নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তুমি একটা খারাপ কাজ করেছো তার মানে তুমি একজন মানুষ; তুমি সেই খারাপ কাজটার জন্য অনুতপ্ত হয়েছো তার মানে তুমি একজন ভাল মানুষ। \n\nwww.facebook.com/bandar.khola

হাফিজ রাহমান

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম আদালত হলো মানুষের বিবেক।

হাফিজ রাহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ এবং একজন মান্যবর ডাঃ সাহেব-১

২৪ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৫৯

১। মাননীয় ডা. সাহেব! প্রথমত আমার পরম শ্রদ্ধা গ্রহণ করুন। আমি ‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ’ গ্রন্থের উপর করা আপনার সমালোচন পর্ব-১ পাঠ করেছি। আপনার লেখার মুন্সিয়ানায় আমি বিমুগ্ধ। আপনার শব্দযোজনায় শৈল্পিক মুগ্ধতা লক্ষণীয়। শব্দ চয়নেও বেশ শক্তিমত্তা ও পরিপক্বতা বিদ্যমান। এগুলো প্রশংসনীয় দিক। এ দিকগুলোর প্রশংসা করতেই হয়।

২। মান্যবর! আপনি আপনার সমালোচনা লেখাটির শিরোনাম করেছেন ‘আরিফ আজাদের প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ নামক অপাঠ্য কিতাব সমালোচনা পর্ব-১’।

উত্তর : ক। আপনি বইটিকে কিতাব বলে ব্যাঙ্গাত্মক ভাষায় একে আক্রমণ করেছেন। ডা. সাহেব! কিতাব একটি শব্দ। এর অর্থ বই, গ্রন্থ, বুক। আরবী, ফারসী এবং উর্দু ভাষায় মলাটবদ্ধাকারে যা লিখিত হয় তার সবই কিতাব নামে অভিহিত। এ ভাষাগুলোতে সবধরনের বিষয়ই লিখিত হয়। যেমনটি আমাদের বাংলা ভাষায় হয়। তো বই বা গ্রন্থটি অন্য ভাষার প্রতিশব্দ হলেই কি সেটা বিদ্রূপাত্মক হয়ে যাবে ? কিতাব শব্দটির সাথে বিদ্রূপাত্মক আচরণ করে আরবী, ফারসী ও উর্দু এ ত্রিভাষার সুবিশাল গ্রন্থভাণ্ডারকে উপহাস ও বিদ্রূপের পাত্র বানালেন কেন ? সেখানে কিন্তু আপনাদের দর্শনের কিতাবও রয়েছে। তবে সেগুলোও কি উপহাসমূলক ? এ ভাবে শব্দমূলক উপহাস করার বিষয়টিও কি আপনাদের দর্শনের আওতাভুক্ত ?

