নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

লোক দেখানোর জন্য যাকাত নয়...

১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৪১

রোজা আসলেই ছোট-বড় সব মার্কেটগুলোতে যাকাতের কাপড়ের বিজ্ঞাপন দেখা যায়। দোকানের সামনে বড় বড় অক্ষরে সাইনবোর্ড ঝুলানো থাকে, ''এখানে যাকাতের কাপড় পাওয়া যায়''

মহান আল্লাহ পাক সামর্থ্যবানদের উপর যাকাত ফরয করে দিয়েছেন। যাকাত গরীবের হক। অথচ গরীবের এই হক আদায় করতে গিয়ে আমরা বেছে নেই যাকাতের কাপড়ের নামে নিম্ন মানের বস্তু..।

সাধারণ মাপে মহিলাদের শাড়ি লম্বায় ১২ হাত হয়। কিন্তু দেখা যায় যে, বাজারের যাকাতের কাপড় গুলোর মাপ ১০ বা সাড়ে ১০ হাত। যা ধোয়ার পর আরো খাটো হয়ে যায়। কিছুদিন পর রং উঠে মলিন রূপ ধারণ করে..।

অথচ রাসূল (স) বলেছেন, "তোমাদের কেউই পূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য তা-ই পছন্দ করবে যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।" (বুখারী ও মুসলিম)

অন্ধ-দুর্বল-ক্ষুতওয়ালা পশু দ্বারা কুরবানি দিলে কুরবানি হয় না। কুরবানি ফরজ নয়, ওয়াজিব। আর যাকাত ফরজ। তাহলে সেই যাকাত কি খারাপ জিনিস দিয়ে আদায় করলে আদায় হবে?? যাকাতদাতারা প্রশ্নটা নিজেকে করুন।

যাকাত শব্দটির আভিধানিক অর্থ ‘পবিত্রতা’ বা ‘পরিশুদ্ধতা' অর্থাৎ যাকাত প্রদানের মাধ্যমে নিজের সম্পদকে পবিত্র কিংবা পরিশুদ্ধ করা। কথা হচ্ছে যে, আমাদের দেয় নিম্ন মানের কাপড়ের দ্বারা আসলেই কি আমাদের সম্পদ পবিত্র কিংবা পরিশুদ্ধ হচ্ছে?

সূরা আল ইমরান এর ৯২ নং আয়াতে বলা হয়েছে, "তোমরা কখনই নেকী বা কল্যাণ হাছিল করতে পারবে না, যে পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের প্রিয় বা পছন্দনীয় বস্তু দান করবে এবং তোমরা যা কিছু দান করো সে সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক সম্যক জ্ঞাত।"

আমাদের দেশে যাদের উপর যাকাত ফরজ হয়েছে তারা যদি তা যথাযথভাবে প্রদান করেন তবে সমাজের অভাব বহুলাংশে হ্রাস পাওয়ার কথা। কিন্তু যে নিয়মে যাকাত প্রদান করা হয় তাতে সঠিক সফলতা আসছে না।

ট্রাক ভরে নিম্ন মানের যাকাতের কাপড় দেয়া হয়। তাও আবার সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই মাইক ও ঢাক ঢোল পিটিয়ে প্রচারণা দিয়ে। এতে ঐ এলাকায় যাকাত দাতার ব্যাপক সুনাম ছড়িয়ে পরে, মানুষ তাকে সালাম দেয়। বছর ঘুরে নির্দিষ্ট সময় আসলেই সবাই তাকে 'যাকাত কবে দেবেন?' এই রকম প্রশ্ন করতে শুরু করেন।

এতে তিনি অনেক সম্মান ও আত্মতৃপ্তি উপলব্ধি করে থাকেন। একসময় সমাজ সেবকের লেবেল তার গতরে সেঁটে যায়। কিন্তু যে উদ্দেশ্য নিয়ে ইসলামে যাকাত ফরয করা হয়েছে। সমাজে তা প্রতিফলিত হয় না।

তাই লোক দেখানোর আশায় অধিক লোককে যাকাত দেয়ার জন্য যারা এ নিম্নমানের কাপড় ক্রয় করে যাকাত দিবেন, তাদের যাকাত আদায় হওয়া তো দূরের কথা, উল্টো ফরজ আমল যাকাতকে অবজ্ঞা করার জন্য কঠিন গুনাহে গুনাহগার হবেন।

সতরাং সময় থাকতেই সাবধান হয়ে যান!!!


মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৭

অভ্র ইসলাম বলেছেন: ইসলাম আল্লাহর দেয়া এক পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। এ জীবন ব্যবস্থায় এক সুষম ও ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনীতি ছাড়াও সামাজিক ন্যায়বিচারকে নিশ্চিত করার জন্য যাকাত একটি চমৎকার কর্মসূচির বিধান রাখা হয়েছে। সমাজের বিত্তবান ও সচ্ছল লোকদের বাড়তি সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ নিয়মমাফিক আদায় করে দরিদ্র ও বঞ্চিত লোকদের মাঝে যথাযথ বণ্টন করাই এ কর্মসূচির প্রধান বৈশিষ্ট্য। দেহের সাথে সম্পর্কিত ইবাদতের মধ্যে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ ইবাদত হলো নামাজ, আর ধন-সম্পদের সাথে সম্পর্কিত ইবাদতের মধ্যে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ হল যাকাত। উভয়টি ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম।

তবে মনে রাখতে হবে, প্রতিটি ইবাদত শুধুমাত্র একমাত্র আল্লাহকে রাজি-খুশির জন্যই করতে হবে। খালেছ নিয়তে একাগ্রচিত্তে আল্লাহর হক ও বান্দার হক আদায় করতে হবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হচ্ছে ইবাদতের নামে কিছু কাজ লোক দেখানো এবং আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে। বিশেষ করে আর্থিক ইবাদত তথা যাকাত ও হজ। যাকাত প্রদানে অনেকেই নিজেদেরকে বাহাদুর মনে করেন। যাকাত প্রদানের বিজ্ঞাপনও দেখা যায় পত্রিকার পাতায়। যাকাত নিতে গিয়ে মৃত্যু বরণের ঘটনাও আলোচিত হয়েছে আমাদের দেশে। মনে রাখতে হবে, যাকাত দেয়া গরিরের প্রতি করুণা নয় বরং যাকাত গরিবের অধিকার। যাকাত প্রদান করে ধনিরা দায়মুক্ত হয়। গরিবরা যাকাত গ্রহণ করে বিত্তশালীদেরকে দায়মুক্ত করেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.