নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....
ছোটবেলায় ক্লাসে যাবার সময় বাসা থেকে আমাকে ৭ টাকা দেওয়া হতো। একটা পাঁচ টাকা আর একটা দুই টাকার নোট। পাঁচ টাকা আসা যাওয়ার ভাড়া আর দুই টাকা টিফিনের জন্য। সেই সময় দুই টাকায় বাটারবন, সিঙ্গারা, ক্রিম রোল পাওয়া যেত।
প্রতিদিন টিফিন হিসেবে এই তিনটির যে কোন একটি বেছে নিতে হতো।
প্রায়ই মনে হতো, ইস্ বাসা থেকে যদি আর তিনটা টাকা বাড়িয়ে দশটা টাকা পুরো করে দিতো, তবে মাঝে মধ্যে একটু ভালো নাস্তা করতে পারতাম।
একদিন বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছি। এমন সময় একটি ছেলে আমার পাশে এসে দাঁড়ালো। ছেলেটির নাম রফিক। আমাদের গলিতে থাকে। বাস আসা অবধি কথা বললাম দুজনে।
স্ট্যান্ডে বাস চলে আসার পর বললাম, "চলো উঠি।"
রফিক বলল, "তুমি যাও। আমার ক্লাসের দেরি আছে। আমি পায়ে হেঁটে চলে যাবো।"
একদিন জানতে পারলাম, যে কাজটি আমি মাঝে মধ্যে করি(এক টাকা বাস ভাড়া বাঁচানোর জন্য মালিবাগ পর্যন্ত হেঁটে যাওয়া) সে কাজটি রফিক প্রতিদিন করে। রামপুরা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যায় সে। তারপর মালিবাগ থেকে মতিঝিলের গাড়িতে উঠে।
বাসা থেকে আমার চে' দুই টাকা কম দেওয়া হয় তাকে। আমি সাত টাকা পেলেও সে পায় ৫ টাকা।
এরপর মাঝে মধ্যে আমার টাকায় ভাড়া দিয়ে রফিককে বাসে করে মালিবাগ নিয়ে যেতাম। যেদিন তাকে নিতাম সেদিন আর আমার টিফিন খাওয়া হতো না।
রফিকের বিষয়টি জানার পর আর কখনো মনে হয়নি, ইস্ যদি আর দুইটা টাকা আমাকে বাড়িয়ে দিতো! মনে হয়েছে, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি অনেক ভালো আছি। এই শহরে আমার চেয়েও খারাপ আছে কেউ কেউ....।
১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৩
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১১ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪২
অশ্রুকারিগর বলেছেন: সুন্দর বিবেকের পরিচয়। মানুষ যখনই কোন কিছু নিয়ে অপ্রাপ্তিতে ভুগে তখন তার উচিত তার আশেপাশে ভালোমত পর্যবেক্ষণ করা। উপরের দিকে চাওয়ার চেয়ে নিচের দিকে চাইলে অনুভব করা যায় আপনি অন্য অনেকের চাইতে কতটা ভালো আছেন।
দিনশেষে ভালো থাকাটাই মুখ্য!
১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৩
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: যথার্থ বলেছেন দাদা। ধন্যবাদ..
৩| ১১ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪৪
বৈশাখের আমরণ নিদাঘ বলেছেন: আমারও এমন অবস্থা ছিলো। বাসা থেকে ২০ টাকা দিত কলেজ যেতে। মিরপুর থেকে সায়েন্সল্যাব যেতে তখন সিটিং এ লাগতো টাকা। বাসা থেকে বাসট্যান্ডের রিক্সা ভাড়া ছিল ৫ টাকা। প্রায় দেড় কিলো ছিলো। অতটূকু হেটে যেতাম আর আসতাম। বাসভাড়া থেকে বাচাতে সিটিং এ না গিয়ে লোকালে ৩ টাকায় যেতাম। দুইবারে ৮ টাকা বেঁচে যেতো। ৮ টাকা মানে তখন অনেক টাকাই। মাস শেষে দেখতাম অনেক টাকাই বেঁচে গেছে। সকা ৮ টা থেকে ক্লাস ছিলো, বিকেলের দিকে আসতাম বাসায়। মাঝে মাঝে না খেয়েই থাকতাম টাকা বাচাতে। তখন মনে কস্টও ছিল না। বরং ওইদিনগুলোর কথা ভাবলে ভালোলাগে। মনে হয় যে চাহিদা ছিল কত অল্প।
আপনার পোস্ট পড়ে ভালোলাগলো।
৪| ১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৪
হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: ধন্যবাদ... মন্তব্যের জন্য। সত্যিই সে সময় আমাদের চাহিদা ছিল অনেক অল্প।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:৩৭
ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল দর্শন।