খ। বইটিকে আপনি বলেছেন অপাঠ্য। অর্থাৎ পাঠযোগ্য নয়। কিন্তু আপনি পাঠ করেছেন। কেন ? অপাঠ্য গ্রন্থটিকে কেন আপনি পাঠ করতে গেলেন ? যেটা পাঠযোগ্য নয় সেটা পাঠ করা কি অপরাধ নয় ? মুক্ত মনের মানুষ হয়ে কেন এত বড় একটি অপরাধ আপনি করে ফেললেন ? অপাঠ্য বলে বলে যদি সবাই এটাকে পাঠ করতে থাকে তবে আর অপাঠ্য থাকলো কোথায় ? নবী মুহাম্মদ এর যুগে মূর্তপূজক নেতৃবৃন্দ কুরআনকে অপাঠ্য বলতো। কিন্তু রাতের আঁধারে ঠিকই চুপিসারে কুরআন পাঠ শুনতে যেত। ব্যাপারটি এ রকম কিছু হয়ে যাচ্ছে কি না কে জানে ?
ডা. সাহেব ! আরিফের বইটি অন্তত আপনাদের মত নাস্তিক ভাইদের নিকট অপাঠ্য হওয়ার কথা নয়। কারণ সে বইটিতে ধর্মীয় তথ্যসূত্রের সমাবেশ না ঘটিয়ে যুক্তির সমাবেশ ঘটিয়েছে। এটা তো অপাঠ্য হবে তাদের নিকট যারা যুক্তির ধার ধারে না। আপনারা যুক্তিপাগল মানুষ। যুক্তিটাই তো আপনাদের পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সংবিধান। আপনাদের সে সংবিধানের আলোকে আরিফ কথা বলল আর আপনারা চটে গেলেন। রণডঙ্কা বাজিয়ে দিলেন। আপনাদের তো আরিফের পিঠ চাপড়িয়ে বাহবা দেয়া দরকার ছিল। বলা প্রয়োজন ছিল বেটা আরিফ! কি লেখেছ না লিখেছ সেটা বড় কথা নয়; তুমি যুক্তির ভাষায় কথা বলেছে তাই তোমাকে ধন্যবাদ। তা না করে নীতি নৈতিকতার মাথা খেয়ে খিস্তি-খেউড় করে চলেছেন। এটা কেমন মুক্তমনার পরিচয় ?
আপনি সমালোচনা করবেন ভাল কথা। মানুষের ভুল ত্রুটি হতেই পারে। সমালোচনা একটি প্রশংসনীয় ও কাঙ্ক্ষিত বিষয়। এতে দোষ ত্রুটি থেকে বেরিয়ে আসার পথ সুগম হয়। সাহিত্য সমালোচনা নামে আলাদা একটি পর্বই রয়েছে বাংলা সাহিত্যে। কিন্তু সমালোচন মানে তো দোষগুণের সম্যক আলোচনা। সমালোচনার এ সংজ্ঞা মেনে কি আপনার সমালোচন হচ্ছে বা হবে ?

৩। আপনি আরিফ সম্পর্কে লিখেছেন ‘তিনি একজন ‘ছাত্র’ ! 'ছাত্র' বটে তবে তুখোড় ছাত্র বলতে যা বোঝায় অর্থাৎ কৃতিত্বপূর্ণ রেজাল্টধারী কোনো ছাত্র তিনি নন। আমার অবশ্য সন্দেহ জাগে যে তিনি কতটুকু ছাত্র আর কতটুকু অছাত্র !’

উত্তর : আপনি তার ছাত্রত্ব নিয়ে কথা বলছেন। এটা কি ব্যক্তিআক্রমণ নয় ? আপনি যুক্তি দিয়ে তার যুক্তি খণ্ডন করুন। তার ব্যক্তিত্বের উপর আক্রমণ কেন ?
ইউসুফ আলী মজুমদার সাহেব আপনার পোষ্টে একটি মন্তব্য করে ছিলেন। তার মন্তব্যে আপনি লিখেছেন, ‘আপনি যুক্তিতে না পেরে সম্পূর্ণ 'অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য' করেছেন। পাশাপাশি ব্যক্তিআক্রমণও করেছেন।’
আপনার এ মন্তব্যটা কি এখানে প্রযোজ্য হয় না। আপনার ব্যক্তিত্বে আঘাত এলে আপনি ব্যথিত হন। অন্যের ব্যক্তিত্বে আঘাত দিলে সে কি ব্যথিত হবে না ? এ ধরনের ব্যক্তি আক্রমণ কি মানবতার পর্যায়ে পড়ে ?
আপনি আমার করা একটি মন্তব্যের উত্তরে বলেছেন, ‘একজন নাস্তিক সবার ওপরে একজন মানবতাবাদী, ফলে তাকে সততা অসততা, নৈতিকতা অনৈতিকতা নিয়ে অবশ্যই ভাবতে হয়।’ অর্থাৎ একজন নাস্তিকের ওপরে একজন মানবতাবাদীর অবস্থান। তবে বলুন ব্যক্তিআক্রমণ করে আপনি কি ধরনের মানবতা দেখালেন ? আপনার মন্তব্যগুলো পাঠ করে আমার দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে ছিল, আপনি হৃদয়ের মণিকোঠায় সত্যিই উদারতা, সংযমতা ও মানবতার পরাকাষ্ঠা লালন করেন। কিন্তু আপনার সমালোচন পর্ব পাঠ করে আমার সে বিশ্বাসের দেয়াল নিমিষেই ধসে গেল।

৪। আপনি লেখেছেন, ‘সীতাকুণ্ডে যে জঙ্গি অভিযান চালানো হলো, তারপর থেকে আরিফ আজাদের ফেসবুক আইডি ডিঅ্যাকটিভেটেড।’

