নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবিবুর রহমান জুয়েল

হাবিবুর রহমান জুয়েল

জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে দুঃখ কতো লুকিয়ে থাকে কেউ তো জানে না....

হাবিবুর রহমান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ কাল বিয়ে বাড়িকে মনে হয় যেন কোলাহল ময় এক শ্যুটিং স্পট....

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪২

..চিকেন রোস্ট মুখের সামনে ঝুলিয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে হাত ফসকে স্মার্ট ফোনখানা টুপ করে গরুর মাংসের বাটিতে পড়ে গেল বর পক্ষের এক স্মার্ট বয়ের।

পাশে বসে থাকা গ্রাম থেকে আসা কণের বড় জ্যাঠার কাপড় ছিটকে আসা মাংসের ঝোলে মাখামাখি।

তিনি মৃদু স্বরে বললেন, "আহহা! বাবাজি আপনার এত সুন্দর মোবাইলটা মাংসের বাটিতে পইড়া গেল! অহন কী করবেন?"

স্মার্ট বয়ের হাসি মুখ মলিন হয়ে গেল। মাংসের বাটি হতে সাবধানে দুই আঙুলে তার যন্ত্রটি তুলে নিলো বেচারা।

সমস্ত শরীরে ঝোল লেপ্টে স্মার্ট ফোন একেবারে আনস্মার্ট হয়ে গেছে!

জ্যাঠা দু:খী গলায় বললেন, "যান, এইবার বেসিন থেইকা ধুইয়া আনেন গা। তার পর টিস্যু দিয়া ডলা দেন।"

.... খাবার শেষে গ্রাম থেকে আসা বড় জ্যাঠা কণেকে খুঁজতে লাগলেন। খুঁজতে খুঁজতে দেখেন কণে বাঁকা হয়ে এক পিলারের সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়ায় আছে।

জ্যাঠা বিরবির করে বকতে লাগলেন, "আহা রে! কি নরম দিলের মাইয়া আমগো! বাপ-মা ছাইড়া যাওনের দু:খ সইতে না পাইরা মন-মরা হইয়া পিলারের লগে ঠেস দিয়া খাড়ায় আছে। আহ্ হা রে...কি মাইয়া আমগো..."

জ্যাঠা কাছে গিয়ে দরদমাখা কণ্ঠে বললেন, "মাগো ও মা, এমনে খাড়ায় থাইকো না, সব মাইয়া গো-ই একদিন স্বামীর ঘরে যাইতে হয়। চলো আর এমনে খাড়ায় থাইকো না মা...।"

জ্যাঠা কণের হাত ধরে টানতে যাবেন, এমন সময় ফটোগ্রাফার বলে উঠলেন, "উহ্ হচ্ছে না, আরেকটু ডানে..হুম আরেকটু...আহ্ হা বেশি হেলে পড়েছেন.., আরেকটু বামে...হুম এইবার কোমড়টা খানিক বাঁকা করুন তো দেখি..ডান হাতটা কোমড়ের উপর রাখুন... হ্যা এইবার থুতনিটা একটু উপরে তুলুন...আহ বেশি হয়ে গেল, আরেকটু নিচে...আহ নিচের ঠোঁটের লিপস্টিকটা হালকা হালকা লাগছে... ওকে নো প্রোবলেম এইভাবেই একটা তুলে দিচ্ছি... রেডি..."

জ্যাঠা দেখলেন, তিনি পাশে দাঁড়িয়ে আছেন, অথচ মেয়ে দেখেও না দেখার ভান করে থাকলো। একবারও ফিরে তাকালো না তার দিকে...। ফ্যাল ফ্যাল করে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে পেছনের দিকে হাঁটতে লাগলেন বড় জ্যাঠা...।

আজকাল স্মার্ট ফোন, ফটো গ্রাফারদের রাজত্ব আর কণেদের ফটো শ্যুট দেখে বিয়ে বাড়িকে আর বিয়ে বাড়ি মনে হয় না সত্যি। মনে হয় যেন কোলাহলময় এক "শ্যুটিং স্পট..."

