবং রোজ হাশরের মাঠে এর জন্য আমার বদলে তাকে জবাব দিতে হবে। আমার প্রাপ্ত শাস্তি তাকে ভোগ করতে হবে। দূরের মানুষ তো দূরের কথা। আমার নিজের স্ত্রীই এই শর্তে রাজি নয়। সে টাকা নিবে সত্য কিন্তু গুনাহ এর দায়ভারে নিতে পারবে না। আমার শাস্তি ভোগ করতে পারবে না। তবে কী করবো এই টাকা দিয়ে আমি স্যার?"

তারপর সালাম সাহেব হাসলেন। হেসে বললেন, ''স্যার, ভিক্ষুক আমাকে কী বলল জানেন?- আমাকে বলল, মিয়া ভিক্ষা দিবেন না না-দেন তাই বইলা মশকারা করেন? আপনার টাকায় আমি থুথু মারি। এই বলে সে একদলা থুথু রাস্তার দিকে ছুড়ে মারলো।''

...শুনে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম। তার কথাগুলো থেকে অনেক ম্যাসেজ পেলাম আমি। আপনারা কে কি ম্যাসেজ পাবেন আমি জানি না। ঘোষখোর ভাই, চাচা, বন্ধুরা এই কাজটি আপনারাও আজ বাড়িতে গিয়ে একটু ট্রাই করে দেখতে পারেন।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৪১

জিয়া শামস সাকিব বলেছেন: বার্তাবহ ৷৷ কেউ কি এমনটা ভাবে ?? ভাবলে কতইনা ভাল হত ৷৷

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.