উত্তর : ডা. সাহবে আপনারা তো বুদ্ধির জাহাজ। এ কেমন জাহাজ দেখালেন আমাদের ? শিশুতোষ আঁকি বুঁকির এর চেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণ আর কি হতে পারে বলনু তো! আপনারা তো লজিক ও থিউরি ব্যতিরেকে কোনো কথা বলেন না এবং বিশ্বাসও করেন না। কিন্তু এখানে এ কেমন থিউরির ঝলক দেখালেন ? ব্যক্তি আক্রমণের একটি লিমিটেশন থাকা চাই।
ডা. সাহবে! আমরা ব্যক্তি আক্রমণে বিশ্বাসী নই। ব্যক্তি আক্রমণ কোনো মানবতা নয়। ব্যক্তি আক্রমণ কোনো ভদ্রতা নয়। নিজের ব্যক্তিত্ব ও ভদ্রতা নিজেকেই সংরক্ষণ করতে হয়। লোক হাসানো কথা বলে নিজের ব্যক্তিত্বকে কদর্যপূর্ণ করা কারো জন্যই উচিত নয়।

৫। আপনি লিখেছেন, ‘জঙ্গিবাদীরা আজকাল বই লেখে ! অবশ্য বই না বলে এগুলোকে 'কিতাব' বলা উচিত এবং এমনই কিতাব এগুলো যে এসব কিতাবে –
১) যুক্তি-তথ্য-প্রমাণের লেশমাত্র নেই। কোনো রেফারেন্স নেই, নেই কোনো পরিসংখ্যানও।
২) একই কথাকে ঘুরিয়ে পেচিয়ে এবং টেনেটুনে বড় করে বইকে ১৬০ পৃষ্ঠা করা হয়েছে কেননা যত পৃষ্ঠা, বইয়ের তত দাম হাঁকা যাবে।’

উত্ত : আপনি আরিফ আযাদকে জঙ্গিবাদী বললেন। আপনার এ দাবির সপক্ষে যুক্তি-তথ্য-প্রমাণের কতটুকু লেশ আছে বলুন তো ? আরিফ আযাদ ভুল করতে পারে। কিন্তু আপনি তো ভুল করতে পারেন না। কারণ আপনি তো নাস্তিক। আপনি তো যুক্তিবাদী। আপনি তো তথ্যবাদী। আপনার কথায় আপনার দাবিতে যুক্তি-তথ্য-প্রমাণ এসব থাকতেই হবে। কিন্তু আপনার উপরোক্ত দাবিতে এ সবের কিছুই নেই। তবে আপনি কেমন নাস্তিক হলেন ? আপনার নাস্তিকতার স্বার্থকতা কোথায় ? এমন প্যারাডক্সিক্যাল নাস্তিক হলে তো আম ছালা উভয়টিই জলে যাবে।
ডা. সাহবে! আপনি কি প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ বইটি পাঠ করেছেন ? পাঠ করে থাকলে ‘যুক্তি-তথ্য-প্রমাণের লেশমাত্র নেই। কোনো রেফারেন্স নেই, নেই কোনো পরিসংখ্যানও।’ এমন কথা কি করে বললেন ? বইটির ১৬০, ১৪০, ১১৯, ১১৪, ৯৯-১০০ পৃষ্ঠাগুলোতে রেফারেন্স নামে যা কিছু আছে সেগুলো মূলত কি ? একটু বলবেন কি ?
আপনি কি বইটির লেখার উপস্থাপনা দেখেছেন ? এটা তো কোনো অভিসন্দর্ভ নয় যে এখানে তথ্য-উপাত্তের শোডাউন দেখাতে হবে। বইটির উপস্থাপনা বিবেচনায় এটিকে একটি ক্ষুদে উপন্যাসের সিরিজসমগ্র বলা চলে। লেখক ঔপন্যাসিক ও গাল্পিক উপস্থাপনায় তার মনের কথাগুলো ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছেন। এখানে তথ্যের অনুসন্ধান করাকে তো এক ধরণের বোকামি বলা যায়।
হুমায়ূন আহমেদ তার উপন্যাসসমগ্রে ধর্ম, জ্ঞান-বিজ্ঞানসহ নানা বিষয়ের আলোচনা টেনেছেন। সেখানে তিনি কয়টি রেফারেন্স উল্লেখ করেছেন ? এ প্রশ্ন কেন করেন না ? আর বর্তমানে নেট জগতে বাস করে রেফারেন্সের ছুতো অনুসন্ধান করাকে তো ভাল লক্ষণ বলা যায় না।
আপনি বলেছেন, ‘একই কথাকে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে এবং টেনেটুনে বড় করে বইকে ১৬০ পৃষ্ঠা করা হয়েছে কেননা যত পৃষ্ঠা, বইয়ের তত দাম হাঁকা যাবে।’
ডা. সাহেব ! আপনি কি লক্ষ্য করেছেন, ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে এবং টেনেটুনে লেখা বইটি আপনাদের নাস্তিক পাড়ায় কি পরিমাণ এ্যাফেক্ট ফেলতে পেরেছে ? বইটি আপনাদের নাস্তিকতার সুমহান প্রাসাদে আগুন ধরিয়ে দিতে পেরেছে। সে আগুনের তাপদাহে আপনাদের মরণজ্বালা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। এ আগুন নেভানোর সাধ্য কি আপনাদের আছে ? এ আগুন নেভাতে যে পানি ঢালছেন তাতে তো আগুনের গতিময়তা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। বইটি পাঠে অনেক নাস্তিক ভাইয়ের বিশ্বাসের দেয়ালেও ফাটল ধরে গেছে। আস্তিকতার ছায়াতলে ফিরে আসতে তাদের খুব বেশি বিলম্ব হবে বলে বোধ হয় না।
বইটি কি আসলেই ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে এবং টেনেটুনে জাতীয় লেখা বই কি না তার রিজাল্ট তো নিরপেক্ষ সাহিত্য সমালোচকবর্গই দিতে পারবেন। আপনার কাছ থেকে তো এর নির্মোহ রিজাল্ট আশা করা যায় না।