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৫৫

সিফটিপিন বলেছেন: কালের বিবর্তন।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৩

হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: জি বলেছেন ঠিক... মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০৭

মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: ভাল্লাগসে লেখা। হাল্কা রসিকতা দিয়ে শুরু করে শেষটা ভালো ছিলো।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৪

হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য...

৩| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৪৬

সৈয়দ আবুল ফারাহ্‌ বলেছেন: সেল্ফি তোলা মজার। কিন্তু দুর্ঘটনাগুলো খুবই ভাবিয়ে তোলে। যেমন - লঞ্চে সেল্ফি তুলতে গিয়ে মোবাইল ফোনটি নদীতে বা নিজে নদীতে।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৪

হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: হা হা হা বলেছেন যথার্থ...

৪| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:২৭

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: :> যা কিছু প্রথম শুরু হয় তাকে অনেক চড়াই উতরাই পেড়িয়ে চলতে হয়! একুশ শতক শুরু হইছে প্রযুক্তির বিপ্লব দিয়ে, তাই তাকেও সেটি করে যেতে হবে। এক সময় ঠিক হয়ে যাবে।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৫

হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: দেখা যাক কী হয়... ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য..

৫| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৪৭

ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল একটা প্রসঙ্গ নিয়ে লেখাটি ভাল লাগল। মনে পড়ল ষাট বছর আগে আমার ৮ টা ফিল্মওয়ালা বিশাল কোডাক ক্যামেরাটার কথা, ছবি তোলা, ছবি জ্বলে যাওয়া, তোলার পর ধোলাই করা ... কত যে কস্ট! ধন্যবাদ।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৬

হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: তবুও সেই সব দিনগুলো আনন্দময় ছিল বেশ, এখনকার সবই মেকি.. ধন্যবাদ প্রিয় ঢাকাবাসী মন্তব্যের জন্য

৬| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৫৬

রেজা এম বলেছেন: :-/ :-/ :P :D

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৬

হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: হো হো হো...

৭| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৩

জাহিদ অনিক বলেছেন: আহ । সেই কোডাক ক্যামেরা । You Press the Button, We Do the Rest

ধন্যবাদ ঢাকাবাসী ।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৭

হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: সবই স্মৃতি এখন... ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য

৮| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:২০

নীল_অপরাজিতা বলেছেন: আজকাল বিয়েতে কে আসলো, কে গেলো তা নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। সবার সমস্ত চিন্তা ঐ ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে। বর-কনের ধারে কাছে যাওয়ার উপায় নেই, সারাক্ষন নানান কায়দার ফটোসেশন চলছে। বিয়েটার প্রধান উদ্দেশ্যই হলো কত ভাল ভাবে ফটোশুট করা যায়। কনের একটাই মাএ টেনশন ছবি ভালো হচ্ছেতো? তা না হলে সর্বনাশ!! মেকআপ, গেটআপ, স্টেজ-সাজানো সবকিছুর প্রধান উদ্দেশ্যই থাকে ছবিতে সুন্দর আসা। অতিথীরাও ব্যাস্ত থাকে নানান কায়দায় সুন্দর সুন্দর ছবি তোলা নিয়ে। আমি আয়োজক হলে লিখে দিতাম "এখানে ছবি তোলা নিষেধ"। তাতে করে সবাই যদি বিয়ের প্রকৃত আনন্দটা উপভোগ করার সুযোগ পায়।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:০০

হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: যথার্থ বলেছেন নীল_অপরাজিতা। "এখানে ছবি তোলা নিষেধ" এমন লিখে দেওয়া উচিত বিয়ে বাড়িতে।

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য....

৯| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৯

আখেনাটেন বলেছেন: ভালো একটা জিনিস তুলে ধরেছেন। মানুষের সবকিছু কেমন যেন ক্ষণস্থায়ী হয়ে যাচ্ছে।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:০০

হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। ভালোবাসা জানবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.