৬। আপনি লিখেছেন, ‘এখানে বলা হচ্ছে যে –
বাবা/ভাই/বোন এদের আমরা যেমন চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে যাই, তেমনি স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাসও নাকি এমন ! এটাকে নাকি প্রশ্ন করা যায় না, সন্দেহ করা যায় না বরং হৃদয়ের গভীরে ধারণ করতে হয় ! আসলেই কী তাই ? আসুন দেখি’

উত্তর : ডা. সাহেব! আপনি ডিএনএর প্রসঙ্গটি কেন আনলেন ? এখানে এ বিষয়টি নিতান্তই অপ্রাসঙ্গিক বোধ হচ্ছে। আরিফ আজাদ বলেছেন, এটাকে প্রশ্ন করা যায় না, সন্দেহ করা যায় না। এর অর্থ তো এই নয় যে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা সম্ভব নয়, সন্দেহ করা সম্ভব নয়। বরং কথা হলো মাতা পিতা সম্বন্ধে মানুষের বিশ্বাস এতটা শক্তিময় যে এ সম্বন্ধে প্রশ্ন কিংবা সন্দেহ পোষণ করলে মানুষ গাছ পাগল নয়তো গাছ বোকা বলবে। ডিএনএ টেস্টে মাতাপিতা প্রমাণের বিষয়টি তো পরের ব্যাপার। এ বিষয় সম্বন্ধে আরিফ আযাদ সাহেব কিছু বলেন নি। বরং তিনি মাতাপিতার সম্বন্ধে প্রচলিত নির্ভুল বিশ্বাসটির সাথে স্রষ্টার বিশ্বাসের তুলনা করেছেন মাত্র।
আপনি আমি আমাদের বাবা মাদেরকে ডিএনএ টেস্টের রিজাল্ট মতে বাবা মা বলছি না। কেন ? কারণ বাবা মা হয়ে উঠার পারিপাশ্বিক যে আবহগুলো আমরা লক্ষ করছি তাতে বিশ্বাসের যে একটি অবিনশ্বর ভবন তৈরি হয়েছে তা কোনো কালেই বিধ্বস্ত হবার নয়। অথচ তাদের মাতা পিতা হয়ে উঠার পেছনের মৌলিক প্রক্রিয়াগুলোর কোনো একটিও আমাদের পঞ্চেন্দ্রীয়ের একটি দিয়ে অনুভব করতে সক্ষম হই নি। অনানুভূতিক এ বিশ্বাসটির সাথেই স্রষ্টার বিশ্বাসের তুলনা করা হয়েছে।

ডা. সাহেব! আপনি তো একজন যুক্তিবাদী শক্তিমান নাস্তিক। আপনি কেন আপনার মাতাপিতাকে ডিএনএ টেস্ট ব্যতিরেকে মাতা পিতা বলছেন কিংবা বলেছেন ? এখান তো কোনো প্রমাণ নেই। শুধুই শোনা কথা। আপনার পঞ্চেন্দ্রীয়ের একটি রাডারও এখানে ব্যবহৃত হয় নি। তাহলে শোনা কথায় এবং রীতি কথায় কেন বিশ্বাস করছেন ? শোনা কথা ও রীতি কথার বিশ্বাস তো ধর্মান্ধদের। আপনাদের মত মুক্তিপালগ, যুক্তিপাগল এবং ইন্দ্রীয়পাগল মানুষদের জন্য তো এগুলো নয়।

আপনি আমার করা একটি মন্তব্যের প্রতি মন্তব্যে বলেছেন, ‘নাস্তিক্যবাদ শুধুমাত্র 'দেখে বিশ্বাস' তত্ত্বে আস্থাশীল নয় বরং ৫টি ইন্দ্রিয়ের একটি নয়তো দুটি কিংবা তিনটি অথবা চারটি, এমনকী ৫টি ইন্দ্রিয়ের ৫টিরই একত্রিত অবস্থায় বিশ্বাসে আস্থাশীল।’ আপনার মাতা পিতা প্রমাণের ক্ষেত্রে তো একটি ইন্দ্রীয়ও ব্যবহার করা সম্ভব হলো না। তাহলে অন্তত এক্ষেত্রে তো আপনি নাস্তিক হতে পারলেন না।
কখনো নাস্তিকতা কখনো নাস্তিকতা নয়, কোথাও নাস্তিকতা কোথাও নাস্তিকতা নয় এটাকে তো নিরেট নাস্তিকতা বলা যায় না। হলে পুরোটাই হোন। অর্ধার্ধি হলে তো দু কূলই বিনাশ। জীবনের তো একটা মানে থাকতে হয়। জীবনটাকে তো একটা সুনির্দিষ্ট ক্যাটালগের অধীনে পরিচালিত করতে হয়। উটপাখীয় জীবন তো জীবন নয়।

৭। আপনি লিখেছেন, ‘প্রথমত, DNA paternity testing এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ নির্ভুলভাবে বায়োলজিক্যাল পিতামাতার বিষয়টি নির্ণয় করা সম্ভব।’

উত্তর : দেখুন ডা. সাহেব! এখানে সম্ভব অসম্ভব নিয়ে কোনো কথা হচ্ছে না। বাস্তবতা নিয়ে কথা হচ্ছে। সম্ভাবনা দিয়ে কোনো কিছু প্রমাণ করা যায় না। কাল যদি বিজ্ঞানীগণ স্রষ্টার অস্তিত্ব নির্ণয়ের নির্ভুল একটি ফর্মুলা আবিষ্কার করে ফেলেন তাহলে কি আপনি আস্তিকতায় ফিরে আসবেন ? এ সম্ভাবনা দিয়ে কি আপনার নাস্তিকতা ভূলুণ্ঠিত করা যাবে ?
মূল কথা হলো আপনি আমি তো মাতাপিতার পরিচয় নির্ণয়ে ডিএনএতে যাচ্ছি না। এটাই বাস্তবতা। কেন যাচ্ছি না ? এ প্রশ্নের উত্তরটিই এখানে প্রতিপাদ্য।

৮। আপনি লিখেছেন, ‘১) বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর বিভিন্ন সমাজের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী মায়ের বিবাহিত জীবনসঙ্গীকেই ‘বাবা’ বলে ডাকা হয়। সুতরাং, এটা ‘সামাজিক রীতি’ এর ব্যাপার, প্রমাণের ব্যাপার নয়।’

উত্তর : ডা. সাহেব! আপনি কি বৈশ্বিক এ জাতীয় সামাজিক রীতিকে স্বীকার করেন ? বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে অসংখ্য সমাজিক রীতির প্রচলন রয়েছে। সব রীতির ক্ষেত্রেই কি আপনার ‘এটা ‘সামাজিক রীতি’ এর ব্যাপার, প্রমাণের ব্যাপার নয়।’ থিউরি প্রযোজ্য ?
আপনার বক্তব্যের সারমর্ম হিসেবে আমরা পাচ্ছি, যেটা সমাজিক রীতির পর্যায়ভুক্ত সেটাকে প্রমাণসূত্র দ্বারা বিচার করা যাবে না। এই তো কথা ? আপনি আপনার থিউরিতে অটল থাকার চেষ্টা করবেন। আপনার প্রদত্ত থিউরি থেকে কেলিয়ে বেরিয়ে যেতে আশা করি চেষ্টা করবেন না। আস্তিকতায় বিশ্বাসী যারা তাদের ভুল ক্ষমার্হ। কিন্তু আপনাদের ভুল ক্ষমার্হ নয়। কারণ আপনাদের দাবি, আপনারা পৃথিবীর সবচাইতে বুদ্ধিমান প্রাণী। আপনাদের ভুল হতে পারে না। আপনারা ভুলের ঊর্ধ্বে। আপনারা পৃথিবীর সকল মানুষের ভুল ধরে বেড়ান। এটা আপনাদের কারো প্রত্যক্ষ দাম্ভিকতা আবার কারো পরোক্ষ দাম্ভিকতা। সুতরাং আপনাদের দাম্ভিকতাকে অটল ও অটুট রাখার দায়িত্ব আপনাদেরই। স্ববিরোধিতা কিংবা ভুলের গ্যাড়াকলে পড়ে যদি আপনাদের দাম্ভিকতা ধুলোয় ধূসরিত হয় তাহলে এর দায় কিন্তু আপনাদেরই নিতে হবে। অন্য কেউ এসে দায় নিয়ে দেবে না।

ডা. সাহেব আপনি বলেছেন, এটা সামাজিক রীতির ব্যাপার। আমরা তো দেখছি, এটা বিশ্বাসের ব্যাপার। বিশ্বাসের ধাপটি পার হয়ে আসে সামাজিক রীতির ব্যাপার। অসংখ্য কুসংস্কার সামাজিক রীতি হিসেবে প্রচলিত। আপনি কি সেসব রীতিকে সামাজিক রীতির আওতায় ফেলে বিশ্বাস করে নেবেন ? আপনার থিউরি মতে তো সেগুলোকে বিনা বাক্য ব্যয়ে বিশ্বাস করে নিতে হয়। এ কর্মটা তো অন্তত আপনাদের ক্ষেত্রে শোভা পায় না।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ২:৩৫

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: অসাধারণ জবাব ভাই। অনেক ভাল লাগল। নাস্তিকটার লিখার জবার দেওয়ার মতো রুটি হয়তো অনেকের নেই। তবে আপনার সুন্দর জবাবের জন্য আল্লাহ আপনাকে উত্তম যাযা দান করুন।

৩০ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৫৬

হাফিজ রাহমান বলেছেন: মাহমুদ ভাই ! অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার মন্তব্য করার জন্য। আল্লাহ আপনাকেও উত্তম বিনিময় দান করুন।

২| ৩০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:১২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: মারহাবা মারহাবা

ক্যাচালের ভয়ে কেউ মন্তব্য করে নাই হয়তো

সুন্দর উত্তর।

৩০ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৫৯

হাফিজ রাহমান বলেছেন: ফাতেমা আপু ! অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভাল থাকুন।

৩| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:২৫

আবিদ হোসাইন বলেছেন: মুসলমানের বাচ্চা মুসলমান হবে, হিন্দুর বাচ্চা হিন্দু হবে এটাও তো একটা সামাজিক রীতি। তো উনি কেন এই সামাজিক রীতি ভেঙ্গে নাস্তিক হলেন? :P

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:১৩

হাফিজ রাহমান বলেছেন: আবিদ ভাই ! অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকর মন্তব্য করার জন্য। ভাল থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.